নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রিয়দেশ...

আহসান কামরুল

পৃথিবীটা বদলাক যুক্তির চর্চার দ্বারা। বিশ্বাসের ভাইরাস ছড়ানো এ দেশটা বদলে যাক...।

আহসান কামরুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আগামী দুই নির্বাচনের জন্য হাইকোর্টের নয়া ফর্মুলা

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:১৩

নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের নয়া ফর্মুলা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিটের পূর্ণাঙ্গ রায়ে দুটি ফর্মুলা দেয়া হয়েছে। প্রথম ফর্মুলায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হবেন প্রধানমন্ত্রী। নতুন ৫০ জন মন্ত্রী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভা গঠন করবেন। সংসদে প্রতিনিধিত্ব করা দলগুলো থেকে ভোটের হারের অনুপাতে মন্ত্রী নেয়া হবে। দ্বিতীয় ফর্মুলায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ভাগাভাগির তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল প্রথম চার বছর ক্ষমতায় থাকবে। আর সংসদের প্রধান বিরোধী দল সবশেষ এক বছর ক্ষমতায় থাকবে। প্রথম ফর্মুলার জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে না। তবে দ্বিতীয় ফর্মুলার জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে।



গত বুধবার হাইকোর্ট বেঞ্চের ৭২০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। রায়ে এসব কথা বলা হয়েছে। তবে হাইকোর্ট একইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা নিরসনে বিভিন্ন সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, 'নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে বিরোধ সমাধানে কোনো ফর্মুলাই জাতির উপকারে আসবে না, যতদিন না রাজনৈতিক দলগুলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা গড়ে তুলতে আন্তরিক ও ঐকান্তিক হয়।'

ফর্মুলা এক: হাইকোর্টের দেয়া প্রথম ফর্মুলা অনুযায়ী, ৫০ জন নতুন মন্ত্রী নিয়ে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একাদশ সংসদ নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভা গঠন হবে। সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ৯০ দিন আগে অথবা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরে এ মন্ত্রিসভা গঠন করা হবে। বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলের এমপিরা মন্ত্রী হবেন। রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী থাকার অনুপাত নির্ধারণ করা হবে দশম জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো কত শতাংশ ভোট পেয়েছে তার ভিত্তিতে। তবে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংবিধানের ৫৬(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে ৫ জন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী দশম সংসদ নির্বাচন বয়কটকারী দলগুলো থেকে নেয়া যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, যেমন- স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, আইন, পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বণ্টন নিয়েও বক্তব্য রয়েছে রায়ে। বিতর্ক এড়াতে লটারির মাধ্যমে এ মন্ত্রণালয়গুলো বণ্টনের প্রস্তাব দিয়েছেন হাইকোর্ট। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি দ্বাদশ ও এর পরের নির্বাচনগুলোও এ ফর্মুলায় হতে পারে বলে মত দেন হাইকোর্ট।

দ্বিতীয় ফর্মুলা: হাইকোর্টের দ্বিতীয় ফর্মুলায় মূলত উঠে এসেছে সরকারি দল ও বিরোধী দলের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন নিয়ে। এ ফর্মুলা অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দল প্রথম চার বছর দেশ শাসন করবে। পরের এক বছরের জন্য দেশের ক্ষমতা যাবে প্রধান বিরোধী দলের হাতে। তবে প্রধান বিরোধী দলকে দেশ পরিচালনার ভার দেয়া যাবে শুধুমাত্র যদি দলটি সবশেষ নির্বাচনে বিজয়ী দলের চেয়ে কমপক্ষে অর্ধেক ভোট পায়। এরপর প্রথম ফর্মুলা অনুযায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতার নেতৃত্বে গঠিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভা। যদি প্রধান বিরোধী দল ক্ষমতাসীন দলের অর্ধেক ভোটও না পেয়ে থাকে, তবে ৫ বছরই দেশ চালাবে ক্ষমতাসীন দল।

রায়ে হাইকোর্ট আরও বলেন, 'দ্বিতীয় ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধন করতে হবে। তবে প্রথম ফর্মুলার জন্য সংশোধনের প্রয়োজন হবে না।'

উপরের দুটি ফর্মুলা ছাড়া আরও কিছু প্রস্তাব রেখে হাইকোর্ট বলেন, 'একটি মুক্ত, ন্যায্য ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজন রাষ্ট্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেটা সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ পূরণ হওয়ার আগে বা পরে হতে পারে।'

হাইকোর্ট বলেছেন, 'দেশের সব রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো, নির্বাচনের আগে একটি নির্বাচনবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করা ও নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখা। একইভাবে নির্বাচন কমিশনকে তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়া। আদালত নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীসহ যে কোনো মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দেয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন।'

পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট আরও বলেছেন, 'উপরের ফর্মুলাগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর চর্চিত আক্রমণাত্মক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্রের পথে অগ্রসর হওয়ার পথ হতে পারে।'

আদালত রায়ে বলেছেন, 'ভোটাধিকার মৌলিক অধিকার বলে গণ্য নয়। তাই আরপিওর যে ১৯ ধারা অনুসারে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসনে ভোট হলো তা সংবিধানের কোনো ধারার সঙ্গেই সংঘাতপূর্ণ নয়।'

রায়ে বলা হয়েছে, 'যারা নির্বাচন বর্জন করেছে তাদের উচিত ছিলো, তাদের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা। তারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতির পথ নিয়েছে। মসজিদ ধ্বংস করেছে, পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছে।'

এ মামলায় অ্যামিকাস কিউরিয়েদের অন্যতম ছিলেন রফিক উল হক, মাহমুদুল ইসলাম, ড. কামাল হোসেন ও রোকনউদ্দীন মাহমুদ। হাইকোর্ট তাদের সঙ্গে এই মর্মে ঐকমত্য পোষণ করেন যে, নিরপেক্ষ নির্বাচন ছাড়া কেউ কার্যকর গণতন্ত্র ও আইনের শাসন কল্পনা করতে পারে না।

নির্বাচনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) এক নেতা। ২০১৪ সালের ১৯ জুন রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায় দেন বিচারপতি মির্জা হুসেইন হায়দার ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। রায়ে বলা হয়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই।

জাতীয় পার্টির নেতা খন্দকার আবদুস সালাম রিট আবেদনে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা অথবা নির্বাচনকালীন গ্রহণযোগ্য একটি ব্যবস্থা দেয়ার নির্দেশনা চান।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাইকোর্টের রায়ের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বলেন, 'পুরো রায়ের বিষয়ে না জেনে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।'

রিট আবেদনকারীর আইনজীবী হাসান এমএস আজিম এ প্রসঙ্গে বলেন, 'হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তার মক্কেল আপিল বিভাগে আবেদন করবেন কি না, সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় বিশ্লেষণ, সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করার পর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, আমরা রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করবো কি করবো না।

আহসান কামরুল
১৪.০৮.২০১৫ খ্রি.
ঢাকা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৪৮

আহসান কামরুল বলেছেন: লেখাটি পড়ে মন্তব্য করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।

২| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৩:১৪

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: দুই নাম্বার ফর্মুলা ক্যামন জানি গাজাখুরি। কেউ এই কাম হইতে দিবেনা।

১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৫১

আহসান কামরুল বলেছেন: এটা জাস্ট একটা ফর্মূলা। এটার বাস্তবায়ন হবে কী হবে না তা রাজনীতিকদের বিষয়। আমারতো মনে হয়, সরকার এ ফর্মূলাটাই তারা বাস্তবায়ন করবে। কারন, তাদের অর্ধেক ভোট কোনো বিরোধী দল পায়নি!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.