নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি।

সুদীপ কুমার

মন যা চায়।

সুদীপ কুমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

একদিন জ্যোৎস্না রাতে

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:৫৭

বাসা বদলানো বড্ড ঝামেলার কাজ।মনে মনে ভাবে
মলয়।রুপকথা ব্যস্ত ঘর গোছাতে।
এবার ছেলের জন্য বাসা বদলাতে হলো।শান্তি নগর
হতে প্রলয়ের স্কুল কাছে।তাই বাসা বদলানো।মলয়
আর রুপকথা দু'জনেই চাকুরীজীবি।

-শোন,অটবির কোন কিছু আর কেনা যাবে না।
-কেন?
-এ পর্যন্ত দু'বার বাসা বদলানো হলো।দেখ খাট আর
সেট করা যাচ্ছে না।
রাগে গজগজ করতে থাকে মলয়।রুপকথা চুপ করে
থাকে।

তিনতলা বাড়িটা দেখেই পছন্দ হয়েছিল রুপকথার।
বাড়িতে ওরা ছাড়া আর কোন ভাড়াটিয়াও নাই।মালিক থাকে
নীচতলায়।দোতালায় মেয়ে আর মেয়ে জামাই।
ভাড়া ঠিক করে ফেরবার পথে মলয় বাড়ির সামনের
দোকানে যায় সিগারেট কিনতে।
-বাসা ভাড়া নিলেন বুঝি।সিগারেট দিতে দিতে দোকানি
প্রশ্ন করে।
-মালিক কেমন?
-ভাল।তবে ভাড়াটিয়া টেকে না।
-কেন?
দোকানি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে।তারপর বলে-
উনারা সবাই ভাল।সজ্জন।তবে বড় ছেলে দু'বছর
হলো পাগল।

রিক্সায় যেতে যেতে মলয় ভাবে-প্রলয়ের
মাঝে মাঝে বাসায় একা থাকতে হয়।রুপকথাকে কিছু
বলেনা।

রাত বেশ হয়েছে।গল্প করতে গিয়ে কখন
দু'টো বেজে গিয়েছে খেয়ালই করেনি তারা।
মলয় রুপকথাকে বুকের মধ্যে টেনে নেয়।
-আজ না।খুব ঘুম পাচ্ছে।কালকে।
মলয় তার তপ্ত ঠোঁট ঠেসে ধরে রুপকথার
ঠোঁটে।ধীরে ধীরে রুপকথার ঠোঁটে
উষ্ণতা ফিরে আসে।বাথরুম থেকে ফিরে এসে
মলয়কে রুপকথা প্রশ্ন করে-
তুমি কি কোন গন্ধ পাচ্ছো ঘরে। বেশ মিষ্টি ঘ্রাণ।
-আশপাশে কোন ফুল ফুটেছে মনে হয়।
-ফুলের নয়।মেয়েলি পারফিউমের।
-পাচ্ছি।তবে ঠিক ধরতে পারছি না,কিসের গন্ধ।
অনেক রাত হয়েছে।এসো ঘুমিয়ে পড়ি।
মলয় রুপকথার বুকে মুখ গুঁজে দেয়।
-কি যে একটা অভ্যাস তোমার!
মলয় দুষ্টুমির হাসি হাসে।

রুপকথা বাসায় নেই।মিরপুরে গিয়েছে প্রলয়কে
নিয়ে।আজকের রাত বোনের বাসাতেই থাকবে।
ফ্রীজে রান্না করা আছে সব।মলয় খাবার গরম
করে খেয়ে নেয়।
খাওয়া শেষে ছাদে উঠে সিগারেট খাবে বলে।
আজ খুব সুন্দর জ্যোৎস্না রাত।ছাদে না উঠলে
মলয় টের পেতোনা। সিগারেট খেতে খেতে
মলয়ের মনে হয় পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
মলয় ঘুরে দাঁড়ায় আর অবাক হয়ে যায়।তার পেছনে
মায়াবী চেহারার এই তরুণী কখন দাঁড়িয়েছে টের
পায়নি।মলয় সিগারেট ফেলে দেয়।
-ফেললেন কেন?ওটাতো শেষ হয়নি।
-আপনাকে ঠিক চিনলাম না।
-আমি এই বাড়ির ছেলের বউ।
-আপনার স্বামীকে আনলেন না।
-ও ঘুমোচ্ছে।
-ছেলেমেয়ে কয়জন?
-একটিই।ওই যে।
মলয় ভাবে দুই দুইজন পেছনে এসে দাঁড়ালো
আর ও টের পেলোনা।
মলয় বলে- ভাবি আসি।
-আর একটু থাকেন না? দেখেছেন কত সুন্দর
জ্যোৎস্না রাত।এমন চাঁদনী রাত প্রতি বিশ বছর পর
পর দেখা যায়।
মলয় সেই রাতের মত আবার গন্ধ পায়।এবার বেশ
কড়া।
-ভাবি,আমাকে খুব সকালে উঠতে হবে।যাই।
-যাবেন। যান।আমার সাথে এখন আর কেউ গল্প
করেনা।
মলয় নীচে চলে আসে।
মাঝ রাতে মলয়ের ঘুম ভেঙ্গে যায়।বিদ্যুৎ নেই।
গরমে ঘামতে থাকে।আর নাকে এসে লাগে
সেই ঘ্রাণ।তার কেমন অস্বস্তি হতে থাকে।

বিকেলে রুপকথাকে সব বলে সে।রুপকথা বলে-
আজ নীচে যাবো ভাবির সাথে পরিচিত হবো।চা
খেয়ে রুপকথা নীচে চলে যায়।যখন সে ফিরে
আসে তখন তাকে কেমন নার্ভাস লাগে মলয়ের
কাছে।প্রশ্ন করে-
তোমাকে কেমন যেন লাগছে?
-প্রলয় হাত-মুখ ধুয়ে ঘরে গিয়ে পড়তে বসো।
প্রলয় ঘরে চলে যায়।রুপকথা জল খায়।
-বাড়িওয়ালার একটা ছেলে আর একটা মেয়ে।
ছেলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় কর্তা
ছিলেন।দু'বছর আগে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় ছেলের
বউ আর একমাত্র নাতি মারা যায়।আর সেই হতে
উনাদের ছেলে এবনর্মাল।উনার ছেলে আর
ছেলের বউ এ ঘরেই থাকতো।মলয় কাঁপা কাঁপা
হাতে একটা সিগারেট ধরায়।
২৭/০৯/২০১৫

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.