নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Ashraful Alam Khan Pranto
কোকো কি গুগলকে ধন্যবাদ দিচ্ছে?
আজকে দুপুর নাগাদ বের হবো। এমন সময় পাশের বাসা থেকে ছানাটিকে রেসকিউ করে আমাদের তত্ত্বাবধানে আনা হলো। আমি পোষ্য হিসেবে পশুপাখি কেনাটা সমর্থন করিনা তেমন। তারপরও এক জোড়া বাজিগার আরেকজনের অনুরোধে পালতে হচ্ছে, এখন যুক্ত হলো এই ছানাটি।
যাহোক, ছানাটি নিয়ে আশাবাদী নই। গত তিনদিনে তার সাথে থাকা বাকি ছানাগুলোকে দুটি ৪ বছর বয়সী মানবশিশু খেলতে খেলতে পটল ক্ষেতে পাঠিয়েছে (!), একেও আধামরা করে ছেড়েছে বলা যায়। কিছু হাবিজাবি করে, ছানাটির নাম "ডিসেম্বর" রেখে বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলাম।
রাতে বাসায় ফিরে দেখি, আপু সরল মনে ওর নাম "ডিসেম্বর" থেকে "কোকো" করে ফেলেছে। মুরগি হিসেবে আমার দেয়া নামটা বেশি এস্থেটিক হয়ে যায় কি? এদিকে আমার জটিল চিন্তাভাবনার আম্মু, পাখিটির নাম "কোকো" থেকে "জয়" করে ফেলার সুপারিশ করছে বারবার। এসব হাসিখুশির মধ্যে একটা বড় সমস্যা খেয়াল করলাম। কোকো ননস্টপ কিচিরমিচির করে যাচ্ছে। অন্যরা বিষয়টা নিয়ে তেমন না ভাবলেও আমার একটু খটকা লাগলো।
২.
জুতার বাক্সে কোকোর থেমে থেমে শব্দ করা এখনও থামেনি। আমি জানতাম না এটা ছোট মুরগিদের স্বভাবসুলভ কিছু কিনা। সাত পাঁচ ভেবে গুগলকে তলব করলাম। গম্ভীর মুখে গুগল বললো, কোনো সমস্যায় আছে ছানাটি। আরো তদন্তে বুঝলাম, ছানাটি তার পটল তোলা ভাইদের ডাকছে। একা একা ভয় আর শীত রাতের মুখোমুখি হতে কার ভালো লাগে বলুন?
কিছুটা খাবার ও পানি খাইয়ে, ওকে হাতের মুঠোয় নিয়ে মুখ দিয়ে একটু একটু উত্তাপ দিতেই ও ঘুমিয়ে পড়লো। অনবরত শব্দ করতে ভালো শক্তিই খরচ হওয়ার কথা! কিন্তু এখানে আরেক বিপত্তি। হাতের মুঠো খুলতেই আবার কিচমিচ। অনেকক্ষণ চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিলাম। গুগলের পরামর্শে কিছু কাপড়ের টুকরো আর আমার রুমালটায় ওকে পেঁচিয়ে খাটের নিচে পাঠানো হলো।
কোকো হয়তো গুগলকে ধন্যবাদ দিচ্ছে এখন। কিন্তু আমাকে নিয়ে ওর খুব সুখী বোধ করার কিছু নেই। আজ ওর মা থাকলে সারারাত ওকে ডানার উত্তাপে আদর দিতো। আর আমি ওর দুঃখের কথা আপনাদের মনে করিয়ে, রাতটাকে আরেকটু শীতল করে দিচ্ছি। তবে ভালো হলো সবচে বড় ট্র্যাজেডিটা কোকো কোনোদিনও জানবে না। ওর নাম "ডিসেম্বর" রাখার পেছনে আমার খুব সৎ কোনো উদ্দেশ্য ছিলোনা। দিনশেষে আমার হিসেব রাখতে হবে ওর কত বয়স হলো। কারণ, শত হোক, কোকোর সাথে আমাদের খাতির, খাদক আর শিকারের..।
মধ্যরাতে মুরগিছানা নিয়ে ক্লান্ত মানুষের প্রলাপ পুরোটা শুনে, অনেক বড় মনের পরিচয় দিলেন। এখন শুভ রাত্রি।