নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার কথা

আহমেদ রশীদ

আহমেদ রশীদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফের সরকারের ফাঁদে পা দিল বিএনপি

২০ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:১৮

মির্জা আব্বাসকে ঢাকা মহনগর বিএনপির আহ্বায়ক করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম হতাশা ও চাপা ক্ষোভের। তাদের শংকা- ঈদের পর সরকারবিরোধী আন্দোলন কোনোভাবেই সফলতার মুখ দেখবে না। পুনরাবৃত্তি ঘটবে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনপূর্ব আরেকটি ব্যর্থ আন্দোলনের। কারণ মহানগরীর মাধ্যমেই সরকারবিরোধী আন্দোলনের দানা বাঁধে। কিন্তু নতুন দায়িত্ব পাওয়া এই আব্বাস দলের সবার কাছে দুর্নীতিবাজ ও সুবিধাবাদী চরিত্রের একজন নেতা হিসেবে পরিচিত। সরকারের সঙ্গেও রয়েছে তার গোপন আঁতাত। এমনকি বিগত সরকারবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ ও নির্বাচনে বিএনপির না যাওয়ার পেছনেও মির্জা আব্বাসসহ একটি চক্রের সূক্ষ্ম হাত ছিল বলেও অভিযোগ দলের একাধিক শীর্ষ নেতার। সেই আব্বাসকেই দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে ফের সরকারের ফাঁদে বিএনপি পা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী।

ঢাকা মহানগরীর প্রধানের দায়িত্ব মির্জা আব্বাসকে দেয়ার ২৪ ঘণ্টা না যেতেই যুগান্তরের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন স্তরের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। তাদের আশংকা এই নেতাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরী দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বাধীন বিশাল একটি গ্র“প হয়ে পড়বে নিষ্ক্রিয়। যার ফায়দা নেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এই নেতা লোভী ও সুবিধাবাদী হওয়ায় সরকারও তাকে ব্যবহার করতে পারবে সহজেই। বিগত জোট সরকারের মন্ত্রী ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থাকা অবস্থাতেই মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে উঠেছিল নানা দুর্নীতির অভিযোগ। বিতর্কিত হয়ে পড়েছিলেন এই নেতা। মহানগরীর কমিটি ঘোষণার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা। তাদের ধারণা মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কোনো আন্দোলনই সফল হবে না। তার সঙ্গে সরকারি দলের বেশ কয়েক নেতার রয়েছে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক। আর অতীতে বিভিন্ন সময়ে এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে বড় ধরনের ফায়দা লুটেছেন বিএনপির এই নেতা।

বিগত সরকারের সময় মন্ত্রী থাকাকালে তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা কামানোর অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতির কারণে বিগত তত্ত্ব¡াবধায়ক সরকারের আমলে তিনি গ্রেফতার হন। একজন প্রতিষ্ঠিত দুর্নীতিবাজ ও অযোগ্য নেতাকে মহানগরীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়ায় দলের সৎ ও ত্যাগী নেতারা হতাশ। তাদের আশংকা, টাকার বিনিময়ে মহানগরীর থানা ও ওয়ার্ড কমিটিতে যোগ্য নেতাদের বদলে অযোগ্য ও সুযোগসন্ধানীরা স্থান পেতে পারেন। কারণ আব্বাস সিন্ডিকেট তাদের আধিপত্য বিস্তারে এই কাজ করতে পারেন। সবমিলিয়ে কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ।

কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘোষিত কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু সাঈদ খান খোকন যুগান্তরকে বলেন, তার সদস্যসচিব হওয়া প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু তিনি গ্র“পিংয়ের শিকার। বিগত আন্দোলনে যারা ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বাদ না দিয়ে সামনের কাতারে নেয়া হয়েছে, যা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে যোগ্য নেতাদের দায়িত্ব না দিয়ে যদি শীর্ষ নেতৃত্ব নিজেদের লোকদের দায়িত্বে আনার চেষ্টা করে তবে আন্দোলন তো হবেই না উল্টো সংগঠনের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে।

সূত্র জানায়, বিএনপির কিছু নেতা ও বিদেশী একটি গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন থেকে দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড পিছু হটে আসে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না- এমন ভুল বার্তা দিয়ে ওই সময় খালেদা জিয়াকে আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে রাস্তায় নামা থেকেও বিরত রাখে ওই চক্রটি। আসলে এটি ছিল সরকারেরই পাতা ফাঁদ। আর ওই ফাঁদে শীর্ষ নেতৃত্বকে ধরা দেয়ার ব্যবস্থা করেন বিএনপির মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা অশুভ চক্রের কিছু সিনিয়র নেতা। এখন মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগরীর আহ্বায়ক কমিটি করার মধ্য দিয়ে সরকারের পাতা দ্বিতীয় ফাঁদে বিএনপি পা দিয়েছে। কেননা, দলের তৃণমূল পর্যায়ের বেশির ভাগ নেতাকর্মী মনে করেন ঢাকা মহানগরীতে আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেয়ার মতো নৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি মির্জা আব্বাসের নেই। তিনি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সততা মিলেছে তার দ্রুত হাজার হাজার কোটি টাকার সহায় সম্পত্তির মালিক হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল, সরকারের সঙ্গে তার গোপন আঁতাত রয়েছে। আর সরকারই চেয়েছিল মির্জা আব্বাস ঢাকা মহানগরী বিএনপির দায়িত্ব পাক। কেননা সরকার মনে করে, তার নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির কমিটি হলে বিএনপি রাজপথে দাঁড়াতেই পারবে না। আর শুক্রবার রাতে মির্জা আব্বাসকে আহ্বায়ক করে ৫৩ সদস্যের কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে সরকারের গোপন ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

এ অবস্থায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আশংকা করছেন, ঈদের পর যে আন্দোলন করার কথা বলে এত হাঁকডাক দেয়া হচ্ছে তা শুধু ফ্লপই করবে না, রীতিমতো মাঠেমারা যাবে। তারা মনে করেন, ঢাকা মহানগর বিএনপিতে এখনও সাদেক হোসেন খোকার কোনো বিকল্প নেই। তৃণমূলের নেতাকর্মী ও সাংগঠনিক কলাকৌশলের দিক থেকে খোকা এখনও এগিয়ে। তবে তিনিও বিতর্কের ঊর্ধ্বে নন। তার বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ রয়েছে। এ জন্য সবাই চেয়েছিল আহ্বায়ক কমিটি হলেও সেখানে একেবারে বিতর্কমুক্ত নতুন নেতৃত্ব থাকতে হবে। আর যারা অতীতে আন্দোলন সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে ফেল করেছেন তারা থাকবেন শুধু উপদেষ্টা হিসেবে। তাই মির্জা আব্বাসকে উপদেষ্টার কাতারে রাখাই উচিত ছিল।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মির্জা আব্বাস মন্ত্রী থাকাবস্থায় উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তেমন কিছুই করেননি। আইন কানুনের তোয়াক্বা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে রাজউক ও গণপূর্তের প্লট ও ফ্ল্যাট বরাদ্দ দিয়ে কোটি কোটি টাকা অবৈধ আয় করেন। সাজানো নিলামের নামে সরকারের মূল্যবান সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছেন নামমাত্র মূল্যে। মন্ত্রী হয়েও মন্ত্রণালয়ের সব টেন্ডার ছিল তার নিয়ন্ত্রণে। বিধিবহির্ভূতভাবে টাকার বিনিময়ে অনেককে তিনি চাকরি দেন। তার সময় পূর্ত মন্ত্রণালয়ে ঘুষ বাণিজ্য ছিল ওপেন সিক্রেট। তার সময়ে বরাদ্দ দেয়া বিধিবহির্ভূত প্লটের অনেকগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসে বাতিল করে দেয়। তার সময়ে অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া অনেকের চাকরি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর পরই চলে যায়। অবৈধ প্লট বরাদ্দসহ মির্জা আব্বাসের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে তথ্যনির্ভর অনেক খবর প্রকাশিত হয়। এ জন্য আব্বাসের ক্যাডাররা সাংবাদিকসহ মিডিয়ার মালিকদের প্রাণনাশেরও হুমকি দেন। ক্ষমতায় অপব্যবহার করে বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদকসহ অনেককে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়।

জানা গেছে, ক্ষমতায় থাকাকালে আব্বাসের ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে ছিল পরিবহন খাত। সে সময় সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করা হতো। এছাড়া কোন রুটে কোন গাড়ি চলবে এবং এজন্য কত টাকা চাঁদা দিতে হবে তাও ঠিক করে দিতেন আব্বাস। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি ও ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি ছিল আব্বাসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। তার ক্যাডারই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করত। কিন্তু ক্ষমতার পালাবদল হলেও আব্বাসের সেই ক্যাডাররা এখনও পরিবহন সেক্টরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের পরিবহন সেক্টরের নেতাদের সঙ্গে আব্বাসের গোপন দহরম-মহরম রয়েছে। সায়েদাবাদসহ বেশ কয়েকটি বাসস্ট্যান্ড থেকে আব্বাসের নামে এখনও চাঁদার ভাগ যায়। সরকারের একটি অংশের সঙ্গে গোপন আঁতাত করে আব্বাস এখনও পর্দার আড়াল থেকে পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য বিস্তার করে যাচ্ছেন।

সরকারের সঙ্গে আব্বাসের গোপন আঁতাতের অভিযোগ রয়েছে। এর সত্যতা মেলে গত বছর সরকাবিরোধী আন্দোলনের সময়। সে সময় দলের অনেক সিনিয়র নেতা গ্রেফতার হলেও তিনি গ্রেফতার হননি। আর বক্তৃতার মঞ্চে অনেক কিছু বললেও রাজপথে কখনও তাকে সরব দেখা যায়নি। সর্বশেষ গত এপ্রিলে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ তিনি নিু আদালতে হাজিরা দিতে গেলে গয়েশ্বরের জামিন বাতিল করা হলেও আব্বাসকে জামিন দেয়া হয়। একই মামলায় দুই রকম আদেশ দেখে অনেকেই সন্দেহ করেন, সরকারের সঙ্গে আব্বাসের গোপন আঁতাতের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। এমন বাস্তবতায় আব্বাসের নেতৃত্বে ঈদের পর আন্দোলনের সফলতা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠা ও হতাশা দেখা দিয়েছে। দলের মধ্যে একগুঁয়েমি ও বদমেজাজী হিসেবে খ্যাত মির্জা আব্বাসের ডাকে নেতাকর্মীদের রাজপথে নামার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

জানা গেছে, ওয়ান-ইলেভেনের পর বেশ কয়েক বছর দলে কোণঠাসা থাকলেও সম্প্রতি আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠছেন মির্জা আব্বাস। দাবি করা হচ্ছে, ছাত্রদল তার কব্জায়। অপরদিকে যুবদলসহ অন্যান্য অঙ্গসংগঠন নিজের কব্জায় নিতে চান। উদ্দেশ্য যে কোনোভাবে বিএনপির একক নিয়ন্ত্রণ নেয়া। মহানগরীর কমিটিও আব্বাসের পরামর্শক্রমেই হয়েছে। সদস্য সচিব হিসেবে হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের নাম খালেদা জিয়া প্রস্তাব করলেও আব্বাস সমর্থকরা তাতে ভেটো দেন। মির্জা আব্বাস তার পছন্দের একটি তালিকা খালেদা জিয়ার কাছে জমা দেন। ওই তালিকা অনুমোদন করার জন্য নানা চেষ্টাও চালান। সোহেল আব্বাসবিরোধী হওয়ায় তিনি যাতে কমিটিতে গুরুত্বপূর্র্ণ পদে আসতে না পারেন সেজন্য কমিটিতে সদস্য সচিব না রাখতে আব্বাস প্রস্তাব করেন। সদস্য সচিব ছাড়াই কমিটি অনুমোদন করাতে নানাভাবে চেষ্টা চালান। কিন্তু সোহেলকে খালেদা জিয়া চূড়ান্ত করায় তা সম্ভব হয়নি।

এদিকে ঘোষিত কমিটি নিয়ে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। কমিটিতে স্থান পাওয়া অনেকেই হতাশ। আব্বাস সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দিয়ে যোগ্য ও ত্যাগীদের কম গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে। আবার অনেককে বাদও দেয়া হয়।

গ্র“পিং মাস্টার হিসেবে আব্বাসের সুনাম রয়েছে। সদ্যঘোষিত কমিটিতে সাদেক হোসেন খোকা গ্র“পকে কোণঠাসা করা হয়েছে। ৫৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে বেশির ভাগই আব্বাসের অনুসারী। মহানগরীতে খোকার একক নিয়ন্ত্রণ থাকলেও তাকে বাদ দেয়ায় তার সমর্থকরা আব্বাসের নেতৃত্ব মেনে নেবে না বলে যুগান্তরকে অনেকে জানান।

ইতিমধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঈদের পর সরকার পতনের কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু ঘোষিত কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে সব থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। বাকি এক মাসে কাউন্সিলের মাধ্যমে মহানগরীর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের প্রশ্ন, ঈদের পর যদি সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নামা হয় তবে মহানগরীর কাউকেই রাজপথে পাওয়া যাবে না। কেননা আন্দোলনের মোক্ষম সময়টা তারা কমিটি করার নামে খেয়ে ফেলবে। নিজের ব্যর্থতা ও রাজপথে না নামার অজুহাত হিসেবে এটাকে দাঁড় করানোর কৌশল নিতে পারেন আব্বাস।

কর্মীরা জানিয়েছেন, নেতৃত্ব দেয়ার মতো গুণাবলীও তার মধ্যে নেই। তিনি বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হটকারী ও বদমেজাজী। গ্র“পিং মাস্টার হিসেবে তার কুখ্যাতিও রয়েছে। তার অনুসারী ছাড়া অন্য কারও কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। দলের মধ্যে গ্র“পিং জিইয়ে রাখতে তিনি বেশ পারদর্শী। বিগত ওয়ান-ইলেভেনের সময় কথিত সংস্কারপন্থী ইস্যুটি এখনও তিনি ভুলে যাননি। খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে একাধিকবার বলেন, বিএনপিতে সংস্কার-অসংস্কার বলে কিছু নেই। কিন্তু মির্জা আব্বাস এখনও সংস্কারপন্থীদের সঙ্গেই আছেন। কিছুতেই তিনি হাল ছাড়তে রাজি নন। আবার সুযোগ পেলে উল্টো তিনি প্রতিপক্ষ নেতাদের সংস্কারপন্থী বলে গাল দেন। তাই বারবার চেষ্টা করেও আব্বাস সিন্ডিকেটের কারণে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বদলে নেতায়-নেতায় বিরোধ বেড়েই চলে।

বিগত আন্দোলনে ঢাকা মহানগরী ব্যর্থতার পেছনেও আব্বাসের ভূমিকা রয়েছে। মহানগরীতে তার কিছু সমর্থক রয়েছে। খালেদা জিয়ার ডাকে আন্দোলন চললেও শুধু খোকাকে ব্যর্থ করার জন্য তার সমর্থকরা রাজপথে নামেননি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দল পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন খালেদা জিয়া। প্রথমেই মহানগরীর কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেন। খোকাকে বাদ দিয়ে কাকে আনা যায় এ নিয়ে নানা চিন্তাভাবনা চলে। আব্বাসের মতামত চাওয়া হলে তিনি প্রকাশ্যেই বলে দেন মহানগরীর দায়িত্ব তিনি নেবেন না। বাধ্য হয়েই খালেদা জিয়া বিকল্প নেতৃত্ব খোঁজেন। কিন্তু এটা যে আব্বাসের কৌশল ছিল তা এখন প্রমাণিত হয়েছে। প্রথমে খোকাই আব্বাসকে দায়িত্ব দিতে খালেদা জিয়ার কাছে অনুরোধ করেন। সেই খোকার অনুপস্থিতিতেই কমিটি আদায় করে নেন আব্বাস।

সূত্র জানায়, চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য থেকে খোকা দেশে ফিরে আসার পর কমিটি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন খালেদা জিয়া।

কিন্তু ঈদের পর আবার নতুন মেরুকরণের আশঙ্কায় আব্বাস সিন্ডিকেট দ্রুত কমিটি ভাগিয়ে নিতে তৎপর হন। সবশেষ বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়াকে নানা ছলচাতুরির মাধ্যমে বুঝিয়ে ওই রাতেই তিনি কমিটি অনুমোদন করিয়ে নেন। খালেদা জিয়া চাচ্ছিলেন উমরাহ শেষে দেশে ফিরে ঈদের পর কমিটি ঘোষণা করবেন। কিন্তু আব্বাস সিন্ডিকেটের মারপ্যাঁচে পড়ে যায় দলের নীতিনির্ধারক মহল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.