নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি...!

অগ্নি সারথি

একটা বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন নিয়ে, আমি প্রান্তিক জনতার কথা বলতে এসেছি.......!

অগ্নি সারথি › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা সিনেমা, কতিপয় 'গড লাভিং' পিপল এবং কিছু গড ফিয়ারিং। (ছাগুরা দূরে থাক জাতীয় পোস্ট)

১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

কিছুদিন আগে OMG, একটা হিন্দি মুভির রিভিউ লিখেছিলাম। ঠিক রিভিউ না। রিভিউ এর নামে পুরো গল্পই লিখে ফেলেছিলাম এবং মুভির গল্প শেষ হওয়ার পরেও লিখেছিলাম চলবে। অর্থ্যাত এরপরে আবারো সেটা চলবে। কিছু অতি জ্ঞানী এসে সেই পোস্টে এটা রিভিউ না স্পয়লার তা নিয়ে তর্ক শুরু করে দেয়। যাক সে কথা। আমার আজকের প্রস্তাবনা কিন্তু সেই মুভির সূত্র ধরেই.........

OMG মুভির শেষাংশে এক ধর্ম গুরু (যিনি কিনা ভিলেন গুরু হিসেবে উপাস্থাপিত), নায়ক কানজি লাল মেহতাকে (পরেশ রাওয়াল) উদ্দেশ্য করে বলেন যে, ‘দিজ আর নট ‘গড লাভিং’ পিপল, দিজ আর ‘গড ফিয়ারিং’ পিপল। এখন আসি ‘গড লাভিং’ পিপলের খোজে। দেশে আজকে কারা সব থেকে ‘গড লাভিং’ পিপল। এটা একটা ২ দিনের বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করলেও পাব যে, কে ইসলামের ঠিকা নিয়ে রেখেছে। উত্তর নিঃসন্দেহে হেফাজত এবং জামাত। হেফাজতের যে ১৩ দফা, তাতে স্পষ্টই বোঝা যায় বিশ্ব মুসলিম জাহানের হেফাজতের দায়িত্ব তাদের কান্ধে। কিন্তু একটা বিষয়ে সন্দেহ কাটে না আমার, কিছুদিন আগেও যখন কিছু কিছু দেশে নবী (সাঃ) কে অবমাননা, কোরআন অবমাননা এবং অন্যান্য ইসলাম অবমাননা হচ্ছিল, ফিলিস্তিনে নির্বিচারে গনহত্যা এবং অন্যান্য ইসলাম বিরোধী ঘটনা ঘটছিল তখন এরা কই ছিল? একটা টু শব্দও তো করে নাই। বলতে পারে সেটা বিদেশের ব্যাপার কিন্তু লাড়া চাড়া তো দেয়া যেত প্রবল ধর্ম প্রীতি থেকে। আর যদি এরা নাই ছিল তখন, তাহলে হঠাত করে কয়দিনের মাথায় কিভাবে ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটালো। মাত্র ৪/৫ জন নাস্তিক ব্লগারের জন্য!! আমার হাসি পেয়েছে, যখন আমি দেখেছি যে তাদের তিন নম্বর দফায় এই ব্লগারদের কঠোর শাস্তি দাবি করা হয়েছে। নিশ্চয়ই এই সংগঠন, সংগঠিত হয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। এরপর ও তারা ‘গড লাভিং’ পিপল ধরেই নিলাম। দেশে তারা ছাড়া আর কেউ ‘গড লাভিং’ পিপল নাই। তারা করছে কি, দেশের ম্যাঙ্গো ‘গড ফিয়ারিং’ পিপল দের জান্নাতের টিকেটের লোভ দেখিয়ে, ঈমানী দায়িত্ব দেখিয়ে নানা ভাবে তাদেরকে দায়িত্ব বান করে তুলছে। তারা এমন দায়িত্ব তাদের কাঁধে তুলে দিচ্ছে যে, যার বিনিময়ে নির্দ্বিধায় খুন পর্যন্ত করে চলেছে। সেলুকাস! সত্যি কি বিচিত্র এই দেশ। OMG মুভিতে ঈশ্বরকে নিয়ে ব্যবসা দেখেছি, অপচয় দেখেছি, আয় রোজগার ও দেখা যায়। কিন্তু হেফাজত এবং জামাতের ব্যবসা আরো ভয়াবহ। প্রথমে যখন সাঈদীর মৃত্যুদন্ড দেয়া হল তখন তারা সাঈদীকে চাঁদে দেখিয়ে, বগুড়া সহ সারা দেশে এই ‘গড ফিয়ারিং’ পিপলদের কাঁধে ঈমানী দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়ে একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলল। এরপর গতকাল ফটিকছড়িতে ‘সন্ত্রাসীরা আসছে মসজিদ, মাদরাসা ভাংতে’ এই কথা বলে আবারো একটা অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে কিছু মানুষকে খুন এবং আহত করাল, এই সব ‘গড ফিয়ারিং’ পিপলদের মাধ্যমে। বাস্তবিক হেফাজত এবং জামাতের এমন রাজনৈতিক কূট কৌশলকে সালাম জানাতেই হয়। এবার আসি কেন এসব মানুষ ‘গড ফিয়ারিং’ পিপল? দিনে ৫ ওয়াক্ত নামাজের কোন ঠিক নাই, আবার আইছে জিহাদ করতে। আল্লাহ্‌ জিহাদ করতে বলেছে, কিন্তু সেটা নিজের ভেতরে থাকা শয়তানের সাথে। আল্লাহ্‌ কখনোই কাউকে হানাহানি করতে বলেন নাই, খুন করতে বলেন নাই। কিন্তু এই 'কুশিক্ষিত' ম্যাঙ্গো পিপলেরা মনে করছে যে, আমার আল্লাহরে গালি দিছে, নবীজীরে গালি দিছে তোর আর রক্ষা নাই। তার উপর হেফাজত আর জামাতের কল্যানে সে শিখে ফেলেছে যে তাকে জিহাদ করতে হবে। একবার জিহাদ করতে পারলে জান্নাতের অগ্রীম টিকেট হাতে, নামাজ কালামের আর দরকার নাই। হুজুগে বাঙ্গাল। আর এই হুজুগ টাকেই কাজে লাগাচ্ছেন জামাতি এবং হেফাজতিরা। এক বড় ভাইয়ের কাছে শোনা, সে পরীক্ষায় নকলের উপর একটা গবেষনা করছিল। তার গবেষনায় সে এক কওমী মদরাসার ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেছিল, আপনি নকল করেন? সে তার সরল মনে স্বীকার করে যে হ্যাঁ আমি নকল করি। যখন তাকে বলা হল কেন নকল করেন? তখন তার জবাবে সে বলেছে, হুজুরে বলছে আল্লহর কালাম ভূল লেখা যাবে না। এখানে আমি মাদরাসা কিংবা সেই সরল মনা ছাত্রটির কথা বলছি না, তার সরলতার প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, এসব হুজুররা যদি এসব ছেলে মেয়েদের ভূল না বুঝিয়ে সঠিক বোঝাতেন তাহলে আর আজকে এমনটি হত না।

এবার আসি নাস্তিক ব্লগারদের কথায়। তার আগে একটি ঘটনার বর্ননা- আমাদের নবীজী প্রতিদিন সকালে ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যেতেন আর এক বুড়ি তার পথে কাটা বিছিয়ে রাখতেন। নবীজীর পায়ে কাটা বিধার পর ও তিনি কিছু না বলে, কাটা তুলে, মসজিদে চলে যেতেন। একদিন নবীজী দেখলেন তার পথে কাটা নেই, তিনি চলে গেলেন সেই বুড়ির বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখেন বুড়ি অসুস্থ। তিনি তার সেবা করে, তাকে সুস্থ করে তোলেন। বাকীটা সকলেরই জানা।

যাই হোক, এটা হল ইসলাম। আল্লাহ্‌ নিজে বলেছেন ‘ লা কুম দিনুকুম, ওয়ালিয়াদিন।‘ অর্থ্যাত যার যার ধর্ম তার তার কাছে। এখন আসি নাস্তিক ব্লগার দের কথায়। তারা কি করেছে? ব্লগে আল্লাহ্‌ এবং তার রাসুলকে গালাগালি করেছে। অবশ্যই তারা খুব জঘন্য অন্যায় করেছে। সংখ্যায় তারা ৪/৫ জন। কিন্তু বাকী ব্লগার রা ও তাদের ছেড়ে দেয় নি। খুব গালাগালি করতে দেখছি আমি তাদের। আমি তাদের পক্ষ নিয়ে কথা বলছি না। আমার মনে হয় না এমন একজন ও ব্লগার পাওয়া যাবে যারা আসিফদের কথায় প্রভাবিত হয়েছে। ‘গড লাভিং’ পিপলরা সংখ্যায় ১০ লাখ হয়ে এদের শাস্তি দাবি করেছেন কিন্তু কেন এত সংখ্যক এই ৪/৫ জনের জন্য? হ্যাঁ তারা জঘন্য অপরাধ করেছে কিন্তু কেন ১০ লাখ? ফু দিলেই তো তারা উড়ে যাবে। তারা তো আর দেশের প্রধানমন্ত্রী নন। এখানে অন্য কোন রাজনীতি নেই তো?

কিন্তু যারা এই ‘গড ফিয়ারিং’ পিপলদের ব্যবহার করছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য, তাদের তাহলে কি? তারা তো আসিফ মহিউদ্দীনের চেয়েও খারাপ। আর সরকার ও বা কি করছে? কেন এসব কঠোর হস্তে দমন করতে পারছে না? তারাও কি এই দশ লাখে, তাদের ভোট কত লাখ, তা চিন্তা করছে? যেমনটা জাতীয় পার্টি কিংবা বি এন পি করছে। এরা শুধু একটা দেশের জন্য না, তারা একটা পুরো জাতির জন্য হুমকি স্বরুপ। যা তাদের দাবী গুলো এবং সহিংসতা দেখলেই বোঝা যায়। ক্ষমতায় না থেকে তারা যদি এত কিছু করতে পারে, এমন ভাবে সংগঠিত হতে পারে তাহলে আগামীতে যখন তাদেরকে প্রশ্রয় দেয় এমন কোন দল ক্ষমতায় যাবে তখন কি হবে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.