নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশা , লেখক, সংগঠক, কলামিষ্ট. সত্য তুলে ধরা চেষ্টা করি সব সময় স্বাধীন সর্বোত্তম নির্বাক মুক্ত কণ্ঠ প্রতিদিনের লিখনী _ Free Voices For People “ যতোদিন মানুষ অসৎ থাকে, ততোদিন তার কোনো শত্রু থাকে না; কিন্তু যেই সে সৎ হয়ে উঠে, তার শত্রুর অভাব থাকে না &a

Abdul Malek Shuvo

পেশা , লেখক, সংগঠক, কলামিষ্ট. সত্য তুলে ধরা চেষ্টা করি সব সময় স্বাধীন সর্বোত্তম নির্বাক মুক্ত কণ্ঠ প্রতিদিনের লিখনী _ Free Voices For People “ যতোদিন মানুষ অসৎ থাকে, ততোদিন তার কোনো শত্রু থাকে না; কিন্তু যেই সে সৎ হয়ে উঠে, তার শত্রুর অভাব থাকে না ”_Abdul MAlek Shuvo

Abdul Malek Shuvo › বিস্তারিত পোস্টঃ

পবিত্র ঈদুল আযহা ও কুরবানীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য: কুরবানীর গুরুত্ব অপরিসীম।

১১ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:২০

মুসলমানদের সর্ববৃহৎ ঈদ উৎসব ঈদুল আযহা বা কুরবানীর ঈদ। আদি পিতা হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু হওয়া এ কুরবানীর মূল দীক্ষাই হল সকল প্রকার ঠুনকো, খোঁড়া যুক্তি ও বুদ্ধির ঊর্ধ্বে উঠে আল্লাহর হুকুম আহকামের প্রতি পূর্ণ আত্মসমার্পণ করা। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্যের নমুনাস্বরূপ হযরত ইবরাহীম (আ.) নিজ প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে (আ.) আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর হুকুমের প্রতি অতিশয় আনুগত্যের কারণে আল্লাহ তায়ালা তার এ কুরবানীকে কবুল করে নেন, এ ঘটনা আল্লাহর হুকুমের পূর্ণ আনুগত্যতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ঈদুল আযহা ও কুরবানী: হজ্জ্বের মৌসুমে উদযাপিত এ ঈদকে ইসলামী পরিভাষায় ঈদুল আযহা বলা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) একে ঈদুল আযহা নামে নামকরণ করেছেন। এছাড়া ইয়াওমুন নহরও বলা হয়। জর্দান, ফিলিস্তিন, লেবানন, মিশর, সিরিয়া, তিউনিসিয়া, ইরাক, লিবিয়া ও জাজীরার অধিবাসীরা এ ঈদকে ‘ঈদুল কাবীর’ বা বড় ঈদ নামে সম্বোধন করে থাকেন। বাহরাইনের লোকেরা ‘ঈদুল হুজ্জাজ’ বা হাজীদের ঈদ নামে সম্বোধন করেন। আর ইরান, আফগানিস্তানসহ এ উপমহাদেশের লোকেরা ‘ঈদুল কুরবান’ বা কুরবানীর ঈদ নামে অভিহিত করেন।
আযহা শব্দটিকে আরবীতে ‘কুরবান’ও বলা হয়ে থাকে, যা ফারসী বা উর্দূতে ‘কুরবানী’ রূপে পরিচিত হয়েছে। কুরবানের শাব্দিক অর্থ হল- নৈকট্য অর্জন করা, কাছাকাছি যাওয়া। পারিভাষিক অর্থে ‘কুরবানী’ ঐ মাধ্যমকে বলা হয়, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হয়। প্রচলিত অর্থে, ঈদুল আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শারঈ তরীকায় যে পশু যবেহ করা হয়, তাকে ‘কুরবানী’ বলা হয়।
কুরবানীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য: কুরবানীর গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআন ও হাদীস এ ব্যাপারে ব্যাপক গুরুত্বারোপ করেছে। মহান আল্লাহ তায়ালা তার প্রিয় হাবীবকে লক্ষ করে বলেন, ‘তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে ছালাত আদায় কর এবং কুরবানী কর’(কাওছার-২)। কাফির-মুশরিকরা তাদের দেব-দেবী ও মূর্তির উদ্দেশ্যে কুরবানী করে থাকে। তার প্রতিবাদ স্বরূপ এ আয়াতের মাধ্যমে মুসলমানদের আল্লাহর জন্য ছালাত আদায়ের ও তাঁর উদ্দেশ্যে কুরবানী করার হুকুম দেওয়া হয়েছে। মুফাসসিরদের কারো কারো মতে, এ আয়াতে বিশেষভাবে ঈদুল আযহার নামাজ ও নামায শেষে কুরবানীর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর কুরবানীর পশু সমূহকে আমরা তোমাদের জন্য আল্লাহর নিদর্শন সমূহের অন্তর্ভুক্ত করেছি। এর মধ্যে তোমাদের জন্য কল্যাণ রয়েছে’ (হজ্জ-৩৬)। আল্লাহ আরও বলেন, ‘আর আমরা তাঁর (ইসমাঈলের) পরিবর্তে যবেহ করার জন্য দিলাম একটি মহান কুরবানী। আমরা এটিকে পরবর্তীদের মধ্যে রেখে দিলাম’ (ছাফফাত ১০৭-১০৮)।
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও যে ব্যক্তি কুরবানী করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়’। (সুনানু ইবনু মাজাহ) রাসূলূল্লাহ (সা.) আরো বলেন, ‘কুরবানীর দিন রক্ত প্রবাহিত করা (যবেহ করা) অপেক্ষা আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয় মানুষের কোনো আমল হয় না।’ (সুনানু তিরমিজি)। তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রফুল্ল চিত্তে কুরবানী আদায়ের নিয়তে কুরবানী করে কিয়ামতের দিন তার এবং জাহান্নামের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।’ (আস-সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বি) এটি ইসলামের একটি ‘মহান নিদর্শন’ যা ‘সুন্নাতে ইবরাহীম’ হিসেবে রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজে মদীনায় প্রতি বছর আদায় করেছেন এবং সাহাবীগণও নিয়মিতভাবে কুরবানী করেছেন। অতঃপর অবিরত ধারায় মুসলিম উম্মাহ সামর্থ্যবানদের মধ্যে এটি চালু আছে।
এ ছাড়া মানব সভ্যতার সুদীর্ঘ ইতিহাস এটাই সাক্ষ্য দেয় যে, হযরত আদম (আ.) হতে পৃথিবীর সব জাতিই কোন না কোন পদ্ধতিতে আল্লাহর দরবারে নিজেদের প্রিয়বস্তু উৎসর্গ করেছেন। এ ইতিহাসের স্বীকৃতি প্রদান করে মহান আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, ‘আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানীর এক বিশেষ রীতি-পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর উপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যে সব আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন’। (সূরা আল হজ্জ-৩৪)
কুরবানীর কতিপয় মৌলিক শিক্ষা:
কুরবানীতে মুমিনের জন্য অসংখ্য শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। ১। বিশ্বব্যাপী তাওহীদ প্রতিষ্ঠা: মহান আল্লাহর তাওহীদ বা একত্ববাদ বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা করা কুরবানীর অন্যতম শিক্ষা। কারণ, একমাত্র বিশ্বজাহানের মালিক মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে, তার নামেই পশু কুরবানী দেয়া হয়। জগতের অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা যেখানে তাদের দেব-দেবির নামে কুরবানী করে, সেখানে মুসলিম সমাজ কোরবানী দেয় একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে।
২। আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমার্পণ: কুরবানীর গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমার্পণ। আল্লাহর সকল আদেশের সামনে বিনা প্রশ্নে মাথানত করে দেয়াই হল পূর্ণ আত্মসমার্পণের সমুজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ। ঈদুল আযহার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে আমরা হযরত ইবরাহীম (আ.) ও তদ্বীয় পুত্র ঈসমাইল (আ.)এর এরূপ পুর্ণ আত্মসমার্পণের চিত্রই পবিত্র কুরআনুল কারীমে দেখতে পাই।
৩। ইখলাস বা একনিষ্ঠতা: সকল কাজে ইখলাস বা একনিষ্ঠতাই ইসলামের মহান শিক্ষা। ইখলাস ছাড়া পরকালীন কোনো কাজই আল্লাহতায়ালা কবুল করেন না। আন্তরিকতা ও মহব্বতবর্জিত ইবাদত প্রাণহীন কাঠামো মাত্র। তাই কুরবানীও একমাত্র আল্লাহ তায়ালার রেজাবন্দী হাসিলের জন্য দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ তায়ালার আদেশ, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার নিকট কুরবানীর পশুর গোশত ও রক্ত পৌঁছে না। তার নিকট তোমাদের তাকওয়া (ইখলাস) পৌঁছে’। (সূরা হাজ্জ্ব-৩৭)। ইখলাসপূর্ণ কুরবানী হওয়ার কারণেই আল্লাহ তায়ালা হযরত ইবরাহীম (আ.) এর কুরবানী কবুল করে নিয়েছিলেন।
৪। তাকওয়াভিত্তিক জীবন-যাপন: কুরবানীর সুমহান দীক্ষা তাকওয়াভিত্তিক জীবন-যাপন। জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনই মুমিনের প্রকৃত সফলতা। বস্তুত আল্লাহ তায়ালা তার আমলকেই কবুল করেন, যার আমলে তাকওয়া বা খোদাভীতির সন্নিবেশন ঘটেছে। আদমপুত্র হাবিলের কুরবানী আল্লাহতায়ালা কবুল করেছিলেন তাকওয়ার প্রভাবের কারণেই।
৫। দরিদ্র ও অনাথের সুখে-দুঃখে অংশীদার: কুরবানীর অন্যতম শিক্ষা দরিদ্র ও অনাথের সুখ-দুঃখে ভাগীদার হওয়া। ঈদুল আযহার নামাজে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের সহাবস্থানের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশী ও দরিদ্র-অনাথের মাঝে কুরবানীর গোশত বণ্টন আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে, আমাদের সম্পদে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের অধিকার রয়েছে।
কুরবানী মুসলমানদের শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং পরিশুদ্ধ জীবন গঠনের নিয়মতান্ত্রিক অনুশীলনও বটে। এর মাধ্যমে মুসলমান তাওহীদী আদর্শে উজ্জীবীত হয়ে ইখলাস, তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আত্মসমার্পণের অপূর্ব নজির স্থাপন করতে পারে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৮

চাঁদগাজী বলেছেন:


হযরত ইব্রাহিমের সময়, ঐ এলাকায় নরবলি দেয়ার প্রচলন ছিলো; উনার স্ত্রীর হস্তক্ষেপে উনাদের সন্তান রক্ষা পায়।

২| ১২ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহ সবার কোরবানী কবুল করুক।

৩| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৯ ভোর ৫:৩৭

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: যারা রমজানের সময় জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়ার মতো সংযম পালন করে আর কোরবানির মতো আত্মত্যাগের সময় চামড়া নিয়ে দুই নম্বরি করার মতো মহাত্মপূর্ণ কর্মকান্ডে নিয়োজিত হয় সেই সকল চরম ধার্মিকদিগকে আপনি কিভাবে কোরবানির তাৎপর্য্য বুঝাতে পারবেন ?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.