নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁধার করা আলোয় আমার বসবাস!

যে পথে আমার মৃত্যু আমি সেই পথে একবার- বার বার, বহুবার ফিরে যাই! ফেসবুকে আমি- fb.com/abrar.s.adib

অদিব

এই আমি-\nপৃথিবীর কোনো এক প্রান্ত থেকে\nআমার মনের কথাগুলো চিৎকার\nকরে ছড়িয়ে দেই অসীম আকাশে!\nজানি না এই নিছক কিছু তরঙ্গ\nকতটা পথ পাড়িয়ে হারিয়ে যাবে!\nঅথবা কোনো এক ভিনগ্রহী\nঅবাক হয়ে শুনবে আমার কথামালা\nজানি না কি অনুভূতি হবে তার!\nহয়তো গাঢ় নীল অশ্রু গড়িয়ে পড়বে\nকরুণামাখা কন্ঠে বলবে আনমনে,\n\'বড় দুঃখী এক মর্ত্যবাসী!\'

অদিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্টেডিয়াম (গল্প)

১২ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪

গ্রামের নাম মানিকজোড়।কিন্তু গ্রামে মানিকজোড়ের কোনো দেখা নাই।তবে দা-কুমড়ার দেখা মেলে।আফতাব উদ্দিনএবং মিরাজ শেখ, দুজন দুজনের মুখ দেখলেই ডেটল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলে।নির্বাচন উপলক্ষে তাদের সম্পর্কের আরো একধাপ উন্নতি হয়ে গেছে। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে গ্রামে এখন সাজ সাজ রব।তবে আফতাব সাহেব বেশ বিমর্ষ।বিমর্ষতার কারণ তার নির্বাচনী মার্কা।তার ভাগে পড়েছে ক্রিকেট ব্যাট।অন্যদিকে মিরাজ শেখের ভাগ্যে পড়েছে আম! তিনি আর প্রতীক নিয়ে কঠিন প্রচারণায় নেমে গেছেন।গ্রামের মানুষের ধরে নিয়ে নিয়ে আম খাওয়াচ্ছেন।ইতিমধ্যে গ্রামের সব আম শেষ, বাহির থেকে আমের চালান আসছে।তাকে অত্যন্ত আনন্দিত ভঙ্গিতে আম নিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে।



আফতাব সাহেব চায়ের দোকানে চিন্তিত মুখে কাপে চুমুক দিচ্ছেন। আজ বিকালে নির্বাচনী সভা।কিছু বলেই মানুষকে আকর্ষিত করা যাচ্ছে না।সবাই আম খাওয়ায় ব্যাস্ত।দোকানের টিভিতে ক্রিকেট খেলা দেখানো হচ্ছে।ব্যপক জটলা।তিনি ভেবেছিলেন এদের কাছে কিছু প্রচারণা চালানো যাবে।তবে কেউ তাকে পাত্তা দিচ্ছে না।কয়েকজনকে দেখা গেল আম হাতে খেলা দেখায় মগ্ন! আচমকা আফতাব সাহেবের মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল।গ্রামের মানুষ-জন খেলা-পাগল। এদের এই বিষয়ক টোপ দেয়া দরকার! বিকালে জনসভায় আফতাব সাহেব ঘোষনা দিলেন যদি তাকে নির্বাচিত করা যায় গ্রামে তিনি একটি স্টেডিয়াম বানিয়ে দিবেন।টোপে কাজ হল।গ্রামের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল।কিছুক্ষণের মধ্যে আশেপাশের সব গ্রামেও খবর ছড়িয়ে পড়ল। তারা ক্রিকেট ব্যাট হাতে আফতাব সাহেবের মানে স্লোগান দিয়ে মিছিল করা আরম্ভ করল! পরদিন সকালে দেখা গেল টিভি ক্যামেরা নিয়ে সাংবাদিক হাজির। আফতাব সাহেব বজ্রকন্ঠে টিভি ক্যামেরার সামনে সাক্ষাৎকার দিলেন।দুপুরের দিকেই বিসিবি থেকে ফোন আসল।তারা জানালো তারা এই মূহুর্তে স্টেডিয়াম বানানো শুরু করলে তারা একে বিশ্বকাপের ভেন্যু বানিয়ে দিবে। তিনি গদগদ ভিঙ্গিতে বললেন, নিশ্চই! কিছুক্ষণ পরেই বাফুফে চেয়ারম্যান ফোন দিয়ে ফুটবলের ঐতিহ্য নিয়ে তাকে ছোটখাটো একটা ভাষণ দিয়ে জানালো স্টেডিয়াম ফুটবলের জন্য হোক। সুসময়ের মাছি হিসাবেও কয়েকজন জুটে গেল।তারা তাকে বিভিন্ন কুবুদ্ধি দিতে শুরু করল।আফতাব সাহেব মহা আনন্দে তাদের বুদ্ধি মত কাজ করতে লাগল।স্টেডিয়ামের জন্য তিনি নিজ খরচে জায়গা কিনে ফেললেন।টাকা জলের মত গেল।কিন্তু ব্যপার না।জয়তো নিশ্চিত, টাকা উসুল করে নেয়া যাবে!স্টেডিয়ামের নাম নিয়ে এবার বিপত্তি বাধলো।একজন বুদ্ধি দিল নেত্রীর নামে নাম দিতে।তাহলে পরে এমপি নির্বাচনের দাঁড়ানোর সমূহ সম্ভাবনা।গ্রামের আরেকজন তাকে জানালো টাকা পয়সা ব্যপার না, তিনি সব দিবেন।কিন্তু নাম রাখতে হবে তার স্ত্রীর নামে।আফতাব সাহেবের বিমর্ষতা কেটে গেছে, তিনি কঠিন উত্তেজনায় আছেন।



বিমর্ষতা এখন মিরাজ শেখের উপড়ে।পাবলিক আম খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে।দুইদিন হল চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে ফজলি আমের চালান এসেছে।কিন্তু খাওয়ানোর মানুষ পাওয়া যাচ্ছে না। তার সর্বক্ষণের সঙ্গী কলিম মিয়া অবশ্য একটা বুদ্ধি বের কর ফেলেছে। সে মিরাজ সাহেবকে চিন্তা বন্ধ করে ফজলি আম খেতে বললেন।কলিম মিয়া ‘জাতীয় কচুগাছ রক্ষা কমিটি’কে ফোন দিয়ে জানালেন তাদের গ্রামে নির্বিচারে কচু কেটে স্টেডিয়াম বানানো হচ্ছে। ঘন্টা দুয়েকের মাঝে ঢাকা থেকে কমিটির সদস্যরা গ্রামে চলে আসলেন। তারা এই অবিচারের প্রতিবাদে আমরণ অনশন কর্মসূচি দিলেন। ফেসবুকে ইভেন্ট খুলে তারা জ্বালাময়ী পোস্ট দিতে থাকলেন। টিভি ক্যামেরা আবার গ্রামে হাজির। গ্রামের মানুষজন আমোদ পেল। তারা ক্যামেরার সামনে হাসি হাসি মুখে দাঁত বের করে স্টেডিয়াম বানানোর প্রতিবাদ করতে শুরু করে দিল। মিরাজ শেখ তার আম নিয়ে আবার নির্বাচনের ময়দানে হাজির। আবেগ মথিত কন্ঠে বলল, ‘আমার আমে যেমন ফর্মালিন নাই,আমার ভিতরেও ঠিক তেমন ভেজাল নাই।আমাকে সবাই ভোট দিন।’ আমের চালান এবার শেষ হতে শুরু করল।



নির্বাচন পার হয়ে গেছে। বিপুল ভোটে আফতাব উদ্দিন পরাজিত হয়েছেন। টাকা-পয়সা হারিয়ে তিনি প্রায় নিঃস্ব। সাথে বোনাস হিসাবে তার মাথা থেকেও সব চুল পড়ে গেল! গ্রামের মানুষ বলাবলি করতে লাগল, স্টেডিয়াম শেষ পর্যন্ত হলই কিন্তু সেটা আফতাব সাহেবের মাথায়!

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:৫৫

অপ্রচলিত বলেছেন: স্টেডিয়াম শেষ পর্যন্ত হলই কিন্তু সেটা আফতাব সাহেবের মাথায়!
=p~ =p~ =p~

দুর্দান্ত একটি বিদ্রূপাত্মক গল্প। খুব ভালো লাগলো।
১ম ভালো লাগার শুভেচ্ছা। +++++++++++++++++++

১০ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

অদিব বলেছেন: B-)) B-)) B-))

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.