![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানব শিশুর জন্মের পর তাকে যদি আধুনিক সভ্য জগতে সাংস্কৃতিক পরিমন্ডল থেকে দূরে রাখা যায় (কোন গহীন জঙ্গলে) এবং সেখানেই যদি সে বেড়ে উঠে তবে নিঃসন্দেহে সে জংলী হয়ে বেড়ে উঠবে। তার মধ্যে জঙ্গলের প্রাণিদের বৈশিষ্ট্যই দেখা যাবে যাকে বলা হয় পশুত্ব।
আর সভ্য জগতের যে অংশে মানব শিশু বেড়ে উঠে সেখানকার পারিপার্শ্বিক পরিবেশই নির্ধারন করে বড় হলে সে কেমন মন মানসিকতার অধিকারী হবে। যদিও জেনেটিক কিছু বিষয় থাকে, কিন্তু সার্বিক শিক্ষা ব্যবস্থাই মুলত প্রাধান্য বিস্তার করে।
এই শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক (formal and informal)। পরিবার,সমাজ প্রভৃতি থেকে পাওয়া যায় অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা যার অনেক কিছুই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় পাওয়া সম্ভব নয়।বিপরীতভাবে তো আরও বেশি সত্য। এই শিক্ষা,প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক, ব্যতীত মানব শিশু আকার আকৃতিতে মানুষ হলেও পশুত্বকে কাটিয়ে উঠে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে পারে না।তাই,একটি মানব শিশুর বেড়ে উঠার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা।
এখন কথা হচ্ছে শিক্ষা তো অনেক রকমের আছে।আর সব শিক্ষা একজন মানুষ কখনোই অর্জন করতে পারে না।তাহলে???
এখানে আসল কথাটি হচ্ছে মানব শিশুর মনুষ্যত্ব অর্জন করার জন্য প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা। কিন্তু,কোনটি সঠিক শিক্ষা?? এ প্রশ্নটির উত্তর পেতে হলে চিন্তাশীল হতে হবে। ভাবতে হবে একজন মানুষের জীবনের সার্বিক লক্ষ্যটা কী??
আপনি যদি পরকালে বিশ্বাসী হয়ে থাকেন তাহলে হয়ত বলবেন দুনয়াতে সুখে শান্তিতে থাকা আর সেই সাথে পরকালের সুখ শান্তি নিশ্চিত করা।আর যদি পরকালে অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন তাহলে বলবেন দুনিয়াতে বেচে থাকা কালীন সুখ শান্তিই হচ্ছে মানুষের জীবনের লক্ষ্য।
তাহলে এবার খেয়াল করুন, একজন পরকালে অবিশ্বাসী যেহেতু মনে করে এই পৃথিবীটাই সব কিছু,এখানে সুখ শান্তি অর্জনই মানব জীবনের একমাত্র লক্ষ্য, সেহেতু সে চাইবে যেকোন উপায়ে পৃথিবীতে সুখী হতে।আর সুখী হওয়ার যেহেতু সর্বোচ্চ কোন সীমা নেই তাই সে যতই পাবে ততই চাইবে। আর তার এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে তাতে শেখানো হবে ভোগবাদি নীতি (যা বর্তমানে স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখানো হচ্ছে)।
আর এই শিক্ষার ফলে মানুষ হবে সার্থপর,যা মানুষকে পশুত্ব অর্জনের দিকে নিয়ে যাবে।
অন্যদিকে পরকালে সুখশান্তি অর্জনও যদি মানুষের জীবনের লক্ষ্য হয়,তাহলে সে নীতি -নৈতিকতা মেনে চলবে।পরকালে সুখের আশায় দুনিয়াতে ত্যাগ স্বীকার করবে,যার কারনে সার্বিকভাবে পুরো সমাজ সুখি হবে।সবাই যদি একটু একটু ত্যাগ স্বীকার করে তাহলে সমাজে আর দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। আর তাই মানুষের জীবনের ইহকাল এবং পরকাল উভয়কালীন কল্যাণকে জীবনের লক্ষ্য ধরে নিয়ে সে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য যে শিক্ষা অর্জন করা হবে তা ই হচ্ছে সঠিক শিক্ষা। এর মাধ্যমে সকল অন্যায়,অনাচার,অবিচার দূরীভুত করে একটি সুখি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
(চলবে)
©somewhere in net ltd.