নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মসজিদের ইমামদের আগে নিজে ভালো হতে হবে। আর তাকে একজন মানুষ, মুসলমান ও আশেকে রাসুল (সা.) হয়ে তারপর ইমামতি করতে হবে।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৩০


মসজিদের ইমামদের আগে নিজে ভালো হতে হবে। আর তাকে একজন মানুষ, মুসলমান ও আশেকে রাসুল (সা.) হয়ে তারপর ইমামতি করতে হবে।
সাইয়িদ রফিকুল হক

আমাদের দেশে একশ্রেণীর ইমাম আছে। এরা মসজিদের সাধারণ মুসল্লীদের ইমাম। আর এদের একমাত্র কাজ হলো: দৈনন্দিন পাঁচ-ওয়াক্ত নামাজে ইমামতি করা। তবে এরা মাঝে-মাঝে ইসলাম ও আইন-বহির্ভূতভাবে মসজিদকেন্দ্রিক বিভিন্ন ব্যক্তিগত-কার্যক্রম-পরিচালনা করে থাকে। কিন্তু এদের একমাত্র কাজ হলো: মসজিদে আগত মুসল্লীদের ‘নামাজ’ পড়ানো। আর এই কাজের জন্যই তাদের মসজিদে রাখা হয়েছে। আর তার সঙ্গে আছে একজন মুয়াজ্জিন ও একজন খাদেম। কোনো-কোনো মসজিদে এই সংখ্যাটা কম-বেশিও হতে পারে। প্রতিটি মসজিদে ইমাম রাখা হয়েছে শুধু নামাজ পড়ানোর জন্য। এর বাইরে তাদের আর-কোনো কাজ দেওয়া হয়নি। এরা দৈনিক পাঁচ-ওয়াক্ত নামাজ পড়ানোর পাশাপাশি জুম্মাদিবসে সমবেত মুসল্লীদের জুম্মার নামাজও পড়াবেন। এর বাইরে তাদের আর-কোনা কাজ নেই। কারণ, এখন বিয়েশাদী পড়ানোর জন্য আলাদা লোক রয়েছে। সরকারিভাবে সারা-বাংলাদেশে ‘কাজী’-পদে লোকনিয়োগ করা হয়েছে। আর এই ব্যবসায়ী-কাজীদের অধীনে রয়েছে আরও কয়েকজন সহকারী-কাজী।

বর্তমানে ‘ইমাম’ বা ‘ইমামতি’ একটি পেশার নাম। এখানে, যে-বা-যারা ইমামতি করে তাদের ‘ইমাম’ বলা হয়। আর এই ইমামদের নিয়োগ করে এলাকার মসজিদ-কমিটি। এখানে, একজন ব্যক্তিকে এইসব মসজিদ-কমিটি চাকরিতে নিয়োগদান করে থাকে। এর বাইরে আর-কিছু নয়। কারণ, এই ইমামদের উপর অন্য কোনো দায়িত্বঅর্পণ করে তাদের আরও কোনো কাজে নিয়োগ করার কোনো এখতিয়ার বা আইনগতঅধিকার এইসব মসজিদ-কমিটির নাই। নামাজ পড়ানোর একটিমাত্র শর্তে এদের নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

আধুনিককালে ভালোমানুষ খুব কমই মসজিদ-কমিটিতে অংশগ্রহণ করে। দেশের মসজিদ-মাদ্রাসাসহ স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজগুলোতে যে-কমিটি বা গভর্নিংবডি গঠিত হয়, তাতে একশ্রেণীর টাউট-বাটপাড়-ধড়িবাজ-চালবাজ ও চিহ্নিত-সমাজবিরোধীই অংশগ্রহণ করে থাকে। আর তাই, সমাজের একশ্রেণীর ভণ্ড, প্রতারক, সুদখোর, ঘুষখোর, সরকারি-তহবিল-তসরুফকারী শেষবয়সে মসজিদ-মাদ্রাসার সেবা করার নামে বিবিধ অন্যায়-অপকর্মে লিপ্ত হয়। দেখা যায়, কোনো একজন সরকারি চাকরি করে ঘুষ খেয়ে গাড়ি-বাড়ি করে শেষবয়সে আখেরাতের কথা ভেবে ধর্মসাধনায় নিয়োজিত হয়। আর তার এই ধর্মসাধনা সম্পূর্ণ লৌকিক ও লোকদেখানো। নিজেকে সমাজে ধার্মিকপরিচয় দেওয়ার জন্যই সে কিছুদিন মসজিদে গিয়ে পড়ে থাকে, আর নিজের ঘুষ-খাওয়ার কথা ভেবে-ভেবে বারবার শিহরিত হয়, আর সে মনে করে: এভাবে মসজিদে পড়ে থাকলেই তার পাপমুক্তি। সে রাষ্ট্রের টাকা তহবিল-তসরুফ করে সৌদি-আরবে গিয়ে ‘টাটকা-হজ্জ’ করে এসেছে। আবার মুখে লোকদেখানো একটুখানি দাড়িও রেখেছে। কিন্তু তার ভিতরে কোনো পরিবর্তন হয়নি। এখনও তাকে কোনো সরকারি-প্রকল্পের দায়িত্ব দিলে পাঁচ-বছরের-প্রকল্প সে পাঁচদিনে লোপাট করে এই ঢাকা-শহরে তার নিজের নামে আরও পাঁচখানা বাড়ি বানাবে। আর সে-ই কিনা আমাদের এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসার সভাপতি-সেক্রেটারি-সদস্য!
বাংলাদেশের রাজধানী তথা ঢাকা-শহরের মসজিদগুলো এখন একশ্রেণীর সমাজবিরোধী-দুষ্কৃতিকারীর নিয়ন্ত্রণে! কথাটা হয়তো অনেকে বিশ্বাস করতে চাইবে না। কিন্তু তাদের বিশ্বাস করতে হবে। কারণ, তাদের বিশ্বাস করানোর মতো যুক্তিপ্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে। আজ দেশের অধিকাংশ মসজিদ-কমিটিতে ধান্দাবাজ-মতলববাজরা জায়গা করে নিয়েছে। এরা নিজেদের আখের গোছানোর জন্য এলাকার মসজিদ-কমিটিতে জড়িত হয়ে নিজেদের স্বার্থের বিবিধ ফায়দা-লুটে নিচ্ছে।

ঢাকা-শহরের মসজিদগুলোতে কে-বা-কারা সভাপতি-সেক্রেটারি-সদস্য-সদস্যসচিব ইত্যাদি হয়ে থাকে, এবার আমরা তা-ই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবো। আর আপনারাও দেশ ও জাতির স্বার্থে এদের সম্পর্কে একদিন শুধু একটুখানি খোঁজখবর নিয়ে দেখুন। আর এতে আপনি নিজের অজান্তেই বারবার শিউরে উঠবেন। আর এদের ইতিহাস যদি আপনি একটুখানি কষ্ট করে জোগাড় করতে পারেন, তাহলে, এদের অপরাধ ও পাপের কথা জেনে আপনার রাতে ঘুম হবে না।

বর্তমান ঢাকা-শহরের মসজিদগুলোতে এবং একইভাবে সারা-বাংলাদেশের অন্যান্য স্থানের অধিকাংশ মসজিদপরিচালনা-কমিটির সভাপতি-সেক্রেটারিসহ প্রায় সকল পদে নিযুক্ত বা নির্বাচিত হয় সমাজের একশ্রেণীর দুষ্কৃতিকারী। আর এখানে, একশ্রেণীর দূষিত-মানুষ নিজেদের স্বার্থের আস্তানা বানিয়েছে। এদের সামান্য পরিচয় এখানে তুলে ধরা হলো:
১. সরকারিপ্রকল্পের ঘুষখোর সাবেক বা বর্তমান ইঞ্জিনিয়ার,
২. পিডিবি’র ঘুষখোর-ইঞ্জিনিয়ার(আর এরা সাবেক কিংবা বর্তমান উভয়ই হতে পারে।)
৩. তিতাস-গ্যাসের ঘুষখোর-ইঞ্জিনিয়ার বা কর্মকর্তা,
৪. ডেসা-ডেসকো-ডিসিসি(উত্তর-দক্ষিণ)-এর ঘুষখোর-ইঞ্জিনিয়ারগণ,
৫. সরকারি-হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত ঘুষখোর-ডাক্তার,
৬. অবসরপ্রাপ্ত ঘুষখোর-পুলিশ-কর্মকর্তা। এএসপি, কিংবা এসপি।
এদের অনেকেই সাসপেন্ডেট-কর্মচারী। কিন্তু লোকের কাছে বলে বেড়ায়: “ঈমান-আকিদাহ নষ্ট হওয়ার আশংকায় রিটায়ার্ডমেন্টের অনেক আগেই অবসর নিয়েছি। আর এখন, বাকী জীবনটা মসজিদের সেবা করে কাটিয়ে দেবো!” আসলে, এসব সম্পূর্ণ মিথ্যাকথা।
৭. সরকারি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত যেকোনো ঘুষখোর-কর্মকর্তা(আর চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করায় তার মন খারাপ, সেইজন্য সে মসজিদে গিয়ে বসে থাকে। এখন তার কাজ নাই। আর আগের মতো ঘুষ খাওয়ার সুযোগ নাই! আর সে তাই বাধ্য হয়ে ভাবে: এখন মসজিদের একটুআধটু সেবা করলে পাপের বোঝাটা হয়তো কিছুটা হালকা হবে।)
৮. এলাকার রাজনীতিবিদ-নামধারী একশ্রেণীর শয়তান। এরা নিজেদের স্বার্থের বেড়াজাল সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের দ্বারা আরও গভীরে প্রোথিত করার জন্য এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসার কমিটিতে নিজের নাম-অন্তর্ভুক্ত করে সমাজ-রাষ্ট্রের বুকে ‘ভালোমানুষ’ সাজবার চেষ্টা করে থাকে। কিন্তু সমাজের এইসব নষ্ট-পচা-গলা-দূষিত প্রাণীগুলো একেবারে চিহ্নিত-সন্ত্রাসী। আর তা সত্ত্বেও, তারা জোরপূর্বক কিংবা রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে এলাকার মসজিদ-মাদ্রাসার সভাপতি-সেক্রেটারি কিংবা সদস্যসচিব হয়ে যাচ্ছে। আর এরা এভাবে সমাজের বুকে নিজেদের ধার্মিক হিসাবে প্রমাণ করার ব্যর্থ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই শ্রেণীটি সম্পূর্ণ অসৎ ও লম্পট। এরা ক্ষমতার দম্ভে মূর্খ হয়েও কিংবা ধর্মবিষয়ে সম্পূর্ণ অজ্ঞ হয়ে মসজিদ-মাদ্রাসা-পরিচালনা করেছে। এরা ভালোজাতের সুন্নীআকিদাহসম্পন্ন একজন ‘ইমাম’ নিয়োগ করবে কীভাবে? আর এদের মতো পাপিষ্ঠদের ভয়াবহ পাপে দেশের মসজিদ-মাদ্রাসাগুলো বাতিলপন্থী-ওহাবীআকিদার লোকে ভরে যাচ্ছে। এরা কোনোকিছু না বুঝে একশ্রেণীর ভণ্ডকে মসজিদের ইমাম হিসাবে নিয়োগ করছে। আর এই সুযোগে এইসব চিহ্নিত ভণ্ড-ইমামও ইসলামের নামে ইসলামবিরোধী সম্পূর্ণ মনগড়া-আলোচনা করে যাচ্ছে।

মসজিদ-কমিটির লোকেরা এলাকায় তথাকথিত-প্রভাবশালী:
আর এরা প্রত্যেকে এই ঢাকা-শহরে একাধিক বাড়ি-গাড়ি-প্লটের-ফ্ল্যাটের মালিক! এতোদিন এদের ধর্মসাধনার কথা মনে হয়নি। কারণ, এতোদিন এরা মহাসুখে চোখবুজে, নামাজ না পড়ে কিংবা লোকদেখানো নামাজ পড়েও “পাঁচ-ওয়াক্ত” ঘুষ খেয়েছে। তখন তাদের ধর্মের কথা, পবিত্র ইসলামের কথা একবারও মনে হয়নি। আর আমাদের প্রিয়-নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কথা তাদের একবারও মনে হয়নি। আজ তারা সুদ-ঘুষখেয়ে আর নানারকম সীমাহীন দুর্নীতি করে, ঘুষের টাকার সমস্ত সম্পদসম্পত্তি বহাল তবিয়তে রেখে ইসলামের সেবা করছে! আর এইসব ধান্দাবাজ, জাতীয় শয়তান, অসৎ-জোচ্চোর-চোর-জনগণের পকেটমার-দুশ্চরিত্রবান ব্যক্তিদের পদলেহন করছে একশ্রেণীর ইমাম। এরা সমাজের আত্মস্বীকৃত ইমাম। তাই, এরা ইসলাম, মুসলমান ও মানুষের জন্য কিছুই করতে পারছে না। এরা নিজেদের “মনগড়া-বাতিল-কুফরী-ওহাবী” আকিদার ধ্যান-ধারণা সাধারণ মুসল্লী ও সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এরা আজ সমাজ-রাষ্ট্র-ইসলামবিরোধী ভাইরাস! দেশ, মানুষ, ইসলাম ও মানবতার স্বার্থে খুব তাড়াতাড়ি এদের বিরুদ্ধে অ্যান্টি-ভাইরাস প্রয়োগ করতে হবে। নইলে, এরা আজেবাজে কথা বলে-বলে সাধারণ মানুষ ও সাধারণ মুসলমানদের বিভ্রান্ত করতেই থাকবে। অথচ, এইসব কথা বলার জন্য কেউ এদের পারমিশন দেয়নি। আর এইসব ভণ্ডইমাম কিন্তু ‘জাতে মাতাল তালে ঠিক’! কারণ, এরা কখনও মসজিদ-কমিটির দুর্নীতিবাজ সভাপতি-সেক্রেটারির বিরুদ্ধে কিছু বলে না। এরা শুধু ক্ষেপে যায়, আমাদের স্বাধীন-বাংলাদেশের নিজস্ব সভ্যতা ও সংস্কৃতি দেখে। কারণ, এদের উদ্ভব ঘটেছে পাকিস্তানী-স্টাইলে! তাই, এরা বাংলাদেশের কোনোকিছুই সহ্য করতে পারে না। এদের ভালো লাগে শুধু পাকিস্তান আর পাকিস্তান। আর তাই এইসব ভণ্ডইমাম পবিত্র মসজিদের মিম্বরে বসে খুতবার আলোচনার নামে জিহাদীজোশে সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে বলতে থাকে: বাংলা-নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন ইত্যাদি পালন করা বা উদযাপন করা জায়েজ নাই! আরে, তুই কে এভাবে ‘নাজায়েজ’ বলার? আর এই বিশ্বে কোনোকিছুকে ‘জায়েজ’ কিংবা ‘নাজায়েজ’ বলার একমাত্র এখতিয়ার মহান আল্লাহর। তিনিই পবিত্র কুরআনে পৃথিবীতে মানুষের জন্য কোনটি ‘হালাল’ আর কোনটি ‘হারাম’ তা আমাদের মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। কিন্তু এরা সবসময় মসজিদের মিম্বরে বসে নিজেদের রাজনৈতিক দলের ‘বুলেটিন’ প্রচার করতে থাকে। এরা পবিত্র মসজিদে বসে মনগড়াভাবে শয়তানীকথাবার্তা বলে সমাজে-রাষ্ট্রে-জনজীবনে শুধুই ‘ফিতনা-ফাসাদে’র জন্ম দিচ্ছে। কিন্তু এভাবে আর কত? এবার এদের শক্তহাতে প্রতিরোধ করতে হবে।

সেদিন একটা কথা শুনে শিউরে উঠলাম: বাতিলপন্থী এক ইমাম নাকি ঘুষ দিয়ে মসজিদে চাকরি নিয়েছে। স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়ার রেওয়াজ এইদেশে এখন ডালভাতের মতো অবস্থা। তবে ডালভাত বললেও ভুল হবে। কারণ, ডালভাতের জন্যও পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু ঘুষের জন্য আজকাল তেমন-কোনো পরিশ্রম করতে হয় না। আর এই ঘুষ সবজায়গায় এখন অত্যন্ত সহজলভ্য। তাই, এসব সারা-বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তাই বলে মসজিদে! কতবড় পাপী হলে এইসব মানুষ ঘুষ দিয়ে মসজিদে ‘ইমামতি’র চাকরি নিতে পারে! আরে, এইসব ইমামের পিছনে তো মুসলমানের নামাজই হবে না।

পবিত্র ইসলামের স্বার্থে ইমামদের দায়িত্বের বাইরে কথা বলা বন্ধ করতে হবে:
মসজিদের ইমামদের যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা শুধু তা-ই পালন করবে। আর আগের যুগের হাক্কানীআলেমদের লেখা ‘খুতবাপাঠ’ করবে। এক্ষেত্রে খুতবার হুবহু বাংলাটা মুসল্লীদের কাছে প্রকাশ করা যেতে পারে। এর বাইরে কোনো ইমাম-নামধারী বেআদব যদি আমাদের দেশ, সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য, রাজনীতি, ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি নিয়ে কটাক্ষ করে একটি কথাও বলে, তাহলে, আর কালবিলম্ব না করে সঙ্গে-সঙ্গে তাদের ধরে বেদম প্রহার করে মসজিদের ইমামতির আসন থেকে বের করে দিতে হবে। আর-যাই-হোক, এইজাতীয় কোনো ভণ্ড-শয়তানের পিছনে মুসলমানের নামাজ আদায় হবে না। যারা খুতবার অর্থ বিকৃত করে খুতবার বাংলা-আলোচনার নামে “বাংলা-বয়ানে” নিজেদের মনগড়া ও জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের ভাবধারায় কথা বলে তারা সত্যগোপনকারী ফাসেক। আর কোনো ফাসেকের পিছনে কোনোভাবেই মুসলমানের নামাজ আদায় হবে না। আর এই প্রসঙ্গে আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো: যে-সব ইমাম মসজিদে রাজনৈতিক কথাবার্তা বলে তারা ‘সাবেঈন’। এদের পিছনে মুসলমানের নামাজ দুরস্ত হবে না। এরা ভ্রান্ত-আকিদার লোক। মসজিদে কোনো রাজনীতি হবে না। আর মসজিদ, রাজনীতি করার কোনো জায়গাও নয়। তাই, যে-সব ইমাম মসজিদে জেনেশুনে, বুঝেশুনে, তার দলের এজেন্ডা-বাস্তবায়ন করার জন্য মসজিদের মিম্বরে বসে জুম্মার নামাজের আগে ‘খুতবার আলোচনার নামে’ বানোয়াট, ভিত্তিহীন, অসত্য, মিথ্যা, ভ্রান্ত, আজগুবী, আজেবাজে, আবোলতাবোল, আলতুফালতু, দলীয় মতাদর্শ, মনগড়া ও শয়তানীকথাবার্তা বলে তারাও ফাসেক। এদের পিছনে কোনোভাবেই মুসলমানদের নামাজ আদায় করা জায়েজ হবে না। এই শ্রেণীর ইমাম-নামধারী ওহাবী-বাতিলপন্থীরা বহু আগে পবিত্র ইসলামধর্ম থেকে একেবারে খারিজ হয়ে গেছে। এদের থেকে সাবধান হয়ে নিজেদের ঈমান বাঁচাতে হবে।

আজকের আলোচনা শেষ করছি একটি ছোট্ট-ঘটনা দিয়ে:
এক ইমাম বাড়িতে গেছে, মানে, ঢাকার এক মসজিদ থেকে ছুটি নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে গেছে। লোকটি সারাদিন যেখানে-সেখানে ঘোরাফেরা করে। কিন্তু নামাজ পড়ে না।
তার এই ভাবসাব দেখে একদিন জোহরের নামাজের আগে তার মা বললেন, “কী-রে বাবা, তুই এই কয়দিন তো নামাজ পড়লি না? আজও কি তা-ই করবি?”
তখন, ঢাকা-শহরের একটা মসজিদের সেই গুণধর(!)ইমাম বললো, “মা, আমি তো এখন ছুটিতে! আমি ছুটিতে আছি, মা!”
বুঝে নিন পাঠক, এই শ্রেণীর ভণ্ড-ইমামরাই আমল-আখলাকের দিকে ধাবিত না হয়ে ইসলামের নামে বিপথগামীদের অপরাজনীতিতে মিশে গিয়ে আজ তারা মুসলমানদের ঈমান-আকিদাহ-হরণের কাজে নেমে পড়েছে। কিন্তু আর কত? এবার বাংলার মুসলমানদের সচেতন হতে হবে।
পরিশেষে, আবারও বলছি: মসজিদের এইসব “সাধারণ ইমাম” শুধুই নামাজের ইমাম। আর এদের একমাত্র কাজ হলো: সাধারণ মুসল্লীদের নামাজ পড়ানো। তাই, এতগুলো মুসলমানের জিম্মাদার হয়ে সবার আগে তাকে একজন মানুষ, মুসলমান আর আশেকে রাসুল (সা.) হয়ে ইমামতির আসনে দাঁড়াতে হবে। কারণ, ইমামের ভুল হলে, নামাজ না হলে কারও নামাজ হবে না।
মহান আল্লাহ, আমাদের সহায় হোন।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

মন্তব্য ২০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (২০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৮

গিয়াস১ বলেছেন: ভালোজাতের সুন্নীআকিদাহসম্পন্ন ইমামের সংঙা কী ??? সমাজে দায়ীত্বশীল নাগরিক সৃষ্টিতে প্রথমে মা, পরিবার তারপর স্কুল মাদ্রাসা এবং মসজিদের ইমামদের অনেক অবদান আছে। আপনার লিখার কিছু অংশের সহমত পোষণ করলেও পুরো লিখাটা নিরপেক্ষ নয়।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৮

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: দেখুন ভাই, নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গী নিয়েই লিখতে চেষ্টা করেছি।
আর ‘ভালোজাতের সুন্নীআকিদাহসম্পন্ন ইমাম’ হচ্ছেন তাঁরা---যাঁরা কখনও মসজিদে রাজনৈতিক আলোচনা করে না। এবং দেশের কৃষ্টি-সংস্কৃতি ইত্যাদি নিয়ে আজেবাজে কথা বলেন না।
মসজিদের ইমামদের অবদান অবশ্যই আছে। কিন্তু তাই বলে, যারা কোনো দলের হয়ে দেশের ও দশের অহেতুক সমালোচনা করে তাদের কোনো অবদান নেই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২১

মহা সমন্বয় বলেছেন: “মা, আমি তো এখন ছুটিতে! আমি ছুটিতে আছি, মা!” LOL

আর ইমামরা তো হারাম খায় যে কারণে তাদের পেট মোটা তাদের পেটের ভিতরে রয়েছে সাপ আর বিচ্ছু।

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৫৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সহমতপ্রকাশের জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।
আর সঙ্গে রইলো সদ্যোফোটা গোলাপের শুভেচ্ছা।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: সঠিক পর্যবেক্ষন।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সহমত-প্রকাশের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর সেইসঙ্গে রইলো তাজা-ফুলের একরাশ শুভেচ্ছা।

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৩৮

প্লাবন২০০৩ বলেছেন: সমাধানটা কি হতে পারে? সে বিষয়ে কোন মত দিলেন না যে?

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সমাধানটা আগামী লেখায় পাবেন। মসজিদবিষয়ক আরও কয়টি লেখা প্রকাশ করবো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৫| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৪

মনসুর-উল-হাকিম বলেছেন: মাশাআল্লাহ, সুন্দর লিখেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, জাজাকাল্লাহু খাইরান। শুভেচ্ছান্তে ধন্যবাদ।

মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ইমামরা ভালো হলে সমাজের মুসলমানরাও ভালো হবে। আর দেশটাও ভালো হবে। আর ভ্রান্ত-মুসলমানদের মধ্যে যে জঙ্গীবাদী ভাবনা আছে তা-ও দূর হবে।
মহান আল্লাহ, আমাদের সহায় হোন।

৬| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৯

হাইড্রোক্লোরাইড এসিড বলেছেন: অসাধারণ তথ্য প্রকাশ করেছেন ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সহমত-প্রকাশের জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
আসল সত্য হলো:
ইমামরা ভালো হলে সমাজের মুসলমানরাও ভালো হবে। আর দেশটাও ভালো হবে। আর ভ্রান্ত-মুসলমানদের মধ্যে যে জঙ্গীবাদী ভাবনা আছে তা-ও দূর হবে।
আপনার জন্য রইলো একরাশ ফুলের শুভেচ্ছা।

৭| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৯

শাশ্বত স্বপন বলেছেন: ভাই, আপনার সাথে আগে কোলাকুলি কইরা লই। যে কথা অামি লিখতে সাহস করি নাই, আপনি করেছেন, ১০০% সত্য কথা বলেছেন। যে যার মত করে ধর্ম করে। যে গণতন্ত্রই মানে না, ধারন করে না, সেই বেশি বেশি গনতন্ত্রের কথা বলে। যে দুর্নীতিবাজ সেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে বেশি বলে, যে ঘুষ বেশি খায়, সেই ঘুষের সমালোচনা বেশি করে। আর মসজিদ-মন্দির ১০০%ই চোর-বাটপার-ঘুষখোর-করবাকি বাজাদের টাকায় গড়ে উঠে। অাপনারে সালাম, লেখাটা প্রিয়তে নিলাম।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকে। আপনি লেখাটা প্রিয়-তালিকাভুক্ত করে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আব্দ্ধ করেছেন।
দেশ, মানুষ ও মানবতার জন্য এটি লিখেছি। মসজিদগুলো একশ্রেণীর ইমামের দখলে। আর এরা পবিত্র ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে। কিন্তু আর কত?
আপনার জন্য রইলো সদ্যোফোটা শতগোলাপের শুভেচ্ছা।

৮| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৯

সাধারন বাঙালী বলেছেন: ভাই এসব আমরা সবাই জানি। এসব মুখশধারি শয়তানদের প্রতিহত করার ক্ষমতা আমজনতার নাই কারণ ক্ষমতা ওদের সাথে।ওদের খৃনা করা ছাড়া আমাদের আর কি করার আছে। আপনকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৪৯

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ওদের বিরুদ্ধে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সজাগ হতে হবে।
আর ওদের বেফাঁস-কথার বিরুদ্ধে মসজিদে-মসজিদে কমিটিগঠন করতে হবে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৯| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০২

সাধারন বাঙালী বলেছেন: ভাই ধর্মপ্রাণ মুসলমান কারা সবাইতো দেখি প্রয়োজন হলে বেশধরে

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভাই,
যারা ধর্মপ্রাণ-মুসলমান তারা কখনও ভণ্ড হয় না। তারা নীরবে ধর্মসাধনা করে যান। আর তারা দেশ-মানুষ-মানবতাকে ভালোবাসেন। আর সকল ধর্মের মানুষ তার কাছে নিরাপদ। এরা নীরব-সাধক। আর খুব ভদ্র। এরা কাউকে খামাখা নাস্তিক-মুরতাদ বলেন না। আর মহান আল্লাহ মধ্যপন্থীদের ভালোবাসেন।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।

১০| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৩৫

হারুনুর রশিদ২৪৬৮ বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন। তবে,আশেকে রাসূল (স.) হতে হবে।
চর্মোনাই না দেওয়ানবাগি স্টাইল? একটু পরিষ্কার করেন ভাই...

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:১৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই আপনাকে।
আসলে, কাউকে চরমোনাইবাদী বা দেওয়ানবাগী হওয়ার কোনো প্রয়োজন নাই। এখানে, আশেকে রাসুল (সাঃ) বলতে বুঝানো হয়েছে: যারা লোকদেখানো ধার্মিক নয়, আপনমনে মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ভালোবেসে নিজের জীবন গড়বে। আর তিনি কোনো প্রকার ভণ্ড হবেন না। যেমন: একজন হজরত শাহজালাল, শাহপরান, শাহমখদুম রহঃ প্রমুখ। এরা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মপ্রচার করেছেন। সমাজের বা মানুষের কোনো ক্ষতি করেননি।
আর এইসব ইমাম তার যোগ্যতা ও ওজনের চেয়ে বেশি কথা বলে থাকে। এরা ফিতনা-ফাসাদসৃষ্টিকারী।
আপনাকে আবারও অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.