![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিরীহ প্রজাতির মানুষ। কারো সাতপাঁচে থাকতে চাই না! মানুষ বাদ দিলে সবচেয়ে প্রিয় জিনিস, সেলফোন! এই জিনিস কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না, মিথ্যা বলে না, নিজের সাধ্য মত আমাকে সঙ্গ দেয়! আগে অবশ্য এ জায়গায় বই ছিল! কিন্তু, ব্যস্ততা আমায় দেয় না বই পড়ার অবসর! কথা কম বলার চেষ্টা করি! কারণ, কথা আর তীর একবার ছুঁড়ে দিলে ফিরিয়ে নেয়া যায় না। তাই, পারতপক্ষে কথা এড়িয়ে যাই, তা সে যত কাছের বন্ধুই হোক! কে যে কোন কথায় আঘাত পায় বলা যায় না! না হাসতে হাসতে আমার মুখে একটা দুঃখি দুঃখি ভাব চলে আসছে মনে হয়! এখানেও একটা ছোটবেলার কারণ আছে, কোথায় যেন পড়েছিলাম, মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের কথা মনে থাকলে মুখে কখনো হাসি থাকবে না! কথাটা এখনো মাথায় রয়ে গেছে! তাই বলে ভাববেন না, খুব ধার্মিক আমি! ছোটবেলায় ইচ্ছা ছিল মেজর হব! কেন? মেজর শব্দটা অনেক মনে ধরে গিয়েছিল! হাহাহা! পরে বুঝলাম মেজর তো দূরে, সেনাবাহীনি পর্যন্তই যাওয়া অসম্ভব! শেষ পর্যন্ত যা হতে চেয়েছিলাম, সেটা এখনো হতে চাই। কিন্তু, সেটা ধরাছোঁয়ার বাইরে! কোন এক কলেজের ইংরেজির টিচার! এখন রওনা দিয়েছি এমন পথে, যেটা কখনো ভাবিনি! আগে বুঝতাম না, "সবার মাঝে থেকেও একা" মানে কি, মেডিকেল এই জিনিসটা হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। অনেক মিস করি আমার ৩/৪ জন বন্ধুকে। কিন্তু, একেক জন থাকে শত মাইল দূরে! এটা পথের হিসাব, "অন্য হিসেবে" দূরত্ব খুব বেশি না! ২৪ ঘন্টায় নিজের জন্য সময় খুব একটা থাকে না। যেটুকু থাকে সেটা ঐ মিস করতে করতে চলে যায়! জীবনের প্রথম ২১ বছরে প্রাপ্তির খাতায় ১০০ তে ৯০ দিব নিজেকে! স্কুল লাইফে বাসায় ফিরে কিছু করার থাকতো না, তখন আক্ষরিক অর্থেই দিবাস্বপ্ন দেখতাম। তার মাঝে শুধু একটা স্বপ্ন পূরণ হয়নি, বন্ধুগুলো একসাথে থাকাটা! তবু, অনেক ভালো আছি। আব্বু-আম্মু-ভাই-বোন নিয়ে। কোন দিনকেই আমার "আজাইরা দিন" মনে হয় না। কারণ, এই মুখগুলো। দিন যেমনই যাক, তাদের মুখ দেখে ঘুমাতে যেতে পারি এটাই আমার কাছে অনেক, তা সে মুখগুলো আমার প্রতি বিরক্তিতে কুঁচকে থাকলেও!
পঙ্কজদা আর দিদি গিয়েছিলেন নেমন্তন্নে পাশের বাড়ি। এ বাড়িতে পঙ্কজদা এই প্রথম ঢুকবেন। ২ বছরে প্রথম ঢুকবেন তথা বলা বাহুল্য, এ বাড়িতে অষ্টাদশী না হোক, কোন অল্প বয়সী রমণী অবশ্যই আছে। সঠিক, পঙ্কজদা এখনও ঠিক করতে পারছেন না, নেমন্তন্ন রক্ষা করা খুবই জরুরি কি না। উনি রমণীকুলের সামনে অস্বস্তিবোধ করেন।
দিদি কড়া নাড়েন। ত্রস্ত পায়ের শব্দ আসে ভেতর থেকে। দিদি বার কয়েক পঙ্কজদাকে দরজার সামনে আনতে চেষ্টা করেন, উনি সরে যান।
খট করে দরজা খুলে যায়, এক কপাট এসে পঙ্কজদাকে আড়াল করে ফেলে।
ও বাড়ির অষ্টাদশী, নীলিমাদি খুলেছেন। দিদির পিছনে উঁকি দেন তিনি, “তোমার দাদা আসে নি?”
দিদি খানিক অপ্রস্তুত হয়ে যান, চোখের কোণে পঙ্কজদার প্রবলভাবে মাথা নাড়ানো ধরা পড়ে তার।
অস্ফুটে বলেন, “না রে। কত করে বললাম আসতে, এলো না।“
“ওহ” খানিকটা হাসার চেষ্টা করেন নীলিমাদি।
পঙ্কজদা ফিরে যাচ্ছেন, “কেন করলো প্রশ্নটা? যদি মুখ দেখাতেন। কি লজ্জাটা পেত। যাহ! আজকেও দেখতে পারলাম না, ও দেখতে কেমন!”
আমি অবাক হই না, “তুমি আজকেও ঢুকো নি ও বাড়িতে?”
উনি হালকা একটু হাসি দেন।
“কি সমস্যা তোমার বলো তো। এমন কর কেন? নিজেকে খুব সুপুরুষ ভাবো?” গলা কঠোর হয়ে যায় আমার।
ফেসবুকের পাতা থেকে চোখ সরিয়ে বলেন, “শোন, ভিজিএ ক্যামেরায় ভাঙা মানুষের মুখও ভরা ভরা লাগে, স্ট্যাটাস পড়ে মানুষ চিনতে পারা মনে করা বোকামী”।
তার এ অদ্ভুত কথায় রাগ এবার আমার আরাম-কেদারায় আছড়ে পড়ে, “নীলিমাদি তোমার ফেসবুকে নাই, উনি তোমাকে বাস্তবে দেখেছেন”।
বলার কিছু আর রইলো না পঙ্কজদার বুঝতে পারি। আবার ফেসবুকের পাতায় ডুব দেন। তার নীরবতার কারণ সম্পর্কে আমি অবগত।
ঘরের বড় ছেলেদের মনে হয়, অনেক কিছুই বিসর্জন দিতে হয়! ছোট্টবেলা থেকে, বড়বেলাতেও... খুন করে ফেলে নিজের অনেক সুখ! অবশ্য তারা সে সম্পর্কে জ্ঞাত কি না, আমার জানা নাই। শিক্ষিত ভদ্র পরিবারের মান তো তাদের হাতে ন্যস্ত থাকে।
“নীলিমাদি দেখতে কেমন জানো?” আস্তে করে প্রশ্নটা করি।
উত্তর আসে না।
©somewhere in net ltd.