নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলন্ত-বাস থেকে বাসযাত্রীকে ধাক্কা মেরে বাসের সামনে ফেলে তাকে চাপা দিয়ে হত্যা করলো ড্রাইভার-হেলপার! এই দেশে শয়তানের পূজা চলবে আর কতোকাল?

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:১৩


চলন্ত-বাস থেকে বাসযাত্রীকে ধাক্কা মেরে বাসের সামনে ফেলে তাকে চাপা দিয়ে হত্যা করলো ড্রাইভার-হেলপার! এই দেশে শয়তানের পূজা চলবে আর কতোকাল?
সাইয়িদ রফিকুল হক

আগে সারাদেশে একজন মানুষ কোনো কারণে নিহত হলে বা কেউ তাকে হত্যা করলে মানুষের মধ্যে আলোচনা ও আতংক বেড়ে যেতো। আর এখন ঘণ্টায়-ঘণ্টায় মানুষ নিহত হলে কিংবা তাকে হত্যা করলে মানুষজন কিছুই মনে করছে না। কেন এমন হচ্ছে? আসলে, মানুষের মনুষ্যত্ব কমে যাচ্ছে। এখন শুধু নামকাওয়াস্তে মানুষ আছে। মানুষের আত্মাসহ মানুষ আছে কয়জন? নইলে দিনে দুপুরে, প্রকাশ্য-দিবালোকে একজন বাসযাত্রীকে হত্যা করলো ড্রাইভার-হেলপার। তাদের বিচার হবে কি? হবে না। এই দেশে পরিবহণ-সেক্টরের চিহ্নিত-অপরাধীদের বিচারের জন্য মানবতাবাদী কোনো আইন নাই। আর আজও তা তৈরি হয়নি।
গতকাল (০৯/০২/২০১৬ খ্রিস্টাব্দ) বিকাল চারটার দিকে একজন বাসযাত্রীকে বাসের নিচে ফেলে তাকে চাপা দিয়ে হত্যা করেছে আলিফ-পরিবহণের একটি বাসের ড্রাইভার ও হেলপার! ওই বাসের নম্বর: ঢাকা মেট্রো ব ১১-৭৯৮৪। এটি জাতির জন্য একটি ভয়াবহ দুঃসংবাদ।
গতকাল মঙ্গলবার বিকাল চারটায় মিরপুর ১০ নাম্বার গোলচত্বরের ফলপট্টির কাছে এই ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম হুমায়ুন কবির খান। বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার রসূলপুরে। তিনি তার স্ত্রী রেবেকা বেগম, ছয়-বছরের কন্যা তাথৈ, আর ছয়-মাসের পুত্রসন্তান তীর্থকে নিয়ে মিরপুরের ‘টোলার বাগে’ একটি ভাড়া-বাসায় থাকতেন।

তাকে পরিকল্পিতভাবে ধাক্কা দিয়ে বাসের সামনে ফেলে দেয় আলিফ-পরিবহণের হেলপার সেলিম। আর তারই ইশারায় চালক ইকবাল তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। আর এতে ঘটনাস্থলেই হুমায়ুন কবির সাহেবের মৃত্যু হয়। তবুও কিছু লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলো।

এই হৃদয়বিদারক ও নৃশংস ঘটনায় উত্তেজিত-জনতা বাস-ড্রাইভার ইকবালকে সঙ্গে-সঙ্গে আটক করে। আর পরে পলাতক হেলপার সেলিমকেও আটক করে পুলিশ। কিন্তু কী হবে? জানি, এদের কোনো শাস্তি হবে না। এদের দেখাশোনা করার জন্য দেশে অনেক-অনেক গডফাদার আছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় হুমায়ুন কবির ও তার এক সহকর্মী মতিঝিল থেকে শিখর-পরিবহণের একটি বাসে চড়ে অফিসের কাজে ১০ নাম্বার আসেন। এই বাসটির সঙ্গে শুরু থেকে পাল্লা দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে-করতে আসছিল আলিফ-পরিবহণ। ১০ নাম্বারের কাছে এসে কিছুসংখ্যক মানুষ আলিফ-পরিবহণের বাসটির সামনে দাঁড়িয়ে ‘এভাবে বাস-চালানোর জন্য’ প্রতিবাদ জানায়। আর লোকজনের সঙ্গে নিহত হুমায়ুন কবিরও হয়তো ব্যাপারটা দেখার জন্য এগিয়ে গিয়েছিলেন। আর একটু পরে বাস চলতে শুরু করলে তাকেই ‘বলির পাঁঠা’ বানায় এই দুই হারামজাদা: হেলপার সেলিম ও ড্রাইভার ইকবাল। এই হেলপার সেলিম ধাক্কা দিয়ে হুমায়ুন সাহেবকে বাসের সামনে ফেলে দেয়। আর ড্রাইভার ইকবাল সঙ্গে-সঙ্গে তাকে চাপা দেয়। এরা সমাজের জারজসন্তান। এই কিছুদিন আগে এরাই দুইজন ছাত্রীকে হত্যা করেছিলো শাহবাগের কাছে। মানুষখুন করতে-করতে এদের নেশা ধরে গেছে। আর তারা দেখছে: এই দেশে যখন-তখন যে-কাউকে হত্যা করলেও এর কোনো বাছবিচার নেই। ওরা সবসময় ছাড়া পেয়ে যায়। আর ওদের মতো হারামজাদা-বেপরোয়া ড্রাইভারদের জন্যই আমরা অকালে হারিয়েছি খ্যাতিমান চলচ্চিত্র-পরিচালক: তারেক মাসুদ-কে।

বাংলাদেশের পরিবহণ-সেক্টর এখন পশুদের হাতে:
বাংলাদেশের পরিবহণ-সেক্টর এখন আর মানুষের হাতে নেই। এখানে, দেশের চিহ্নিত-শয়তানদের আনাগোনা। এদের হাতেই পরিচালিত হচ্ছে মানুষের নিত্যব্যবহার্য যানবাহন। এরা নিজেদের ধরাছোঁয়ার বাইরে মনে করে থাকে। এরা এদের ইচ্ছেমতো চলে। এদের বাধা দেওয়ার আর শাস্তি দেওয়ার মতো কেউ নেই দেশে। এইসব বাস-মিনিবাসের মালিকরা একেকজন আস্ত-শয়তান। এরা সবসময় ড্রাইভার-হেলপারদের পক্ষে থাকে। এরা জনগণের বিরুদ্ধে। আর এই শয়তানশ্রেণীর জন্য বেপরোয়াভাবে গাড়ি-চালানোর জন্য “ড্রাইভার-হেলপার-কনডাক্টরদের” মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাচ্ছে না। এরা বাস-মালিক বলে সবখানে এরা নাক গলায়। আর এরা নিজেদের স্বার্থ দেখে। এই জানোয়ারদের এখনই প্রতিহত করতে হবে। নইলে এরা বানরের মতো একবার মাথায় চড়ে বসলে আর নামানো যাবে না। তাই, এইজাতীয় বাস-মালিকদের বিচারের জন্য জনগণকেই সোচ্চার হতে হবে। এদের শয়তানীর মুখোশ-উন্মোচন করতে হবে। কিছুদিন আগে শ্যামলী-পরিবহণের বাস-মালিক ও তার শ্যালক মিলেমিশে এক পরিবহণশ্রমিককে হত্যা করেছে। তাও এরা ধামাচাপা দিয়েছে। এরা নিজেদের পরিবহণ-ব্যবসা-সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক-শক্তি ব্যবহার করে থাকে। আর দেশের নষ্ট-রাজনীতিবিদদের সঙ্গে সবসময় এদের দহরম-মহরম। এরা রাজনৈতিক-ছত্রচ্ছায়ায় দেশের মানুষের বিরুদ্ধে সীমাহীন আগ্রাসন চালাচ্ছে। এদের হাতে আছে অঢেল কাঁচা-টাকা, কালো-টাকা! এরা তারই জোরে সবসময় গণমানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়।

বাংলাদেশের অধিকাংশ বাস-মিনিবাসের ড্রাইভার-হেলপার-কনডাক্টররা শয়তানের জারজপুত্র:
এদের স্পর্ধার সীমা নেই। এরা দুনিয়ার কাউকে মানতে চায় না। এরা মানুষকে মানুষ মনে করে না। এদের হাতে সবসময় নারী-পুরুষ-নির্বিশেষে সকল ধর্মের মানুষই লাঞ্ছিত হয়। এদের মতো বদস্বভাব পৃথিবীতে আর কারও নেই। এরা এতো নোংরা যে, বনের পশুও এদের সঙ্গে মেলামেশা করতে লজ্জা পাবে। এদের মতো দুশ্চরিত্রবান-প্রাণী পৃথিবীতে আর আছে কিনা সন্দেহ। আর এদের নোংরা-জঘন্য-ভাষা পশুদেরকেও হার মানিয়েছে। এরা সর্বস্তরের যাত্রীদের সঙ্গে সীমাহীন দুর্ব্যবহার করেও অতিসহজেই পার পেয়ে যায় বলে এদের স্পর্ধা দিন-দিন বেড়ে যাচ্ছে। এদের কোনো মনুষ্যত্ব নাই। এদের জন্ম-পরিচয় মিথ্যা। এরা মানুষ নামের কুলাঙ্গার। এরা এ যাবৎ বহু নিরীহ-যাত্রীকে এভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু কোনো হত্যাকাণ্ডেরই আজও বিচার হয়নি। সরকারি-পৃষ্ঠপোষকতায় এরা সবসময় রেহাই পেয়ে যায়। কিন্তু এদের শাস্তি দিতে বাধা কোথায়? আর এদের মতো নরপশুদের শাস্তি দিতে কীসের এতো ভয়? রাষ্ট্র কি এই হারামজাদাদের ভয়ে হাত-পা-গুটিয়ে বসে থাকবে? আর প্রতিদিন ওরা মানুষ মারবে? মানুষ মারবে?

মানুষকে বাঁচাতে হবে:
মানুষ আমাদের ভাই। মানুষ আমাদের আত্মার সবচেয়ে নিকটাত্মীয়। তাই, মানুষের মৃত্যুদৃশ্য আমরা সহ্য করতে পারি না। নিরীহমানুষের মৃত্যুতে আমাদের চোখে জল আসে। একটি মানুষের কত স্বপ্ন থাকে! আর এইরকম হত্যাকাণ্ডে তার সবই ভেস্তে যায়। মানুষহত্যাকারী জারজ-দানবগোষ্ঠীকে নির্মূল করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে রাষ্ট্রকে। আজ মানুষকে বাঁচাতে হবে। শুধু মানুষকে বাঁচাতে হবে। আর মানুষের বিরুদ্ধে এইরকম সন্ত্রাসসৃষ্টিকারীদের শিকড়সুদ্ধ নির্মূল করতে হবে। ওদের স্পর্ধা-আস্ফালন-ধৃষ্টতা চিরতরে কবর দিয়ে দিতে হবে। মানুষের পৃথিবীতে মানুষকেই বাঁচাতে হবে। এইব্যাপারে মানুষরূপী-জানোয়ারদের কোনো ক্ষমা নাই। ক্ষমা নাই। আর ক্ষমা নাই।

এদের শাস্তি দিতেই হবে:
আর কত অসহায় মানুষ এভাবে মরবে? মানুষের জীবনের কি কোনোই মূল্য নাই? দেশের সাধারণ মানুষ কি এভাবেই মারা যাবে? কে দিবে এর উত্তর? রাষ্ট্র? সরকার? নাকি সমাজ?
এই দেশে শয়তানের পূজা চলবে আর কতোকাল?

বেপরোয়া বাস-মিনিবাস-ড্রাইভার-হেলপার-কন্ডাক্টরদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান করতে হবে:
আর দেরি করা চলবে না। এদের বিরুদ্ধে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই শয়তানদের হাতে সাধারণ মানুষ আর জিম্মি থাকতে চায় না। সময় এসেছে, এদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এরা কার দুলাভাই যে, এরা অপরাধ করলেও এদের ফাঁসি দেওয়া যাবে না! এদের ফাঁসির ব্যবস্থা করতে হবে। তাও ফায়ারিং-স্কোয়াডে। এদের ফাঁসি দিতেই হবে। মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া চলবে না।

মানুষের পৃথিবীতে মানুষ কেন মরবে?
আর কোনো মানুষের এভাবে করুণ মৃত্যু হোক, তা আমরা কখনও চাই না। মানুষের পৃথিবীতে মানুষই বেঁচে থাকবে। যারা মানুষের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায় এবার সেইসব পশুদের বধ করতে হবে। পশুমারার অভিযানে দেশের সকল মানুষকে শরীক ও শামিল হতে হবে। জয় হোক মানুষ আর মানবতার। জেগে উঠুক মানুষের আত্মা।
নিহত একজন হুমায়ুন কবির খান আমাদেরই ভাই, স্বজন, আপনজন। তাঁর বিদেহীআত্মার উদ্দেশ্যে দোয়া ও শুভকামনা। আমীন।

আর ঘাতক-জল্লাদ “সেলিম-ইকবাল”কে একদড়িতে ফাঁসি দিতে হবে। ফাঁসি দিতে হবে। আর ওদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের বিধান-ঘোষণা করতে হবে।
৩০লক্ষ শহীদের স্বাধীন-সার্বভৌম-বাংলাদেশরাষ্ট্রকে আজ সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। আর মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সত্য ও সুন্দরের পূজারী হতে হবে।


সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.