চখাচখির বিপদ

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৯

চখাচখির ঝাকটা যখন যমুনার চরে এসে নামলো তখনো তারা জানতো না কি বড় বিপদ তাদের সামনে। যমুনার চরে ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় অনেক গম দেখে তারা গোগ্রাসে গম খেলো। কিছুক্ষণ পর যখন বিষের জ্বালায় ছটফট করছিলো তখন এলোমেলো উড়ে কিছু দূরে যেয়ে ডানা ঝাপটে পরে গেলো।

শিকারীরা সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো, পরে যাওয়া পাখি গুলো ধরে তারা জবাই করে নিয়ে গেলো। কিন্তু আটটি পাখি বেশ দূরে যেয়ে মারা গেলো। যেটা যমুনা রিসোর্ট থেকে বেশ কিছু দূরে।

যমুনা রিসোর্টের জুওলোজিক্যাল মিউজিয়ামের কিউরেটর জুয়েল আমাদের কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের মাস্টর্সের ছাত্র। জুয়েল খবর পেয়ে পাখিগুলো নিয়ে আসে মিউজিয়ামে স্টাফিং করার জন্য, তার একটা পাখি ডিপার্টমেন্টে এনে আমরা স্টাফিং করি যার ছবি নিচে দেয়া হলো।

চখাচখি ইউরোপ এবং এশিয়া অন্চলের হাস জাতীয় পাখি। যার বৈজ্ঞানিক নাম Tadorna ferruginea. পুরুষ ও স্ত্রী পাখিকে একত্রে চখাচখি বলে। পুরুষটি চখা স্ত্রী টি চখি। সারা পৃথিবীতে সর্ব সাকুল্যে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ চখাচখি আছে। সারা পৃথিবীতে যদি এভাবে একযোগে শিকার করা যায় তাহলে এক সপ্তাহেই পাখিটাকে বিলুপ্ত করে ফেলা যাবে।

পাখি নিধনে আইন থাকলেও আমাদের সচেতনতার অভাব আছে। আমার ব্যাংকের প্রাক্তন কলিগ যে এখন ইউ এন ও তার সাথে একবার অতিথি পাখি শিকার নিয়ে তর্ক করায় সে বলছিলো, আল্লাহ যে পাখি খাওয়া আমাদের জন্য হালাল করছে সে পাখি খাওয়া আমাদের নিষেধ করেন কিভাবে? তাকে তখন অতিথি পাখি সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝাতে সক্ষম হই নি। এখন হয়তো সে অতিথি পাখি শিকারীদের মোবাইল কোর্টে শাস্তি দেয়। এটা এজন্য বলা অনেক শিক্ষিত লোকও এব্যাপারে অসচেতন।

আসুন আমরা পাখি শিকার বন্ধ করি। শীতে যে পাখিগুলো আমাদের দেশে বাস করে তাদের সংরক্ষণ করি।

৩ টি +২/-০