নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমপেরেটিভ থিওলজি, রাজনীতি, দর্শন, সাহিত্য নিয়ে আগ্রহ রাখি। পড়ি ও আলোচনা করি।

আবদুল্লাহিল বাকি

একদিনের স্বপ্নে, অনেকগুলো নক্ষত্র আর ছায়াঘেরা পথ নেমে এসেছিল আমার আঙিনায়। স্বপ্নটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমি খুঁজে ফিরছি এখনো সেই নক্ষত্র আর ছায়াদের।

আবদুল্লাহিল বাকি › বিস্তারিত পোস্টঃ

তিনজন বিদেশি সাহাবী: দেশীয় জাতীয়তাবাদের গভীর প্রভাব

১৬ ই জুলাই, ২০২০ রাত ২:৫৩


আরবের যে প্রেক্ষাপটে ইসলামের উত্থান ঘটেছে—সে সময় কতৃত্বশীল দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল রোম, পারস্য আর আবেসিনিয়া। সে সময়ের আরব বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপ থাকলেও বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল— তা কিন্তু নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উপরোক্ত তিনটি রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ অব্যহত ছিল আরবের।

ইসলামের সামাজিক প্রেক্ষাপটও এর অভিন্ন ছিল না। এজন্যই মুসলমানরা প্রথম হিজরত করেছে আবেসিনিয়ায়। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যেতে হত তাদেরকে শামে। আর শাম ছিল রোম সাম্রাজ্যেরই একটা অংশ। আর ইয়েমেনের সাথে তো আবরের স্বাভাবিক যোগাযোগ ছিলই। আর ইয়েমেন পারস্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল।

আরব জাতীয়তার অন্তর্ভূক্ত সাহাবীদের পাশাপাশি এই তিন অঞ্চল থেকেও আমরা প্রভাবদীপ্ত তিনজন সাহাবীকে দেখতে পাই ইসলামের ইতিহাসে। রোমদের পক্ষ থেকে সুহাইব রোমানী, পারস্য থেকে সালমান ফারসী আর আবেসিনিয়া থেকে বেলাল হাবশী।

সুহাইব রা. ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর, ফর্সা। মাঝারী গড়নের উচ্চতা। তিনি আরবী পারতেন বটে, তবে তার উচ্চারণে রোমান ভাষার টান ছিল। কারণ তিনি শৈশব আর কৈশর যাপন করেছেন রোমানের সংস্কৃতিতেই। পরে দাস হয়ে মক্কায় আসেন। শুরুর দিকেই ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হন।

সালমান ফারসী রা. জন্মগ্রহণ করেছেন ইস্পাহানের এক গ্রামে। সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলেন। অনেক ঘাটের জল খেয়ে পরে মদিনায় এসে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন।

আর বেলাল হাবশী রা. আগমন করেছিলেন হাবশা থেকে। জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে। তার পিতা রাবাহ ছিলেন বহু-নারী বল্লভ পুরুষ। আর মাতা হামামাহ ছিলেন আবিসিনীয় একজন প্রাক্তন রাজকুমারী। বিয়ের সময় তারা স্বাধীনই ছিলেন। কিন্তু আমুল-ফিলের ঘটনার পর আবেসিনিয়ায় শাসক-শূণ্যতার দরুণ বহিরাগত আক্রমণ হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাসত্ব বরণ করতে হয় রাজকুমারীকে। তাই জন্মের সময় বেলাল দাস হয়েই জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গী। কিন্তু তার ছিল দীর্ঘ দেহ আর প্রশস্ত কাঁধ।

তারা তিনজনই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ধর্ম হিসেবে মাথা পেতে নিয়েছিলেন ইসলামকে। কিন্তু আরব সংস্কৃতির প্রভাব অপেক্ষা তাদের মাঝে বেশি ছিল দেশীয় সংস্কৃতির প্রভাব। আরব সংস্কৃতির প্রভাব যে ছিল না, এমনটাও অবশ্য বলা যায় না।

যেমন, রোমানরা সাধারণত একটু বেশি অপচয় করে থাকে। এর নেতিবাচক নয়, ইতিবাচক প্রভাব সুহাইব রা.এর মাঝেও ছিল। তিনি স্বাভাবিকভাবে ব্যয় করতেন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। তাছাড়া রোমানটা একটু ঠাণ্ডা মেজাযের আর রসিক প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার মাঝেও এই রসবোধ ছিল অন্যান্য সাহাবীদের চেয়ে বেশি।

আর পারস্য হল অনেক আগে থেকেই—সবধরণের পীর-মুরিদি, দরগাগিরি, মরমিবাদের লালনক্ষেত্র। এরকম অনেক খানকায় সালমান ফারসী ঘুরে এসেছেন। ইসলাম গ্রহণের পরও তার মাঝে মরমিবাদী একটা মন স্বক্রিয় ছিল সবসময়।

আবেসিনিয়ার মানুষরা সাধারণত স্বচ্ছ হৃদয় আর ধর্মপ্রবণ হয়ে থাকেন। বেলাল রা.ও তেমন ছিলেন। এছাড়াও তিনি স্বজাত হাবশীদের মত দক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। ছিলেন কষ্টসহিষ্ণু। উমাইয়া তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। তিনিও এর প্রতিশোধ নিয়েছিলেন বদরের ময়দানে। তীর নিক্ষেপ করেছিলেন উমাইয়াকে লক্ষ্য করে। সে তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। আমূল সেঁধিয়ে গিয়েছিল তার ভেতরে।

তারা কেউ অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না আরব সংস্কৃতির। উঠে এসেছিলেন দাস হিসেবে অন্য মাটি থেকে। ইসলাম তাদেরকে মহত্ব দান করেছে, আরব জাতীয়তা নয়। এজন্যই তারা আরব গোত্রবাদকে খুব ঘৃণার চোখে দেখতেন। কিন্তু আরবদের রগ-রেশায় সম্প্রদায়-প্রীতি মিশে গিয়েছিল। সামাজিকভাবে ইসলামের সবচে’ বড় প্রচেষ্টা ছিল ধীরে ধীরে এই ভূতকে আরবের মাটি থেকে বিদায় করা। আওস আর খাযরাজের এই গোত্রবাদী বিবাদ যেন নিষ্পত্তি হয়ে যায়— এই আবেদনেই ইয়াসরিববাসিরা প্রথম বাইয়াতুল আকাবায় এসেছিলেন। নবীজির কাছে প্রস্তাব পেশ করেছিলেন।

সালমান রা.এর ভাগ্যই বলতে হয়। আব্বাসী খেলাফতের মত একটা প্রভাবশালী খেলাফতের রাজধানী ছিল পারস্য; রোম বা আবেসিনিয়া নয়। বংশগত দিক থেকে আব্বাসীদের গর্বের প্রতীক ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস। কিন্তু জাতীয়তার প্রতীক ছিল পারস্যের মুসলমানদের কাছে সালমান ফারসী। তার জীবনের পূঙ্খানুপূঙ্খানু বিষয়ও সংরক্ষণ করে তারা নিজেদের জাতীয়তার মর্যাদা রক্ষা করেছে।

কিন্তু বেলাল ও সুহাইব রা.এর প্রাক-ইসলামী জীবনের কিছু অংশ-মাত্র পাওয়া যায় ইতিহাসে। সালমান রা.এর মত এতটা বিস্তৃতভাবে তাদের জীবনধারা ও কর্ম আলোচিত হয়নি।

তারা ছিলেন জাতীয়তার বিরোধী। কিন্তু জাতীয়তার প্রবল সমর্থনের অভাব তারা তাদের অঞ্চলের প্রতীক হিসেবে বরিত হননি ইতিহাসে.....
আরবের যে প্রেক্ষাপটে ইসলামের উত্থান ঘটেছে—সে সময় কতৃত্বশীল দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল রোম, পারস্য আর আবেসিনিয়া। সে সময়ের আরব বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপ থাকলেও বহির্বিশ্বের সাথে যোগাযোগ যে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল— তা কিন্তু নয়। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে উপরোক্ত তিনটি রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ অব্যহত ছিল আরবের।

ইসলামের সামাজিক প্রেক্ষাপটও এর অভিন্ন ছিল না। এজন্যই মুসলমানরা প্রথম হিজরত করেছে আবেসিনিয়ায়। ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যেতে হত তাদেরকে শামে। আর শাম ছিল রোম সাম্রাজ্যেরই একটা অংশ। আর ইয়েমেনের সাথে তো আবরের স্বাভাবিক যোগাযোগ ছিলই। আর ইয়েমেন পারস্যের অন্তর্ভূক্ত ছিল।

আরব জাতীয়তার অন্তর্ভূক্ত সাহাবীদের পাশাপাশি এই তিন অঞ্চল থেকেও আমরা প্রভাবদীপ্ত তিনজন সাহাবীকে দেখতে পাই ইসলামের ইতিহাসে। রোমদের পক্ষ থেকে সুহাইব রোমানী, পারস্য থেকে সালমান ফারসী আর আবেসিনিয়া থেকে বেলাল হাবশী।

সুহাইব রা. ছিলেন অত্যন্ত সুন্দর, ফর্সা। মাঝারী গড়নের উচ্চতা। তিনি আরবী পারতেন বটে, তবে তার উচ্চারণে রোমান ভাষার টান ছিল। কারণ তিনি শৈশব আর কৈশর যাপন করেছেন রোমানের সংস্কৃতিতেই। পরে দাস হয়ে মক্কায় আসেন। শুরুর দিকেই ইসলাম গ্রহণ করে ধন্য হন।

সালমান ফারসী রা. জন্মগ্রহণ করেছেন ইস্পাহানের এক গ্রামে। সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়েছিলেন। অনেক ঘাটের জল খেয়ে পরে মদিনায় এসে ইসলাম গ্রহন করেছিলেন।

আর বেলাল হাবশী রা. আগমন করেছিলেন হাবশা থেকে। জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫৮০ খ্রিষ্টাব্দে। তার পিতা রাবাহ ছিলেন বহু-নারী বল্লভ পুরুষ। আর মাতা হামামাহ ছিলেন আবিসিনীয় একজন প্রাক্তন রাজকুমারী। বিয়ের সময় তারা স্বাধীনই ছিলেন। কিন্তু আমুল-ফিলের ঘটনার পর আবেসিনিয়ায় শাসক-শূণ্যতার দরুণ বহিরাগত আক্রমণ হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাসত্ব বরণ করতে হয় রাজকুমারীকে। তাই জন্মের সময় বেলাল দাস হয়েই জন্ম নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন কৃষ্ণাঙ্গী। কিন্তু তার ছিল দীর্ঘ দেহ আর প্রশস্ত কাঁধ।

তারা তিনজনই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ধর্ম হিসেবে মাথা পেতে নিয়েছিলেন ইসলামকে। কিন্তু আরব সংস্কৃতির প্রভাব অপেক্ষা তাদের মাঝে বেশি ছিল দেশীয় সংস্কৃতির প্রভাব। ছিল না এমনটা বলা যায় না।

যেমন, রোমানরা সাধারণত একটু বেশি অপচয় করে থাকে। এর নেতিবাচক নয়, ইতিবাচক প্রভাব সুহাইব রা.এর মাঝেও ছিল। তিনি স্বাভাবিকভাবে ব্যয় করতেন প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। তাছাড়া রোমানটা একটু ঠাণ্ডা মেজাযের আর রসিক প্রকৃতির হয়ে থাকে। তার মাঝেও এই রসবোধ ছিল অন্যান্য সাহাবীদের চেয়ে বেশি।

আর পারস্য হল অনেক আগে থেকেই—সবধরণের পীর-মুরিদি, দরগাগিরি, মরমিবাদের লালনক্ষেত্র। এরকম অনেক খানকায় সালমান ফারসী ঘুরে এসেছেন। ইসলাম গ্রহণের পরও তার মাঝে মরমিবাদী একটা মন স্বক্রিয় ছিল সবসময়।

আবেসিনিয়ার মানুষরা সাধারণত স্বচ্ছ হৃদয় আর ধর্মপ্রবণ হয়ে থাকেন। বেলাল রা.ও তেমন ছিলেন। এছাড়াও তিনি স্বজাত হাবশীদের মত দক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন। ছিলেন কষ্টসহিষ্ণু। উমাইয়া তাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। তিনিও এর প্রতিশোধ নিয়েছিলেন বদরের ময়দানে। তীর নিক্ষেপ করেছিলেন উমাইয়াকে লক্ষ্য করে। সে তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। আমূল সেঁধিয়ে গিয়েছিল তার ভেতরে।

তারা কেউ অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না আরব সংস্কৃতির। উঠে এসেছিলেন দাস হিসেবে অন্য মাটি থেকে। ইসলাম তাদেরকে মহত্ব দান করেছে, আরব জাতীয়তা নয়। এজন্যই তারা আরব গোত্রবাদকে খুব ঘৃণার চোখে দেখতেন। কিন্তু আরবদের রগ-রেশায় সম্প্রদায়-প্রীতি মিশে গিয়েছিল। সামাজিকভাবে ইসলামের সবচে’ বড় প্রচেষ্টা ছিল ধীরে ধীরে এই ভূতকে আরবের মাটি থেকে বিদায় করা। আওস আর খাযরাজের এই গোত্রবাদী বিবাদ যেন নিষ্পত্তি হয়ে যায়— এই আবেদনেই ইয়াসরিববাসিরা প্রথম বাইয়াতুল আকাবায় এসেছিলেন। নবীজির কাছে প্রস্তাব পেশ করেছিলেন।

সালমান রা.এর ভাগ্যই বলতে হয়। আব্বাসী খেলাফতের মত একটা প্রভাবশালী খেলাফতের রাজধানী ছিল পারস্য; রোম বা আবেসিনিয়া নয়। বংশগত দিক থেকে আব্বাসীদের গর্বের প্রতীক ছিলেন আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস। কিন্তু জাতীয়তার প্রতীক ছিল পারস্যের মুসলমানদের কাছে সালমান ফারসী। তার জীবনের পূঙ্খানুপূঙ্খানু বিষয়ও সংরক্ষণ করে তারা নিজেদের জাতীয়তার মর্যাদা রক্ষা করেছে।

কিন্তু বেলাল ও সুহাইব রা.এর প্রাক-ইসলামী জীবনের কিছু অংশ-মাত্র পাওয়া যায় ইতিহাসে। সালমান রা.এর মত এতটা বিস্তৃতভাবে তাদের জীবনধারা ও কর্ম আলোচিত হয়নি।

তারা ছিলেন জাতীয়তার বিরোধী। কিন্তু জাতীয়তার প্রবল সমর্থনের অভাব তারা তাদের অঞ্চলের প্রতীক হিসেবে বরিত হননি ইতিহাসে.....

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ দুপুর ১:২৭

রাজীব নুর বলেছেন: আরব হলো বর্বরদের দেশ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.