নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি যাযাবর। নিজের কোন ঠিকানা নেই। শুধু কিছু মানুষের মনে নিজেকে দেখে বুঝি এখনো আছে আমার অস্তিত্ব।

বলার নেই কিছু।

টুম্পা মনি

আমি যাযাবর। আমার নিজের কোন ঠিকানা নেই। শুধু কিছু মানুষের মনবে নিজেকে দেখে বুঝি আমি হয়ত আছি। হয়ত আছে আমার অস্তিত্ব।

টুম্পা মনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ নিষিদ্ধ আঁধারে!

০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:১১



চারিদিকে ঝি ঝি পোকার এক ঘেয়ে ডাক। বাহিরে রাতের শুনশান নীরবতা! গ্রীষ্মের তপ্ত আবহাওয়ার সাথে যেন সুর মেলাচ্ছে গাছের পাতাগুলো। এক ফোঁটা বাতাশও নেই চারিদিকে! ভ্যাপসা গরমের জান হাসফাঁস করতে থাকে সালেহার। তবুও সে ধৈর্য ধরে তাকিয়ে থাকে কম্পিউটারের দিকে! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হয়ে পড়ে শঙ্কিত। মধ্যরাত! এখনো কোন খরিদদ্বার নেই! অথচ কিছু নগদ টাকা তার খুব জরুরী। ছেলে বাইজিদকে কথা দিয়েছে তার সামনের জন্মদিনে তাকে একটা ক্যামেরা কিনে দিবে। বড়ই লক্ষী ছেলে তার। কখনো কোন কিছুর জন্য বাহানা ধরে না। এবার শুধু মুখ ফুটে একটা ক্যামেরার কথা বলেছে! সে মা হয়ে এতটুকু আবদার পূরণ করবে না তাই কি হয়!



ছেলের কথা ভাবতেই মন ভালো হয়ে যায় সালেহার। ছেলে বাইজিদের বয়স এবারের জন্মদিনে চৌদ্দ পেরিয়ে পনেরোতে পড়বে। ঠোটের উপর হালকা পাতলা মোচ উঠেছে। তাই নিয়ে তার লজ্জার সীমা নেই! বয়ঃসন্ধি কালের উদ্ভট মনের ভাবনা আরো বেশি লাজুক করে তুলেছে তাকে। সে এখন ক্লাস নাইনে পড়ে। অথচ এখনো ক্লাসে মেয়েদের মুখের দিকে চেয়ে কখনো কথা বলতে সাহস করে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে আদায় করে। তাকে দেখে বৃদ্ধ ইমাম সাহেব সালেহাকে বলে,'' পোলা একটা সোনার টুকরা জন্ম দিছো সালেহা। বাপ মোরা পোলা! অথচ কি আদব লেহাজ। দেখা হইলেই সালাম দিবে। কোন বাজে অভ্যাসও নাই। কিন্তু পাড়ার অন্য পোলাগুলারে দেখো! আদব লেহাজ তো নাই ই! সবগুলা রাত হইলে গাঞ্জা, ইয়াবার আসর বসায়! কলিকাল বুঝছো সালেহা ! কলিকাল! কিয়ামত হইবার আর বেশি বাকি নাই! তাই খোদা এই সব দিন দেখাইতেছেন! তোমার পোলারেও দেইখা শুইনা রাইখো কইলাম। খারাপগো লগে মিশতে দিও না।'' জবাবে সালেহা শুধু মৃদু হাসে। ছেলের উপর অনেক বিশ্বাস তার! আর তার এই বিশ্বাস এমনি এমনি গড়ে উঠেনি। ছেলেটা তার বাপের মত হয়েছে। তাই এত বিশ্বাস। কোন অপরাধ তার সয় না! একদিন ক্লাস ফাঁকি দেয়ার অজুহাতে ক্লাসের স্যারকে মিথ্যে বলেছিল তার ডেঙ্গু হয়েছে। পরদিন সত্যি সত্যিই তার ডেঙ্গু হয়ে নাক মুখ দিয়ে অনর্গল রক্ত। সালেহা তড়িঘড়ি করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। টানা এক সপ্তাহ ভোগার পর সুস্থ হয় বাইজিদ। সেই থেকে বাইজিদ কখনো মিথ্যে বলে না। উঠতি বয়সী ছেলেপেলের মত কোন অহেতুক দুষ্টুমিতে নিজেকে জোড়ায় না। পাড়ায় ভালো ছেলে হিসেবে অনেক সুনাম আছে তার।



তার বাবা সোবাহান সাহেবও অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। তারও কোন অপরাধ সইত না। সৎ কর্মচারী হিসেবে অফিসে অনেক খ্যাতি ছিল। তার সমপর্যায়ের অফিসাররা ঘুস খেয়ে গাড়ি বাড়ি করে ফেললেও সে কোনদিন অসৎ উপায়ে টাকা কামায়নি। সে গর্ব করে সালেহাকে বলতো ,''জানো সালেহা আমাগো বংশ হইল পীরের বংশ। এই জন্য আমাগো কোন খারাপ কাজ সয় না। একটা মিথ্যাও কইতে পারি। সাথে সাথে আল্লাহ পাক শাস্তি দিয়া দেন। এমন ভাগ্য সবার হয় এমন হয় না। বুঝছো? এইটা সৌভাগ্যের লক্ষণ। দেখবা তোমার পোলাও বড় হইয়া অনেক সৎ হইব! অনেক নাম কামাইবো। এই আমি বইলা রাখলাম!''



তিনি ছেলের নাম বিশিষ্ট পীর বাইজিদ বোস্তামির নাম অনুযায়ী রেখেছেন বাইজিদ। তারপর খুশি মনে সালেহাকে বলেছেন,'' দেইখো সালেহা এই পোলাও একদিন বাইজিদবোস্তামীর মত তোমার জন্য পানির গ্লাস হাতে লইয়া দাঁড়ায় থাকবো। তোমারে অনেক সম্মান করব সালেহা। শুধু একটা অনুরোধ ওরে কোন দিন হারাম খাওয়াইয়ো না। হারাম খাইলে মানুষ আস্তে আস্তে অসৎ হইয়া যায়!''



স্বামীর এই কথাগুলোও আজো কানে বাজে সালেহার। অথচ সে স্বামী হারা হয়েছে আজ প্রায় এগারো বছর হল। কিন্তু মনে হয় এই সেই দিনের ঘটনা। বাড়ি আলা বাসা ভাড়ার জন্য খুব চাপ দিচ্ছিলো। চার মাসের ভাড়া জমা পড়েছে। মাস তিনেক আগে সোবাহান সাহেবের ছোট ভাই মোকলেস বিপদে পড়ে তাদের বাসায় উঠেছে। সোবাহান সাহেব বেতনের সব টাকাই কয়েক মাস ধরে তার হাতে তুলে দিয়েছেন। তাই এ মাসে এত টানাটানি! এদিকে বাড়ি আলাও কোন কিছু শুনতে নারাজ! সে রাগারাগি করে বলেছে আর দুইদিনের মধ্যে বাড়ি ভাড়া না দিলে তার বাড়ির আসবাব পত্র বিক্রি করে ভাড়া আদায় করবে। সোবাহান সাহেব পড়ে গেলেন মহাফাপ্পরে! তিনি এই প্রথম কোন এক ব্যক্তির কাছ থেকে ঘুস খেলেন! ঘুস তো তার অফিসের সবাই খায়। সে একদিন খেলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে? পরে না হয় টাকা হলে এই ঘুসের টাকার সমপরিমাণ সদকা দিয়ে দেবে। তাহলেই হল! কিন্তু এবারও অপরাধ তার সইল না। পরের দিন রোড এক্সিডেন্টে মারা যায় সোবাহান সাহেব!



বাইজিদের বয়স তখন চার বছর। সালেহা তাকে নিয়ে পড়ে যায় মহামুসিবতে। যেই ছোটভাইয়ের বিপদে সাহায্য করতে গিয়ে আজ তাদের এই দশা সেও তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। দুইমাস কোন রকম তাদের পরিবার চালানোর টাকা দিয়ে পরে মাসে পাঠায় একটি চিঠি

,''প্রিয় ভাবী,

সালাম নিও। আশা করি ভালো আছো। এই কথাগুলো তোমাকে ফোনে বলার সাহস হত না। তাই চিঠি লিখছি। আমাকে ভুল বুঝো না। পরসমাচার এই যে আমার ব্যবসা এখন খুব খারাপ যাচ্ছে। নিজেরই পেট চলে না তোমাদের আর কি দিব বলো? তাই আমার একটা পরামর্শ। আমার এলাকায় একটা ভালো এতিমখানা হয়েছে। এখানে বিদেশ থেকে সাহায্য দেয়। শুনেছি অনেক ভালো ভালো খাবারও দেয়। ফলমূল, মাছ ,মাংশ সবই দেয়। তুমি বাইজিদকে এখানে দিয়ে দাও। আর আমার হাতে একটা ভালো বিয়ের প্রস্তাব এসেছে। পাত্রের স্ত্রী মারা গেছে। বয়স যদিও একটু বেশি। কিন্তু আশা করি তুমি মানিয়ে নিতে পারবে। তুমিও তো যুবতি! কতদিন একা একা থাকবে?

ভুল কিছু বললে ক্ষমা করে দিও। ইতি মোকলেস।''



ঘৃণায় মুখ বাঁকায় সালেহা। তার চার বছরের সন্তানকে সে এতিম খানায় দিবে! বাইজিদের বাবা নেই তো কি হয়েছে! মা তো আছে! সেই চাকরী করে খাওয়াবে তার সন্তানকে। তবুও নিজের সুখের জন্য এতটুকু শিশুকে সে মা ছাড়া করবে না। তার ইচ্ছে হয় ফোন করে মোকলেসকে দুটো কথা শুনিয়ে দেয়। কিন্তু দরজার ঠকঠকানীতে চিন্তায় বাঁধা পড়ে! কে এল এমন সময়ে? সূর্য সবে ডুবে গিয়ে হালকা অন্ধকারে ডুবিয়ে দিয়েছে পৃথিবী। এই সামান্য আঁধারকেই আজকাল অসহ্য মনে হয়। চার বছরের বাইজিদকে নিয়ে এখন এই ফ্ল্যাটে একা থাকে সালেহা। আশে পাশের দুষ্টু হায়েনার দল সন্ধ্যা হলেই জানালা দিলে ঘরের ভিতর ঢিল ছুঁড়ে দেয়! সালেহা বাইজিদকে কোলে নিয়ে চুপ করে ঘরের ভিতর আলো নিভিয়ে বসে থাকে। বড় নিষ্ঠুর মনে হয় এই আঁধার! নিষিদ্ধ আঁধার!



কিন্তু আজ দরজায় কে? সালেহা ভিতর থেকে আওয়াজ দেয় ,''কে দরজা থাপড়ায়? কে ?'' ওপাশ থেকে বাড়ি আলার আওয়াজ ,''মা সালেহা আমি!'' সোবাহান সাহেবের মৃত্যুর পর সেই নিষ্ঠুর বাড়ি আলাই তাদের অনেক সাহায্য করে। এমন কি মাঝে মাঝে বাইজিদকে কোলে নিয়ে বাজারে গিয়ে চকলেট আইসক্রিমও কিনে দিয়েছে। সালেহাকে বলেছে ''মা কিছু লাগলে আমাকে বলো। আমি এনে দেবো। এতিমের সাহায্য করলে আল্লাহও খুশি হন!''



এভাবেই হয়ত অনেক সময় পরই হয় আপন আর আপন হয় পর। বাড়িআলা আর মোকলেসকে তুলনা করে ভাবে সালেহা। সে বাড়ি আলাকে এনে ড্রয়িং রুমে বসায়। কিন্তু বাড়িআলা আজ কেমন যেন উস্কখুস্কো করছে! সালহা শঙ্কিত হয়ে বলে ,''চাচাজি আপনার শরীর খারাপ?'' বাড়িআলার চোখে চোখ পড়তেই সালেহা দেখে বুনো দৃষ্টি! যেন চোখ দিয়েই গিলে খেতে চাচ্ছে তার সর্বাঙ্গ। সালেহা সতর্ক হবার আগেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হায়েনার মত!



কিছুক্ষণ পর ফ্লোরে পরে থাকে সালেহার রক্তাক্ত নিথর দেহ। বাড়ি আলা সালেহার দিকে এক দলা থুতু নিক্ষেপ করে বলে ,''হারামজাদী এই ঘটনা যদি কেউ জানতে পারে তাহলে তোকে জানে মেরে ফেলব!'' তারপর পকেট থেকে কিছু টাকা সালেহার দিকে ছুঁড়ে দিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। আজ বাড়িতে তার স্ত্রী, সন্তানেরা কেউ নেই। সেই সুযোগেরই সদব্যবহার করেছে সে!

এদিকে সালেহার গননবিদারী কান্না ইটের শক্ত থাম বিদীর্ণ করে পৌঁছায় না কোন মানুষের কানে! বাইজিদ শুধু ভয়ে রুমের এক পাশে বসে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছিল। সালেহার শরীর নিস্তেজ! এতটুকু শক্তি অবশিষ্ট নেই ছেলের কাছে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নিবে। স্বামী হারানোর বেদনার, সম্ভ্রম হারানোর বেদনা সব যেন এক সাথে জাপ্টে ধরে তাকে নির্জীব করে দিয়েছে! সারা রাত মরার মত ফ্লোরে পড়ে রয় সালেহা। সংজ্ঞাহীন হয়েছিল কিনা ঠিক বুঝতে পারে না।



সকালে বাইজিদের ডাকে চোখ মেলে তাকায় সে। ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ভয়, জ্বর সব মিলিয়ে আধমরা হয়ে আছে ছেলেটা! সালেহা রান্না ঘর থেকে বাসী ভাত ,তরকারী থেকে এনে কিছুটা খাওয়াতেই অনর্গল বমি! ছেলের অসুস্থতায় দিশাহীন হয়ে পড়ে সে! কার কাছে যাবে? কে সাহায্য করবে? এতিম মেয়ে সালেহা। জন্মের সময় মাকে হারিয়েছে। পরে সৎ মায়ের সংসারে বড় হয়েছে। কিছুদিন পর বাবাও মারা গেছেন। তারপর সৎ মায়ের লাথি জুতো সহ্য করে ঐ পরিবারেই মাটি কামড়ে পড়েছিল। সৎ মা তাকে তাড়াতাড়ি সোবাহান সাহেবের সাথে বিয়ে দিয়ে আপদবিদায় করেছেন। এখন আর ঐ বাড়িতে ফিরে যাবার কোন মুখ নেই। জগতসংসারে এত জায়গায় থাকলেও সালেহার জন্য এত স্থান যেন কোথাও নেই!



এদিকে বাইজিদের জ্বর বাড়ছে! তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে। ফার্মেসী থেকে নাপা সিরাপ এনে খাওয়ায় সালেহা। কিন্তু জ্বর কমার কোন নাম গন্ধ নেই! বেলা গড়ানোর সাথে সাথে জ্বরও যেন বাড়ে। আস্তে আস্তে শ্বাস কষ্ট শুরু হয় ছেলেটার। এদিকে সালেহার হাতে টাকা কড়ি কিছুই নেই! কি দিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে সে? সোফার কোণায় চোখ পড়ে তার। বাড়ি আলার ছুঁড়ে দেয়া টাকা! সালেহা তাই নিয়ে বাইজিদকে ডাক্তারদের দেখায়। নিউমোনিয়া হয়েছে ছেলেটার। হাসপাতালে কয়েকদিন ভর্তি রাখতে হবে! সালেহা সব টাকা খরচা করে ছেলের চিকিৎসা করায়। তিন দিন পর অবস্থা একটু ভালো হলে বাড়ি নিয়ে আসে। আর কিনে নিয়ে আসে কিছু পাউরুটি আর কলা। নিজেকে কেমন যেন পতিতা পতিতা মনে হয় তার! ঘিন ঘিন লাগে সব কিছু! যেই লোক তার সাথে এত নিষ্ঠুর আচরণ করেছে, তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তার সম্ভ্রম কেঁড়ে নিয়েছে তার টাকায় সে রুটি খাচ্ছে! পেট গুলিয়ে আসে তার! কিন্তু নিয়তির কাছে সে অসহায়!



পরদিন বাড়ি আলার স্ত্রী এসে তাকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়ে যায়। সালেহার যেন পড়ে যায় মহাসমুদ্রে! এতটুকু আশ্রয়ের জন্য হয়ে পড়ে মরিয়া! শিক্ষাগত যোগ্যতাও তেমন নেই যে চাকরী করে ছেলেকে খাওয়াবে। আর এত ছোট বাচ্চাকে একা ঘরে ফেলে কোথায়ইবা চাকরী করবে সে! আপাতত সে বস্তিতে একটা ছোট টিনের ঘরে কোন রকমে মুখ গুজে! কিন্তু এখানেও বিপদ তাকে ছেড়ে যায় না! এক রাতে প্রাকৃতিক ডাকে সারা দিতে গেলে পাশের পাড়ার মাস্তানেরা তাকে ধরে একের পর এক ভোগ করে! অসহায় সালেহার সাহায্যে কেউ এগিয়ে আসে না। কোটি কোটি মানুষের পৃথিবীতে সে একাই যেন একদম একা!



সারা রাত পিশাচের মুখের খাদ্য হয়ে সকালে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত সালেহা প্রাণশক্তিহীন হয়ে ঘরের ফ্লোরে পড়ে রয়। ছোট্ট বাইজিদ মায়ের জন্য এক হাতে পানি অন্য হাতে হাত পাখা নিয়ে বসে থাকে। জ্ঞান ফিরতেই সালেহা দেখে তার নিষ্পাপ মুখ! তার সোবাহান সাহেবের কথা মনে পড়ে। ''দেইখো সালেহা এই পোলাও একদিন বাইজিদবোস্তামীর মত পানির গ্লাস হাতে লইয়া তোমার জন্য দাঁড়ায় থাকবো।'' ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কষ্ট উপশমের চেষ্টা চালায় সে। কিন্তু দুঃখরা যেন থেকে থেকে ছলকে উঠে! কিছুতেই যেন কমে না! থেকে থেকে উছলে উঠে আত্মহননের চিন্তা!



পরদিন বস্তির পেয়ারা বেগম নামে এক মহিলা এসে পরিচিত হয় সালেহার সাথে। ''বুঝছো সালেহা এই জগতে বাঁচতে অইলে অনেক কঠিন হইতে হয়! এত নরম হইলে জগত আরো শুইষে খায়!'' সালেহা ভাষাহীন চোখে তার দিকে চেয়ে থাকে! পেয়ারা বেগম বলে যায় তার দুঃখের কথা! জগতের লাথি জুতো খেয়ে সে কিভাবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সেই কথা! সে সালেহাকে চাকরী দেবার নাম করে নিয়ে যায় দূরের শহরে! সন্ধ্যা হলে সালেহা বুঝতে পারে পেয়ারা বেগম তাকে বিক্রি করে দিয়েছে পতিতা পল্লীতে! তারপর কয়েক রাত ঐ পল্লীর মাস্তানেরা তাকে অন্য যুবকদের সাথে রাত্রি ভাগাভাগিতে বাধ্য করে! অসহায় সালেহা শুধু ছেলের মুখে দুটো খাবার তুলে দেবার আশায় মুখ বুজে থাকে। তারপর একদিন পালায় পতিতা পল্লী থেকে! কিন্তু দুর্ভাগ্য তার পিছু ছাড়ে না! পতিতা পল্লীর মাস্তানেরা তাকে অনুসরণ করে খুজে বের করে নিয়মিত তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় পাঠায় দেহপসারিনীর কাজে। সালেহার কাছে আস্তে আস্তে ব্যাপারগুলো স্বাভাবিক হয়ে আসে। এখন আর আগের মত বিবেক গর্জন করে উঠে না। আর তার কাজ রাতের আঁধারে। তাই সমাজের কেউ জানতে পারে না তার আসল কাজ কি! সাধারণ সেলাইয়ের ব্যবসার আড়ালে তারা নীরবে চালিয়ে যায় তাদের দেহ ব্যবসা।



আস্তে আস্তে বাইজিদ বড় হতে থাকে। সালেহা তাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। এখন আর তাদের আর্থিক অনটন নেই। ছেলেকে নিয়ে ভালোই আছে সে। কিন্তু সন্তান বড় হওয়ার সাথে সাথে সালেহার চিন্তা বাড়তে থাকে! যদি কোন দিন তার সন্তান জেনে যায় তার কথা? তখন কি হবে? সালেহা বাড়ি বাড়ি গিয়ে লোকদের বিনোদন দেবার বিকল্প পদ্ধতি খুঁজতে থাকে। অবশেষে আর বাড়িতে না গিয়ে কখনো ফোন, কখনো ইন্টারনেটের মাধ্যমে পেশাকে চালিয়ে নেবার সিদ্ধান্ত নেয় সে।



কিছুদিন পর পর তারা এলাকা পাল্টায়। একেক সময় একেক জায়গায়। এভাবে তার অন্ধকারের জগত থেকে বাইজিদকে রাখে সম্পূর্ণ আলাদা। বাইজিদ জানে তার মা খুব ত্যাগী একজন মহিলা। তার বাবার মৃত্যুর পর সে কষ্ট করে চাকরী করে তার মুখে খাবার তুলে দিয়েছে! তাই মায়ের জন্য ভক্তির শেষ নেই। অন্যদিকে সালেহাও সন্তানের সামনে একজন আদর্শ মহিলা। সত্বি সাধ্যি মহিলার সব গুণ সামনে রেখে সে তার সন্তানকে আগলে রেখেছে জগতের সব কালো থেকে। সব নিষিদ্ধ অন্ধকার থেকে! ছেলে তার ভালো হোক। ঠিক তার বাবার মত। আর বাইজিদ হয়েছেও তাই। সালেহার স্বপ্নগুলো যেন সব সত্যি হয়ে আসে! এই ছেলের মুখ দেখেই তো সে বেঁচে আছে। স্কুলে অনেক সুনাম বাইজিদের। বন্ধুমোহলেও জনপ্রিয়। অভিভাবকরা চান তাদের সন্তান বাইজিদের মত হোক। তার সাথে মিশুক। তাহলে তাকে অনুসরণ করে তার মত ভালো হবে।



সালেহা অতিরিক্ত সুরক্ষার জন্য সারাদিন ঘরের মধ্যেই থাকে। রাতে শুধু কখনো ফোনে ,কখনো ল্যাপটপে তার ব্যবসা চালিয়ে নেয়। এছাড়া একটা বড় সড় দোকানও দিয়েছে। ওটা কর্মচারী দিয়ে চালায়। এটি জগতের চোখে কালো চশমা পড়িয়ে তার নিজেকে আড়াল করার জন্য। তার সন্তান জানে এটাই এখন তাদের পেশা। সালেহাও ভাবে এই জঘন্য কাজ সে ছেড়ে দিবে। অন্তত সন্তানের জন্য। অনেকখানি টাকাও ইতোমধ্যে জমিয়েছে সে। আরো কিছু জমিয়ে নিয়ে ছেলেকে নিয়ে দেশ ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যাবে। তার ছেলে কোনদিন জানতে পারবে না তার অতীতের কথা! এখন শুধু আর কিছু বাড়তি টাকা দরকার ছেলের জন্মদিনে তাকে একটা ক্যামেরা উপহার দেবার জন্য। জমানো টাকায় হাত দিতে চায় না সালেহা। ওটা থাক যখন তখন লাগতে পারে!



এক সপ্তাহ পর বাইজিদের স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি হয়। তাই বাইজিদের বন্ধুরা বায়না ধরেছে আজ রাতে তাকে তাদের সাথে থাকতে দিতে হবে। তার বন্ধুরা অনুমতির জন্য সকাল থেকে এসে চাপাচাপি শুরু করেছে সালেহাকে! তাদের একজনের বাবা মা কেউ বাড়িতে নেই। তাই আজ রাতে তারা সারা রাত বাড়িতে কেরামবোট খেলবে। সালেহাও বাধ্য হয়ে বাইজিদকে অনুমতি দেয়। একটাই তো রাতের ব্যাপার। আর ছেলেরা যেভাবে ধরেছে! আর বাইজিদও কখনো অন্যদের মত নেশাযুক্ত কিছু খাবে না এতটুকু আস্থা তার আছে।



আজ রাতে সালেহা বাড়িতে একা। আজ আর তার রুমে এসে দরজা বন্ধ করে তার নিষিদ্ধ কাজ চালাবার কোন প্রয়োজন নেই। আজ সাবধান হবার মত কেউ নেই। নিশ্চিন্তে তার শোবার ঘরে আসে সালেহা। আজ রাত বারোটায় একটা পার্টির সাথে তার কন্ট্রাক্ট হয়েছে। তারা ব্যাংকে অগ্রিম টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছে। আজ রাতে ইন্টারনেটের তাদের সাথে কুৎসিত কথা বলতে হবে তার আর নোংরা উপায়ে দেহ প্রদর্শন করতে হবে। এটাই তার কাজ। এই কাজে এখন সে ভালোই অভ্যস্থ! বেশ ভালোভাবেই অঙ্গভঙ্গি করে বিকৃত সুখ দিতে পারে ক্যামেরার ওপাশের ক্ষুধার মানুষগুলোকে!



ঠিক বারোটায় সালেহার কাজ শুরু হয়। এবারের খরিদদ্বাররা যেন একটু বেশই ক্ষুধার্ত! সালেহা কিছুক্ষণ কথা বলে বুঝতে পারে। সেও লেগে যায় প্রাণপণে ওদের সুখ দিতে। মধ্যনিশির মায়াবী জাদুতে সবার চোখে লাগে ঘোর। ঘোর লাগা চোখে তারা কখন সবাই ক্যামারার সামনে দৃশ্যমান হয়েছে কারোরই খেয়াল নেই! কিন্তু যখন খেয়াল হল তখন সালেহার অনেক দেরি হয়ে গেছে! ক্যামেরা ওপাশে বসে তার ছেলে ও তার বন্ধুরা!



রাতের আঁধারকে আরো বীভৎস কালো মনে হয় সালেহার! সে কম্পিউটার বন্ধ করে দিশাহীন হয়ে খুঁজতে থাকে লুকোবার জায়গা! কিন্তু এত কুৎসিত আঁধারেরও তার লুকোবার কোন জায়গা নেই! তার জীবনে আজ এতই আঁধার যে রাতের আঁধারও তাকে ঢেকে দিতে পারছে না! কি করে সে এই মুখ লুকোবে ছেলের থেকে? গলা কাটা পশুর মত তরপাতে তরপাতে সে শাড়ি ফ্যানের সাথে পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে! এটিই তার লুকোবার একমাত্র পথ! মৃত্যু! এই রাতের নিষিদ্ধ আঁধারে এভাবেই মিশে যেতে হবে তাকে!



এদিকে বাইজিদেরও বুক ভেঙে আসে। বাবা হারানোর সময় সে খুব ছোট ছিল। তাই সে সব দুঃখ তার মনে আসে না। তবে তার বাবার কথাই তার জীবনে আবার সত্যি হল! বন্ধুদের চাপাচাপিতে বাধ্য হয়ে করা এই পাপও তার সইল না! অনেক বড় শাস্তি হয়ে দাঁড়ালো! একাকী রাতের বেলা অন্ধকার গলি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভাবে বাইজিদ! সে এই ঘটনার পর বন্ধুদের বাড়ি থেকে সোজা দৌড়ে বেরিয়ে এসেছে। এখন রাজপথ ধরে হেঁটে চলছে। মায়ের উপর কোন ভুল বোঝাবুঝি নেই তার। শুধু মায়ের উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের লীলিহান শিখার উত্তাপ কল্পনা করতেই কলিজা ফেটে আসছে তার! সবই তার জন্য! তার জন্যই তার মাকে এত নিচে নামতে হয়েছে! সে তার মায়ের জন্য অভিশাপ! রাতে ব্রীজের উপর থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তার এই অভিশপ্ত জীবনের অবশান ঘটায় সে!

মন্তব্য ৫৭ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:১৯

দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: হায় আফসোস !! গল্পে +++++++++++

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৪

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা জানুন ভাই,

শুভ সকাল।

২| ০২ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৫৬

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভাল লাগল

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৫

টুম্পা মনি বলেছেন: পাঠের জন্য ধন্যবাদ,

শুভসকাল।

৩| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১২:০০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: প্যাথেটিক। ভাল লিখেছো

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৬

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা জানুন,

শুভসকাল।

৪| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১২:০০

আরজু পনি বলেছেন:

সঠিক পথে নারীর অর্থনৈতিক মুক্তিই পারে নারীকে আলোর পথ দেখাতে ।

আর বায়েজিদের বেলায় বলতে হবে, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ ।
পুরো গল্প পড়ে এটাই মনে হলো ।


মেসেজ দিতে চেয়েছেন কি না জানি না তবে প্রথম লাইনে বলে দিয়েছি মেসেজ হিসেবে যা পেলাম ।

অনেক শুভকামনা রইল, টুম্পামনি ।
লিখুন ...এভাবেই ।

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:২৫

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা পুনি আপু,

একদম ঠিক ধরেছেন। আমি এই মেসেজই দিতে চেয়েছি। সেই দিন কোন ফ্রেন্ডের লাইকের সুবাদে আমার ফেসবুকের হোম পেজে এক মেয়ের ছবি আসে। ওর প্রোফাইল দেখে খুব দুঃখ পেলাম। মেয়েটা টাকার বিনিময়ে ফোন ও ইন্টারনেটের খারাপ কাজ করে বেড়ায়। ভাবছিলাম কি কারণে ওদের মত মেয়েরা এত জঘন্য কাজকে জীবিকা অর্জনের উপায় হিসেবে বেছে নেয়! এবং শেষে ওদের পরিণতিই বা কি হয়! এই সব উদ্ভট ভাবনা থেকেই এই গল্পের উৎপত্তি।

আর সঠিক পথে নারী ,পুরুষ উভয়েরই মুক্তি। বিপথে গেলে এক সময় না এক সময় ধরা খেতে বাধ্য। আর যারা মানুষ হিসেবে ভালো তারা বিপথে গেলে বিবেকের দংশনে আপনাআপনিই শেষ হয়ে যায়! বাইজিদ আর তার বাবার ক্ষেত্রে তাই ঘটেছে।

৫| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ২:১৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:



মর্মান্তিক গল্প।

একটু আগে একটি মুভি দেখলাম..... যেখানে স্বামীকে ঘুষ খাওয়ার জন্য স্ত্রী প্রলোভন দেখায়। ছোট বোনের মত অধিক সুখের জন্য। এক রাতে স্বামী বাড়িতে ফেরার পর ছোট বনের বাড়িতে একদিনের জন্য যাবে বলে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বাসা থেকে চলে যায়। স্বামী সুযোগ পেয়ে মদ্য পান করে আলাদিনের চেরাগ ঘষে। সাথে সাথে আধুনিক সার্ভেন্ট এসে হাজির। রাতারাতি সে বড়লোক হয়ে যায়। যা চাচ্ছে তাই পাচ্ছে। অর্থনৈতিক অবস্থার জন্য স্ত্রীর সাথে তার বিছানায় তেমন কোন মিল ছিল না। তাই সে সার্ভেন্টের কাছে সে সেই সুখ চাই। সার্ভেন্ট তাকে আধুনিক একটি স্কট সাপ্লাইয়ারের কাছে নিয়ে যায়। যেখানে সমাজের উঁচু শ্রেণীর মানুষেরা তাদের দৈহিক সুখ মিটাতে আসে। যথারীতি একটি মেয়ের শরীর দেখে সে পছন্দ করে সাপ্লাইয়ারকে জানায়। ছবিতে শুধু শরীর দেখা যায় কিন্তু চেহারা দেখা যায় না। যখন ঐ মেয়েটি এসে রুমের কলিং বেল টিপে দরজা খুলে সে চমকে যায় দেখে তার স্ত্রী তার সামনে একজন স্কট গার্ল হিসেবে দাড়িয়ে আছে। :-<


ছবিটি শেষ হওয়ার পর ঐ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা দুই বন্ধু অনেকক্ষণ কথা বললাম। ব্লগে এসে আপনার গল্পেও মর্মান্তিক একটা ঘটনা পেলাম। তাই শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না।



চমৎকার !

++++++

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:২৭

টুম্পা মনি বলেছেন: হুম! পড়লাম। সত্যি খুব দুঃখজনক। :( :( :( :( :( তবে এই সব দুঃখরা কেবল গল্পেই থাকুক। আমাদের জীবন হোক আরো সুন্দর, মোহনীয়।

শুভেচ্ছা স্নিগ্ধ শোভন।

৬| ০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:৩৩

ডার্ক ম্যান বলেছেন: হইতো এটা একটা কাল্পনিক গল্প। কিন্তু এমন কিছু করুণ ঘটনা ঘটে যায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে, যা কখনো প্রকাশ পায় না আমাদের হাতে তৈরি তথাকথিত সভ্য সমাজে।

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা ডার্ক ম্যান,

ঠিক বলেছেন! ''এমন কিছু করুণ ঘটনা ঘটে যায় সমাজের বিভিন্ন স্তরে, যা কখনো প্রকাশ পায় না আমাদের হাতে তৈরি তথাকথিত সভ্য সমাজে।''

আর সমাজের এই নীরব ধ্বংসকে আরো বেশি ত্বরান্বিত করছে ইন্টারনেটের পর্ণগ্রাফি। সে ব্যাপারে কয়টা পরিবারই বা সচেতন! আর সচেতন হলেই বা কি করার আছে! এই বিশ্বায়নের যুগে মানুষ অনেক উদার হতে হতে এই একটা ব্যাপারে কিভাবে এত সংকীর্ণ হয়ে গেছে সেই হুঁশ হয়ত তাদের নিজেদেরও নেই!

৭| ০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫১

রোহান খান বলেছেন: পাপের শাস্তি শুধু মাত্র ছোট লোক গুলোর জন্য, বড়লোক গুলোর জন্য নেই। আল্লাহ তাদেরি শাস্তিদেন যাদের কিছু করার থাকেনা। আর তাদের দেননা যারা এই দুনিয়ার হর্তাকর্তা।

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৭

টুম্পা মনি বলেছেন: নারে ভাই! পাপ বাপরেও ছাড়ে না! একদিন দেখবেন সব পাপীরাই শাস্তি পাবে! বড়লোকদের পাপও বড়। ওদের শাস্তিও তাই বড়। তাই হয়ত আল্লাহ পাক ধীরে ধীরে ওদের শাস্তি দেন! ভালো তিনি জানেন।

আপনি শুভেচ্ছা জানুন।

৮| ০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬

ডার্ক ম্যান বলেছেন: ইন্টারনেট পর্ণগ্রাফি বলুন আর ধর্ষণ/ যৌন হয়রানি বলুন সব একই সমস্যা।
আমি যদি অন্য কোন নারীর প্রতি সহিংস হওয়ার আগে আমার মা/বোন/মেয়ের কথা একবারও চিন্তা করি তবে আমার পক্ষে এই ধরনের কাজ কখনো করা সম্ভব নয়।
পাপ কখনো বাপকে ছাড়ে না।
বাপ-মায়ের কর্মের ফল সন্তানকেও ভোগ করতে হয়।

০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১১:০২

টুম্পা মনি বলেছেন: ঠিক বলেছেন ভাই।
কিন্তু কয়জন পুরুষ অন্য মেয়েকে নির্যাতন করার আগে নিজের মা ,বোনেরা কথা ভাবে! আর আজকাল গাজা, ইয়াবা ইত্যাদি নেশা জাতীয় দ্রব্য মানুষের চিন্তা, বিবেকবোধকে অনেক কমিয়ে দিয়েছে! গতকাল টিভিতে শুনলাম এক ছেলে তার বাবাকে খুন করেছে! মানুষের নিজেদের আত্মীয় স্বজনই আজকাল নিজেদের থেকে নিরাপদ না!

৯| ০৩ রা মে, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

মামুন রশিদ বলেছেন: একথাল বিষাদে ভারি হয়ে উঠলো মন । পৃথিবী এত নিষ্ঠুর করুণাহীন !


আপনার সাহসের প্রশংসা না করে পারছি না । বাকরুদ্ধ, গল্প পাঠে ।


০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:১৪

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা মামুন ভাইয়া।

ঠিক বলেছেন। :) :) এই গল্পটা লিখতে আসলেই আমাকে অনেক সাহস সঞ্চয় করতে হয়েছে। লেখালেখির জগতে আমার বয়স মাত্র ৩ বছর। এখনো নিতান্তই শিশু! তাই অপরিপক্কতা অথবা পাকনামোর ভয় মনে অবশ্যই ছিল। আপনাদের উৎসাহে সাহস পেয়েছি। অনেক ধন্যবাদ জানবেন।

১০| ০৩ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

শুঁটকি মাছ বলেছেন: যদিও শেষের দিকে কাহিনীটা কিভাবে মোড় নেবে সেটা বুঝতে পারছিলাম তার পরেও ভীষন কষ্ট হয়েছে গল্পটা পড়ে!

ভালো থাকবেন আপু!

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:১৯

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা আপু,

অসৎ পথে আসলে মানুষ যেভাবেই যাক পরিনতি সম্ভবত ভয়াবহতেই ঘটে! একই ভাবনা হয়ত সবার।

শুভরাত্রি

১১| ০৩ রা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

হে নিষ্ঠুর নিদারুন পৃথিবীর মানুষ, তোমরা কবে শীতল হবে ?

অগনিত প্লাস রইল লেখায়। শুভেচ্ছা।

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:২৬

টুম্পা মনি বলেছেন: 'হে নিষ্ঠুর নিদারুন পৃথিবীর মানুষ, তোমরা কবে শীতল হবে ? ''

হুম! এই প্রশ্ন আজ সবার!


অজস্র শুভেচ্ছা কান্ডারী।

১২| ০৩ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: জগৎটা এমন নিষ্ঠুর কোন কিছুই এখন আর শকড করে না। এমন কী এন্ডিংটাও আগেই বুঝে ফেলেছিলাম। ভালো লিখেছেন। অনেক মায়া দিয়ে লিখেছেন।

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৩০

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা বিগ হামা,

''জগৎটা এমন নিষ্ঠুর কোন কিছুই এখন আর শকড করে না'' এখানে তো দুঃখ। জগতটা আরেকটু বেশি সুন্দর হতে পারত। তবুও প্রত্যাশা এমন ঘটনাগুলো কেবল গল্পেই থাকুক।

শুভরাত্রি।

১৩| ০৩ রা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৯

তাসজিদ বলেছেন: জীবন যে কখন তার নিষ্ঠুরতা নিয়ে হাজির হয় তা বোধহয় আমরা জানি না।
মন খারাপ করা লেখা। পর্ণগ্রাফি যে ভয়ানক পর্যায়ে গেছে তাতে এর শেষ যে কোথায় তা মনেহয় আমরা কেও জানি না।

এ ধরণের একটি লেখা আছে আমার।পড়ে দেখতে পারেন।

click this link

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৪০

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা তাসজিদ,

আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি পর্ণগ্রাফি বন্ধ হওয়া উচিত। আমি বলছি না এতে নারী নির্যাতন বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুটা হলেও সমাজের যুব সমাজ মানসিক অবক্ষয় হতে রক্ষা পাবে। আপনার লেখাটা সময় করে অবশ্যই পড়ে দেখব।

শুভরাত্রি তাসজিদ।

১৪| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৩৯

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: আমাদের সমাজের চাহিদা-চিন্তাধারা দ্রুত পরিবর্তন হবার ফসল হয়ত এমন কিছু গল্প!

০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ১:৪১

টুম্পা মনি বলেছেন: পাঠের জন্য ধন্যবাদ,

শুভরাত্রি।

১৫| ০৫ ই মে, ২০১৪ রাত ২:২১

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
মর্মান্তিক গল্প। লেখা ছুঁয়ে গেছে।

শুভকামনা।

০৭ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২

টুম্পা মনি বলেছেন: ধন্যবাদ দুর্জয় ,

সুন্দর থাকুন :) :) :) :)

১৬| ০৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:২৩

অদৃশ্য বলেছেন:





কি ভয়ানক একটি গল্প লিখলেন টুম্পা... এমন গল্প পড়লে খুব অস্থির লাগে অন্যকিছুই আর করতে ইচ্ছা করেনা... তবে সত্য বলতে কি, আমি খুবই আপসেট হয়ে গেছি যখন মাকে পুত্রের সামনে ওভাবে নিয়ে আসলেন... এমন দৃশ্য কল্পনা করতে ইচ্ছা করেনা মোটেও... এমন দৃশ্য অন্যের মুখে শুনতেও ভালো লাগেনা মোটেও... এই একটি দৃশ্যই বলে দেই সভ্যতার চরম বিপর্যয়ের কথা...
এমনটা না হোক... কখনোই না হোক...

আপনার লিখাগুলো দিনকে দিন পাখা মেলছে... যত পাখা মেলবে তত দূরে চলে যাবে... মর্মান্তিক, দুর্দান্ত, অপূর্ব একটি লিখা...

শুভকামনা...

০৭ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা অদৃশ্য ,

কি লিখেছি আসলে জানি না। তবে আপনাদের মন্তব্যে বুঝেছি কিছুটা হয়েছে। :D :D :D হুট করে মাথায় আসা চিন্তায় এই গল্প। আর এমন ঘটনা আমার নিজেরও পছন্দ না। তাই চাই সমাজে এমন ঘটনা না ঘটুক। আর পর্ণগ্রাফির বিরুদ্ধে একটা নীরব প্রতিবাদের ইচ্ছা তো মনে সব সময়ই ছিল। সেখান থেকেই হয়ত এই কাহিনীর উৎপত্তি।

উৎসাহের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১৭| ০৫ ই মে, ২০১৪ সকাল ১১:০১

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: এক ফোঁটা বাতাশও নেই চারিদিকে!

এখনো কোন খরিদদ্বার নেই!

বাড়ি আলা বাসা ভাড়ার জন্য খুব চাপ দিচ্ছিলো।

এই অভিশপ্ত জীবনের অবশান ঘটায় সে!

আপনি নিয়মিত লিখছেন , আপনার কাছ হতে ''বানানে ''সচেতনতা আশা করা যায় । আশা করি এদিকটায় খেয়াল রাখবেন ।

আপনার লেখায় আরেকটা জিনিস খেয়াল করি ।( ! ) চিহ্নের আধিক্য ।

চরম সংবেদনশীল একটা গল্প । গল্পকার হিসেবে ভাবনার ও ম্যাচিউরিটি দেখিয়েছেন ।
ভাল লাগা থাকল ।
আপনার প্রতি অনেক শুভকামনা রইল ।

০৭ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

টুম্পা মনি বলেছেন: হাহাহা অসংখ্য ধন্যবাদ মাহমুদ ,

আপনার মন্তব্যে বোঝা যায় আপনি একজন মনোযোগী পাঠক। ছোট ছোট ভুলগুলো একেক করে আইডেন্টিফাই করে বলে দিতে পারেন। এতে গল্প আরো নির্ভুল করে লেখার সুযোগ হয়।

অজস্র শুভেচ্ছা রইল।

১৮| ০৬ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:১২

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: চমৎকার লিখেন । আইডিয়ার চেয়ে লিখনি অনেক আকর্ষণীয় লেগেছে আমার কাছে । +++++

০৭ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪

টুম্পা মনি বলেছেন: ধন্যবাদ আদনান। একজন লেখক/ লেখিকা আসলে এটাই চায়।

কৃতজ্ঞতা অনুপ্রেরণার জন্য।

১৯| ০৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২

প্রুফরিডার বলেছেন: চারপাশের প্রতিদিনকার ঘটমান বাস্তবতা দেখে দেখে এত বেশী অভ্যস্থ হয়ে উঠেছি যে গল্পের বায়েজিদ সোবহান সাহেব আর ছালেহা দের চরিত্রগুলো মেনে নিতে এতটুকুন বেগ পেতে হয়নি।

লেখার ঢং সন্দেহাতীতভাবেই 'পাঠককুড়ানো'। আমরা যে কবে লিখব এমন :(

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২২

টুম্পা মনি বলেছেন: হাহাহা তাই নাকি!!!!!!

শুভেচ্ছা জানবেন।

২০| ০৮ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৮

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্পটা বিষণ্ণ করে দিয়ে গেল। দারুণ লিখেছেন।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৫

টুম্পা মনি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ প্রোফেসর,

অনেকদিন টাইফয়েডে ভুগেছি। তাই অনলাইনে আসিনি। দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত,

সতত শুভেচ্ছা রইল।

২১| ০৯ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৩

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: ঘোর লাগা চোখে তারা কখন সবাই ক্যামারার সামনে দৃশ্যমান হয়েছে কারোরই খেয়াল নেই! কিন্তু যখন খেয়াল হল তখন সালেহার অনেক দেরি হয়ে গেছে! ক্যামেরা ওপাশে বসে তার ছেলে ও তার বন্ধুরা!

মনটা কেমন খারাপ হয়ে গেলো।

গল্প ভালো লেগেছে টুম্পা মনি।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৭

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন ঘূণপোকা। আপনাদের উৎসাহই লেখার প্রেরণা।

অনেকদিন টাইফয়েডে ভুগেছি। তাই অনলাইনে আসিনি। দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত,

২২| ১৬ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬

রহস্যময়ী কন্যা বলেছেন: ভালো লিখেছেন আপু

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩০

টুম্পা মনি বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ রহস্যময়ী কন্যা,

সুন্দর থাকুন সব সময়।

অনেকদিন টাইফয়েডে ভুগেছি। তাই অনলাইনে আসিনি। দেরিতে মন্তব্যের উত্তর দেবার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত,

২৩| ২২ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
টুম্পা মণি,

ফেইসবুকে আপনাকে কোন নামে পাওয়া যাবে? ফেইসবুকের এ স্টেটাসটি পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। শীঘ্র রিসপন্স করবেন আশা করি।

সম্ভব হলে আমাকে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে এ্যাড করুন।

শুভেচ্ছা।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩২

টুম্পা মনি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আমাকে জানাবার জন্যবার,

অসাধারণ পোষ্ট হয়েছে। সময় করে গিয়ে কমেন্ট করে আসব। টাইফয়েড থেকে সুস্থ হয়ে আজই প্রথম ব্লগে এলাম।

২৪| ০২ রা জুন, ২০১৪ রাত ১১:৫৪

জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
বিষন্নতায় ছুঁয়ে গেল গল্পে ৷ লেখাটি আরেকটু গুছিয়ে ধীরে ধীরে উপস্থাপনার অবকাশ ছিল ৷

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৪

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা আলজাহাঙ্গির,

ঠিক আছে। এটা আবার পড়ে এডিট করব সময় পেলে। সুন্দর থাকুন।

২৫| ১০ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

শ্লোগান০০৭ বলেছেন: স্পর্শকাতর.......... / চলুক কলমের কালি.।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৫

টুম্পা মনি বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ শ্লোগান,

আপনাদের অনুপ্রেরণাই লেখার পাথেয়।

২৬| ২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২১

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চোখ দিয়ে রক্ত পড়া ছবি আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মনে হয়।

২২ শে জুন, ২০১৪ রাত ১০:২২

টুম্পা মনি বলেছেন: আমার কাছেও। তাই এই গল্পের জন্য সিলেক্ট করেছি।

২৭| ১৬ ই জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৩

আহসানের ব্লগ বলেছেন: +

১৭ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮

টুম্পা মনি বলেছেন: শুভেচ্ছা জানবেন।

২৮| ১৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৫০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: কেমন আছেন টুম্পা মনি ? আপনার কোন খোঁজ ই নেই !

১৯ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৩১

টুম্পা মনি বলেছেন: এই তো ভালো আছি অভি। পুরো এক মাস টাইফয়েডে ভুগেছি। আপনাদের সবাইকে এবং ব্লগটাকে মিস করেছি অনেক। এক মাস পর সুস্থ হয়ে আজকে গল্প লেখার নেশায় ধরেছে। দেখি কত দূর পারি। অসংখ্য ধন্যবাদ খোঁজ নেবার জন্য।

২৯| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১:০১

আহসানের ব্লগ বলেছেন: আপনাকেও শুভেচ্ছা রইলো আমার পক্ষ থেকে। । ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.