![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
’হাজার নদীর ভাটির দেশ, লাল সবুজের দেশ,সে তো বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। হাজার বছরের বাঙালীর ইতিহাসে একটি শ্রেষ্ঠ নাম ’বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান’। তাঁরই বলিষ্ঠ নেতৃত্বে পৃথিবীর মানচিত্রে রচিত হয়েছে একটি স¦াধীন বাংলাদেশ। যিনি স্বপ্ন দেখেছেন আর স্বপ্নের বাস্তবতা নিজ হাতে রূপ দিয়েছেন, তিনিই বাঙালী জাতির জনক ’বঙ্গবন্ধু মুজিব’। শেখ মুজিব ও বাংলাদেশ একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অংশ । একটি ছাড়া অন্যটিকে কল্পনা করা যায় না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাংলার মানুষের আশা আকাংখা। তিনি ছিলেন খাঁটি দেশপ্রেমিক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের জন্য অকাতরে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। বাংলার জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। রাজনীতিতে আদর্শ ও মূল্যবোধের চর্চায় এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু। অন্য রাজনীতিবিদদের তিনি রোল মডেল।
রাজনীতির কবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের স্রষ্টা। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লৎফুর রহমান ও মাতা সায়েরা খাতুন। ১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জ মহকুমা পরিদর্শনে আসা বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক ও খাদ্যমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর উপস্থিতিতে কিশোর মুজিব স্কুলের ভাঙা ছাদ দিয়ে পানি পড়া বন্ধে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেই জনান দিয়েছিলেন যে, বাংলার ভাগ্যাকাশে আবির্ভূত হতে চলেছে এক নতুন সত্তার, এক নতুন ধূমকেতুর। এরপর থেকে রাজনীতির মঞ্চে তার উত্থান এবং সাফল্য সবই ইতিহাস। ভারতভাগের পর যুবনেতা শেখ মুজিব ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ছাত্রলীগের পরিণতির সাথে-সাথে নিজের মেধা ও মানুষের জন্য কাজ করার প্রেরণা থেকেই উদ্বুদ্ধ বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নিয়ে গেছেন স্বাধীনতার চূড়ান্ত রূপে। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অধ্যয়ন করেন। ভাষা আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যোগ দিয়ে তিনি বহুবার কারাবরণ করেন। ১৯৫৬সালে তিনি পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করে দেশব্যাপী সফরের মাধ্যমে মানুষের মনে বাঙালী জাতীয়তাবোধ ও রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি করেন ।
বাঙালীর মুক্তির সনদ হিসেবে পরিচিত ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে এক সর্বাত্মক আন্দোলন গড়ে তুলে বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন।তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০সালে তৎকালীন পাকিস্তানের জাতিয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে । কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর না করে ষড়যন্ত্র শুরু করে । এই পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু অসহযোগের ডাক দেন । ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহরোয়ার্দি উদ্যানে এক ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন:
’’এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’’।
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ বিশ্বের ১০টি শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণের অন্যতম। যে ভাষণ একসময় ছিল শুধু বাঙালীর আজ তা সমগ্র বিশ্বের। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেস্কো কর্তৃক ওয়ার্ল্ড ডকোমেন্টারি হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি পেল।
২০০৪ সালে বিশ্বব্যাপী বিবিসির বাংলাভাষী শ্রোতা জরিপে 'সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি' নির্বাচিত হন বাংলা ও বাঙালির মহান সন্তান শেখ মুজিব। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু মুজিবের অনন্য নেতৃত্বের জন্য ১৯৭১-এর ৫ এপ্রিল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন 'নিউজ উইক' এই মহান নেতাকে 'রাজনীতির কবি' হিসেবে উল্লেখ করেন
বাঙালির শতবর্ষের ইতিহাসে গৌরবময় অর্জন হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ভারত-পাকিস্তানের মতো আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। এই স্বাধীনতার জন্য শত বছর আগে মাস্টারদা সূর্যসেন, প্রীতিলতা, ক্ষুদিরামসহ আরো অনেকে ফাঁসিতে জীবন দান করে গেছেন। অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহ হয়েছিল। ২৩ জুন পলাশির যুদ্ধে মীরজাফর গংদের বিশ্বাসঘাতকতায় নবাব সিরাজুদ্দৌলা পরাজিত হলে বাংলার স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। পলাশির পরাজয়ের ২১৪ বছর পর ১৯৭১ সালে বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীন আবাসভূমি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত ২৩ বছরের আন্দোলন সংগ্রামেও শত শত মানুষ মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে ১৯৭১ সালে শুধু ৯ মাসের সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন এবং ৪ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ঘটেছে। ওই সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় স্বাধীণতা বিরোধীচক্র হাজার হাজার বাড়িঘর জ্বালিয়ে ছাই করে দিয়েছে।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস গৌরবের। '৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মধ্যে দুর্র্ধষ সামরিক বাহিনী হিসেবে পরিচিত প্রবল পরাক্রমশালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৯৩ হাজার সেনা সদস্য বাংলার দামাল মুক্তিবাহিনীর কাছে নাকে খত দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু বলে সম্মুখ সমরে হাসতে হাসতে জীবন দিয়েছেন। একাত্তর বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এক গৌরবময় হিরণ্ময় সময়। সে সময় সাড়ে সাত কোটি বাঙালি শেখ মুজিবের নেতৃত্বে যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, এই ধরনের ঐক্যের কোনো দ্বিতীয় উদাহরণ হাজার বছরের ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না। ২৭ বছরের যুবক শেখ মুজিব ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দেন। আর সেই মুজিব আমেরিকা, চীনসহ বহু রাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও মাত্র ২৩ বছরের মাথায় পাকিস্তান ভেঙে চুরমার করে দিলেন। মুজিবের অতিমানবীয় নেতৃত্ব বাঙালি জাতিকে শুধু ঐক্যবদ্ধ করেনি, বাঙালিকে বীরের জাতিতে পরিণত করে।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে কথা বলার মতো দেশে কোনো বিরোধী দল ছিল না। এই পরিস্থিতিতেই যুব নেতা শেখ মুজিব পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ৪ মাস পর ১৯৪৮-এর ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে ছাত্রলীগের মাধ্যমে মুজিব বাংলার স্বাধিকার আন্দোলনকে ধীরে ধীরে কীভাবে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে গেছেন। এই বাঙালি নেতা পূর্বপাকিস্তানকে সব সময় পূর্ববাংলা নামে উল্লেখ করেছেন। পাকিস্তান পার্লামেন্ট এমএনএ হিসেবে তিনি সবসময় পূর্ববাংলার বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। পূর্ব-পাকিস্তানকে (পূর্ব বাংলা) সময় মতো তিনি যে স্বাধীন করতে চান, তা আকারে ইঙ্গিতে সবসময় বুঝিয়ে দিয়েছেন।
'৭০-এর ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে ১২ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে দক্ষিণাঞ্চলে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। সপ্তাহব্যাপী ঘূর্ণিদুর্গত অঞ্চল ঘুরে ২৬ নভেম্বর ঢাকায় এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বিদ্রোহী বাংলার বিদ্রোহী মুজিব একপর্যায়ে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, 'বাংলাদেশ আজ জেগেছে। বানচাল করা না হলে বাংলার মানুষ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের রায় ঘোষণা করবে। আর যদি নির্বাচন বানচাল করা হয়, ঘূর্ণিঝড় ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে নিহত দশ লাখ লোক আমাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করে গেছে, তা সম্পাদনের জন্য স্বাধীন দেশের নাগরিকের মতো বাঁচার জন্য এবং আমরা যাতে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্তা হতে পারি, এর জন্য প্রয়োজনবোধে আরো দশ লাখ বাঙালি প্রাণ বিসর্জন দেবে।' এ সময় একজন বিদেশি সাংবাদিক জানতে চান, এই উক্তির মাধ্যমে কি আপনি পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ সৃষ্টির কথা বলছেন? ত্বরিত উত্তরে সাহসের বরপুত্র জাতীয় নেতা মুজিব বলেন, 'ঘড়ঃ ুবঃ' (এখনই নয়)। অর্থাৎ এই বক্তব্যের মাধ্যমে শেখ মুজিব বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিলেন, প্রয়োজনে তিনি স্বাধীনতার ডাক দেবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বাধীনতা সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করার জন্যই '৬৬ সালে শেখ মুজিব ৬ দফা দিয়েছিলেন। আইয়ুব-ভুট্টোসহ পশ্চিমা সামরিকচক্র ৬ দফার অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য বুঝেই মুজিবকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে আখ্যায়িত করেছিল। আর শেখ মুজিবও জানতেন, 'ওরা ৬ দফা মানবে না আর তখনই ৬ দফা এক দফায় পরিণত হবে।' একইভাবে সামরিক বিধির বেড়াজালে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের অনেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, 'নির্বাচনে অংশ না নিলে বাংলার মানুষের পক্ষে কথা বলার অধিকার অর্জন করা যাবে না।' তিনি এও জানতেন, 'নির্বাচনে বাংলার মানুষ তাকে ও তার দলের পক্ষে রায় দেবেন। নির্বাচনী ফলাফল মেনে না নিলে বাঙালি জাতি ব্যালটের রায় রক্ষার জন্য বুলেট হাতে নেবে।' পরে মুজিবের ভবিষ্যদ্বাণী অক্ষরে অক্ষরে সঠিক প্রমাণিত হয়েছিল।
মার্কিন কূটনৈতিক অ্যার্চার বস্নাড তাঁর গ্রন্থে লিখেছেন শেখ মুজিব ছিলেন পূর্বপাকিস্তানের 'মুকুটহীন সম্রাট।' মুজিব ১৯৬৯-এর জুনেই বস্নাডকে বলেছিলেন, 'সামরিক বাহিনী যদি আমাকে বাধা দেয় তাহলে আমি স্বাধীনতা ঘোষণা করে গেরিলা যুদ্ধের ডাক দেব।
'৭১-এর ১ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যখন ৩ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশন স্থগিত করেন, পাকিস্তান সেদিনই ভেঙে যায়। এরপর ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ স্বাধীন বাংলাদেশ পরিচালনা করেন। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। তিনি বলেন, 'আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমরা রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিও।' 'আমরা ভাতে মারব, পানিতে মারব বলে তিনি গেরিলা যুদ্ধের দিকনির্দেশনা দেন। ১৫ মার্চ স্বাধীন দেশের সরকার প্রধানের মতো বঙ্গবন্ধু ৩৫টি নির্দেশ জারি করেন। ২৩ মার্চ ৩২ নাম্বারের বাসভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করলে ২৫ মার্চ রাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। তিনি ৯ মাস অনুপস্থিত থাকলেও তার নামেই মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয় মনীষী আবুল ফজল বলেছেন, 'অনুপস্থিত সেনাপতির এমন সেনাপতিত্ব সত্যিই অভিনব, ইতিহাসে এমন নজির বিরল।'
২০১২ সালে বঙ্গবন্ধুর নিজের লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ’অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশিত হয় । বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিশাল একটি অংশ কেটেছে কারাগারে । বন্ধুবান্ধব,সহকর্মী ও সহধর্মীণীর অনুরোধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে রাজবন্দি থাকা অবস্থায় এই আত্মজীবনী লেখা আরম্ভ করেন । কিন্তু ১৯৬৮ সালের ১৭ই জানুয়ারি থেকে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক আগারতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ঢাকা সেনানিবাসে আটক থাকায় জীবনী লেখা বন্ধ হয়ে যায় । বইটিতে ১৯৫৫সাল পর্যন্ত ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে । যৌবনের অধিকাংশ সময় কারা প্রকোষ্ঠের নির্জনে কাটলেও জনগন-অন্তপ্রাণ এমানুষটি ছিলেন আপষহীন,নির্ভীক। জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা,গভীর উপলব্ধি ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ তিনি এ গ্রন্থে সহজ সরল ভাষায় প্রকাশ করেছেন।
১৯৫২ সালে বঙ্গবন্ধুর জেল জীবন সম্পর্কে ’অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বিবৃত আছে-’’এদিকে জেলের ভেতর আমরা দুইজনে প্রস্তুত হচ্ছিলাম অনশন ধর্মঘট করার জন্য। আমরা আলোচনা করে ঠিক করেছি,যাই হোক না কেন,আমরা অনশন ভাঙব না। যদি এই পথেই মৃত্যু এসে থাকে তবে তাই হবে।’’ এভাবেই এদেশ ও দেশের মানুষের জন্যে বঙ্গবন্ধু মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতেও দ্বিধা করতেন না । ঢাকা সেন্ট্রাল জেল থেকে ফরিদপুর কারাগারে বঙ্গবন্ধকে নিয়ে যাওয়ার সময়কার ঘটনা এ গ্রন্থে লিখেছেন, তিনি বলেন:
’রাত এগারোটায় আমরা স্টেশনে আসলাম। জাহাজ ঘাটেই ছিল, আমরা উঠে পড়লাম। জাহাজ না ছাড়া পর্যন্ত সহকর্মীরা অপেক্ষা করল। রাত একটার সময় সবার কাছ থেকে বিদায় নিলাম। বললাম,’জীবনে আর দেখা নাও হতে পারে । সকলে যেন আমাকে ক্ষমা করে দেয় । দু:খ আমার নাই । একদিন মরতেই হবে,অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যদি মরতে পারি,সে মরাতেও শান্তি আছে।’
একটি বাংলাদেশ,যার সৃষ্টিতে ্রয়েছে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মদান,দু’লাখ মা-বোনের ইজ্জত,অনেক ত্যাগ,তিতিক্ষা আর ছিল বঙ্গবন্ধুর মত ত্যাগী মানবের সুদৃঢ় নেতৃত্ব। ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে, 'শেখ মুজিব ঘুমন্ত জাতির জাগরণের জন্য জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ব্যয় করেছেন। জাতিকে তিনি আত্মশক্তিতে বীর্যবান করে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। শেখ মুজিবের অপরিসীম আত্মত্যাগের ফসলই হচ্ছে স্বাধীন বাংলাদেশ।
২| ২২ শে মে, ২০১৮ রাত ১:১৮
মওদুদ আহমদ বলেছেন: ধন্যবাদ সুচিন্তিত মন্তব্য করার জন
৩| ২২ শে মে, ২০১৮ রাত ১:৩৫
কাইকর বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।শেখ সাহেব আমাদের জাতির গর্ব। তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। ধন্যবাদ আপনাকে।
৪| ২২ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:৩৯
মওদুদ আহমদ বলেছেন: Thanks to give your thinkable comment
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ১২:১১
মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: ব্লগে স্বাগতম।

শেখ সাহেব কে নিয়ে লেখা ভালো লেগেছে। দুটি ছবি একসাথে না দিয়ে, একটি সামনে দিলে ভাল হতো।
১৯৭১-১৯৭৫ এর ঘটনা নিয়ে আরেক টি লিখতে পারেন।