নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“ মানূষের জীবনকাল মাত্র দুই দিনের যার একদিন যায় স্বপ্ন দেখতে- একদিন যায় স্বপ্ন ভাঙ্গতে ” ।
কি কহিম বাউ...
দিনডা ছিল্
ডামাডোলের আসিমন /
চিন্তা সবার কি হবে আইজ
উধাও সবার হাসিমন ।
শরীর কাঁপে থর্ থরে
কুহাকাপে বাহারটা /
বুকে সবার আস্ত চাপে
দার্জিলিংয়ের পাহাড়টা ।
গরু খাসি কইরছে সাবার
মোরগ-মুরগি যা ছিল্ /
উশুমাতি মুরগি কয়টা
মরণ খোরাক তা ছিল্ ।
এলা বলে ওইলাও খাবে
আগতে খাইছে আড়িয়াটা /
খামাখা মাইর খাইল্ আইজ
টাঙ্ঘা দাদু দাড়িয়াটা ।
'ওই বেটা খান' বুঝিঝ কি তুই
বুঝিবো এর শেষটা /
'উশুম' দেছে হামার মনত
'উশুম' খাছে দেশটা... !!
শব্দার্থ : উশুম- ডিমে তা'দেয়া বা উম্, কি কহিম বাউ- কি বলব এই প্রজন্মের ছেলেদের, ডামাডোলের আসিমন - মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, কুহাকাপে -অতিরিক্ত ঠান্ডায় কাহিল অবস্থা ,টাঙ্ঘা-অতিশয় লম্বা, এলা- এখন,বুঝিবো- হারে হারে বুঝবে ।
=======
(**) উনিশশো একাত্তুর ....
আজ থেকে ঠিক ছেচল্লিশ বছর আগে...সম্ভবত এপ্রিল মাস ।
আমার প্রিয় হলধর গ্রাম ।
পার্শ্বেই অমরখানা..... উত্তরবঙ্গে
পাকসেনাদের শেষ বিশাল ঘাঁটি ।
প্রায়শ:ই সেনাক্যাম্প থেকে ভীনদেশী জোয়ানেরা হানা দিতো আশপাশের গ্রামগুলোতে । তাদের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে গ্রামের যুবক ও মহিলাদের মুক্ত এলাকায় পাঠিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র শিশু-কিশোর ও বয়স্ক মুরব্বীরা বাড়িতে থাকতেন ।
যুদ্ধ দিনের শুরুতেই
ওরা গ্রামের এমন কোন ঘরবাড়ি নেই যেখানে ওদের অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেনি ।
আমাদের গবাদি পশু আর মুরগির খোয়ারগুলো ছিল ওদের
রসনাতৃপ্তির নিত্য খোরাক যা একসময় শেষ হতে চলে। এমন একদিনের ঘটনা... । 'মুন্সীখান' নামের একজন অত্যন্ত বদমেজাজি স্বেচ্ছাচারী পাকসেনা হাবিলদার তার চার-পাঁচ জন জোয়ানকে সাথে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে সবাইকে আদেশের সুরে মোরগ- মুরগি ধরার কথা বলে । কিন্তু অবস্থা এমন বেগতিক যে, একমাত্র কয়েকটি 'ডিমে তা' দেয়া ( স্থানীয় ভাষায় 'উশুমাতি মুরগি' যা বাচ্চা দিবে ) মুরগি ব্যতীত অন্য কোন খাবার উপযোগী মোরগ-মুরগি ছিলনা ।'ডিমে তা'দেয়া ছাড়া বা উশুমাতি মুরগি ব্যতীত অন্য কোন মুরগি নেই'-এই বিষয়টি তাদের কোন মতেই বুঝানো যাচ্ছিলনা । ততক্ষণে একজন জোয়ান ঘরের ভিতর ঢুকে একটি উশমাতি মুরগি বের করে আনে । উশমাতি মুরগিটি ধরার সাথে সাথে কক্ কক্ করে সারা গ্রাম মাতিয়ে ফেলে এবং তার চিৎকারে অন্য সব উশুমাতি মুরগিগুলো চিৎকার করতে থাকে । এই অবস্থা দেখে মুন্সি খান তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে ' শালে বাঙালি ঝুট বাত বলতা হ্যায়' বলে অশ্লীল শব্দে গালিগালাজ করতে থাকে এবং সবাইকে লাইনে দাঁড় করিয়ে মেরে ফেলার জন্য রাইফেল তাক করে এবং আমার এক শিক্ষক দাদুকে রাইফেলের বাট দিয়ে পেটাতে থাকে । এই সময় আমার শিক্ষক বাবা ( যিনি ঘটনার সময় বাইরে ছিলেন, তিনি আরবী,উর্দু ও ফারসি ভাষা জানতেন ) বাইরে থেকে এসে পাকসেনাদের বুঝাতে সক্ষম হন এবং সেদিনের মতে সবাই রক্ষা পান । এই ঘটনাটির পরে আমরা সবাই আমাদের প্রিয় হলধর গ্রাম ছেড়ে মুক্তাঞ্চলে পাড়ি জমিয়েছিলাম । সেই বিভৎস স্মৃতি কখনো ভোলার নয় .....!!!
=================
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:১৬
খায়রুল আহসান বলেছেন: এ রকমের হাজারো 'মুন্সীখান' এর অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছিল বাংলার প্রায় প্রতিটি জনপদে।
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:০০
রাজীব নুর বলেছেন: আহারে ---
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:১৪
নাইম রাজ বলেছেন: ভয়াবহ ঘটনা।