![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ পৃষ্ঠাটির অপেক্ষায়
দারিদ্র্যতা হলো একটি বিশেষ আর্থসামাজিক অবস্থার নাম। এ অবস্থার সৃষ্টি হয় তখন, যখন সমাজে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবির্ভাব ঘটে। শত মুখে এদেশের উন্নয়নশীলতার কথা শুনলেও অন্তরে ঠাই দেয়ার মতো আত্নবিশ্বাস হয়ে ওঠেনি যে, আমার সোনার বাংলা উন্নয়নের এক মহারাজ্য।
সম-সাময়িক বিশ্বে দারিদ্র্য একটি বহুল আলোচিত বিষয় যা মানবতার প্রতি একটি বড় অভিশাপ। স্ব-চোখে দেখা এই অভিশাপের গল্প বলছি, ফুটপাতের পাশে শরীফ নামের ৭-৮ বছর বয়সী পথ শিশুর গল্প এটি। প্রায়’ই সিলেটের জিন্দাবাজার মোড়ে দেখা যায়। তীব্র শীতেও ছেড়া একটি পুরনো শার্ট আর হাফ প্যান্ট পড়ে আছে। ১০’ই জানুয়ারি প্রায় সন্ধ্যা পরবর্তী সময়ে এক ভদ্রলোকের কাছে দুই টাকার ভিক্ষার জন্য আবদার করে। লোকটি বেশ শীতের ভয়ে শীত উদ্যাপনে ভারি জামা-কাপড় পড়েছেন। কিন্তু এ শরীফ নামের ছেলেটি যখন দুই টাকা চেয়েছিল না দিয়ে জোড়ে ধাক্কা দিয়ে, ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। আমি পাশেই দাড়িয়ে ছিলাম, বন্ধুর জন্য অপেক্ষায়। ঈশারায় ডেকে নিয়ে ৫ টাকার একটা কয়েন দিয়ে বললাম, নাম কি রে তোর? উত্তরে বলল, শরীফ। আর কিছু বলে নি, অন্য কারও খুঁজে দারিদ্র্যের অভাব পূরণে শীতের শত প্রকোপ উপেক্ষা করে জীবিকার সন্ধ্যান করছে। সত্যিই মানুষ কত বিচিত্র।
আধুনিক মানবতা বিকাশে দারিদ্র একটি মারাত্নক অন্তরায়। আর বাংলাদেশের অনুন্নয়নের একমাত্র অন্যতম কারণ হলো দারিদ্র্যতা। বস্তুত দারিদ্র ব্যাপারটি একান্তই আপেক্ষিক। কেননা যে কেউ অন্য কারও তুলনায় দারিদ্র্য বা ধনী হতে পারে। আমরা সাধারণত বলি, শরীফের মতো পরিবারের যে লোকগুলো মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে অক্ষম তারাই দারিদ্র্য। দারিদ্রের কোন সংজ্ঞা হয়তো নেই। ইংরেজীতে একটি কথা আছে “A country is poor, because it is poor” মানুষে মানুষে তারতম্য আছে। সমাজে কথিত এসব ভদ্র লোকদের মধ্যে তারতম্যের জন্যই অভাব-অনটনের সীমা থাকে না। তবে, শরীফের মতো মানুষদের দেখলে ষ্পষ্টত বুঝা যায়, “দারিদ্র্য মানে মৌলিক সামর্থ্যের অভাব” অর্থাৎ মানুষ যখন তার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রভৃতির অভাববোধ করে তখন সে দারিদ্র্যের আওতায় পড়ে। ধনী ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই নিজেদের দারিদ্র্যতাকে দূর করে ফেলেছে। কিন্তু সমগ্র মানবজাতিকে দারিদ্র্যতা মুক্ত করার প্রচেষ্টা গুলো সব-সময়ই ব্যর্থ হয়েছে। কেন? কারণ ধনী ব্যক্তিরা সাধারণত চায় না যে, কেউ বা কোনো কিছু তাদের সম্পদে ও পদমর্যাদায় হস্তক্ষেপ করুক।
প্রাচীন ইসরায়েলের রাজা শলোমন লিখেছিলেন: “দেখ, উপদ্রুত লোকদের অশ্রুপাত হইতেছে কিন্তু তাহাদের সান্ত্বনাকারী লোকদের কেহ নাই, উপদ্রব্য লোকদের হস্তে বল আছে”। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, একদিকে যখন অল্প কিছু দেশ বাণিজ্যে ও শিল্প দ্বারা প্রচুর সম্পদ সংগ্রহ করেছিল, তখন অন্যদিকে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি গুরুত্বের সঙ্গে দারিদ্র্যতার প্রতি মনোযোগ দিয়েছিল। পৃথিবীর সম্পদ গুলোকে কেউ কি আর সমান ভাবে বন্টন করতে পারে? কেউ কেউ চিন্তা করেছিল যে, সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ শ্রেণীবৈষম্যহীন এমন এক আন্তর্জাতিক সমাজ নিয়ে আসতে পারবে যাদের মধ্যে সমান ভাবে সম্পদ বন্টন করা হবে। কিছু ধনী দেশ সমাজতন্ত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করেছিল যে, সমস্ত নাগরিকের “জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত” যত্ন নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিল। পক্ষান্তরে, এ সমাজ ব্যবস্থায় উচিত শ্রম দিয়ে কাজ করেও সঠিক সময়ে বেতন পাওয়া যায় না। দারিদ্র্যতা মোচন হবে কি দিয়ে? চরম দারিদ্র্যতা তখনই দেখা দেয় যখন দেশগুলো, সরকারগুলো ও ব্যক্তি বিশেষরা কেবল নিজের স্বার্থকে তুলে ধরে ও সেটাকে বজায় রাখার জন্য কাজ করে।
উদাহরণস্বরূপ, ধনী দেশের সরকারগুলো পৃথিবী ব্যাপী দারিদ্র্যতাকে দূর করার বিষয়টাকে ততটা প্রাধান্য দেয় না। কারণ তারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে থাকে এবং তারা ভোটারদের খুশি করতে চায়। তাই তারা দারিদ্র দেশগুলোর কৃষকদের ধনী দেশগুলোতে তাদের ফসল বিক্রি করতে বাধা দেয়। যাতে ধনী দেশগুলোর কৃষকরা তাদের ব্যবসা না হারায়।
ষ্পষ্টতই, দারিদ্রতা লোকদের ও সরকারের নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করার প্রবণতা হল মানুষের নিজেদের সমস্যা তৈরি করা। বাইবেল লেখন শলোমন বলেছিলেন- “একজন অন্যের উপরে তাহার অমঙ্গলার্থে কর্তৃত্ব করে”। তাহলে কি দারিদ্রতা দূর হওয়ার কোন প্রত্যাশা রয়েছে? কোনো সরকার কি এই মনুষ্য প্রবৃত্তিকে পাল্টাতে পারবে? জানি না কার দ্বারা পরিবর্তিত হবে “আমার সোনার বাংলা” তবে শরীফের মতো পথ শিশু বালকদের জন্য সমাজের সর্বজন স্বীকৃত সুশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। শীত উদযাপনে এদের মতো পথ শিশুদের ধাক্কা দিয়ে সড়িয়ে না দিয়ে স্বল্প কিছু দিয়ে সাহায্য করুন। এদের মুখে এক চিলতে হাসির জন্য কাজ করুন। আপনারা ভারি মোলায়েম কাপড় পড়ে শীত উদযাপন করতে পারবেন তবে, এদের কি শীত উদযাপনের অধিকার টুকু নাই। আসুন দল,মত, শ্রেণী-বর্ণ নির্বিশেষে এদের শীত উদ্যাপনে সহায়তা করি।
লেখক: শিব্বির আহমদ
শিক্ষার্থী
ইতিহাস বিভাগ (তয় বর্ষ)
এম.সি কলেজ, সিলেট।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪
তানজীম সাদিদ বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৮
বিদেশে কামলা খাটি বলেছেন: মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা দেয়ার নামে চলছে হরিলুট আর সরকারী টাকার শ্রাদ্ধ। সরকারী টাকা যে কত সস্তা তা এখানে একবার না গেলে কেউ বুঝতে পারবে না। তাদের দেশের প্রতি দরদ দেখে আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম।
প্রায় বছর দুয়েক আগে অনেক ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রবাসী জনগণকে আরো বেশী করে পাসপোর্ট সেবা দেয়ার আব্দার করে দূতাবাসে খোলায় হয় পৃথক পাসপোর্ট বিভাগ। সেখানে বরাদ্দ করা হয় প্রায় ৩০ কোটি টাকা। দূতাবাসে পর্যাপ্ত জনবল থাকার পরও পাসপোর্ট বিভাগে ঢাকা থেকে আনা হয় প্রশাসন ক্যাডার থেকে এক জন সিনিয়ার সহকারী সচিব যিনি কিনা এখানে প্রথম সচিব নামে পরিচিত। সেই সাথে ঢাকা থেকে পাঠানো হয় আরো চার জন পদস্থ কর্মচারী। ফলে দূতাবাসে অতিরিক্তি জন বল হিসাবে যোগ হয় আরো ৫ জন। সরকারের খরচ বেড়ে যায় কোটি কোটি টাকা।
এছাড়া ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে প্রায় প্রতি মাসেই কর্মকর্তারা নানা ছল ছুতোয় মালয়েশিয়া সফর করছেন। বিদেশ সফরের সময় কর্মকর্তারা নিয়মিত বেতন ভাতার বাইরেও প্রতিদিন প্রায় ৩০০ মার্কিন ডলার করে ভাতা নেন সরকারের কোষাগার থেকে। ফলে শ্বেতহস্তী পোষতে সরকারকে গুণতে হচ্ছে কোটি কোটি টাকা।
জানা গেছে, আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসের বড় কর্তারাই নন, প্রায় সময়ই সেখান থেকে ১০/১৫ জন কর্মচারী বিশেষ সেবা দেয়ার নাম করে মালয়েশিয়া সফর করেন। প্রতিবার সফরে তারা ১ মাস বা তার চেয়েও বেশী সময় কাটান। ফলে তাদের পেছনে নিয়মিত বেতন ভাতা ছাড়াও ডলারে ভাতা দিতে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে।
চলতি মাসে ঢাকার আগারগাঁও থেকে সেবার দেয়ার নাম করে আবার পাঠানো হয়েছে ২৫ জন কর্মচারী আর ২ জন কর্মকর্তা।তারা নাকি ২ মাস ধরে প্রবাসী জনগণকে সেবা প্রদান করবে।
এদিকে তারা পাসপোর্ট অফিসে সেবা দেয়ার নাম করে রাষ্ট্রের টাকার শ্রাদ্ধ করে চলেছেন। কারণ এই মুহূর্তে প্রায় ৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়মিত বেতন ভাতা দেয়া ছাড়াও তাদেরকে প্রতিদিন জন প্রতি ২/৩ শত মার্কিন ডলার করে বিদেশ ভাতা দিতে হচ্ছে। যা আসছে গরীব দেশের গরীব মানুষের জন্য বরাদ্দ করা বাজেট থেকে। এর বিনিময়ে সাধারণ মানুষ কি পাবে। লাভের মধ্যে লাভ হবে এই সব কর্মকর্তা কর্মচারী সরকারী টাকায় বিদেশে ঘুরবে আর শপিং করে লাগেজ ভর্তি করবে। খুব্ই আনন্দের বিষয়।
সেবা দেয়ার নাম করে এতো মানুষ এক সাথে মালয়েশিয়াতে আসার কোন রেকর্ড নেই বলে জানা গেছে। কারণ দূতাবাসে এক সাথে এতো গুলো মানুষ কাজ করার মতো কোন জায়গা, মেশিন বা অবকাঠামোগত কোন সুযোগই নেই।
এ ব্যাপারে ভালো জানেন এমন এক জন সাবেক সরকারী কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে জানা গেছে যে, পৃথিবীর অনেক দেশের দূতাবাসে মোট স্টাফ সংখ্যাএ ৩০ জন হয় না।অথচ মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের পাসপোর্ট অফিসে জনগণের টাকার শ্রা্দ্ধ আর হরিলুটের জন্য নানান রাজনৈতিক তদবির করে তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে যে অফিসে থেকে পাঠানো হয়েছে সেই অফিসের কাজ কর্ম কি করে চলে এটাও একটা বিরাট প্রশ্ন। কারণ কোন একটি অফিস থেকে এক সাথে ২৫/৩০ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী ২ মাসের জন্য বিদেশে চলে গেলে সেই অফিসটি কি ভাবে চলে।
এই লুটপাট আর সরকারী টাকার শ্রাদ্ধ দেখার মতো কোন লোক নেই বাংলাদেশে?
৩| ১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৮
মাহিরাহি বলেছেন: শিশুরা নিষ্পাপ।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৫
তানজীম সাদিদ বলেছেন: জ্বী! সুশীল ছদ্মবেশী তাই বুঝতে নারাজ।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৫:৫১
এস এম সারোয়ার বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটা ।