নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প তার আঙ্গুলের ছাপের মতই ভিন্ন। দূর থেকে এক মনে হলেও যতই তার গভীরে যাবে কেউ ততই বৈচিত্রময় বিভিন্নতা পাবে। নিজের জীবনের গল্পে চরে বেড়ানো মানুষগুলো সবাই’ই যার যার জগতে বন্ধী। সহস্র বছর বাঁচতে পারলে পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের জীবনের গল্প আমি শুনতাম।নিজের দেখা জগৎ দেখা আদেখা মানুষদের জগতের সাথে গেঁথে নিতেই লিখি এবং আন্যের লিখা পড়ি। কেউ যদি মিথ্যুক বা ভন্ড না হয় তাহলে তার যে কোন ভিন্ন মতের কারন তার চার পাশের ভিন্ন জগৎ, ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন শিক্ষা। তাই মানুষকে বুজতে হলে তার জগৎটাকে জানতে হবে, তার গল্পগুলো শুনতে হবে।আফনান আব্দুল্লাহ্
ভূতুড়ে ভূত-2
সালেহা ফুফু
ছোট বেলায় আমাদের বাড়ীতে মাঝে মাঝে বেড়াতে আসতেন আমাদের লতাপাতার এক ফুফু সালেহা ফুফু। তবে উনি কখনো নিজে থেকে নাকি আসতেন না। উনাকে নিয়ে আসতো উনার সাথে থাকা ‘জেঠা’।
ফুফু ছোট বেলায় তাঁর নিজের জেঠার সাথে মাছ ধরতে গেলে হঠাৎ পানিতে পড়ে গিয়ে জ্যাঠরে জ্যাঠারে বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন সেখানে থাকা এই বুড়ো জ্বীন উনাকে উদ্ধার করেন। তাই ফুফু জ্বীনটাকেই জ্যাঠা ডাকতেন, আর আমরা ডাকতাম নানা।
ফুফু অনেক দূর থেকে হেঁটে আমাদের বাড়ীতে আসতেন, এসে সবাইকে তুই তুই করে বলতেন। ঘোষনার মত করে জানাতেন ‘সালেহারে নিয়া আসলাম, কয় দিন থাকবে, মাঝে মাঝে আসি দেখে যাবো, ঠিক মত রাখিস ওরে।’ যতক্ষন এই জ্যাঠা সাথে আছে আমরা ফুফু কে নানা ডাকতাম। জ্যাঠা চলে গেলে আবার ফুফু। চলে যাওয়ার সময় ফুফুর পুর শরীর কুঁচকে যেত যেন খুব যন্ত্রনা পাচ্ছেন, দরজা থেকে সবাইকে সরে বসতে হতো। জ্যাঠার বিদায়ের পর উনি বেশ কিছুক্ষণ ঝিম মেরে বসে থাকতেন, মাঝে মাঝে ঘুমাই পড়তেন। এর পর উঠে বড় সবাইকে সালাম করতেন যাদের একেটু আগেই তিনি তুই তুই করছিলেন।
জ্যাঠা নিজের বয়স কয়েক ’শ বছর বলে দাবী করতেন, কত ’শ বছর যেন উনি বতলে বন্ধী হয়ে পুকুরের নিচে পড়ে ছিলেন। অন্য কাউকে জ্বীনে ভূতে ধরলে তিনি সেটারও চিকিৎসা করতেন।
কিছু দিন পর জ্যাঠা এসে ফুফুকে নিয়ে যেত। পুর বাড়ীর পিচ্চি-পাচ্চির দল উনার পিছু নিত। বলে বেড়াতো – ফুফু বয়েসের তুলনায় অসম্ভব জোরে হেটে যাচ্ছেন, এর পর বলতো উনি খানা খন্দ ঝোপঝাড়ের উপর দিয়েও স্বচ্ছন্দে চলে যাচ্ছেন। সেটাকে বাড়িয়ে কেউ এমনও বলতে চাইতো যে ফুফু তো মূলত হাঁটি’ই যাননা অনেকটা উড়ে উড়ে যান।
জ্যাঠাকে আমরা বলতাম আপনি দেখতে কেমন? চেহারাটা একটু দেখান না।’ মুচকি হেঁসে বলতেন- ‘না, না, তোমরা ভয় পাবা।’ ফুফু এমনিতে পান-টান খান না। কিন্তু যখন জ্যাঠা থাকে তখন পান চিবান। আমরা আমাদের স্যার কে জিজ্ঞেস করতাম- ‘স্যার, পান দেখি ফুফুই চিবাইতেছেন অথচে খাইতেছে নাকি নাকি জ্বীনে। পানটা আসলে স্যার কার পেটে যায়!!??’
# Afnan
[email protected]
©somewhere in net ltd.