নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধুমার ব্যাপারী

Nurul Afser Ratan

ব্লগ দেখতে ভালবাসি, লেখার সময় পাই না।

Nurul Afser Ratan › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিভাবে ই-সিগারেট আপনাকে ধুমপান ছাড়তে সাহায্য করতে পারে?

২৩ শে মার্চ, ২০১৫ ভোর ৪:০২

যেহেতু এ লেখাটি আপনি পড়ছেন, তাহলে ধরে নেওয়া যায় আপনি ধুমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানেন। হয়তো আপনিও তাদের মাঝে একজন, যারা ধুমপানের ক্ষতি কম হওয়ার জন্য বেনসন লাইট, মার্লরোরো লাইট, অথবা ইজি সিগারেট ব্যবহার করছেন। এর পেছনে সম্ভবতঃ আপনার এই ধারণা কাজ করছে যে, সিগারেটে নিকোটিনের পরিমান যত কম হবে, ক্ষতির পরিমানও তত কম হবে।



ভুল।







একটা প্রচলিত সিগারেট সর্বমোট যে পরিমান ক্ষতি করে, তাতে নিকোটিনের দায় ০.১% এরও কম। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। (নিকোটিন সম্পর্কে আরো জানতে দেখুন এখানে । আসলে আপনার প্রকৃত শত্রু হলো সিগারেটের ধোঁয়ায় উৎপন্ন বিষাক্ত বস্তুসমূহ (কার্বন মনোক্সাইড, টার, এবং ৪০০০ এরও উপরে রাসায়নিকসমূহ)। চা- বা কফি আপনার যেটুকু ক্ষতি করে, নিকোটিনের ক্ষতির পরিমানও তার চেয়ে খুব একটা বেশি নয়।



এবার আসা যাক আসল কথায়। আপনি সিগারেট ছাড়তে চাচ্ছেন অথবা আপনার প্রিয় এমন কেউ আছে যাকে আপনি সিগারেট ছাড়াতে চাচ্ছেন। সিগারেট ছেড়ে দেওয়া খুবই সহজ, কিন্তু না খেয়ে থাকতে পারা খুবই কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। কেননা ধুমপানের ফলে আপনার মষ্তিস্ক এখন নিকোটিনে আসক্ত। এটা থেকে মুক্তির উপায় কি? সহজ। আপনার মষ্তিস্ককে নিয়মিত নিকোটিন দিন, সিগারেটের মাধ্যমে নয়, অন্য কোন উপায়ে, যেমন - নিকোটিন চুইংগাম, নিকোটিন প্যাচ ইত্যাদি। আস্তে আস্তে নিকোটিনের পরিমান কমিয়ে আনুন। ডাক্তার কোবরেজরা এতদিন এভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। তবে দূর্ভাগ্যজনকভাবে এ সমস্ত পদ্ধতির সাফল্যের হার খুবই কম। কারন একজন ধুমপায়ী যখন ধুমপান করেন, তখন এর সাথে নিকোটিনে আসক্তি ছাড়াও আরো কিছু ব্যাপার জড়িত। সিগারেটে লম্বা করে টান দিয়ে ফুসফুস ভর্তি করে ধোঁয়া নেয়া, গলায় ধাক্কা, তামাকের গন্ধ - সবমিলিয়ে যে আবহ তৈরী হয়, সেটাই ধুমপায়ীকে বারবার টেনে আনে আরেকটি সিগারেটের কাছে।



এসবকিছু বিবেচনায় নিলে, ই-সিগারেট হতে পারে ধুমপানের সবচেয়ে ভাল বিকল্প। কারণ এটা এমনভাবে তৈরী করা হয়েছে যে, এটা আপনাকে প্রায় পুরোপুরি একটা প্রচলিত সিগারেটের মতই অনুভূতি এবং তৃপ্তি দেবে। অনেকসময় চোখ বন্ধ করে আপনাকে যদি ই-সিগারেটে টান দিতে বলা হয় তবে আপনি হয়তো বুঝতেই পারবেন না আপনি কি আসল সিগারেটে টান দিলেন নাকি ই-সিগারেটে। (ই সিগারেট কি - এটা সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন এখানে



আপনি সম্ভবতঃ জেনে খুশি হবেন যে, ব্রিটেনের কিছু কিছু চিকিৎসক এখন ধুমপানের বিকল্প হিসেবে ই-সিগারেট ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ একটাই, এটা ব্যবহারে ধুমপানের তুলনায় ক্ষতি অনেক কম, এবং কিছুদিন পর নিকোটিনের মাত্রা কমিয়ে কমিয়ে আপনার মস্তিষ্কের নিকোটিন আসক্তি দুর করতে পারবেন। পরবর্তীতে সম্পূর্নভাবে ছেড়ে দেয়া শুধুমাত্র আপনার ইচ্ছা এবং সময়ের ব্যাপার।



এবার আসুন সংক্ষেপে দেখে নিই প্রচলিত সিগারেট ছেড়ে দিয়ে ই-সিগারেট ব্যবহার করলে আপনি কি কি সুবিধা পেতে পারেনঃ



= প্রচলিত সিগারেটের ক্ষতির হাত থেকে কমপক্ষে ৯৯% ভাগ কম ক্ষতি হবে।

= প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় র্দীর্ঘমেয়াদে খরচের পরিমান অনেক কমে যাবে।

= আপনার মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় নিকোটিনের সাপ্লাই পাবে, আপনাকে আর জ্বালাবে না।

= ই-লিকুইডে যে পরিমান নিকোটিন ব্যবহার করা হয়, আস্তে আস্তে তা কমিয়ে আনতে পারবেন, নিজের উপর খুব একটা চাপ না নিয়ে। এক পর্যায়ে নিকোটিন ছাড়াও আপনি চলতে পারবেন। আপনার মষ্তিস্ক তখন আর নিকোটিনে আসক্ত থাকবে না। এরপর ই-সিগারেট ছেড়ে দেওয়া একান্তই সহজ।

= ধুমপান ছেড়ে দিলে একজন মানুষ যে সকল পজিটিভ পরিবর্তন লক্ষ্য করে, ই-সিগারেট ব্যবহার করলে তার সবগুলোই আপনি আপনার নিজের মাঝে পাবেন।







ধুমপান ছাড়ার সুফলসমূহ, টাইমলাইন



শুরুর প্রক্রিয়াঃ



আপনার বর্তমান ধুমপানের অভ্যাসের উপর ভিত্তি করে আপনার জন্য কোন ধরনের ই-সিগারেট উপযুক্ত তা ঠিক করুন। কোন শক্তিমাত্রার নিকোটিন আপনার জন্য উপযুক্ত তা ঠিক করে নিন। যেমন ধরা যাক, আপনি বর্তমানে বেনসন ব্যবহার করেন। এটাতে নিকোটিনের পরিমান এক প্যাকেটে ১৮ মিগ্রা। তাহলে শুরুতে আপনার ১৮/২৪ মিগ্রা শক্তির নিকোটিন ব্যবহার করা সহজ হবে। যদি আপনি মার্লবোরো লাইট ব্যবহার করেন, যেটিতে প্রতি প্যাকেটে নিকোটিনের পরিমান ১২ মিগ্রা তাহলে ১৬/১২ মি.গ্রা. শক্তিমাত্রার ই-লিকুইড দিয়ে শুরু করুন। আরো জানতে আমার পরামর্শ নিতে পারেন।



কোন ধরনের ই-সিগারেট আপনার জন্যঃ



অল্প কথায় শেষ করা যাবেনা। ই-সিগারেট ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে প্রায় মোবাইলের বাজারের মতই। কোনটা যে কার ভাল লাগবে, সে কথা নিশ্চিত করে বলা কষ্টসাধ্য। তবে একদম কমদামের গুলো না কেনাই ভাল, কেননা এগুলো ১/২ মাসের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন না এবং এই ১/২ মাসেই এরা এমনসব সমস্যার সৃষ্টি করবে যে, ই-সিগারেটের উপর আপনি আস্হা হারিয়ে ফেলবেন। আসলে কমদামী ডিভাইসগুলো তৈরীই করা হয়েছে তাদের জন্য যারা ই-সিগারেট কি সেটা পরীক্ষা করে দেখতে চায়।







Pioneer4you IPV Mini 2 70 Watt APV with Gravity Sensor



আমার পরামর্শ হলো আপনি যদি সত্যিকার অর্থেই ধুমপান ছেড়ে দিতে চান, তাহলে সিগারেটের পেছনে বর্তমানে প্রতিমাসে আপনি যে টাকা খরচ করেন, অন্তত সে পরিমান বাজেটের মধ্যেই কোন একটা ডিভাইস নিন, সাধ্যে কুলালে আরো বেশি টাকার মধ্যে। এক্ষেত্রে ভাল মানের একটি এ.পি.ভি. (এডভান্সড পার্সোনাল ভ্যাপোরাইজার) হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ। একটি ভাল ব্র্যান্ডের এ.পি.ভি.র মূল্য মডেল ভেদে ৪০০০/- টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০০/- টাকাও হতে পারে। এবং মোবাইলের মতই, এক্ষেত্রে যত বেশী মূল্য ততই ভাল কোয়ালিটি এবং ফিচার পাওয়া যায়।







Joyetech eGo-One APV, smallest Sub-Ohm E-Cigarette







শেষের কথাঃ



অনেকেই বলে থাকেন যে, ই-সিগারেট প্রচলিত সিগারেটের মতই ক্ষতিকর অথবা তার চাইতেও বেশি। কিন্তু এ কথা হলো এযাবৎকালের কোন বিজ্ঞানসম্মত গবেষণায় এটা প্রমান হয়নি। বিশ্বের কোন কোন দেশে সিগারেট কোম্পানীগুলোর চাপে পড়ে ই-সিগারেটের উপর নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। ই-সিগারেটের বিরুদ্ধবাদীদের একটি যুক্তি হলো, যেহেতু এটা প্রচলিত সিগারেটের তুলনায় অনেক নিরাপদ, তাই অধুমপায়ীরাও (বিশেষতঃ তরুনেরা) এতে আসক্ত হয়ে পড়তে পারে। কিন্তু যে জিনিসটি কেবলমাত্র ১৮ উর্দ্ধ ধুমপায়ীদের জন্য তৈরী এবং বাজারজাত করা হচ্ছে, সেটা অধুমপায়ীরা যদি ব্যবহার করে, তাহলে এতে করে ই-সিগারেটের কি দোষ, সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ। কেননা তার যদি আসক্ত হতেই হয়, তবে ই-সিগারেট বন্ধ করে ‍দিলেও প্রচলিত সিগারেট তা থাকছেই।



(যদি মনে করেন যে লেখাটি কোথাও শেয়ার করবেন, তবে অনুগ্রহ করে আমার রেফারেন্স ব্যবহার করবেন।)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ৭:১২

রামন বলেছেন:
সিগারেট পরিহার করাটা ইচ্ছাশক্তির উপর নির্ভরশীল। আমি এক নাগারে ২০ বছর ধুমপান করেছি৷একদিন আমি পণ করে বসলাম আজ থেকে আর কোন সিগারেট স্পর্শ করব না. ব্যাস সেই যে সিগারেট ছাড়লাম, আজ ৮ বছর হতে চলল সিগারেট ছাড়াই আছি এবং ভালই আছি৷

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.