![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাজার বছর পথ চলা শেষে,পাঁজিতে পুরাণে চেপে ; আমারা এসেছি নদীতে-নায়েতে, বেনো জল মেপে মেপে।।
♣♣♣♣♣♣♣♣♣
আমি মাদ্রার থুত্থুরে
বটের কাছে জানতে চাইলাম, হে,
ত্রিকালদর্শী বৃক্ষ- তুমি স্বাধীনতার গল্প জানো?
বয়েসী পাতায় মেখে নিয়ে গাঙচিল-রোদ্দুর, বললেন,"আমার
বাকল গুলোর কাছে কান পাতো; রক্তপোড়া ৭১'র হাহাকার শুনতে পাবে।"
আমি আকর্ণ কানপেতে শুনলাম রক্ত-নদীর শোক-গাথা।
নদী যমুনার কাছে জানতে চাইলাম, হে, পোড়-খাওয়া
মহান নদী, আমাকে স্বাধীনতার জলজ গল্প বলেন, গর্জে
উঠে ফেনিল ঢেউয়ের আক্রোশে, বললেন, "আমার গর্ভাশয়ের
পলির উর্বর-শপথ, আমার জল ছেঁকে আলাদা করো লোহিত
কণিকা ; দেখতে পাবে লক্ষ শহীদের করুণ রক্ত-গঙ্গার নমুনা।" আমি
হাতে তুলে আঁজলা ভরা জলের কিছুটা ; পেলাম আমার
ভাইয়ের রক্তে রাঙানো গর্বিত মৃগ-নাভী-কস্তুরী-ঘ্রাণ।
আমি তেজোদীপ্ত সূর্যের ঠিকরানো আগুনের
কাছে জানতে চাইলাম জন-যুদ্ধের বিরল ইতিবৃত্ত ; আরো বেশী
অগ্নি-শাপে ঝলসে যেতে যেতে, শোনালেন; বাসুবিহারের পোড়ামাটির
ফলকচিত্রের মত বিকৃতির বিলুপ্তিতে চাপা পড়া বারাঙ্গনার
লজ্জা-পুরাণ, আর বললেন, "সরিয়ে দে বেনিয়া আবডাল ; আলো
পৌছে দেব ইতিহাসের নাভীমূলে।" সরিয়ে আরোপিত অন্ধকারের
কালো পর্দা, আমি দেখলাম ; ছোপ ছোপ কাতর রক্ত, ক্রন্দনরত
হাড়ের স্তুুপ, জানোয়ারের লালসায় ছিন্নমূল-সতীত্ব, পুত্রহারা জননীর
অাগুন-অশ্রু, আর বিধবার দীর্ঘশ্বাস, আমূল জেগে আছে ঘাসে-গর্তে-বধ্যভূমির
প্রতিটি কান্নায়।
অনেক ঋণ জমিয়ে বোধের বাকলে অতঃপর সেজদার
অনিকেত ভঙিতে নতজানু আমি বসলাম, জন্মভূমির
সবুজ আঁচলে, আর বললাম, গেঁথে গেঁথে অনেক অশ্রু-ইট-সুরকি আমি
এসেছি জননী তোমার সন্মুখে, এবার আদেশ করো মাগো সন্তানে তোমার, এই
দেখো পেতে আছি আর্য-বুক। চোখ থেকে ঝড়িয়ে ক্রোধের স্ফুলিঙ্গ, বললেন
ঘৃণার আদলে ; "আমার পতাকায় যারা লাগিয়েছে রাজাকারের শকটের
দন্ড, আমার শোকের একাত্তরকে যারা করেছে সহজ পণ্য, আমার ইতিহাসের
জলে যারা মিশিয়েছে বিকৃতির তেল, যারা দুর্নীতিকে দিয়েছে শিল্পের
অভিধা, যারা আমাকে করেছে আরেকবার বিধবা ; সবকিছু ঘৃণার থুথু
জড়ো করে, বুলেটের তীব্রতায় ছুড়ে দে শকুনের মচ্ছবে, ঝাঁঝরা করে দে মীরজাফরদের
পুনর্জন্মের অভিশপ্ত আঁতুর-ঘর।"
আর আমি তাঁর হাজার বছরের
পলি-জাত সন্তান ; চেতনায় তুলে নিয়ে আরেকটা যুব্ধের মুদ্রা
নূরলদীনের মত ডাকলাম, "জাগো বাহে, কোনটে সবাই?" কী
আশ্চর্য! আমার সে ডাক পৌছে গেল দিগ্বিদিক ছাপ্পান্নহাজার বর্গমাইলের প্রতিটি
শস্যকণায়, প্রতিটি নদীতে আর বঙ্গোপসাগরের গর্জনের মত প্রতিটি
আর্য়-জাত মুষ্ঠিবব্দ হৃদয়ের অনিকেত "জয়বাংলা" স্লোগানে।
১/১২/২০১৪
ঝালকাঠী।
©somewhere in net ltd.