![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমানের একান্ত সচিব (পিএস) মিয়া নুর উদ্দিন ওরফে অপু দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করেছেন। তিনি মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ আদালতে দাখিল করে সে সুবাদে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতালে আছেন এখন।
কাল সোমবার ঢাকা জেলা জজ আদালতে তাঁর জামিনের আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
অপু প্রায় এক মাস আগে গোপনে দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও বিষয়টি প্রকাশ পায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, অপুর দেশে ফেরা ও আত্মসমর্পণের বিষয়টি তাঁর জামিন পাওয়ার আগ পর্যন্ত যাতে গোপন থাকে, সে ব্যাপারে সচেষ্ট তাঁর লোকজন।
আদালতে নথিপত্রে অপুর আইনজীবী হিসেবে নাম রয়েছে চারজনের। তাঁরা হলেন খান মোহাম্মদ মঈনুল হাসান, তারেকুল ইসলাম, শামসুল কবির ও নুরে আলম (নবেল)। এঁদের মধ্যে আসামি অপুর কাছ থেকে ওকালতনামা গ্রহণের জন্য সই দিয়েছেন আইনজীবী নুরে আলম। কিন্তু নুরে আলম প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, অপুর আত্মসমর্পণ ও জামিনের আবেদনের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, তিনি জুনিয়র আইনজীবী, ওকালতনামায় নাম থাকতে হয় বিধায় তাঁর নামও রয়েছে। তিনি কিছু জানেন না।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হাওয়া ভবনের দাপুটে কর্মকর্তা ছিলেন অপু। তখন থেকেই তিনি তারেক রহমানের পিএসের দায়িত্বে আছেন।
২০০৭ সালে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর অপু আত্মগোপনে চলে যান। এর পর থেকে তিনি মূলত মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন।
গত ১২ জুন তারেক রহমান মালয়েশিয়া সফরে গেলে তাঁকে কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান মিয়া নুর উদ্দিন অপু। তারেক রহমান ১৩ জুন মালয়েশিয়া থেকে লন্ডনে ফিরে যান। এর চার দিন পর ১৭ জুন ঢাকায় ফেরেন অপু।
আদালতে নথিপত্রে দেখা যায়, অপু ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে করা দুটি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। একটি রাজধানীর গুলশান থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা। অপরটি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের ছেলেকে সাব্বির হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে ঘুষ-লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলা। দুই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে।
এর মধ্যে গুলশান থানার মামলায় গত ১৮ জুন আইনজীবীর মাধ্যমে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ ও জামিনের আবেদন করেন অপু। নিজেকে অসুস্থ বলে উল্লেখ করে মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালের চিকিৎসা সনদও জমা দেন আদালতে।
শুনানি শেষে আদালত জামিন নাকচ করে অপুকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষকে বিধি অনুযায়ী আসামিকে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়ার আদেশ দেন। এরই প্রেক্ষাপটে তাঁকে কারাগারের হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলে কারাগার সূত্র জানিয়েছে।
এর পরদিন ১৯ জুন অপুর আইনজীবী দুদকের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন। একই সঙ্গে এ মামলায় জামিনের আবেদন করেন। আদালত গ্রেপ্তারের আবেদন মঞ্জুর করে জামিনের শুনানির জন্য ২৬ জুন দিন ধার্য করেন।
কিন্তু ২৬ জুন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন জামিন বিষয়ে শুনানি করতে প্রস্তুত নন জানিয়ে সময়ের আবেদন করেন। আদালত ১৪ জুলাই পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। এ মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এ বিচারাধীন আছে।
এদিকে বিএনপিতে তারেকের অনুসারীদের একটি সূত্র জানায়, মূলত তারেক রহমানের নির্দেশে অপু দেশে ফিরেছেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তাঁকে দেশে বিএনপির রাজনীতিতে কাজে লাগানোর চিন্তা রয়েছে।
খোঁজখবর করে জানা গেছে, অপুর গোপনে দেশে ফেরা এবং কারাগারে থাকার বিষয়টি বিএনপির বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় নেতাই জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এক-এগারোর পর থেকে অপুর সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ নেই। তাই তাঁর অবস্থান সম্পর্কে তাঁরা অবহিত নন।
©somewhere in net ltd.