![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন শিক্ষক...শিক্ষকতার পাশাপাশি পড়তে লিখতে ভালোবাসি..
মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেগুলোর জীবনটাই অন্যরকম। ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন আর বাস্তবতার সাথে লড়াই করতে করতে এরা কেমন করে যেন ভালো থাকার নানা উপায় বের করে ফেলে। এদেরকে ঘিরেই পরিবারের সদস্যদের স্বপ্নগুলো আবর্তিত হয়। ছেলেটি ভালো জায়গায় চান্স পেলে বাবা-মায়ের মুখের হাসির সীমানা থাকে না। প্রত্যাশার পারদ একটু একটু করে চড়তে থাকে। কিন্তু ঐ ছেলেটি ধীরে ধীরে বুঝতে পারে প্রত্যাশার পাহাড় টপকানো কত কঠিন। যাই হোক ধীরে ধীরে চলতে থাকে ছেলেটির লড়াই। এরা যেহেতু একটু কল্পনা প্রবণ হয় তাই দেখা যায় অনেকেরই বইয়ের সাথে একটা অন্যরকম সখ্যতা গড়ে ওঠে। ধীরে ধীরে একটা আইডিওলজি ধারণ করে এগিয়ে যেতে থাকে। অনেকের ক্ষেত্রে ঠিকই কল্পনার সেই স্বপ্নচারীণির সাথে দেখা হয়ে যায়। চলে আসে আরেক বিপত্তি। তখন একদিকে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার লড়াই অন্যদিকে সেই কাছের মানুষটিকে ধরে রাখার লড়াই। এই লড়াই লড়তে গিয়ে মধ্যবিত্ত ঘরের অনেক ছেলেই পিছিয়ে পড়ে ক্যারিয়ারের ইদুর দৌড় থেকে। ফলে যার অনেক বড় একটা ক্যারিয়ার গড়ার কথা ছিল তাকে অনেকটাই সাদা-মাঠা ভাবে জীবনটা কাটিয়ে দেয়া লাগে। আর বাবা-মায়ের প্রত্যাশার বেলুনটাও ফুটো হতে থাকে। জমতে থাকে একরাশ হতাশা। অন্যদিকের গল্পও আছে। এই মধ্যবিত্ত ঘরের অনেক ছেলেই বুঝতে পারে তাকে লড়াই করে টিকে থাকতে হবে। কারণ তার ব্যাকআপ নেই, পেশী শক্তি নেই, নেই অর্থের আনাগোনা। এখানে তার টিকে থাকার একটাই মূলমন্ত্র লড়াই আর লড়াই। আর তাই লড়াই করতে করতে ছেলেটি ঠিকই পৌঁছে যায় সেই স্বপ্নের ক্যারিয়ারের কাছাকাছি। তবে এবার বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। এবার শুরু হয় সাধ আর সাধ্যের লড়াই। ছেলেটির সাধ্য কম কিন্তু সাধ অনেক বেশি। আর ঐ চিরটিকাল লড়াই করে টিকে থাকা বাবা মায়ের মুখটা হাসিতে যতটা চওড়া হতে থাকে তারাও এক অন্যরকম স্বপ্নের জগতে বিচরণ করতে থাকেন। তারা ভাবতে থাকেন ছেলে এখন অনেক বড় চাকরি করে এখন বাড়িটা ঠিক করব, ভালো করে ঘর সাজাব, মেয়েটাকে অমুক জিনিসটা দেওয়া হয়নি সেটি দিব।ছেলেটি বড় চাকরি পেয়েছে, সবাই খেতে চায়, একটা বড় সেলিব্রেশান করব ইত্যাদি ইত্যাদি। এরপর নানা দিক থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকে। বাবা-মায়ের আনন্দ দেখে কে? তারা তখন ছেলের বিয়ে নিয়ে কল্পনার রাজ্যে বিচরণ করতে থাকেন। ভাবখানা এমন যে লক্ষ্ণী মিত্তালের মেয়ের বিয়ের চেয়ে বেশি খরচ করবেন! ঐ যে তাদের খোকা অনেক বড় চাকরি করে! কিন্তু ঐ বড় চাকরি করা খোকাটি বোঝে জীবনটা কত কঠিন! মাসে যে বেতন পায় সেটা দিয়ে চারদিকের সকল প্রত্যাশা মেটাতে প্রতিদিন হিমশিম খেতে হয় ছেলেটি। বোন আবদার করে চাকরি পেলি আমাকে এটা দিতে হবে, ভাগ্নে-ভাগ্নি থাকলে বলে মামা আমাকে এটা কিনে দিবে, মা বলে আমার খুব ইচ্ছ ছিল খোকা তুই চাকরি পেলে আমার একটা…কেনার ইচ্ছা ছিল, বাবা বলেন জানিস এ মাসে সোফার অর্ডারটা দিয়েই দিলাম। একটু বাড়তি টাকা পাঠাস, মেয়ে পক্ষের লোকজন আসে খুব লজ্জা লাগে। এর সাথে আছে আত্মীয় স্বজনের প্রত্যাশা। এর মাঝে আবার অনেকেরই ছোট ভাই থাকে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। এখন ছেলেটি ভাবে আমি যেভাবে কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি ছোট ভাইকে সেটা করতে দেব না। তাই সে ভাইয়ের এক্সট্রা যত্ন নিতে থাকে। ভাইকে একটুও কষ্ট দেয় না। এভাবে সবকিছু ম্যানেজ করতে করতে ছেলেটি দেখে মাসের ১৫ দিন যেতেই পকেটে টান ধরেছে। আর শেষের সপ্তাহে ধার করা শুরু হচ্ছে। এর মধ্য দিয়েও সে তার ছোট ছোট কিছু স্বপ্ন ঠিকই পূরণ করে। এতকিছু সামলানোর পরেও ঐ মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেটির মুখ থেকে হাসি উধাও হয় না বরং মুখপল্লবে একটা পরিতৃপ্তির ছাপ দেখা যায়। আর মধ্যবিত্ত ঘরে জন্ম নিয়ে লড়াই করে নিজের অবস্থান তৈরি করে সকলের প্রত্যাশা মেটানোর চেষ্টাটার দিকে যখন একবার চোখ ফিরে তাকায় তখন মনে মনে বলে ওঠে, ‘ ঈশ্বর তোমাকে ধন্যবাদ, আমাকে মধ্যবিত্ত ঘরে বেড়ে ওঠার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। নইলে এত হাসি, এত দুঃখ, এত সুখের সন্ধান আর কোথায় পেতাম!’
২| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৩
আধারে অভ্রনীল বলেছেন: ভাই আমারও ঠিক একই অবস্থা চলছে
৩| ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:২৯
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: বাস্তবতা।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২৩
বিজন রয় বলেছেন: হা হা হা সান্ত্বনা খুঁজলেন?
+++