নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগে পড়ি এবং নিজের ক্ষুদ্রতা ও জ্ঞানের স্বল্পতা স্বীকার করি। নিজেকে বুদ্ধিজীবী ভাবি না। ঐ বয়সটা পার করে এসেছি।

ব্লগার_প্রান্ত

Ashraful Alam Khan Pranto

ব্লগার_প্রান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্লীহা, ব্রিটিশরাজ এবং স্বাধীনতার গুরুত্ব

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৪৫


মানবদেহের প্রতিরক্ষা চ্যাপ্টারটি পড়ে আমরা জানতে পেরেছি যে, প্লীহা আমাদের দেহকে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমন থেকে রক্ষা করে। তবে ভারতীয় উপমহাদেহের ইতিহাসে প্লীহা বা spleen এর আরেকটি তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায় আছে।
যদি আঘাতজনিত কারণে কোনো মানুষের প্লীহা ফেটে যায়, তবে দ্রুত ডাক্তারের কাছে না নেয়া হলে বা ভুল চিকিৎসা হলে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যু অনেকটাই অনিবার্য। এখনকার প্রযুক্তি অনেক সমৃদ্ধ, ডাক্তাররা আগের চেয়ে অনেক ভালো বোঝেন। কিন্তু ব্রিটিশরাজ শাসিত ভারতবর্ষের কথা কল্পনা করুন তো? কিছু বুঝলেন?

গরিব মানুষকে চাকুরিচ্যুত করার সময় বাংলা সিনেমার অভিনেতারা হাতে পায়ে ধরে বলেন,"সাহেব, দয়া করে এই গরিব মানুষের পেটে লাথি মারবেন না"। পেটে লাথি মারার এক ঐতিহাসিক সংস্কৃতির স্মৃতি আমরা এখনো আমাদের ভাষায় বহন করে চলেছি।
আশা করি ধরতে পেরেছেন। বিশালদেহী বদমেজাজি ব্রিটিশরা একটু বিরক্ত হলেই তাদের অধীনস্ত বাদামী ভারতীয়দের পেটে সজোরে লাথি মারতেন। এই অতি পরিচিত তথা কমন ব্রিটিশ আচরণের বদৌলতে প্লীহা ফেটে যাওয়া অনেক নিরীহ ভারতীয় চাকর পরলোকগমন করেছেন।
এই স্যাডিজমের সমাপ্তি এখানে হলেই হয়তো মনে শান্তি পেতেন অনেকেই, কিন্তু না। ব্রিটিশদের লাথি খেয়ে কর্মচারীর মৃত্যু সবসময়ই ছিলো একটি "দূর্ঘটনা"। তারচেয়েও দুঃখজনক বিষয় হলো প্রচন্ড যন্ত্রনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিটির আগে কখনো ম্যালেরিয়া হলে, এই সমস্ত দোষ গিয়ে পড়তো মৃত ব্যক্তির ঘাড়ে। কারণ ম্যালেরিয়া হলে রোগীর প্লীহা স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়ে যায়। সুতরাং দূর্ঘটনা বশত ব্রিটিশরাজের কর্মীটি যখন পূর্বের ম্যালেরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিটিকে লাথি মেরেছেন, তখন বড় প্লীহা থাকা ব্যক্তিটির প্লীহা ফেটে যাওয়ায় সমস্ত কেলেঙ্কারির সূচনা হয়েছে।

সংক্ষিপ্ত লেখাটি শেষ করবো Notes on Striking Natives (1903) এর কুখ্যাত একটি নোট দিয়ে।
In the middle of the hot night, the fan stops, and a man in the barrack-room, roused to desperation by heat and sleeplessness rushes forth, careless of the consequences, and kicks the fan-puller in the wrong spot, his spleen. Do you blame him? Yes and No. It depends partly on whether he stopped to put his boots on.
– Capt. Stanley de Vere Julius,
Notes on Striking Natives (1903)

সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।


দোহাই,
https://www.jstor.org/stable/3879358?seq=1 (The Boot and the Spleen: When Was Murder Possible in British India?)
https://www.theguardian.com/world/2017/mar/08/india-britain-empire-railways-myths-gifts
https://www.crick.ac.uk/news/2013-06-06-the-role-of-the-spleen-in-fighting-malaria
https://www.nytimes.com/1972/10/15/archives/ruptured-spleen-can-be-a-killer-surgery-for-jet-fullback-is-common.html
https://cbkwgl.wordpress.com/2017/03/09/the-british-boot-punch-magazine-1875
ছবি: https://www.livescience.com/44725-spleen.html

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: অদৃশ্য ভাবে ক্ষমতাবানরা আজও পেটে লাঠি দিচ্ছে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৮

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: সহমত

২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: জর্ডানা বেইলকীনের একটা লেখা আছে এই বিষয়ে। ভালো একটা বিষয়। আপনার লেখাটা কেমন জানি হঠাৎ করেই শুরু আর হঠাৎ করেই শেষ হয়েছে মনে হলো। আরো বিস্তারিত লিখতে পারতেন। যেমন, তৎকালীন ভারতীয় সমাজে এর কি প্রভাব ছিল, প্রতিবাদ ছিল কিনা বা থাকলে সেটার ধরন কেমন ছিল, ভারতীয় শেতাঙ্গ সমাজের প্রতিক্রিয়া .....ইত্যাদি ইত্যাদি।

এটা অবশ্য শুধু ভারতে না, দুনিয়াব্যাপি বৃটিশ কলোনীরই কালচার ছিল। বড় একটা ক্ষেত্র ছিল আফ্রিকা।

মূল কথা হলো, এতো সংক্ষেপিত লেখা থেকে কোন বক্তব্য পাওয়া যায় না; একটা স্টেটমেন্টের মতোই মনে হয় বিশাল একটা বিষয়কে।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: জর্ডানা বেইলকীনের রিসার্চ পেপারের লিংকটাই প্রথমে দিয়েছি। আমার জেস্টোর একাউন্ট নেই, তাই পড়তে পারিনি পুরোটা।
আপনি ধরতে পেরেছেন, এটা আমি ব্লগের জন্য লিখিনি, তাই আপনার এমন মনে হয়েছে। এটা ফেসবুকের একটা গ্রুপের জন্য লেখা। ভাবলাম কপি পেস্ট করে ব্লগেও রেখে দেই।
ভারতীয় শেতাঙ্গ সমাজের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে বিশেষ কিছু জানি না। তবে খুব উল্লেখ্যযোগ্য ইতিবাচক কিছু হয়তো নয়, হলে জানাবেন। An Era of Darkness: The British Empire in India বইটা কিনবো সামনে, তখন একটা ভালো রিভিউ দিবোনে। নিমন্ত্রন রইলো। ধন্যবাদ।

৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:০৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ব্রডার পারসপেক্টিভের জন্য এটা পড়ে দেখতে পারেন। অল্প করে হলেও আপনার বিষয়টা এসেছে শশী থারুরের এই বইতে।view this link

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৬

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: শশী থারুরের এন এরা আগে পড়বো নাকি ইনগ্লোরিয়াস এমপায়ার আগে পড়বো, এটা নিয়ে ঘাটবো ভাবছিলাম। ধন্যবাদ ভাই।

৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:২২

আমি সাজিদ বলেছেন: চমৎকার যথারীতি

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৭

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ সাজিদ ভাই। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা নিবেন।

৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:১৫

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: "পানি বরাবরই নীচের দিকে গড়ায়" - আপনি আবারো তা প্রমাণ করে দিলেন।

লেখায় চমতকার অর্ন্তনিহীত বার্তা, কিন্তু তখন বা এখনও ক্ষমতাশীন দের জন্য এসব মেসেজ কোন মেসেজই নয়।তারা যা মন চায় তাই করতে পারে।doubt of benifit এর সুবিধাও তাদের পক্ষেই প্রশাসনের ক্ষমতার কথা বাদই থাক।

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ পরিসংহার টেনেছেন। শাসক শ্রেণীর চরিত্র পাল্টায় না, অত্যাচারের মাত্রা এবং রুপ পাল্টায়। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.