নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখনও বলার তেমন কিছু হয়ে উঠেনি। যা বলার ব্লগর ব্লগর করতে গিয়েই বলব ইনশা আল্লাহ।

আকদেনিজ

আমি মানুষ হতে চেয়েছিলাম।

আকদেনিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

হায়দ্রাবাদ, সিকিমের আদলেই বাংলাদেশ নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে ভারত

২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:২২



“ভারত অবশ্যম্ভাবীভাবে তার আধিপত্য বিস্তার করবে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত হবে সব রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র। ছোট জাতিরাষ্ট্রগুলোর সর্বনাশ ঘটবে। তার সাংস্কৃতিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে থাকবে, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন থাকবে না।”


অখন্ড ভারতের স্বপ্নদ্রষ্টা পন্ডিত জওহরলাল নেহেরু

মোটামুটি এটাই ছিল ভারতের স্বাধীনতার অন্যতম স্তম্ভ পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর বহুল প্রচলিত ‘ইন্ডিয়া ডকট্রিন’, যা নেহেরু ডকট্রিন নামেও পরিচিত। ১৯৪৭ সালে প্রকাশিত তার ‘ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া’ বইয়ে এর প্রথম আভাস পাওয়া যায়। মূলত ‘অখন্ড ভারত’ ধারণা থেকেই এর উদ্ভব, এবং একে একে কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ, সিকিম এবং নেপালের মাওবাদ, শ্রীলংকার তামিল টাইগার বিদ্রোহ এবং সর্বোপরি ১৯৭১ এর যুদ্ধ এবং তার পর থেকে বাংলাদেশে অযাচিত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে ইন্ডিয়া ডকট্রিন তার স্বরূপ উন্মোচন করছে সবার সামনে; খুব সাম্প্রতিক নেপালের তরাই অঞ্চলের গণভোট এবং এর পরবর্তী জ্বালানী অবরোধও এর বাইরে নয়। প্রাচীণ ভারতবর্ষের মহামতি সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের প্রধাণ অমাত্য কৌটিল্য, যিনি চানক্য নামেই সুপরিচিত, তার একটি শিক্ষা ছিল – “ক্ষমতা অর্জনের লোভ ও অন্য দেশ বিজয়ের আকাঙ্ক্ষা কখনও মন থেকে মুছে ফেল না। সব সীমান্তবর্তী রাজাকে শত্রু বলে মনে করবে।”
হাজার বছর পর এসেও কি এই মূলনীতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত ?
হায়দ্রাবাদ, নিজাম ও আগ্রাসী ভারত
ভারতের দক্ষিনাংশে মুসলমান অধ্যুষিত এক রাজ্যের নাম হায়দ্রাবাদ। সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ১৭২১ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সুবাদার কামারুদ্দীন খান হায়দ্রাবাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং নিজাম-উল-মূলক উপাধি নিয়ে হায়দ্রাবাদ রাজ্য শাসন করতে থাকেন। মজার ব্যাপার হলো,পার্শ্ববর্তী মহীশূরের সুলতান হায়দার আলী এবং তার পুত্র টিপু সুলতান যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন,তখন হায়দ্রাবাদের তৎকালীন নিজাম নির্লজ্জভাবে ব্রিটিশের পক্ষাবলম্বন করেন। কিন্তু এই নতজানু নীতি তাদের বাঁচাতে পারেনি।

হায়দ্রাবাদের নিজাম উল মূলক

১৯৪৭ সালে ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা পাবার পর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ভারত হায়দ্রাবাদে নানা রকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করলেও সর্বশেষ নিজাম তা শক্ত হাতে দমন করেন। এরপর ১৯৪৮ সালের জুলাই মাসে জওহরলাল নেহেরু ঘোষণা করলেন,‘যখন প্রয়োজন মনে করবো তখন হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করা হবে।’এক পর্যায়ে ভারত বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে,যার অংশ হিসেবে হায়দ্রাবাদের অভ্যন্তরে কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় করা হয়,হায়দ্রাবাদের রাজনীতিকে কলুষিত করা হয়। শিক্ষাঙ্গন,সাংস্কৃতিক জগৎ,বুদ্ধিজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুগত লোক তৈরি করা হয়,সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অনুগত দালাল সৃষ্টি করা হয় এবং হিন্দু মৌলবাদীদের দিয়ে নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উস্কে দেয়া হয়। কংগ্রেসের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু মহাসভা,আরএসএস ও আর্যসমাজ এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ১৯৪৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তেলেঙ্গনায় কম্যুনিস্ট বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে ‘অপারেশন পোলো’ নামে ভারতীয় সৈন্যবাহিনী হায়দ্রাবাদে আক্রমণ চালায়। সর্বগ্রাসী এ আক্রমণ শুরুর আগেই স্বাধীন হায়দ্রাবাদের সেনাপ্রধান আল ইদরুসকে কিনে নিয়েছিল ভারত। আল ইদরুস দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্তগুলো অরক্ষিত রেখেছিল, সেনাবাহিনীকে রেখেছিল অপ্রস্তুত অবস্থায়। এরপর ভারত সেনাপ্রধানের সহায়তায় হায়দ্রাবাদে তার বিপুল সেনাশক্তি,পদাতিক বাহিনী ও বিমান বাহিনী সহকারে শুরু করলো সামরিক আক্রমণ। প্রথমে ট্যাংক এবং এরপর বিমান আক্রমণে বিপর্যস্ত মানুষের ওপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাথে একাত্ব হয়ে আর্যসমাজ ও অন্যান্য হিন্দু মৌলবাদী সংগঠনগুলো হায়দ্রাবাদে প্রায় দুই লাখ মুসলিমদের উপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ভারতীয় সৈন্যবাহিনী মুসলিম নিরীহ নারী-পুরুষ,শিশুদের হত্যা করেছে,বিমান হামলায় শহর বন্দর গ্রাম গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং মসজিদ,মাদ্রাসা ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। তাদের এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর একটি মাত্র উদ্দেশ্যে তা হচ্ছে হায়দ্রাবাদের শেষ নিজামকে ক্ষমতাচ্যুত করা। অনেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতীয় বাহিনী রাজধানীর দিকে ধাবিত হয় এবং হায়দ্রাবাদ ভারতের দখলে পরিণত হয়। এরপর হায়দ্রাবাদ ভারতের পদানত রাজ্যে পরিণত হওয়ার পর একে অন্ধ্র,কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র এই তিন রাজ্যে বিভক্ত করা হয়।

অখন্ড ভারত

এ বিষয়ে লোকসভার হিন্দু সদস্য পণ্ডিত সুন্দরলালের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে অন্য ঘটনা প্রকাশ পায়। এ প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় অভিযানের সময় ভারতীয় বাহিনী নির্বিচার হত্যা,লুণ্ঠন,অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধ করেছে। অভিযানকালে বেসামরিক নাগরিকদের তেমন মৃত্যু হয়নি বলে সরকারীভাবে দাবী করা হলেও তদন্ত প্রতিবেদনে প্রায় ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়,যাদের অনেককেই লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারে ভারতীয় সেনারা। সরকারি ওই তদন্ত প্রতিবেদন কোনোদিন প্রকাশ করা হয়নি। খুব অল্পসংখ্যক ভারতীয় নাগরিকই এ গণহত্যার কথা জানেন।
সিকিম, চোগিয়াল ও কৌশলী ভারত
সিকিম ভারতের উত্তরাংশে অবস্থিত তিব্বতের পাশের একটি রাজ্য। রাজ্যটির স্বাধীন রাজাদের বলা হত চোগিয়াল। ভারতে বৃটিশ শাসন শুরুর পুর্বে সিকিম তার পার্শ্ববর্তী নেপাল আর ভুটানের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। বৃটিশরা আসার পর তাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নেপালের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় সিকিম। এসময় রাজা ছিলেন নামগয়াল। কিন্তু বৃটিশরা তিব্বতে যাওয়ার জন্য এক সময় সিকিম দখল করে নেয় এবং ১৮৮৮ সালে রাজা নামগয়াল আলোচনার জন্য কলকাতা গেলে তাঁকে বন্দী করা হয়। পরবর্তী সময়ে ১৮৯২ সালে তাকে মুক্তি দেয়া হয় এবং সিকিমের স্বাধীনতাকে মেনে নেয়া হয়। এরপর তার পুত্র টুলকু নামগয়াল ক্ষমতায় বসে সিকিমের ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। এসময় বৃটিশের কাছে সিকিম তার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা লাভ করে। পরবর্তী চোগিয়াল থাসী নামগয়ালের সময়ে বৃটিশরা ভারত ছেড়ে গেলে গণভোটে সিকিমের মানুষ ভারতের বিরুদ্ধে রায় দেয় এবং ভারতের পন্ডিত নেহরু সিকিমকে স্বাধীন রাজ্য হিসেবে মেনে নিতে বাধ্য হন। ১৯৬২ সালের ভারত – চীন যুদ্ধের পর কৌশলগত কারণে সিকিমের গুরুত্ব বেড়ে যায়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সর্বশক্তি নিয়োগ করেন সিকিমকে দখল করার জন্য। তিনি কাজে লাগান সিকিমের প্রধানমন্ত্রী লেন্দুপ দর্জিকে।

লেন্দুপ দর্জি – সিকিম এর মীরজাফর

মূলত চীন সীমান্তে ৩টি স্বাধীন রাষ্ট্র (নেপাল, ভুটান ও সিকিম) নয়াদিল্লির জন্য অস্বস্তিকর ছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও ১৯৭৪ সালে ভারতের পারমাণবিক বোমার সফল বিস্ফোরণ ইন্দিরা গান্ধীর আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। কংগ্রেস নেত্রী নয়াদিল্লিতে তার ক্ষমতাকে সুসংহত করেন এবং এরপর সিকিমের ওপর তার নজর পড়ে। নয়াদিল্লি উদ্বিগ্ন ছিল সিকিমের স্বাধীন সত্তার বিকাশ নিয়ে। ভুটানের পথ ধরে সিকিম যদি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে জাতিসঙ্ঘের সদস্যপদ লাভ করে ফেলত,তাহলে তা হতো নয়াদিল্লির পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে বড় রকম বাধা। তাই দ্রুত কার্যোদ্ধারের জন্য তারা অগ্রসর হতে থাকে।

ভারতীয় কর্মকর্তার উপস্থিতিতে রাজতন্ত্রের বিলোপ সাধন করছেন সর্বশেষ চোগিয়াল


চোগিয়ালের কাছ থেকে ক্ষমতা বুঝে নিচ্ছেন প্রধাণমন্ত্রী লেন্দুপ দর্জি

১৯৭০ সাল থেকেই নেহেরু প্রভাবিত সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেসকে লেন্দুপ দর্জি ব্যবহার করে অরাজকতা সৃষ্টি করেন। রাজপ্রাসাদের সামনে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়লে ইন্দিরা সরকার রাজার নিরাপত্তার কথা বলে ভারতীয় বাহিনী পাঠায়। কিন্তু তারা মূলত রাজাকে গৃহবন্দী করেন, বহির্বিশ্বের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং বি এস দাশকে ভারত সরকার সিকিমের প্রধান প্রশাসক নিয়োগ করে। এই সময় এক মার্কিন পর্বতারোহী গোপনে সিকিম প্রবেশ করেন এবং সিকিমের স্বাধীনতা হরণের খবর বিশ্বের নিকট তুলে ধরেন। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে যায়। সিকিম জাতিসংঘের সদস্যপদভুক্তিরও প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর মধ্যে ভারতের তাঁবেদার লেন্দুপ দর্জির নেতৃত্বাধীন সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস (এসএনসি) ১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পার্লামেন্টের ৩২ আসনের মধ্যে ৩১টি আসনে জয়লাভ করে। নির্বাচনে জিতে ২৭ মার্চ ১৯৭৫ প্রথম ক্যাবিনেট মিটিং এ প্রধানমন্ত্রী লেন্দুপ দর্জি রাজতন্ত্র বিলোপ ও জনমত যাচাইয়ে গণভোটের সিদ্ধান্ত নেন। ততদিনে সিকিমে ভারতীয় সেনাবাহিনী ঘাঁটি গেড়ে ফেলেছে। তারা বন্দুকের মুখে ভোটারদের ‘হ্যাঁ’ভোট দিতে বাধ্য করে। পুরো ঘটনাই ছিল সাজানো। ৬ এপ্রিল ১৯৭৫ সালের সকালে সিকিমের রাজা যখন নাস্তা করতে ব্যস্ত সে সময় ভারতীয় সৈন্যরা রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করে এবং রাজাকে বন্দী করে প্রাসাদ দখল করে নেয়। তারা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রকে গ্রাস করে ভারতের প্রদেশে পরিণত করে। সিকিম সেনাবাহিনীকে সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। সাংবাদিক সুধীর শর্মা নেপালের কান্তিপুর পত্রিকায় ‘পেইন অব লুজিং এ নেশন‘(একটি জাতির হারিয়ে যাওয়ার বেদনা) নামে ২০০৭ সালের একটি প্রতিবেদনে জানান,ভারত তার স্বাধীনতার গোড়া থেকেই সিকিম দখলের পরিকল্পনা করেছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু অনেকের সাথে কথোপকথনে তার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সাবেক পরিচালক অশোক রায়না তার বই ‘ইনসাইড স্টোরী অব ইন্ডিয়াস সিক্রেট সার্ভিস’-এ সিকিম সম্পর্কে লিখেন, ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১৯৭১ সালেই সিকিম দখল করে নেয়া হবে। সে লক্ষ্যে সিকিমে প্রয়োজনীয় অবস্থা সৃষ্টির জন্য আন্দোলন, হত্যা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছিল। তারা ছোট ছোট ইস্যুকে বড় করার চেষ্টা করে এবং সফল হয়। তার মধ্যে হিন্দু – নেপালী ইস্যু অন্যতম। ‘র’ দুই বছর সময় নেয় সিকিমে একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির জন্য। এ ক্ষেত্রে নেপালী বংশোদ্ভূত হিন্দু ধর্মাবলম্বী সিকিমি নাগরিকদের ক্ষোভকে ব্যবহার করা হয়। তাদের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ ছিল, সিকিমের বৌদ্ধ রাজা স্থানীয় নেপালী হিন্দু প্রজাদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। সাংবাদিক সুধীর শর্মা লিখেন, লেন্দুপ দর্জি নিজেই তাকে বলেছেন,‘ভারতের ইনটেলিজেন্স ব্যুরোর লোকেরা বছরে দু’তিনবার তার সাথে দেখা করে পরামর্শ দিত কিভাবে আন্দোলন পরিচালনা করা যাবে। তাদের একজন এজেন্ট তেজপাল সেন ব্যক্তিগতভাবে তাকে অর্থ দিয়ে যেতো এ আন্দোলন পরিচালনার জন্য। এ অর্থ দিয়ে রাজনৈতিক সন্ত্রাস পরিচালিত হতো।’
শর্মা আরো লিখেছেন, এই ‘সিকিম মিশনের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা, যা সর্বত্র ‘র’নামে পরিচিত। সিকিমের চোগিয়ালের তৎকালীন এডিসি ক্যাপ্টেন সোনাম ইয়াংজু লিখেছেন, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যরা বেসামরিক পোশাকে রাজার বিরুদ্ধে গ্যাংটকের রাস্তায় মিছিল,আন্দোলন ও সন্ত্রাস করত। নেহেরুর পরামর্শ,মদদ ও উৎসাহে সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস গঠন করেছিলেন লেন্দুপ দর্জি। শ্লোগান তুলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে,চলবে’। লেন্দুপ দর্জির গণতন্ত্রের শ্লোগান শুনে সিকিমের সাধারণ জনগণ ভাবতেই পারেনি,এই শ্লোগানের পিছনে প্রতিবেশী দেশ একটি জাতির স্বাধীনতা হরণ করতে আসছে। সিকিমের জনগণকে দ্বিধাবিভক্ত করে ভারত তার আগ্রাসন সফল করতে এবং এক পক্ষকে ক্ষমতায় এনে তাদের দ্বারা দেশ বিক্রির প্রস্তাব তুলে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছিল।

লেন্দুপ দর্জি ও তার বিদেশীনি স্ত্রী

ভারতীয় আধিপত্যবাদের সেবাদাস লেন্দুপ দর্জিকে ২০০২ সালে ভারত ‘পদ্মবিভূষণ’ খেতাবে ভূষিত করে। সিকিমের রাজ্য সরকার ২০০৪ সালে তাকে ‘সিকিমরত্ন’ উপাধি দেয়। তবে মাতৃভূমির স্বাধীনতা ভারতের হাতে তুলে দেয়ার জন্য তিনি এক অভিশপ্ত জীবন বয়ে বেড়িয়েছেন। সিকিমে তার ঠাঁই হয়নি। রাজনীতি থেকে তাকে বিদায় করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের নিজ শহর কালিম্পং এ নিঃসঙ্গ, নিন্দিত ও ভীতসন্ত্রস্ত্র এক জীবনযাপন শেষে ২০০৭ সালের ৩০ জুলাই লেন্দুপ দর্জি মারা যান। তার বয়স হয়েছিলো ১০৩ বছর।
বাংলাদেশ এবং ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ ভারত
আজকে এসে এই ধরনের সামরিক বা রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ যে কোন দেশের জন্যেই বেশ কঠিন। তাই এখন চলছে সফট পাওয়ারের খেলা।
যে কোন বড় দেশই আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রথমে ছোট দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গের মগজগুলো কিনে নেয়। বিভিন্ন আঙ্গিকে এবং মাত্রায় বাংলাদেশে এর প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি সহজেই। আমাদের দেশের মধ্য দিয়ে অবমাননাকর এবং ব্যবসায়িকভাবে অত্যন্ত লোকসান দিয়ে করিডোর সুবিধা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেশী দেশটিকে। দেশের শিল্প এবং বাণিজ্যের ক্ষেত্রে একচেটিয়া আধিপত্য এবং ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যঘাটতি, এর পাশাপাশি সীমান্ত চৌকির সংখ্যা বৃদ্ধি, কাটাতারের বিদ্যুতায়িত বেড়া এবং ক্রমবৃদ্ধিমান হত্যাকান্ড বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক মানুষকে ক্রমশই সন্দিহান ও ভীত করে তুলছে। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত সীমান্ত আউট পোস্টগুলোর (বিওপি) একটি থেকে আরেকটির দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার থেকে হ্রাস করে ৪/৫ কিলোমিটারে নিয়ে আসা হচ্ছে এবং এগুলোতে বিএসএফ-এর শক্তি দ্বিগুণ করা হচ্ছে। এই সীমান্তে থার্মাল নাইটভিশন ডিভাইস, টেলিস্কোপিক বন্দুকসহ উচ্চমানের হাতিয়ার মোতায়েন রেখেছে। যদিও ১৯৭৪ সালের ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোন প্রতিরক্ষা কাঠামো নির্মাণ করা নিষিদ্ধ, তবুও ভারত তা করেই চলেছে। টিপাইমুখসহ উজানের নদীগুলোর পানি নিয়ে প্রভুত্ব সেই স্বাধীনতার অর থেকেই চলছে। এর পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক ছাপানো থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব ভারতীয় নাগরিক এবং প্রতিষ্ঠানের হাতে ন্যস্ত করা হচ্ছে। বিগত বছরগুলোতে গার্মেন্টস শিল্প ষড়যন্ত্রমূলক নাশকতা হোক আর যে ভাবেই হোক, এক এক করে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে চলে যাচ্ছে বড় বড় ফ্যাক্টরীর মালিকানা।
এর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের কথা বলাই বাহুল্য। এ কথা আজ সবাই জানেন যে, বাংলাদেশের কোন টিভি চ্যানেলকে ভারতে প্রচারিত হতে দেওয়া হয় না, অথচ আমাদের বিনোদন জগতের প্রায় সকল চ্যানেলগুলোই ভারত নিয়ন্ত্রিত; পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের চলচ্চিত্র আমদানীর নামে আমাদের দেশের দর্শকের এক বিশাল বাজারকে তুলে দেওয়া হয়েছে ভারতের হাতে, যা ধীরে ধীরে দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পকে মৃত্যুর দুয়ারে টেনে নিয়ে যাবে। আর হালের ট্রেন্ড হিসেবে শুরু হয়েহে ‘যৌথ প্রযোজনা’র বাংলা ছবি, যেখানে কলকাতার হিট অভিনেতা-অভিনেত্রীরা নাকি কাঁদুনি গাইতে থাকেন এই দেশের তাদের পিতৃপুরুষের শেকড়বাকড় সম্পর্কে, ছবি বেচার জন্য আবেগ ব্যবহারের কোন কমতি নেই।
রাজনৈতিক ভাবেও আমরা এর আগে দেখেছি বাংলাদেশের সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এর অযাচিত হস্তক্ষেপ, যা কোন ধরণের কূটনৈতিক শিষ্টাচারের ধারে কাছেও আসে না। (প্রসঙ্গত উল্ল্যেখ করা যেতে পারে, সুজাতা সিং এর বাবা টিভি রাজ্যেশ্বর ছিলেন সত্তরের দশকে ভারতের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধাণ, এবং সিকিমকে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করবার প্রধাণতম আর্কিটেক্ট; এর পুরস্কার স্বরূপ সিকিম রাজ্যের প্রথম গভর্নর হিসেবে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।) খুব সাম্প্রতিক সময়ের বাংলাদশ ব্যাংকের অর্থ জালিয়াতির ঘটনায় আবার বেরিয়ে এসেছে কিভাবে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুইফট কোড নিয়ন্ত্রণ করা হয় ভারত থেকে, কিভাবে হাজার কোটী টাকা লোপাট হবার পরও তারা স্বচ্ছন্দে এ তদন্তে অংশ নেবার আহবান এড়িয়ে যান। আমাদেরকে অবশ্য শোনানো হচ্ছে হ্যাকারের গল্প, অথচ রয়টার্সের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কিভাবে ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়েই লোপাট হয়েছে এই টাকা। সামগ্রিকভাবে, এ সব কিছুই সম্ভব হচ্ছে বাংলাদেশের বর্তমান ভারতমুখী নীতির কারণে। দেশের সামরিক, গোয়েন্দা এবং নিরাপত্তা রক্ষার মত স্পর্শকাতর দফতরগুলোতে ভারতীয় হস্তক্ষেপ এবং সরাসরি অংশগ্রহণ এখন গুজব হিসেবে ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে।
অবশ্য, জাতি হিসেবে আমরা খুবই আবেগী। তাই, ক্রিকেট দিয়েই আপাতত আমাদের ঠান্ডা রাখা যাচ্ছে। আমাদের ক্রিকেটাররাই এখন আমাদের জাতীয় বীর, তাদের এবং ক্রিকেট ম্যাচগুলোকে ঘিরে যে ‘ভারতীয় চক্রান্ত’গুলো আমরা দেখতে পাই, দেশের আপামত জনসাধারণ তাতেই হুমড়ী খেয়ে পড়েন, ঘন্টার পর ঘন্টা শ্রম-সময়-চিন্তা ব্যয় করেন। আমাদের যাবতীয় অপ্রেশনের প্রতিশোধ আমরা খেলার মাঠে নিয়ে নিতে চাই। স্রেফ এই খেলা নিয়ে কিভাবে অদ্ভুত এবং অসুস্থ এক উগ্র-জাতীয়তাবাদী মানস গড়ে উঠছে ধীরে ধীরে, সেটা ভেবে দেখবার বিষয়। নিও-ঔপনিবেশিক শক্তিগুলোর যাবতীয় অন্যায় অবিচারকে ‘গ্রান্টেড’ হিসেবে মেনে নিয়ে খেলার মাঠে সবকিছুর প্রতিশোধ নেবার মানসিকতা আসলে সামগ্রিকভাবে আমাদেরকে পঙ্গুত্বের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এখন, বাংলাদেশকে যদি আক্রমণাত্মক এই নেহরু ডকট্রিনের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে হয় তবে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট থাকতে হবে, যেখানে পড়ানো হবে ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি, ধর্ম ও রাজনীতি। আমাদের স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরবার জন্য নতুন প্রজন্মের সকলকে বাংলাদেশের কমপক্ষে দুশো বছরের ইতিহাস জানা প্রয়োজন, ব্রিটিশ-বিরোধী সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত। ক্রিকেটের রান এবং ম্যাচের স্ট্যাটিস্টিক্স জানার পাশাপাশি আমাদের সাথে ব্রিটিশ, পাকিস্তানী শোষণে বৈষম্যের অর্থনীতি এবং আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান রাখা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ এবং ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আমাদের যে জ্ঞান এবং আবেগ রয়েছে, এর পরবর্তী বাংলাদেশের সামরিক স্বৈরাচার, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা এবং এর উত্থান-পতন সম্পর্কে চিন্তাভাবনা ততটাই কম। ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগকে সমর্থন করে পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু আস্থার সঙ্গে সহকর্মীদের বলেছিলেন, পশ্চিম পাকিস্তান স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে টিকলেও টিকতে পারে, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) টেকার কোনো সম্ভাবনা নেই। নেহেরু ধারণা করেছিলেন,পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতা এবং দুই প্রদেশের জনগণের সাংস্কৃতিক ভিন্নতার কারণে এক সময়ের পূর্ববঙ্গ বাংলা ভাষাভাষী পশ্চিমবঙ্গের মাঝে মিলিত হয়ে বৃহৎ ভারতে লীন হয়ে যাবে।
বাইশ গজের পিচ আর বৃত্তাকার ঐ খেলার মাঠের বাইরেও বাংলাদেশ আছে, লাল-সবুজের পতাকাটা সেখানে উঁচু করে তুলে ধরাটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নেকু-পুষু-মুণু ইয়ুথ অ্যাকটিভিজম এবং পৃথিবী কাঁপানো লিডারশিপ স্কিলওয়ালা স্মার্ট জেনারেশন এই দেশে এবং সমাজে সত্যিকারের পরিবর্তন আনবার মূল প্রভাবকগুলো যত দ্রুত চিনতে পারবে এবং যত ভালোভাবে বুঝবে, ততই মঙ্গল।

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি হতাশায় ভুগছেন, বিয়ে করে ফেলুন।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৪২

আকদেনিজ বলেছেন:
তিন নাম্বার মন্তব্যে সহ-ব্লগার মাহিরাহি বলেছেন, "যে কোন বড় দেশই আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রথমে ছোট দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, ব্লগ লেখক (চাঁদগাজী) কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গের মগজগুলো কিনে নেয়"। (সহমত)

ভাল পরামর্শ। বাংলাদেশে ব্যাচেলরদের যা অবস্থা, বিয়ে ছাড়া কোন গতি দেখছি না।

২| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫০

আব্দুল্লাহ্ আল আসিফ বলেছেন: বাংলাদেশ দখলের মত এত বড় গাধামি ভারত করবে না। এই প্রচেষ্টা তাদের নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার মত হবে ।

ভবিষ্যতের সুপার পাওয়ার ভারত চীনের মত দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে যাচ্ছে। ভারতের বাংলাদেশ আক্রমণ চিনদের মত দেশের জন্য একটি বড় ইস্যু হবে ভারতকে পঙ্গু করার। তাছাড়া এক্ষেত্রে পাকিস্তান ও প্রতিশোধের নেশায় বাংলাদেশের পক্ষ নেবে।

বাংলাদেশ আক্রমণ শেষমেশ ভারতেরই কাল হয়ে দাঁড়াবে।


বাংলার রাজনীতি ও অর্থনীতিরর নিয়ন্ত্রণ নিয়েই ভারত বেশি লাভবান হবে। এই চেষ্টা তো বজায়-ই।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:৫৭

আকদেনিজ বলেছেন: মারও তাই ধারণা, বাংলাদেশ দখলের মত এত বড় গাধামি ভারত করবে না।
তবে আশঙ্কা হচ্ছে সিকিমের মীরজাফর লেন্দুপ দর্জির মত এদেশের মীরজাফরদের কে নিয়ে। দেখতেই পাচ্ছেন তারা ভারতের যে পরিমাণে দালালি করছে তাতে আর দখল করার দরকার পড়বে না। সিকিম কিন্তু সেনা অভিযানে দখল করেনি। রাজনীতিবিদরা ডিসিশন নিয়ে ভারতের কাছে নিজেদের অস্তিত্ব বিলিন করে দিয়েছে। ভারতের পা-চাটা দালাল রাজনীতিবিদ, কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী এদেশে অভাব আছে?

৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

মাহিরাহি বলেছেন: যে কোন বড় দেশই আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রথমে ছোট দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, ব্লগ লেখক (চাঁদগাজী) কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গের মগজগুলো কিনে নেয়।

কৌতুক হিসাবে নিয়েন।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:১২

আকদেনিজ বলেছেন: একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যেমন গঠন করা হয়েছে তেমনি ভাবে ভারতীয় দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করতে হবে। এবং এইসব ভারতীয় পা-চাটা দালাল কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, ব্লগ লেখক, কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গকে বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে হবে।

৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:০৪

আহলান বলেছেন: ভারত তার নীতিতে ঠিক আছে, নিজেরা আমরা আমাদের নীতিতে ঠিক আছি কিনা সেটাই ভাব্বার বিষয়!

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২২

আকদেনিজ বলেছেন: ভারত তার নীতিতে ঠিক আছে, নিজেরা আমরা আমাদের নীতিতে ঠিক আছি কিনা সেটাই ভাব্বার বিষয়! সহমত।

বাংলাদেশকে যদি আক্রমণাত্মক এই নেহরু ডকট্রিনের বিরুদ্ধে টিকে থাকতে হয় তবে বাংলাদেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান রিসার্চ ইনস্টিটিউট থাকতে হবে, যেখানে পড়ানো হবে ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি, ধর্ম ও রাজনীতি। আমাদের স্বাতন্ত্র্য তুলে ধরবার জন্য নতুন প্রজন্মের সকলকে বাংলাদেশের কমপক্ষে দুশো বছরের ইতিহাস জানা প্রয়োজন, ব্রিটিশ-বিরোধী সিপাহী বিদ্রোহ থেকে শুরু করে আজকের দিন পর্যন্ত।
আলাদা জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নীতি নির্ধারণ করতে হবে।

৫| ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩১

নাজমুস সাকিব অর্ক বলেছেন: সিকিমের ছিলো লেলুপ দর্জি, আমাদের আছে হাছিনা B-)

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৩

আকদেনিজ বলেছেন: আশার বিষয় হল নতুন প্রজন্ম ইতিহাস থেকে সিকিমের লেলুপ দর্জি সম্পর্কে পড়ে বাংলাদেশে লেন্দুপ দর্জির ভূমিকা পালনকারী ভারতীয় পা-চাটা দালাল কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, ব্লগ লেখক, কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গকে চিনতে শুরু করেছে। ভারতীয় দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে এই দালাল চক্রকে বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে হবে।

৬| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:১৬

চন্দ্রদ্বীপবাসী বলেছেন: সুন্দর সুন্দর..ভূ-রাজনীতি, কূটনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি আমাদের সত্যিই শেখা দরকার

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৩৭

আকদেনিজ বলেছেন: ভূ-রাজনীতি, কূটনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইত্যাদি সম্পর্কে জানলে এবং যদি কোন জাতি তার নিজস্ব সংস্কৃতিকে লালন না অন্য কোন জাতির সংস্কৃতি অনুকরণ করে, তাহলে সে জাতি আত্মপরিচয়হীন অথর্ব এক জাতিতে পরিণত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

৭| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১২:২৩

লোনার বলেছেন: ১৯৬০-এর দশকে মৃত্যুবরণ করা একজন আলজেরিয়ান স্কলার বলেছিলেন যে, কোন জাতি উপনিবেশে পরিণত হতে হলে তার ভিতর কিছু গুণ বা বৈশিষ্ট থাকতে হবে - তিনি সেই সব বৈশিষ্টকে একত্রে বলেছিলেন colonizability। তিনি বলেছিলেন যে, পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তি আমাদের (মুসলিম বিশ্বকে) সহজে উপনিবেশে পরিণত করতে পেরেছিল, কারণ আমরা ছিলাম colonizable। আজ আবার ভাববার সময় এসেছে, জাতি হিসাবে আমরা সহজে colonizable কিনা।

আরো একটা কথা ভাববার রয়েছে: আমাদের মস্তিষ্কগুলো কি ইতোমধ্যে colonized? আমরা যেভাবে বিদেশী বিনোদন সামগ্রী গিলে থাকি, তাতে এই সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দেয়া যায় না - অথচ এটাই হচ্ছে colonization-এর শেষ frontier, যেমনটা নীচে বলা হয়েছে:

Imagination is the one human frontier that has not been totally colonized, and fiction is the tool that can accomplish this goal. The novel is one of the most powerful instruments for the colonization of imagination. [Postmodernism and the other - Ziauddin Sardar].

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:৪৭

আকদেনিজ বলেছেন: আমাদের মস্তিষ্কগুলো কি ইতোমধ্যে colonized? খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এবং আতঙ্কিত করার মত প্রশ্নও বটে। এই প্রশ্নের উত্তরে কোন জাতির সামগ্রিক অবস্থা যদি হ্যাঁ হয়ে থাকে সেই জাতি বা দেশ কে দখল করার কোন প্রয়োজন নেই। হয় নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে একটি অথর্ব জাতিতে পরিণত হবে নতুবা সিকিমের মত ঘোষণা দিয়ে বিলীন হয়ে যাবে।

৮| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৩৫

ঢাকাবাসী বলেছেন: আজকাল জিয়োগ্রাফিক দখলের প্রয়োজন নেই ইকনমিকটাই দরকার এবং তাই করা হয়।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩

আকদেনিজ বলেছেন: এবং একেই বলা হয় নব্য উপনিবেশবাদ।

৯| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৩৮

আততায়ী আলতাইয়ার বলেছেন: যে কোন বড় দেশই আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রথমে ছোট দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী,কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গের মগজগুলো কিনে নেয়।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৬

আকদেনিজ বলেছেন: ইতোমধ্যে কেনা হয়ে গেছে।

১০| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:২৪

আততায়ী আলতাইয়ার বলেছেন: ফ্রি ফ্রি ভোগ করা যায় এমন নারীকে কেউ লাখ টাকা দেনমোহর দিয়ে বিয়া করে না, তেমনি বুলেট বোমার পিছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভারত কখনো বাংলাদেশ দখল করার প্রয়োজন বোধ করবে না কারন বাংলাদেশ কে তারা ফাও ভোগ করছে

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২

আকদেনিজ বলেছেন: এইভাবে চলতে থাকলে হয় নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে একটি অথর্ব জাতিতে পরিণত হবে নতুবা সিকিমের মত ঘোষণা দিয়ে বিলীন হয়ে যাবে। এই দুয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

১১| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৪:২৭

মিঃ অলিম্পিক বলেছেন: যে কোন বড় দেশই
আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে প্রথমে
ছোট দেশের কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক,
ব্যবসায়ী, ব্লগ লেখক (চাঁদগাজী)
কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী
ব্যক্তিবর্গের মগজগুলো কিনে নেয়।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

আকদেনিজ বলেছেন: আশার বিষয় হল নতুন প্রজন্ম ইতিহাস থেকে সিকিমের লেলুপ দর্জি সম্পর্কে পড়ে বাংলাদেশে লেন্দুপ দর্জির ভূমিকা পালনকারী ভারতীয় পা-চাটা দালাল কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদ, ব্লগ লেখক, কূটনীতিক পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যক্তিবর্গকে চিনতে শুরু করেছে। ভারতীয় দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে এই দালাল চক্রকে বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে হবে।

১২| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

হাবিবুর রাহমান বাদল বলেছেন: এ সময়ে দেশ দখল না করে তার ইকনমি/বাজার দখল হয়, সেই দেশে দালাল সৃস্টি করা হয় এবং ভারত তাই করছে।এদেশে ভারতীয় পা-চাটা দালাল কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, ব্লগ লেখক, কূটনীতিক সৃস্টি করা হয়েছে। একতরফা ভারতকে সকল সুবিধা দেয়ায় এ কথারচোট প্রমান মেলে। আার ভারত কখনো প্রকৃত বন্দুর মত তার প্রতিবেশীদের সাথে আচরন করেনি। এটা প্রমাণিত।

৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৭

আকদেনিজ বলেছেন: নব্য উপনিবেশবাদ হল, অর্থনৈতিকভাবে দেশ দখল না করে তার ইকনমি/বাজার দখল হয়, দেশকে রাজনৈতিকভাবে এমন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে যে, ওরা যাকে চাইবে তাকেই ক্ষমতায় বসাতে পারবে। আর বলা বাহুল্য আমরা ইতোমধ্যে সাংস্কৃতিক ময়দানে পরাজিত এক অথর্ব জাতিতে পরিণত হতে যাচ্ছি।
এইভাবে চলতে থাকলে হয় নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে একটি অথর্ব জাতিতে পরিণত হবে নতুবা সিকিমের মত ঘোষণা দিয়ে বিলীন হয়ে যাবে। এই দুয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই।

১৩| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫২

পথে-ঘাটে বলেছেন: তথ্যবহুল লেখা। অনেক কিছু জানতে পাড়লাম।

শুভকামনা আকদেনিজ।

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:০৯

আকদেনিজ বলেছেন: আপনাকে জানাতে পেরে ভাল লাগল। শুভকামনা আপনার জন্যও।

১৪| ৩০ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৪

ক্লে ডল বলেছেন: সময় এসেছে আপামর জনসাধারণের সোচ্চার হওয়ার, ভীনদেশী নষ্ট সংস্কৃতি বর্জন করার,দলকানা না হয়ে, নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় শুধু দেশকে ভালবাসার!!

"বড় মাছ ছোট মাছকে গিলে খাবে" এই নিয়মেই চলে আসছে প্রাচীন থেকে বর্তমান ভারতীয় শাসনকার্য।

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ২:২২

আকদেনিজ বলেছেন: ভারতীয় দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করে দালাল চক্রকে বাংলার মাটি থেকে নির্মূল করতে হবে।

১৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ রাত ৯:৩১

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আমরা ইতোমধ্যে লজিক্যালি ভারতের প্রদেশ হয়েই গেছি, এভাবে শোষন করলেই ভারতের লাভ। দখল করে নিলে আবার দায়িত্ব নিতে হবে, আন্দোলন সামাল দিতে হবে, তার চেয়ে চুষে চুষে খেতেইতো বেশী মজা, তাই না?? X(

০৬ ই আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:২৫

আকদেনিজ বলেছেন: হু সহমত। আমরা ইতোমধ্যে লজিক্যালি ভারতের প্রদেশ হয়েই গেছি শুধু ঘোষণা করতে বাকি। তবে সেটা করলে যে কথা না করলে একই কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.