নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সবচাইতে বড় পরিচয় আমি মানুষ আপাতত এর বেশি বলতে জানি।

তৌকির আজাদ

জানলে লিখবো।

তৌকির আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রথম দৃশ্য দুই (গন্তব্য অনেকদূর)

০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৩৮

জয়ন্তীর সাথে নজরুলের বেশ কিছুদিন ধরেই কথা হচ্ছে না। জয়ন্তী কেন বা কি কারণে নজরুল কে দেখেও দেখছে না সেটা অনেক অঙ্ক কশে ও নজরুল হিসেব না মিলাতে পেরে ঠিক করেছে এবার চিঠি লিখবে জয়ন্তী বরাবর।

কিন্তু এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বেড়ে ওঠা নজরুল চিঠি লিখবে তা নিয়ে অনেকটা ইতস্তত ই বোধ করছে। তবে একটা বিষয় নিয়ে তার তেমন কোন চিন্তা নেই। অন্তিকা নজরুলের বেশ ভাল বন্ধু, সময়ে অসময়ে নজরুল ওর সাথে জয়ন্তীর বিষয়ে অনেক কথা বলে - সেটা কে রিতিমতো গল্পও বলা চলে। নজরুলের মাঝেমধ্যে অবাক ই লাগে অন্তিকা কে, মেয়েটা অপলক দৃষ্টিতে কিঞ্চিৎ বিরক্ত না হয়ে খুব মনোযোগের সাথে নজরুল-জয়ন্তী গল্প শোনে। জয়ন্তী আর অন্তিকা সমবয়সী না হলেও তাদের দুজনার বয়স কাছাকাছি। একই বাড়িতেই থাকে দুইজন - প্রতি বিকেলেই ছাদে ওঠে ওরা। অন্তিকা কে চিঠি দিলে ও জয়ন্তী পর্যন্ত সেটা পৌঁছে দিতে মানা করবে না এই বিষয়ে নজরুল নিশ্চিত।

গেল কদিন নজরুলের জীবনে অনেক কিছু ঘটেছে সেগুলো জয়ন্তীকে না বলা পর্যন্ত মন ভাল হচ্ছে না নজরুলের।

জয়ন্তীকে লেখা নজরুলের চিঠিটা অনেকটা এরকম,

জয়ন্তী জনো,

রাতের ঘড়িতে তখন বাজে প্রায় একটার মতন। বর্ষার শুরুর দিককার সময়। ইদানীং প্রতি বিকেলের শেষ ভাগেই স্নিগ্ধ নীল আকাশ ঢেকে যায় ঝাপসা কাল মেঘে আর প্রকৃতি হারায় তাঁর স্বাবলম্বিতা। আজও টানা বৃষ্টি হয়েছে, কিছুক্ষণ আগেই বেকার হল বৃষ্টি। রিক্সা টা তখন টিএসসি থেকে শাহাবাগ মোড় হয়ে বাংলামোটরের কাছাকাছি - গন্তব্য অনেকদূর।

ভেজা রাস্তায় হেলোজিনের আলোতে কতশত টায়ারের চিহ্নের নীচে লুকিয়ে থাকা অগণিত গল্পগুলো উঁকি দিয়ে ওঠে ছবির মত করে। দেখে অবাক লাগে।

যাত্রাপথে চারপাশের সবকিছু কতটুকু উপভোগ করা সম্ভব সেটা নির্ভর করে যে বাহনে চড়ছি সেটার গতির উপর। আর গতি র কমবেশির উপর নির্ভর করে যে দৃশ্যপট কতটুকু পরিষ্কার হবে। সেটা যত পরিষ্কার হবে তত ফুটে উঠবে ঘুমন্ত শহরের লুকোনো অবয়ব।

যারা দেখা উপভোগ করতে পছন্দ করেন তারা বোধহয় স্বল্প গতির বাহন প্যানেলের ভোটার। আমি ও ওই পক্ষের - কারণ এই সময়ে দেখা মেলে অসচেতন সব চরিত্র ও বিষয়বস্তু গুলোর। ফুটপাতের পাশে এটিএম বুথের সিঁড়িতে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে একজন মধ্যবয়সী ছেলে, ভাঁজ করা দুপায়ের উপর একটা বাদামি স্কুল ব্যাগ। চোখে চোখ পরতেই দেখা হল আতঙ্কের সাথে।


এই ক্ষনিকের সম্পর্কের যে সামান্য আবেগের ভাব বিনিময় সেখানেও অবিশ্বাস। তাহলে কোথায় ভ্রাতৃত্ব, কোথায় ঐক্য, কোথায় সাম্য, কোথায় জোট, কোথায় দল, কোথায় পরিষদ? কোথায় আমরা আর আমাদের তথাকথিত নিরাপত্তা, আমাদের স্বাধীনতা।


কতটুকুই বা বুঝি আমরা একে অপরকে? বুঝি সবটুকই - শুধু করার আগ্রহ কম। দেখলাম, একটা চলন্ত লেগুনার পেছনে একজন পরতে পরতে উঠে দাঁড়ালেন। হয়ত এটাই নিয়ম। হয়ত জীবনের চাইতে সময়ের মূল্য বেশি।

হটাৎ মনে হল, রাজপথের কিন্তু কোন ছুটি নেই এবং সত্যিই কিন্তু তাই, তাই না?

এখন পান্থপথে - গন্তব্য অনেকদূর।

- আশা করি অন্তিকা তোমার হাতে আমার চিঠি পৌঁছে দিবে। ভাল থেকো, আসছি।


(গল্পের নাম উপন্যাস/তৌকির আজাদ) সকাল ০৭ঃ০২, ৩/৭/২০১৬।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২৪

চিন্তিত নিরন্তর বলেছেন: ভাল লাগল, চালিয়ে যান।

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:৪১

তৌকির আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.