![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইমরান ভাই আমাদের এলাকার মাস্তান।
ছোটবেলা থেকেই তার এইম ইন লাইফ মাস্তান হওয়া।
আমি ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। পারি নাই। ইমরান
ভাই মাস্তান
হতে পেরেছেন। মাস্তান হিসেবে উনি ফেমাস।
ফেসবুকে উনার নামে পেজও আছে।
পেজে আমরা পনেরো জন ফ্যান। উনি সেই
পেজে নতুন মডেলের রিভালভারের, বুলেটের, ছুরির
ছবি আপলোড করে থাকেন। বাধ্য হয়ে,
ভয়ে তাতে লাইক দিতে হয় আমাদের। লাইক
দিলে শান্তার হোমপেজে শো করে। শান্তা আমার
প্রেমিকা।শান্তা রেগে যায়।
রেগে গিয়ে বকাঝকা করে। আমি শান্তার
বকা খাই। শান্তা এবং ইমরান ভাই দুইজনকেই ভয় পাই
আমি। শান্তা মেয়ে মানুষ,
আমি সরি বললে মাঝে মাঝে ওর মন নরম হয়। ইমরান
ভাইয়ের মন কখনো নরম হয় না।
ইমরান ভাই বদমেজাজী। ইমরান ভাই একবার নতুন
ঘড়ি কিনলেন। বারবার সেই ঘড়িতে টাইম দেখতেন।
রাস্তা দিয়ে দিয়ে হেঁটে যাবার সময় এক লোক
একবার তার কাছে সময় জানতে চেয়েছিল । ইমরান
ভাই তার
মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল।
মাস্তানদের বখাটে চেহারা থাকতে হয়। বড় বড় চুল
থাকতে হয়। ইমরান ভাইয়ের চুল ছোট
ছোট,পরিপাটি চেহারা। উনি মাস্তান
সমাজে বিবর্তন ঘটাতে চান।ফেসবুকে ইভেন্টও
খুলেছেন। খুলে আমাকে ইভেন্ট রিকুয়েষ্ট
দিয়েছেন। সাথে ইনবক্স করে দিয়েছেন,' অই শুভ!
ইভেন্ট রিকুয়েষ্ট না, এটা ইভেন্ট অর্ডার।'
আমি অর্ডার পালন করি।
আয়াম গোইং টু দিস ইভেন্ট। তাই দেখে শান্তা বলল,
'গো টু হেল।' আমি হেলে চলে যাই। টানা সাতদিন
শান্তা আমার
সাথে কথা বলে না। আমি দুঃখ পেলাম । দুঃখিত
গলায় ইমরান ভাইকে সব খুলে বললাম। সব
শুনে উনি আমার মাথায় গাট্টা বসিয়ে দিলেন।
উনি নারীবিদ্বেষী। দূর্বলরা ইমোশনাল হয়। ইমরান
ভাই দূর্বল নন।
তবে ইমরান ভাই হঠাৎ দূর্বল হয়ে গেলেন । টের
পেলাম যখন
হঠাৎ করে তার ফ্যান পেজে ক্যাটরিনা, জ্যাকুলিন
ফার্নান্দেজের ছবি আসতে শুরু করল। ভাইকে বললাম,
'ভাই
কাহিনী কি?' ভাই বললেন,' প্রেমে পড়ছি।' তারপর
আমাদের
মিষ্টি খাওয়ালেন। কার প্রেমে পড়েছেন না জেনেই
মিষ্টি খেলাম। উপরে উপরে হরতাল
দেখিয়ে তলে তলে টেম্পু
চালাতে লাগলেন ইমরান ভাই। বলেন না কার
প্রেমে পড়েছেন।
আমরা ঠিকই জেনে গেলাম। এলাকায় নতুন
মেয়ে এসেছে। নাম
প্রিয়াঙ্কা। আমরা জেনে গেছি টের পেয়ে ভাইও
লুকালেন না।
ইভেন্ট খুলে বসলেন। আমরা ইভেন্টে যোগ দেই। তাই
দেখে শান্তা আবার সাতদিনের জন্য কথা বলা বন্ধ
করে আমার সাথে। কারণ প্রিয়াঙ্কা নামের
যে মেয়েটি আমাদের
এলাকায় নতুন এসেছে সে শান্তার বান্ধবী।
প্রিয়াঙ্কাকে ভাবী বলার অর্ডার দিয়েছেন ইমরান
ভাই।
আমরা প্রিয়াঙ্কাকে ভাবী বলে ডাকি।প্রিয়াঙ্ক
া ভাবী রেগে যায়। রেগে গিয়ে ওর বড় ভাইয়ের
কাছে বলে দেয়। ওর বড় ভাই আমাকে শফিকের চায়ের
দোকানে পেয়ে থ্রেট দিয়ে যায়। পরদিন প্রিয়াঙ্কার
বড় ভাই
ভাঙা নাক আর ভাঙা হাত
নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
ইমরান ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, 'ভাই
কাহিনী কি?' ভাই
বলেন, 'তোরা আমার কাছে বেশি বড়, কত
প্রিয়াঙ্কা আসবে যাবে!' কিন্তু কোন প্রিয়্ঙ্কা যায়
না,
কোন প্রিয়াঙ্কা আসেও না। যে প্রিয়াঙ্কা ছিল
সেই প্রিয়াঙ্কাই রয়ে যায়।
প্রিয়াঙ্কা ভাবী আগে ইমরান ভাইকে সালাম দিত।
এখন দেয়
না। ইমরান ভাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়, 'মন
ভালো নেই,
ব্যার্থ জীবন, কাকের স্বরে কোকিল ডাকে বসন্ত
যখন।'
আমি কমেন্টে দুঃখের ইমো দেই। ইমরান ভাই আমার
কমেন্টে লাইক দেয়। একদিন ভাই ইনবক্সে বলেন, 'কাল
শফিকের দোকানে থাকিস, কাজ আছে।'
আমি শফিকের
দোকানে থাকি। ইমরান ভাই কি কাজ
দিবে জানি না।
না জানলে আমার টেনশন হয়। টেনশন হলে চা খাই
আমি।
ইমরান ভাই চায়ের দাম দেয়। এই প্রথম ভাই আমার
চায়ের
বিল দিলেন। তাই দেখে আমার টেনশন
আরো বেড়ে গেল।
ভাইকে বললাম,' ভাই কাহিনী কি?' ভাই বললেন,
'প্রিয়াঙ্কাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না আমি। তুই
আমার
কাজটা করে দে না শুভ।আমাকে বাঁচা!' ভাই এই প্রথম
অনুনয়
সুরে বললেন। ইমরান ভাই সব সময় অর্ডার দেন,
আমরা ভয়ে সেই কাজ করি। আজ ভয় হল না। মায়া হল।
মায়া লাগলে আমি ইমোশন চাপতে পারি না।আমার
কলিজায়
কামড় লাগে। প্রতিজ্ঞা করি ইমরান
ভাইকে বাঁচাবোই।
আমি কাশেমকে নিয়ে রাতে প্রিয়াঙ্কা ভাবীর
বাসার
সামনে যাই। প্রিয়াঙ্কা ভাবীর রুম দ্বোতলায়। তার
রুমের
পাশে নারিকেল গাছ আছে।
আমি গাছে উঠতে পারি না। কাশেম
আমার পিছনে মাথা দিয়ে ঠেলে গাছে তুলে দেয়।
আমি গাছে উঠে প্রিয়াঙ্কা ভাবীর জানালার
পাশে আসি।
প্রিয়াঙ্কা ভাবী তখন জানালার
পাশে বসে পড়তেছিল।
আমাকে দেখে চমকে উঠে। তারপর বলে,
'কাহিনী কি?'
আমি বললাম, 'কাহিনী খারাপ। ইমরান ভাই
তোমারে না পেলে সুইসাইড করবে। উনি তোমাকে খুব
ভালোবাসে। তোমার জন্য উনি সব করতে পারে।
মাস্তানি ছেড়ে দেবে।'
প্রিয়াঙ্কা ভাবী বলে,' উনার মরাই উচিত।'
'কিন্তু উনি মরার আগে আমাকে মেরে মরবেন যে।
আমি মরতে চাই না ভাবী।'
'চ্যালাদেরও মরা উচিত!'
'প্লিজ ভাবী…'
'এই আমাকে ভাবী বলবে না!' ধমকে উঠে।
আমি ধমক সহ্য করতে পারি না। ধমক সহ্য
করতে না পেরে আমি গাছ থেকে পড়ে যাই।
পড়ে গিয়ে আমার পা ভেঙে যায়।
আমি হাসপাতালে ভর্তি হই। আমার পাশের
বেডে প্রিয়াঙ্কা ভাবীর ভাই। মাঝে মাঝে আমার
দিকে কটমট করে তাকায়। আমার অস্বস্তি লাগে,
ভাঙা পা নিয়েই দৌড় দিতে ইচ্ছা করে।
ওদিকে ইমরান ভাই আর প্রিয়াঙ্কা ভাবী জম্পেশ
প্রেম করে।
ওই বেডে প্রিয়াঙ্কা ভাবী তার
ভাইকে দেখতে আসে। এই
বেডে আমাকে ইমরান ভাই দেখতে আসেন। আই
কনট্যাক্ট
করে দুজন। জিজ্ঞাসা করি,'ভাই কাহিনী কি?' ভাই
কাহিনী বলে। আমি গাছ থেকে পড়ার পরপরই
নাকি তাদের
প্রেম হয়ে যায়। আর আমার প্রেম এদিকে যায় যায়।
আমি এতরাতে এই কাজের জন্য
গাছে উঠেছি বলে শান্তা আবার সাতদিনের জন্য
কথা বলা বন্ধ
করেছে। আমার দুঃখ লাগে।
মোবাইলে শুয়ে শুয়ে দুঃখের
স্ট্যাটাস দেই, 'শুন্য খাঁচা আমার, শুন্য এই বাগান,
পাশের
বেডে হুতুম পেঁচা, নেই কোকিলের গান।' ইমরান ভাই
তাতে হাসির ইমো কমেন্ট করে। আমি সেই হাসির
ইমোতে লাইক দেই…
২| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪
শায়মা বলেছেন: আমাকে দেখে চমকে উঠে। তারপর বলে,
'কাহিনী কি?'
আমি বললাম, 'কাহিনী খারাপ। ইমরান ভাই
তোমারে না পেলে সুইসাইড করবে। উনি তোমাকে খুব
ভালোবাসে। তোমার জন্য উনি সব করতে পারে।
মাস্তানি ছেড়ে দেবে।'
প্রিয়াঙ্কা ভাবী বলে,' উনার মরাই উচিত।'
'কিন্তু উনি মরার আগে আমাকে মেরে মরবেন যে।
আমি মরতে চাই না ভাবী।'
'চ্যালাদেরও মরা উচিত!'
'প্লিজ ভাবী…'
'এই আমাকে ভাবী বলবে না!' ধমকে উঠে।
আমি ধমক সহ্য করতে পারি না। ধমক সহ্য
করতে না পেরে আমি গাছ থেকে পড়ে যাই।
পড়ে গিয়ে আমার পা ভেঙে যায়।
হাসতে হাসতে মরে গেলাম ভাইয়া!
৩| ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪৫
Mir_Harun বলেছেন: সুন্দর লিখেছো।একটা কাহানির সাথে মিল পেলাম ।তাই লগ ইন করলাম কমেন্ট করতে।তোমার মত একটা ভাই যদি পেতাম?
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৯
অসাম সালা বলেছেন: খুব মজা পেলাম । ভালো লিখলেন ভাই ।