নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শেয়ার বাজার হতে দূরে থাকুন।

সবাইকে শুভেচ্ছা...

ওয়াচডগ৫৭

প্রতি, রাজনীতিবিদ আমলা থানা-পুলিশ হাইকোর্ট-সুপ্রীমকোর্ট ..আমাদের চোখ খোলা আছে!!!

ওয়াচডগ৫৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারেক, মিল্কি, কিলার চঞ্চল ও একদল দলকানা জলদাস...

০২ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

জাহিদ সিদ্দিক তারেক কি জানতো বন্ধু রিয়াজুল হক মিল্কি হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘন্টার ভেতর তাকেও হত্যা করা হবে? বোধ হয় না। জানলে নিশ্চয় ঘটা করে হাসপাতালে ভর্তি হত না। হত্যা পালটা হত্যার এ লোমহর্ষক কাহিনী হলিউডের রাম্বো জাতীয় মুভির কথা মনে করিয়ে দেয়। গায়ের প্রতিটা লোম শিউরে উঠে। চোখ বন্ধ করলে মন হয় আমেরিকান বন্য পশ্চিমের কাউবয়দের নিয়ে নির্মিত কোন একশন ছবির দৃশ্যপট কল্পনা করছি। কেবল পোশাকেই যা পার্থক্য। গায়ে সফেদ পাঞ্জাবি এবং মাথায় টুপি। এক হাতে মুঠো ফোন, কথা বলছে কারও সাথে এবং অন্য হাত পকেট হতে বের করে আনছে চকচকে মারণাস্ত্র। নির্বিকার ভাবে হত্যা করছে ছোটকালের বন্ধুকে। পাঠক, আপনাদের কি মনে পরে ডার্টি হ্যারির ভূমিকায় ক্লিন্ট ইস্টউডের কথা? মূল পার্থক্যটা বোধহয় কেবল নিরস্ত্র প্রতিপক্ষে। সিসি টিভির ফুটেজ না থাকলে হয়ত অন্য বারের মত এবারও পার পেয়ে যেত সে। বলা হয় ৬০টির বেশি হত্যাকাণ্ডে হাত আছে তারেকের। আইন তার ধারে কাছেও আসতে পারেনি রাজনৈতিক পরিচয় ও গডফাদারদের আশীর্বাদের কারণে। দেশীয় সন্ত্রাসের বড়পীর জনাব কালা জাহাঙ্গীরের সতীর্থ এই তারেক। সিরিয়াল কিলার হিসাবেই পরিচিত আন্ডার ওয়ার্লডে। দীর্ঘদিন প্রবাসে লুকিয়ে থাকার পর কেবল গত বছর দেশে ফিরে আসেন। ফিরেই জেল হতে বের করে আনেন মিরপুরের শাহাদত, ডাকাত শহীদ ও শ্যামপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী সানাউল্লার কিছু সহযোগীকে। গড়ে তুলেন ভয়ংকর এক কিলার গ্রুপ। শত শত মানুষের সামনে হাসতে হাসতে খুন করে আনন্দ পেতেন এবং যারা সময় মত চাঁদা পরিশোধে টালবাহানা করতেন তাদের হৎপিণ্ডে পৌছে দিতেন বুলেটের পদধ্বনি। এভাবেই দুধে ভাতে বেড়ে উঠছিলেন অন্যায়, অবিচার ও অনাচারের লীলাভূমি বাংলাদেশে। পুরানো ঢাকার শাহাদাত কমিশনার, আইনজীবি হাবিব, মতিঝিলে দর্পন, পলাশ, শাজাহানপুরের রাজীব, ধানমন্ডির লিয়াকত, আগারগাঁওয়ের পুলিশ এসআই হুমায়ুন কবীর, ছাত্রলীগ নেতা তপন, আখিঁ এবং মগবাজারের ওয়ার্ড কমিশনার খালিদ ইমাম সহ বহু খুনের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ পুলিশের হাতে আছে। খবরে প্রকাশ প্রকাশ্য দিবা লোকে, র‌্যাব, পুলিশের সামনে একজনকে খুন করে মটর সাইকেলের পেছনে লাশ বসিয়ে শহর ঘুরে বেড়ানোর মত পৈশাচিকতাও আছে তার তালিকায়। অনেকটা স্যান্ডউইচ কায়দায় মোটরবাইকের সামনের সিটে নিজে, পেছনে একজন দোসর এবং মাঝখানে লাশ বসিয়ে নিহতের বাড়ির চারদিকে চক্কর দিয়ে ঘোষনা দিয়েছিল নিজ শৌর্য, বীর্য ও বীরত্বের। মতিঝিল বাণিজ্য পাড়ায় এমন কেউ নেই যে তারেকের নামে অতিরিক্ত কয়েকবার শৌচাগারে যায়নি। দশ, পঞ্চাশ ও একশ লাখের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকতো চাঁদার অংক। রমজানের শেষ এবং ঈদের সময়টা ছিল বাণিজ্যের ভরা মৌসুম।



কে এই তারকে? রিয়াজুল মিল্কিরই বা কি পরিচয়? ওরা আসলে এক বৃন্তে ফোটানো দুটি ফুল। আমাদের স্থানীয় ভাষায় এক মার পেটের খালাতো ভাই। দুজনেই চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, খুনি, ধর্ষক এবং দুজনেই ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন যুবলীগের নেতা। মহানগর যুবলীগের (দক্ষিনের) দুই মহারথি এই দুই বন্ধু। বলা হয় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের কাউকে নগদ দুই কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ ক্রয় করেছিল তারেক। মিল্কি এবং তারেক দুজনেই সামনের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইতিমধ্যে কিলার চঞ্চল নামের প্রাক্তন এক টেম্পো চালক এবং আধুনা মহানগর যুবলীগের (উত্তর) সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম বেরিয়ে আসছে মিল্কি হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসাবে। বলা হয় কিলার চঞ্চলেরও গডফাদার আছে, যার হাত-পা গণভবন, বঙ্গভবন পর্যন্ত প্রসারিত। কোট কোটি টাকার টেন্ডার ও সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন যা একে অপরের পরিপূরক, তা নিয়েই বিবাদ বন্ধুর সাথে বন্ধুর, ভাইয়ের সাথে ভাইয়ের, বাবার সাথে সন্তানের, নেতার সাথে নেতার, নেতার সাথে কর্মীর, কর্মীর সাথে পাতি নেতার, পাতি নেতার সাথে ছটাক নেতার। এবং এরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, ওলামা লীগ, হাইকোর্ট লীগ, সুপ্রীমকোর্ট লীগের নেতা ও কর্মী। তারেক ৬০ খুনের আসামী তা কারও কাছে গোপন ছিলনা। অথচ দেশে আইন আছে, আদালত আছে, আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিশাল বিশাল খাল, বিল, নদী-নালা, সাগর মহাসাগর। জাতি হিসাবে আমরা এসব জলাশয়ে অনবরত সাতার কাটছি এবং চেতনার প্রসব বেদনায় জন্ম দিচ্ছি তারেক, মিল্কি ও চঞ্চল নামের সৈনিকদের। রাজনীতি নামের যুদ্ধের ময়দানে এরাই আসল সৈনিক। এরা টেন্ডারবাজী করে বলেই নেতা-নেত্রীদের রাজনীতি এত মধুর।



পাঠক, তারেক, মিল্কি অথবা কিলার চঞ্চল কি কেবলই বিচ্ছিন্ন কতগুলো নাম, বখে যাওয়া কিছু চরিত্র? খুঁজলে আপনার শহরে কি পাওয়া যাবেনা এসব সিরিয়াল কিলারদের বৈমাত্রেয় ভ্রাতাদের? বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় এদের অবাধ বিচরন। রাজনীতির ছত্রছায়ায় বিষাক্ত জীবাণুর মত মিশে আছে আমাদের রক্তে। জাতির মগজে জামাতি হিজাব আর হাতে হেফাজতি তসবি ধরিয়ে নেতা নেত্রীরা লুটে নিচ্ছেন গোটা দেশ। তারেক, মিল্কি, চঞ্চলের কাফেলা এ সংস্কৃতিরই ধারক, বাহক ও রক্ষক। এরা আছে বলেই ক্ষমতার মসনদ জ্বল জ্বল করে, আলো ছড়ায় এবং সে আলোতে ঝাঁপ দেয় গোটা জাতি। এখানে কে আসল অপরাধী, খুচরা সৈনিকদের দল না আড়ালে থাকা ক্ষমতার গডমাদার গডফাদারের সিন্ডিকেট ? কান ধরে টানলে মাথা চলে আসবে বলেই কি ক্ষমতা ছাড়তে এত ভয়? দলকানা জলদাস আর হামিদ চাচার বৌমাদের মত কৃতদাসরাই গোটা বাংলাদেশ নয়। এর বাইরেও কিছু মানুষ আছে যারা সহ্য ও ধৈর্য্যের বাধে ইট সিমেন্ট গাঁথতে বাধ্য হচ্ছে। ৪২ বছর ধরে এর দেখছে, দেখছে আর জ্বলছে। অন্যায়, অবিচার, অনাচার আর মিথ্যাচারের ফাঁদে আটকে একটা জাতিকে আজীবন দাসত্বের শৃংখলে আটকে রাখার যারা স্বপ্ন দেখছেন তাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিনত হতে পারে যেদিন এরা ঘুম হতে জেগে উঠবে। সেদিন আর ক্রসফায়ার নামক জালিয়াতি, ধোকাঁবাজি, বেশ্যাবৃত্তির প্রয়োজন হবেনা, খোলা ময়দানে ঘোষনা দিয়েই প্রতিশোধ নেবে।

http://www.amibangladeshi.org/blog/08-02-2013/1391.html

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:০৫

খেয়া ঘাট বলেছেন: ভয়াবহ অবস্থা।

২| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২

রোদের ক্রোধ বলেছেন: ++++++++++

৩| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: তারেক ৬০ খুনের আসামী তা কারও কাছে গোপন ছিলনা। অথচ দেশে আইন আছে, আদালত আছে, আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিশাল বিশাল খাল, বিল, নদী-নালা, সাগর মহাসাগর। জাতি হিসাবে আমরা এসব জলাশয়ে অনবরত সাতার কাটছি এবং চেতনার প্রসব বেদনায় জন্ম দিচ্ছি তারেক, মিল্কি ও চঞ্চল নামের সৈনিকদের। ...............

এর বাইরেও কিছু মানুষ আছে যারা সহ্য ও ধৈর্য্যের বাধে ইট সিমেন্ট গাঁথতে বাধ্য হচ্ছে। ৪২ বছর ধরে এর দেখছে, দেখছে আর জ্বলছে। অন্যায়, অবিচার, অনাচার আর মিথ্যাচারের ফাঁদে আটকে একটা জাতিকে আজীবন দাসত্বের শৃংখলে আটকে রাখার যারা স্বপ্ন দেখছেন তাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিনত হতে পারে যেদিন এরা ঘুম হতে জেগে উঠবে। সেদিন আর ক্রসফায়ার নামক জালিয়াতি, ধোকাঁবাজি, বেশ্যাবৃত্তির প্রয়োজন হবেনা, খোলা ময়দানে ঘোষনা দিয়েই প্রতিশোধ নেবে।

++++++++++++++++

বড় জলদি বুঝী দরকার সেই দলের .. যারা প্রকাশ্যেই সত্যৈর জন্য ঘোষনা দিয়ে মাঠে নামবে- আমজনতার মুক্তির প্রতিশ্রুতি নিয়ে।

৪| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫

লজিক মানুষ বলেছেন: কথায় বলে না? বন্ধু যখন শত্রু হয়, সেই হয় তার চরম শত্রু।

৫| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

প্রিন্স অফ ব-দ্বীপ বলেছেন: এই হত্যাকান্ডের ভিতরে যে আরো কত ভয়ঙ্কর কিছু আছে তা হয়তো জানাই যাবে না, শুধুমাত্র ঝাপসা ভিডিও ফুটেজ দেখেই যেভাবে খুনি সনাঙ্কত হল এবং ক্রসফায়ার হল, ভয় লাগে এখানেও আরো কিছু আছে কিনা।

পোস্টে প্লাস।

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১২

খইকাঁটা বলেছেন: এরপরেও এরা নাকি দেশ প্রমিক। যে বলে সে ছাগল, যে বিশ্বাস করে রামছাগল।

৭| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:২২

ওয়াচডগ৫৭ বলেছেন: সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মন্তব্য প্রেরণা হয়ে থাকবে।

৮| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৩০

অরিয়ন বলেছেন: রানা প্লাজা ধস না হলে, মিল্কি- তারেক খুন নাহলে কেউ জানতনা তারা কতটা ভয়ংকর খুনি, তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা কারা। কেউ জানতোনা যুবলীগের উচ্চ পর্যায়ে নেতা ও সরকারি দলের নেতা নেত্রী এমনকি প্রেসিডিয়াম মেম্বারদের কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে ভয়ংকর খুনি সন্ত্রাসিদের দিয়ে কমিটি করে রাম রাজত্ব কায়েমের কথা। মিল্কি যেমন উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে খুন হয়েছে তেমনি তারেকও উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে ক্রসফায়ারের শিকার। যা সবাই জানে।

৯| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:৫১

ওয়াচডগ৫৭ বলেছেন: যুবলীগে রক্তক্ষরণ

ডেস্ক রিপোর্ট : মিল্কি হত্যা ও তারেক ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার ঘটনায় রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে ঢাকা মহানগর যুবলীগে। এর রেশ ছড়িয়ে পড়েছে কেন্দ্রীয় যুবলীগ পর্যন্ত। তোলপাড় চলছে সর্বত্র। যে কোন সময় অঘটনও ঘটে যেতে পারে এ সংগঠনটিতে। এরই মধ্যে রণপ্রস্তুত মতিঝিল যুবলীগ। মুখোমুখি মিল্কি গ্র“প ও তারেক গ্র“প। মিল্কি গ্র“প তাদের নেতা হত্যার জন্য তারেকের ক্যাডারদের ওপর প্রতিশোধ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে তারেক গ্র“প মনে করছে মিল্কির পরিবারের লোকদের কারণেই তারেককে ক্রসয়ায়ারে নিহত হতে হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুত তারাও। অন্যদিকে যুবলীগে একের পর এক সন্ত্রাসীর স্থান হওয়ায় হতবাক এর সাবেক নেতারা। তারা বলছেন, বিপুল অর্থের বিনিময়ে যেসব সন্ত্রাসীকে যুবলীগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তারাই ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে দেশের এই বৃহত্তম যুব সংগঠনটিকে। ওই সব সন্ত্রাসীর কারণে যুবলীগের পরিচিতি এখন টেন্ডারলীগ, চাঁদাবাজ লীগ হিসেবে। ওইসব চিহ্নিত সন্ত্রাসী কিভাবে যুবলীগের নেতা বনে গেলেন? সমপ্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থা অর্থ লেনদেনের সূত্র খুঁজতে গিয়ে বিস্মিত হয়েছেন লেনদেনের পরিমাণ দেখে। একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা অবাক হয়ে বললেন, এত টাকা দিয়ে কি কারণে একজন লোক যুবলীগের নেতা হলেন বিষয়টি ভাবতেই পারছি না। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতেও। ছাত্রলীগের রাজনীতি করে আসা কেন্দ্রীয় যুবলীগের অনেকেই এখন যুবলীগ অফিসে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। তারা যুবলীগ ছেড়ে দলের অন্যকোন অঙ্গসংগঠনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যুবলীগের একজন সিনিয়র নেতা দুঃখ করে বললেন, সংগঠনে এখন গঠনতন্ত্রের কোন বালাই নেই, কমিটি প্রধানরা যখন যাকে ইচ্ছে সে পদে তার নাম ঘোষণা করে দেন। মানবজমিন

মিল্কি, তারেক, চঞ্চল, রফিক সহ যুবলীগের সন্ত্রাসী গ্র“পের ম্যাচমেকার বলে পরিচিত যুবলীগ নেতা কাজী আনিস। বর্তমানে কোটি কোটি টাকার মালিক গোপালগঞ্জের ছেলে কাজী আনিস যুবলীগের বর্তমান কমিটি ঘোষণা হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত ছিলেন ৬০০০ টাকা বেতনে যুবলীগের অফিস সহকারী। বর্তমান কমিটি ঘোষণার দিন তার নাম ওঠে যুবলীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য হিসেবে। অলৌকিক ভাবে তিনি এখন কেন্দ্রীয় যুবলীগের উপদপ্তর সম্পাদক। মাত্র অল্প কয়েক মাসে তিনি অর্ধশত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কে যুবলীগের চেয়ারম্যানের বাসার বিপরীত পাশে তার ২ হাজার ৮শ’ স্কয়ার ফিটের ফ্লাট। আরামদায়ক গাড়িসহ আরও প্লট ফ্লাট তো আছেই। যুবলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, যুবলীগের কমিটিতে সন্ত্রাসীদের বেশির ভাগের আগমন ঘটে আনিসের গোপন দেন-দরবারের মাধ্যমে। রাজধানীর গুলিস্তান, কাকরাইল, মতিঝিল এলাকার সন্ত্রাসী ও বখরাবাজদের নিয়ন্ত্রণ আনিসের হাতে। তার হাত দিয়েই এখানের আয়ের অর্থ যায় যুবলীগের ওপর মহলে। তার সিন্ডিকেট ছিল মতিঝিলের নিহত মিল্কি, ক্রসফায়ারে খুন তারেক ওই এলাকার সাগর, তেজগাঁওয়ের রফিক, গুলশান বাড্ডার চঞ্চল সহ তাদের সহযোগীরা। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছের লোক হওয়ায় সন্ত্রাসীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে আনিস।

তেজগাঁওয়ের পরিচিত মানুষ রফিক। তিনি অধিক পরিচিত হয়ে ওঠেন প্রকাশ্য দিবালোকে সড়ক ভবনে টেন্ডার নিয়ে গুলিবর্ষণ করে। তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হন।

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শামীম। ওই ঘটনার পরও যুবলীগে নেয়া হয় রফিককে। কমিটি ঘোষণার সময় রফিকের পদ ছিল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পরে হঠাৎ করে উপ-ত্রাণ সম্পাদক হয়ে যান তিনি। একটি সূত্রমতে বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে যুবলীগের কমিটিতে তার নাম উঠেছে।

তেজগাঁও এলাকার চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে ঝুট ব্যবসা, পরিবহন নিয়ন্ত্রণ সবকিছুর মালিক রফিক। একটি সূত্রে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার প্রথম বৈঠক হয় রফিকের নেতৃত্বে তেজগাঁও এলাকায় বিজি প্রেসের একটি ক্লাবে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তারেক, রফিক ও চঞ্চলসহ আরও ৯ জন। এরা সবাই যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রফিকের মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতাদের ম্যানেজ করে যুবলীগ উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেয় সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল। সূত্রমতে যুবলীগের ওই পদ পেতে সে ব্যয় করে ৫০ লাখ টাকা। গুলশান, বাড্ডা, মুগদা এলাকার ত্রাস সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল রফিকের স্ত্রীর ভাই বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যার কিলিং মিশনে অংশ নেয় সে। চট্টগ্রামের জোড়া খুনের আসামি বাবরকেও নেয়া হয়েছিল কমিটিতে। পরে খুনের ঘটনার পর অস্বীকার করা হয় তাকে।

ছাত্রলীগের সাবেক অনেক নেতা যারা রাজনীতিতে ত্যাগী বলে পরিচিত এমন অনেকেই বছরের পর বছর যুবলীগের কমিটিতে জায়গা পেতে ঘুরে ঘুরে পেরেশান হলেও তাদের জায়গা হয়নি কমিটিতে। অন্যদিকে সত্তরের কোটায় বয়স এমন অনেক বিত্তবান ব্যক্তি নেতা হয়েছেন যুবলীগের। রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহমেদুল কবির কোন যোগ্যতায় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন সে নিয়ে প্রশ্ন আছে যুবলীগের ভেতরেই। একই ভাবে প্রশ্ন আছে প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম এবং বেসিক ব্যাংকের পরিচালক আনোয়ারুল ইসলামের যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার হওয়া নিয়ে। আবার কমিটি ঘোষণার সময় আনোয়ারুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল কেবল মাত্র সদস্য হিসেবে।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের আইটি সম্পাদক করা হয়েছে ফারুক নামের এক ভিওআইপি ব্যবসায়ীকে। যুবলীগের পরিচয়ে একচেটিয়া ভিওআইপি ব্যবসার মাধ্যমে অবৈধ ভাবে কয়েক শ’ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তিনি। কমিটি ঘোষণার সময় নাম প্রকাশিত হয়েছিল সহসম্পাদক হিসেবে পরে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়ে গেছেন গাজীপুরের আজহারউদ্দিন। যুবলীগ অফিসে চাউর আছে দেড় কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ওই পদটি পাওয়ার জন্য। একই ভাবে সাভারের নানা ভাবে বিতর্কিত তুহিনকে কমিটিতে আনা হয়েছে প্রশ্নযুক্ত ভাবে। উত্তরায় একটি নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় জড়িয়ে একটি মেয়েকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি এসএম জাহিদকে আনা হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে।

ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত টেন্ডার শফিক নামে পরিচিত শফিককে আনা হয়েছে যুবলীগের সম্পাদকম-লীতে। মোহাম্মদপুরের ত্রাস বলে পরিচিত তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীকে স্থান দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানের শ্যালক স্থান পেয়েছে যুবলীগ কমিটিতে। ওই সব সন্ত্রাসী এবং রাজনীতির গ-ির বাইরের বিত্তবানদের যুবলীগ কমিটিতে স্থান পাওয়া নিয়ে এখন তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছে যুবলীগের ভেতর। কেন্দ্রীয় যুবলীগের অনেক নেতাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, এভাবে কেনাবেচা করে ধুলোয় মিশিয়ে দেয়া হয়েছে সংগঠনের ভাবমূর্তি।

টাকা নিয়ে কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশীদ বলেন, এমন অভিযোগ আগেও উঠেছে। তবে এটা সত্য নয়। আমার জানামতে, কারও কাছ থেকে টাকা নেয়া হয়নি। তিনি যুবলীগে কোন সন্ত্রাসী নেই বলেও জানান।
Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.