নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অলস বিড়ালের মস্তিস্ক

শূন্য সময়

খুবই অলস...প্রচন্ড রকমের ঘুম ও বিশ্রাম প্রিয়......

শূন্য সময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেডরুম আর বাংলা ছবি

১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:২৭

কিছু কিছু মুক্তির অপেক্ষায় থাকা চলচিত্রের ট্রেইলার দেখে খুব আশাবাদী হচ্ছি। অবশেষে আমাদের চলচিত্র 'আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না' থেকে পুরোপুরো বের হয়ে যাচ্ছে, এবং এর মধ্যেই দ্বিতীয়ধাপে চলে গিয়েছে।

এবং এখন যাচ্ছে বাংলা ছবির একটা ট্রাঞ্জেকশন প্রিয়ড। এর মাঝে ট্রেন্ড যা আত্তস্থ করে নেবে, ধরে নেওয়া যায় অন্তত আগামী দশক এর একটা ধারা থাকবে। এবং সেই জন্যই এই সময়টা খুবই আশার, স্পর্শকাতর এবং ভয়ের। মানব বাচ্চা যেমন তিন বছর বয়স পর্যন্ত আশপাশ কে নিজের মধ্যে নিয়ে নেয় আর বেড়ে ওঠে, বাংলা চলচিত্রও তেমন একটা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এইটা একটা রেভুলেশনই বলা যায়। তবে এই রেভুলেশন থেকে অনেক ছবি কিন্তু পরে খুজে পাওয়া যায় না, বা আর আলোচনায় থাকেনা। এর বড় দোষ আমাদের মিডিয়ার, বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়া। বিনোদন পাতার বেশিরভাগ জুড়েই থাকে বলিউড। কেন? তৌকির কেন জয়যাত্রা, রুপকথার মতো ছবি বানিয়ে থেমে গেলো? মনপুরার পর আরেকটি ছবি পেতে আর কত অপেক্ষা? কেন আর দীপু নাম্বার থ্রী হয়না? কারন সস্তা বানিজ্যিক মুভির চাহিদা অনেক বাড়িয়ে তুলেছি আমরা। এতে বড় একটা ভুমিকা রেখেছে আমাদের মিডিয়া।

মোর্শেদ স্যারকে একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন শিশুতোষ চলচিত্র হয়না? আমি শিওর যদি দীপু নাম্বার টু এর মতো আরেকটা ছবি হলে আসে তাহলে ছেলেপেলেরা পাশের হলে যদি ফাইন্ডিং নিমো ২ ও দেখায় তারপরেও সেখানে যাবেনা। তার উত্তর সোজা ছিলো, টাকা নেই। তখন মাথায় আসলো, আহা কতই না ভালো হতো অনন্ত যদি বস্তা পচা ছবি গুলোর পেছনা টাকা না ফেলে গুনীদের হাতে তুলে দিতো। নায়ক না হয়েও যে চলচিত্রে নাম কুড়ানো যায়- এটা তাকে বোঝানোর মতো কেউ চলচিত্র অঙ্গনে নেই?

এই যে আমরা বি-গ্রেডের মুভি গুলো দিয়ে একটা সস্তা ট্রেন্ড তৈরি করে ফেলছি, সেটার খুব খারাপ প্রভাব যে ভবিষ্যতে থাকবেনা এটা কেউ প্রমাণ করতে পারবেনা। খুব খারাপ একটা প্রভাব পড়বে নিশ্চিত ভাবেই।

এখন বলবেন, দর্শক চায় মারমার কাটকাট ছবি দেখতে। মিথ্যে কথা। বাংলাদেশের যত মানুষ এখন হলে গিয়ে ছবি দেখে তাদের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগই যে সুস্থ রুচির মানুষ তা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। কই, টেলিভিশন, পিপড়াবিদ্যা,শুন্তে কি পাও- এগুলে তো মারমার কাটকাট নেই। প্রতিটি শো তে হল ভর্তি থাকছেনা? আর চোরাবালির মতো ছবি বানাতে কে নিষেধ করেছে?

ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা যা চাচ্ছি তা আমাদের দেখানো হচ্ছে না, তারা যা চাচ্ছে তা আমরা নিজের অজান্তে দেখতে বাধ্য হচ্ছি।

লেখাটা লিখতে বসেছিলাম যা নিয়ে তা থেকে সরে গেলাম। ব্যাপারটা হলো বেড্রুম কে প্রোমোট করা নিয়ে। এর বিপক্ষে কথা বললেই যেটা শুনতে হয় তা হলো, বাস্তবতা দেখালেই আপনাদের চুল্কানি হয়। উহু, হয়না। আমি/আমরা চাই না, ঘরের সবাই মিলে একটা ছবি দেখতে বসবো আর মাঝে এসে অস্বস্তি তে পড়তে হবে। বাস্তবতা দেখানোর জন্য চাদরের নিচে অর্ধউলংগ হয়ে গড়াগড়ি করার চিত্র দেখাতে হয় না। তৌকির আহমেদ পতিতাদের নিয়ে পুরো একটা ছবি বানিয়েছে অসাধারন ভাবে বিছানাইয় গড়াগড়ির কোনো দৃশ্য না দেখিয়েই। আপনি যে বিষয়ে সচেতনতা বা যা-ই দেখানোর জন্য ওই দৃষ্য দেখাচ্ছে, আপনার দেখানো সেই দৃশ্য কিভাবে ওই সমস্য দূর করবে -খুব জানতে ইচ্ছে করে। আর ব্যাপারটা যদি হয় শুধুই বিনোদন, তাহলে 'দেশী' ব্যাপার-স্যাপার দেখার জন্য এখন অনেক মাধ্যম আছে, আর কলকাতার 'আর্ট' ফিল্ম গুলোতো আছেই, যেখানে সমাজের চরম বাস্তবতা দেখানো হয়, যেখানে নারী অধিকার দেখানো হয়। ওদের সমাজের দিকে একবার তাকাবেন দয়া করে? আমাদের যে সুস্থ একটা সমাজ ব্যাবস্থা আছে তা কিভাবে আপনাকে আধুনিক হওয়ার পথে বাধা দেয় একটু ব্যাখ্যা করবেন?

যেই অশ্লীলতা কে বাদ দেওয়ার জন্য দেশের প্রায় সকল চলচিত্রকার, আর্টিস্ট রা উঠেপরে লেগেছিলো, কেন সেই অশ্লীলতাকেই আবার অন্যভাবে (কথিত ভদ্রভাবে) তুলে আনা হচ্ছে, প্রমোট করা হচ্ছে? যারা তা চাচ্ছেন, তাদের জন্য সুখের খবর- এইবার যদি এই ভদ্র আশ্লীলতা ঢুকে যায় তবে নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় পরের জেনারেশন একে বাদ দেওয়ার কোনো চেষ্টাই করবে না, কারণ তারা ধরেই নেবে এটাই আমাদের সংস্কৃতি।

খারাপ লাগছিল এক প্রেয় অভিনেত্রীর আসন্ন মুভির ট্রেইলার দেখে। বিছানায় বেশ গড়াগড়ি চলছে। ভালোই হলো ট্রেইলার দেখেছি, এখন এটা স্পষ্ট যে এটা 'ক্লাসিফাইড' ছবি। আমি হলে গিয়ে এই ক্লাসিফাইড ছবি দেখতে যাবো, আর আমার ছোট ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করবে, ক্লাসিফাইড ছবি কি? আমি কেন তোমার সাথে হলে যেতে পারবো না? এটা তো দেশীয় ছবি, হলিউডের না। আমি আমতা আমতা করে উত্তর দিবো,এটা বাংলা বড়দের ছবি। - এর ফলে আমাদের, আমাদের চলচিত্রের কি লাভ টা হলো? আমরা হলিউড হতে চাই? বলিউড হতে চাই? আমরা কেন আমরা হবো না? ইরানী চলচিত্রএ নিজের একটা ঢং আছে, কোরিয়ান চলচিত্রের আছে- আমাদের কেন নিজেদের একটা ধারা থাকবেনা? আর আমাদের ধারায় কখনোই বিছানায় গড়াগড়ি থাকে না। আপনি তো আপনার সংগীনীর ঠোটে চুমু খান না আপনার সন্তানের সামনে- এটাই আমাদের সমাজ, একটা সুস্থ সমাজ, যেখানে শালীনতা রক্ষা করেও আধুনিক হয়া যা, সমাজের বাস্তবতা কে দেখানো যায়।

'ব্লু ইজ দি ওয়ার্মেস্ট কালার' দিয়ে যেমন সমকামিতা কে দেখানো যায়, 'হাওয়াই' এর মতো একটা সুস্থ ছবি দিয়েও দেখানো যায়। পছন্দ আপনার। এমন জায়গা থেকে উদাহরণ দিলাম যেখানে ধরে নেওয়া হয় দেহই সব। এই জায়গায় যদি সম্ভব হয় তাহলে আমাদের নয় কেন?

যাদের হাতে এই সব কিছু নির্ভর করে, প্লীজ আমাদের বাঙ্গালী হতে দিন। বাঙ্গালী দেহ দিয়ে সব বিচার করে না, করতে চায় না। বাঙ্গালীর বিনোদন কে দেহ নির্ভর করে দেবেন না। আমরা অনেক দেশের পন্থী। অন্তত আমাদের চলচিত্র অঙ্গন কে 'বাঙ্গালী' রাখুন, যাতে করে চলচিত্র টা দেখলেই অন্যরা বুঝে এটা বাংলাদেশের মুভি, ইন্ডিয়ান মুভি ভেবে যাতে ভুল করে না বশে।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:১৬

সুমন কর বলেছেন: ভালো বলেছেন। সহমত।

২| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৮

মি. ফেসবুকিস্ট বলেছেন: ভালো বলেছেন.......

৩| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১:৪৬

শামীম সুজায়েত বলেছেন: সহজ কথা, সহজ উপলব্দি। সুন্দর একটি পোস্ট দিয়েছেন।

বাস্তবতা হলো সবকিছু এখন এত বেশী কমার্শিয়াল হয়ে গেছে যে বাণিজ্যিক ব্যাপারটা চিন্তা করে পরিচালকরা অধিকমাত্রায় যৌন শুরশুরি দিয়ে ফেলছেন। কিন্তু এখনও যারা হলমুখী হন, তারা যৌন শুরশুরি চাননা। ওগুলো ফুটপাতেও পাওয়া যায়।

পাউলি দামকে নিয়ে বাংলাদেশী পরিচালকের ঢালিউডে ছবি বানাচ্ছেন, এই খবর বেরিয়েছে কাগজে। পাউলি দামের "হেট স্টোরি" দেখা দর্শকদের অনেকেই হয়তো চরম উত্তেজনামাখা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছেন, যাক এবার দেশের মাটিতে দেখা যাবে ভারতীয় নায়িকার যৌন উত্তেজনা !
এ প্রসঙ্গে দু'দিন আগেও কথা হয় স্বত্তা ছবির পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোলের সাথে। তিনি পরিস্কার জানালেন, ভাই, পরিচ্ছন্ন একটি ছবি বানাচ্ছি। ওই দিন কল্লোল তার ফেসবুক স্টাটাসে লিখেছিল, " কথা দিলাম, পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার মত পরিচ্ছন্ন ছবি হবে সত্তা।"

আমরাও তাই চাই। হলমুখী হোক মানুষ। বাংলাদেশের সিনেমাগুলো হয়ে উঠুক সবাইকে নিয়ে দেখার মত ছবি।

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:৫০

শূন্য সময় বলেছেন: পাউলি দামের "হেট স্টোরি" দেখা দর্শকদের অনেকেই হয়তো চরম উত্তেজনামাখা আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষায় আছেন, যাক এবার দেশের মাটিতে দেখা যাবে ভারতীয় নায়িকার যৌন উত্তেজনা !
--- এই ব্যাপার গুলোই ভয় ধরায়

৪| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:০০

পড়শী বলেছেন: খুব সুন্দর ভাবনাগুলো।

৫| ১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪

মুহিব জিহাদ বলেছেন: সহজ ও সুন্দর ভাষায় সুন্দর উপলব্ধি, তবে ভয়ের কারন নাই হয় উপভোগ নাহয় এবোয়েড করতে হবে। কিছু করার নাই +++

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫২

শূন্য সময় বলেছেন: এই ব্যাপারগুলো এভোয়েড করার মতো ক্ষমতা আআমদের নাই

৬| ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৯:৪৪

কলমের কালি শেষ বলেছেন: অনেক ভালো বলেছেন ।+++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.