নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আঙ্কল টম\'স কেবিন

২৭ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৪:৫৩

১৮৫২ সালে প্রকাশিত হ্যারিয়েট বিচ্যের স্টওর লেখা দাসপ্রথা বিরোধী উপন্যাস আঙ্কল টম'স কেবিন উত্তরাঞ্চলীয় মুক্ত রাজ্যগুলিতে দাসপ্রথা বিরোধী মনোভাবকে আরও চাঙ্গা করে তুলে। এই উপন্যাসটির সংক্ষিপ্তসার।


এলিজা তার ছেলে সহ পালিয়ে যায়, টমকে বিক্রি করে দেয়া হয়

গল্পের শুরু এই ভাবে, কেন্টাকি রাজ্যের কৃষক আর্থার সেলবির কৃষি খামার দেনার দায়ে বন্ধ হওয়ার পথে। যদিও সে ও তার স্ত্রী, এমিলি সেলবি, বিশ্বাস করে তাদের ক্রীতদাসদের সাথে তাদের সম্পর্ক বেশ হৃদ্যতা পূর্ণ, তবুও কৃষি খামারের পুঁজি সংগ্রহের জন্য আর্থার সিদ্ধান্ত নেয় যে, তাদের দুই জন ক্রীতদাসকে দাস ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রি করে দিবে। একজন আঙ্কল টম ও তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা। আঙ্কল টম একজন মাঝ বয়সী ব্যক্তি। অপরজন হ্যারি, সে এমিলির দাসী এলিজার ছেলে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এমিলি মন:ক্ষুন্ন হয়, কারণ সে তার দাসীকে কথা দিয়ে ছিল কখনই সে তার দাসীর সন্তানদেরকে বিক্রি করবে না। এমিলির ছেলে, জর্জ সেলবিও কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না, টম তাদেরকে ছেড়ে চলে যাবে। কারণ টম ছিল তার বন্ধু ও পরামর্শদাতা।

আর্থার ও এমিলি যখন টম ও হ্যারির বিক্রির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছিলো, এলিজা তা শুনে ফেলে। এলিজা সিদ্ধান্ত নেয়, সে তার ছেলেকে নিয়ে পালিয়ে যাবে। এলিজা পালিয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তটা নিয়েছে এই কারণে যে, তার একমাত্র ছেলেকে সে হারাতে চায় না। এর আগে তার দুইটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই মারা গেছে। ঐ রাতেই এলিজা তার মালিকের বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। অবশ্য যাওয়ার আগে তার কর্ত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে একটা চিঠি লিখে রেখে যায়।

টমকে বিক্রি করে দেয়া হয়। ক্রেতা টমকে তাদের নৌকায় নিয়ে রাখে। নৌকায় করে মিসিসিপি নদী পথে তারা তাদের বাড়িতে যাবে। নৌকায় থাকার সময় ইভা নাম একজন শ্বেতাঙ্গ মেয়ের সাথে টমের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়ে যায়। ইভার আব্বা আগস্টিন সেইন্ট ক্লার দাস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টমকে কিনেছে। টম ও তার পরিবারকে তারা তাদের নিউ অরলিন্সের বাড়িতে নিয়ে যাবে। খৃষ্ট ধর্মের প্রতি উভয়ের গভীর বিশ্বাসের কারণে টম ও ইভা পরস্পরের প্রতি গভীর সম্বন্ধযুক্ত হয়ে পরে।

এলিজার পরিবারকে মালিকে খুঁজছে, সেইন্ট ক্লারের সাথে টমের বসবাস

এলিজা পালিয়ে যাওয়ার পর তার স্বামীর সন্ধান পায়। এলিজার স্বামী জর্জ হ্যারিস আগেই পালিয়ে ছিল। তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, তারা কানাডায় চলে যাবে। টম লকার নামের একজন দাস-শিকারি তাদেরকে অনুসরণ করছিলো। লকার ও তার লোকজন এলিজা ও তার পরিবারকে একটা ফাঁদে আটকে ফেলে। ফাঁদ থেকে বাঁচার জন্য জর্জ লকারের দিকে গুলি ছোঁড়ে। এতে লকার আহত হয়। এলিজা ভয় পেয়ে যায়। তার ধারণা হয় লকার মারা যেতে পারে, তাই সে জর্জকে বুঝিয়ে রাজি করায় লকারকে চিকিৎসার জন্য নিকটস্থ কোয়াকার খ্রিস্টানদের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে।

টমকে সাথে নিয়ে নিউ অরলিন্সে ফিরে সেইন্ট ক্লার তার চাচাতো বোন ওফেলিয়ার সাথে দাসপ্রথা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পরে। ওফেলিয়া উত্তরাঞ্চলীয় বাসিন্দা এবং সে দাসপ্রথা বিরোধী। সে মনে করে দাসপ্রথা কালো মানুষের জন্য ক্ষতিকারক। সেইন্ট ক্লার যদিও দাসের মালিক, তবুও সে মনে করে সে দাসপ্রথার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন মতবাদ দ্বারা প্রভাবিত না। কালোদের সম্পর্কে ওফেলিয়ার ধারণা যে ভুল তা প্রমাণ করার জন্য সেইন্ট ক্লার টোপসি নামের একজন কম বয়স্ক দাস কিনে ওফেলিয়াকে বলে তাকে লেখাপড়া শিখতে।

এদিকে টম সেইন্ট ক্লারের বাসায় বসবাস করছে তা দুই বছর হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ইভা বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ইভা মারা যাওয়ার আগে স্বর্গে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। তার আশেপাশে যারা ছিল, তাদের কাছে সে স্বপ্নের বর্ণনা করে। ইভার মৃত্যু ও তার স্বর্গের বর্ণনা তার আশেপাশের মানুষগুলির চরিত্র বদলে দেয়। ওফেলিয়া প্রতিজ্ঞা করে কালোদের বিরুদ্ধে তার ব্যক্তিগত কোন অসন্তোষ মনে রাখবে না এবং সেইন্ট ক্লার টমের মুক্তির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়।

সিমোন লেগ্রির কাছে টমকে বিক্রি করা হয়

সেইন্ট ক্লার সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিল টমকে সে মুক্ত করে দিবে, কিন্তু এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগেই সে ছুরিকাঘাতে মারা যায়। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী প্রতিজ্ঞা থেকে সরে গিয়ে টমকে সিমোন লেগ্রি নামক এক দুশ্চরিত্র খামারির কাছে বিক্রি করে দেয়। সিমোন লেগ্রি ইমিলিনি নামে আরেকটা দাস ক্রয় করে। সে টম ও এমিলিনি উভয়কে লুইজিয়ানার প্রত্যন্ত গ্রামে তার খামার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তার আরও অনেক দাস-দাসী ছিল।

লেগ্রি টমকে নির্দেশ দেয় তার অপর দাসকে চাবুক মারতে। টম তা অস্বীকার করলে লেগ্রি টমকে ঘৃণা করতে শুরু করে। লেগ্রি টমকে বেদম প্রহার করে এবং বাইবেল পড়তে নিষেধ করে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও টম বাইবেল পড়া অব্যাহত রাখে এবং অনন্যা দাসদেরকে তার পক্ষে যতোটুকু সম্ভব সান্ত্বনা দিতে থাকে। খামারে কাজ করার সময় টম ক্যাসি নামের লেগ্রির আরেকজন দাসের সাথে পরিচিত হয়। ক্যাসির এক ছেলে ও এক মেয়েকে অন্য মালিকের কাছে বিক্রি করে দিলে সে তার ছেলে মেয়ের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই কষ্ট সে কখনই ভুলতে পারেনি। তৃতীয় সন্তানকে বিক্রি করার আগেই মনের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে সে নিজেই তার সন্তানকে হত্যা করে।

টম লকার কোয়াকার খ্রিস্টানদের চিকিৎসা কেন্দ্রে থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসে। কোয়াকারদের সেবাশুশ্রূষা লকারের মনে প্রবর্তন আসে। জর্জ, এলিজা এবং হ্যারি সীমান্ত পার হয়ে কানাডাতে চলে আসায় তারা মুক্ত জীবনযাপন করতে থাকে। এদিকে লুইজিয়ানাতে আঙ্কল টমের জীবন হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে যায়, খামারের কঠিন কাজ ঈশ্বরের প্রতি তার প্রবল বিশ্বাসকে পরীক্ষার সম্মুখীন করে দেয়। কিন্তু তার দুইটা জীবন-দৃষ্টি তাকে আমৃত্যু খৃষ্ট বিশ্বাসের প্রতি অবিচল রাখে - একটা হল যীশু খৃষ্ট অপরটা হল ইভা। সে ক্যাসিকে উৎসাহিত করে ইমিলিনিকে সাথে নিয়ে পালিয়ে যেতে। ক্যাসি ও ইমিলিনি কোথায় গেছে বলতে অস্বীকার করায় লেগ্রি তার কর্মচারীকে নির্দেশ দেয় টমকে হত্যা করতে। টম মারা যাওয়ার সময় কর্মচারীটাকে ক্ষমা করে দেয়। এই কর্মচারীটা শুধুমাত্র তাকে হত্যাই করেনি, সে তাকে বেদম প্রহারও করে ছিল। টম মারা যাওয়ার অল্পক্ষণ পূর্বে আর্থার সেলবির ছেলে জর্জ সেলবি টমের মুক্তি কেনার জন্য হাজির হল, কিন্তু ইতোমধ্যে সব শেষ।

উপন্যাসের সমাপ্তি

ক্যাসি ও ইমিলিনি জর্জ হ্যারিসের বোনের সাথে দেখা করলো। তারা একত্রে কানাডা গেলো। ক্যাসি এলিজাকে চিন্তে পারলো, সে তার মেয়ে। তাকে ছোটবেলায় বিক্রি করে দেয়া হয়ে ছিল। তাদের পরিবার এখন আবার একত্রিত হয়েছে। তারা একত্রে প্রথমে ফ্রান্সে গেল, সেখান থেকে লাইবেরিয়া গেলো। লাইবেরিয়া একটি আফ্রিকান রাষ্ট্র, এটা সৃষ্টি করা হয়ে ছিল আমেরিকার মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের বসবাস করার জন্য। জর্জ সেলবি কেন্টাকিতে ফিরে তার সব দাসদেরকে মুক্ত করে দিলো। জর্জ মুক্ত দাসদেরকে বলল, মনে রাখবে টমের আত্মত্যাগের কথা এবং খৃষ্ট ধর্মের প্রতি তার অবিচল বিশ্বাসের কথা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:০০

আলী প্রাণ বলেছেন: +

২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪

অগ্নি সারথি বলেছেন: পড়া হয় নাই। রিভিউ ভাল হয়েছে। ++

৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার।







ভালো থাকবেন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

৪| ৩০ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:৩৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আমার অন্যতম প্রিয় উপন্যাস। স্যার এ্যালেক্স হ্যালীর 'রুটস' উপন্যাসটিও একই ঘরানার, যা আমার আর একটি প্রিয় উপন্যাস।


সুন্দর রিভিউয়ের জন্য ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ আলী আকন্দ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.