নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কমপেরেটিভ থিওলজি, রাজনীতি, দর্শন, সাহিত্য নিয়ে আগ্রহ রাখি। পড়ি ও আলোচনা করি।

আবদুল্লাহিল বাকি

একদিনের স্বপ্নে, অনেকগুলো নক্ষত্র আর ছায়াঘেরা পথ নেমে এসেছিল আমার আঙিনায়। স্বপ্নটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমি খুঁজে ফিরছি এখনো সেই নক্ষত্র আর ছায়াদের।

আবদুল্লাহিল বাকি › বিস্তারিত পোস্টঃ

উসমানী খেলাফত কি কাফের???

২৩ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৪৮

(আধুনিক নজদি বিপ্লবী ধারার আলেম নাসের আল-ফাহাদের সাথে একটা কল্পিত আলাপ। আমি তার সাথে একমত নাকি দ্বিমত- এটা কোন বিবেচ্য নয়। তিনি কিভাবে ভাবেন, এটা তুলে ধরাই আমার উদ্দেশ্য...)
***
আমি: উসমানী খেলাফত কি কাফের?

না.ফা.: উসমানী খেলাফত না, উসমানী দাওলাহ হবে। উসমানী দাওলাহ, আলেমদের চোখে কাফের ও দারুল হারব। এটা অত্যন্ত স্পষ্ট বিষয়।[1]

আমি: আচ্ছা! আপনার এই কথা কি কেউ অস্বীকার করে?

না.ফা.: নজদি আলেমদের লেখাজোকা পড়ার পরও যদি কারো সন্দেহ থাকে উসমানীদের কুফুরির বিষয়ে, তাহলে হয়ত সে নজদি আলেমদেরকে মূর্খ মনে করে। কিংবা তাওহিদ তার কাছে গৌণ বিষয়। নয়ত সে হঠকারিতাবশত অস্বীকার করছে।[2]

আমি: আপনি যে উসমানীদের কাফের বলতে চাচ্ছেন, এর পেছনে দলিল কী?

না.ফা.: উসমানীদের উত্থান থেকে নিয়ে পতন পর্যন্ত যে অবস্থা ছিল, তা নিয়ে যে কেউ চিন্তা করলেই বুঝতে পারবে, কিভাবে তারা মুসলমানদের আকিদা নষ্ট করেছে, শিরিকের বিস্তার ঘটিয়েছে। তাওহিদের বিরোধিতা করেছে। তারা ছড়িয়ে দিয়েছে শিরকি সূফিবাদ; যার ভিত্তি আওলিয়া ও মাজারপূজার উপর।[3]

আমি: তাওহিদের বিরোধিতা তারা কিভাবে করল, সেটা তো বুঝতে পারলাম না?

না.ফা.: আরে! উসমানীরা যে তাওহিদের বিরোধিতা করেছে, সেটা তো প্রশিদ্ধ। তারা শাইখ মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাব রহিমাহুল্লাহর দাওয়াতের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তারা নিভিয়ে দিতে চেয়েছে নিজেদের ফুৎকারে আল্লাহর নূর। আর এই তাওহিদী আন্দোলনের বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে তারা সাহায্য নিত নাসারাদের, নেপোলিয়ান বোনাপার্টের।[4]

আমি: আপনার কথা ধরে নিলাম, ঠিক। কিন্তু এটা তো পরবর্তীরা হয়ত করেছে। উসমানীদের শুরুর দিকের সুলতান যারা ছিলেন, তারা তো মনে হয়, ভাল ছিলেন?

না.ফা.: এটা কে বলেছে তোমাকে। পূর্ববর্তীরাও কম ছিল না। উদাহরণস্বরূপ, সুলতান মুহাম্মদ ফাতিহ সে দেশে গিয়েই প্রথমে আবু আইউব আনসারীর কবর খুঁজে বের করেছে। এর উপরে মাজার বানিয়েছে। সে কোরান সুন্নাহর ইসলামী শরীআর বদলে আধুনিক বিচার-ব্যবস্থা চালু করেছে। ‘দাঁতের বদলে দাঁত’, ‘চোখের বদলে চোখ’, ‘অঙ্গের বদলে অঙ্গ’- এই ইসলামী বিচারকে সে বাদ দিয়েছিল। প্রচলন করেছিল জরিমানা পদ্ধতির। সুলাইমান কানুনী তো বাগদাদে আবু হানিফার কবরের উপর মাজার বানিয়ে সেখানে গম্বুজ স্থাপন করেছিল। তাকে কানুনী বলা হয়, কারণ সে-ই সর্বপ্রথম পোক্তভাবে ইউরোপীয় আইন আমদানী করেছিল।[5] আর উদাহরণের দরকার নেই।

আমি: পৃথিবীর বেশিরভাগ মুসলমানই যে বলে, এটি ইসলামী খেলাফত, সেক্ষেত্রে আপনি কী বলবেন?

না.ফা.: যে দাবি করবে উসমানী রাষ্ট্র মুসলিম রাষ্ট্র সে মিথ্যুক ও অপবাদ-আরোপকারী। আর যে বলবে, এটি ইসলামী খেলাফত, তার অপবাদের কোন সীমা পরিসীমা নেই। আমার ভাই, তুমি জেনে রাখো, উসমানীদেরকে যে ইসলামী রাষ্ট্র বলে দাবি করে সে হয়তো পথভ্রষ্ট ভ্রান্ত, সে শিরিককে ইসলাম মনে করে। অথবা সে এই রাষ্ট্র সম্পর্কে কিছুই জানে না। যে তাওহিদ বুঝবে, এই রাষ্ট্রের কথা জানবে, তারপর এর কুফুরির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে, সে বিরাট খতরা বা ঝুঁকির মধ্যে আছে।[6]

আমি: পুরো উসমানী খিলাফতকে যে তাকফির করলেন এটা বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?

না.ফা.: উসমানী রাষ্ট্র কাফের হওয়া মানে, এর অধিনে যারা আছে, সবাই কাফের- বিষয়টা এমন নয়। শাইখ মুহাম্মদ বিন আবদুল ওয়াহাবের দুই পুত্র হুসাইন ও আবদুল্লাহ মাজমুউল মাসায়েলে (১/৪৪) লিখেছেন, ‘কখনো কখনো বলা হয়, এই অঞ্চলটা কাফের, এর অধিবাসীরা কাফের, তাদের হুকুম কাফেরদের মত। কিন্তু এমনটা বলা হয় না, এই অঞ্চলের প্রতিটি ব্যক্তি স্বতন্ত্রভাবে কাফের। কারণ, তাদের মধ্যে কিছু মুসলিমও থাকতে পারে। যারা উজরের কারণে হিজরত করতে পারেনি।[7]

উনার কাছ থেকে বিদেয় নিয়ে এসে আমি অজ্ঞান........
________
[1] নাসের আল-ফাহদ, আদ-দাওলাতুল উসমানিয়া ওয়া মাওকিফু দাওয়াতিশ শাইখ মুহাম্মদ বিন আবদিল ওয়াহাব মিনহা, পৃ. ১৬, প্রকাশ: মিম্বারুত তাওহিদ ওয়াল জি হা দা
[2] প্রাগুক্ত, পৃ. ১৬
[3] প্রাগুক্ত, পৃ.২
[4] প্রাগুক্ত, পৃ.৭
[5] প্রাগুক্ত, পৃ.৫
[6] প্রাগুক্ত, পৃ. ৯
[7] প্রাগুক্ত, পৃ. ৯

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.