![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।
গল্প:
ঝরা ফুলের কান্না
সাইয়িদ রফিকুল হক
দামি গাড়িটা এসে আগের মতো আজও দাঁড়ালো গলির মাথায়। এখন সন্ধ্যা হবে-হবে-ভাব! আগেও সবসময় সন্ধ্যার সামান্য আগে কিংবা পরে গাড়িটা আসতো।
মাঝে-মাঝে গাড়িটা এসে এভাবেই দাঁড়াতো। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো। তারপর এগারো-তলার নন্দিনী রাজকীয় ভঙ্গিতে লিফটে চড়ে নিচে নেমে তাতে চড়ে বসতো।
সে বসামাত্রই গাড়িটা ছুটতে থাকতো। তারপর রাজকুমারের সঙ্গে হারিয়ে যেত নন্দিনী!
রাতশেষে সকালে আবার তাকে নামিয়ে দিয়ে যেত গাড়িটা। ড্রাইভার ছেলেটি খুব বিশ্বস্ত। সে ঠিকঠাকমতো তাকে পৌঁছে দিতো। মাঝে-মাঝে গাড়িতে রাজকুমারও থাকতো।
আজও রাজকুমার ভিতরে বসে রয়েছে। তার নির্দেশে ড্রাইভার কয়েকবার হর্ন বাজালো। কিন্তু নন্দিনী আজ নামছে না কেন!
শেষে ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে তাকে ডাকতে গেল।
নন্দিনী জানালার পাশে দাঁড়িয়ে পর্দাটা একটুখানি ফাঁক করে সবকিছু দেখছিল। আজ সে কোথাও যাবে না। শুধু আজ নয়, আর কোনোদিন সে এভাবে কারও রাজকীয় অতিথি হবে না। এই তার স্থির সিদ্ধান্ত আর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। এই রাজকুমারের বদৌলতে তার একটা ফ্ল্যাট হয়েছে, ব্যাংকেও কিছু টাকা জমেছে, বড়-বড় বাংলোতে আর ফাইভ-স্টার হোটেলে রাত-কাটানোর মতো বিরাট অভিজ্ঞতাও হয়েছে। তার শরীরটাও এখন দেখতে হয়েছে বিবাহিতা রমণীর মতোই। আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার ভিতরে একটি মানবশিশুর অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হতে পারে!
সে জানতো, রাজকুমার তাকে বিবাহ করবে না। তবুও এতদিন তার মনের এককোণে ছোট্ট একটা আশা জেগে ছিল! মানুষ যে আশা করে বসে থাকতে বড় ভালোবাসে! কিন্তু গতমাসে শহরের অভিজাত পরিবারের এক মেয়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে তার রাজকুমার। এখন তার আর-কোনো আশা নেই! আর মরাগাছে কখনো ফুল ফোটে না!
সে এখন ঝরা ফুল! আর ঝরা ফুলে কখনো পূজার কিংবা প্রেমের মালা গাঁথা হয় না!
ড্রাইভার দরজার পাশে দাঁড়িয়ে কলিংবেলটা চাপলো। একবার, দুইবার, তিনবার। বারবার চাপলো! কিন্তু দরজা না-খুলেই ভিতর থেকে নন্দিনী শুধু বললো, “তোমার সাহেবকে বলবে, আর কখনো যেন এখানে না-আসে। আর বলবে, তার ফুল ঝরে গেছে!”
ড্রাইভার তবুও অপেক্ষা করতে থাকে শেষ একটা আশায়। কিন্তু আশার বাগানে আর গোলাপ ফোটে না! শেষমেশ আরও কিছুক্ষণ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো সাড়াশব্দ না-পেয়ে সে নিচে নেমে যেতে থাকে।
একটু পরে গলির মোড় থেকে গাড়িটাও অদৃশ্য হয়ে যায়। আর আকর্ষিত হৃদয়বীণার তারও হয়তো ছিন্ন হয়ে গেল!
আর নন্দিনী বাসার ভিতরে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। শ্রাবণের অঝর ধারার মতো তার দুচোখ থেকে শুধু জল পড়তে লাগলো। সে জীবনে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল! কিন্তু আজ তার এ কী হয়ে গেল!
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
৩০/১২/২০২০
০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২০
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আপনার ভালোলাগায় আনন্দিত।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা নিরন্তর।
আর মদীয় ব্লগে স্বাগতম।
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন:
নন্দিনীরা এভাবে ফুল হয়, ঝড়ে যায়
স্বপ্নরা অধরাই রয়ে যায়
তবু্ও আবার,
নতুন নন্দিনীরা খোঁজে নতুন রাজকুমার!!!
গল্পে +++
০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৮
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সুন্দর বলেছেন।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
আর শুভেচ্ছা অগণিত।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
অভাবের পৃথিবীতে সব ইচ্ছা পুরণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই
০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৭
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: কথা সত্য। পৃথিবীতে সব আশা পূর্ণ হয় না।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
৪| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১০
আমি মিয়াবাড়ির ছেলে বলেছেন: নন্দিনীরা কেন যে ভুল করে!
গল্পে ভালোলাগা রইলো।
০৩ রা জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:০১
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভুল করে। তাইতে এমন গল্প হয়!
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা।
৫| ০১ লা জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১:২৯
রাজীব নুর বলেছেন: নন্দিনীর জন্য ভালোবাসা।
০২ রা জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫২
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপনাকে।
অশেষ ধন্যবাদসহ শুভকামনা রইলো।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৪০
মেহেদি_হাসান. বলেছেন: গল্প ভালই লেগেছে তবে লেখার ধরন সুন্দর।