![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিবেক বিক্রি হলে দাস-মন ছাড়া কিছুই থাকে নাকো। আদর্শের তবু নৈতিক বিজয় থাকে।
অলিখিত হলেও, আগে একটা নিয়ম ছিল, সিলেবাস-মানবণ্টন এতদ্বিষয়ের কোনো পরিবর্তন বা নতুন-নিয়ম নতুন শিক্ষাবর্ষ হতেই কার্যকর হবে; এখন তা শিক্ষাবর্ষের মাঝখানে হচ্ছে, শেষের দিকেও হচ্ছে, বারবার হচ্ছে। একে অস্থিরতা-অপরিকল্পনা-অদূরতর্শিতা ছাড়া কী বলবেন? আর বাজারের প্রচলিত নোট-গাইড হাতে নিয়েই যদি শিক্ষকগণ প্রশ্ন করতে বসেন, ছাত্রছাত্রীরাও যদি সেই নোট-গাইড হাতে নিয়েই পড়তে বসে, তাহলে বিদ্যার দৌড় তো কেতাবেই সীমাবদ্ধ থাকে। আমরা তাহলে সৃজনশীল হওয়ার নাম করে কেতাবিই হচ্ছি। এটা ফাঁকি। সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে এর পরিকল্পনাকারী-বাস্তবায়নকারী কারোরই যথেষ্ট স্টাডি নেই। সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতির লক্ষ্য কী? কীভাবে আমরা সেই লক্ষ্যে পৌঁছাব, এ বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষকের সুস্পষ্ট ধারণা নেই। পাঠ্য বইয়ের অন্তরে, শিক্ষকের অন্তরে, প্রশ্নের অন্তরে উদ্দীপনা জাগানোর ক্ষমতা না-থাকলে সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতির সফল বাস্তবায়ন হবে কি করে? তাই বলি, প্রচলিত সৃজনশীল শিক্ষাপদ্ধতির পায়ের নিচে মাটি, আর মাথার উপর ছাঁদ আছে কি?
শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার, সম্প্রতি আপনার একটি লেখায় পড়েছি—বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে চার কোটিই ছাত্রছাত্রী। এ পরিসংখ্যান আপনার মনে আশা সঞ্চার করেছে। ফলকথা, আপনি বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব আশাবাদী। আশাবাদী আমরাও। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও আমরা আশা হারাই না, বিশ্বাস হারাই না। বিশেষত, আমরা মজিদকেও বিশ্বাস করেছি, আমাদের খালেক বেপারিও। মড়া নিয়েও আমরা মজিদের কাছে গিয়েছে—মজিদ জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবে, এই ভেবে। আজরাইলের চোখের দিকে তাকিয়েও বাঙালি আশায় থাকে, ভাবে কোনো ছলচাতুরীতে তাকে ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকা যায় কিনা। অবশ্য, ঐ লেখাতেই শুরুর দিকে আমাদের আশার বাণী শোনালেও শেষের দিকে আপনি নিজেই হতাশায় নিমজ্জিত হয়েছেন। উদ্ধৃতি—
আপনি শুরুর দিকে প্রশ্ন রেখেছেন,
“আমি তাহলে কেন দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে হা হুতাশ করব?”
আর সেই আপনিই শেষের দিকে লিখেছেন,
“স্কুলের ছেলেমেয়েদের জন্য আধুনিক স্কুলবাস দেয়া যেতো, তাদের দলবেধে চিড়িয়াখানা কিংবা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নিয়ে যাওয়া যেতো-এই তালিকাকে আমি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করতে পারি। কিন্তু তালিকাটির দিকে তাকিয়ে শুধু দীর্ঘশ্বাসই ফেলতে হবে তাই তালিকাটি আর দীর্ঘ করতে চাই না।”
মানুষ অসৎ হলে সমাজে-দেশে আস্থার সংকট দেখা দেয়। চরম আস্থাহীনতায় ভুগছি আমরাও। হয়ত, আস্থাহীনতাই আমাদের আসল সংকট। মিথ্যা আশ্বাস আর আশার-বাণী শুনতে শুনতে আমাদের অনুভূতি ভোতা হয়ে গেছে। দলকানা বুদ্ধিজীবীদের তর্ক শুনতে শুনতে আমরা এখন ত্যক্ত-বিরক্ত। কেননা, আমাদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তারা কুতর্কে লিপ্ত হন—‘ধান ভানতে শিবের গীত’ গান।
আমরা হুজুগে বাঙালি—ভাটায় ভেসে যাই, জোয়ারে ফিরে আসি। পরীক্ষা-পাসের প্রয়োজন ছাড়া পড়াশোনা করি না, তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই কথা বলি। নমুনা—
সেদিন আমাকে একজন প্রশ্ন করলেন, “রামপাল নিয়ে আপনার মতামত কী?”
উল্লেখ্য, তিনি গুণিজন বটে। তাকে বললাম, “আমি সামান্য বেতনের ছাত্রপোষা শিক্ষক। আমি পরিবেশবিদ নই, পরিকল্পনাবিদও নই। রামপালও যাওয়া হয়নি কোনদিন। রামপাল নিয়ে যাঁরা কথা বলছেন, তাঁদের বক্তব্যও যথেষ্ট অস্পষ্ট ঘোর-ঘোরালো গোছের। যা জানি না, তা নিয়ে কিছু না-বলাই শ্রেয় মনে করি।”
তিনি বললেন, “তবুও দেশের নাগরিক হিসেবে একটা মত-অমত তো থাকতে হয়।”
আমি বললাম, “আপনি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করলে এ বিষয়ে মত বা অমত দিতে পারি। আপাতত আমাকে বলুন, রামপালে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে লাভ-ক্ষতির অনুপাত কত হবে?”
তিনি বিরক্ত হয়ে ওঠে চলে গেলেন। আপনি তাকে হুজুগে বাঙালি ছাড়া আর বলবেন না?
প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম স্যার মারা গেছেন। তিনি এবং আপনি বাংলাদেশের অগুনতি তরুণ ছাত্র-শিক্ষকের আস্থার জায়গা ছিলেন। আমরা চাই, আস্থার জায়গাটি যেন নষ্ট না-হয়। আপনার কোনো লেখা পড়ে বা বক্তব্য শুনে যদি কখনো মনে হয় যে, আপনি আপস করেছেন, তখন কষ্ট পাই। কেননা, আমাদের বিশ্বাস দেশের টানে বিদেশ-বিভুঁই থেকে ফিরে আসা নজরুল-জাফর’রা আপসহীন, স্পষ্টভাষী; এঁদের কাছে সবার আগে দেশ, দেশের স্বার্থ, দেশের মানুষের স্বার্থ। এঁদের জীবন ত্যাগের দৃষ্টান্তে উজ্জ্বল, এঁরা লোভী নয়, চাটুকার নয়।
শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার, আমরা আপনাকে ডানে-বামে হেলে পড়া বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় ফেলি না। আপনি এ সম্মান গ্রহণ করুন, রক্ষা করুন। আমরা দেখতে চাই, বয়সে ও মনে যারা তরুণ, তারা আপনার শিক্ষায়-দীক্ষায়-প্রেরণায় পুষ্ট হচ্ছে; ডান-বাম আপস করতে আসছে আপনারই কাছে।
পড়ালেখার কথায় আসি। শোনেন, আমরা কেমন আছি—
এক:
আপনি নতুন পাঠ্য বইয়ের আনন্দের কথা বলেছেন। সম্ভব হলে দেখে নিবেন, পড়তে গেলেই এনসিটিবি’র সেলাইবিহীন বইয়ের পাতা ঝরা শুরু হয় প্রথম দিন থেকেই। কোনটা এনসিটিবি’র বই আর কোনটা যে নকল, এ বিভ্রান্তি তো আছেই।
দুই:
নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে লেখা আছে,
“মাত্র পনের বছর বয়সে তাঁর বনফুল কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য এশীয়দের মধ্যে প্রথম সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।”
দুটি তথ্যই ভুল। শোনেন, রবীন্দ্রনাথের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’, ১৮৭৮ সালে প্রকাশিত হয়। ‘বনফুল’ প্রকাশিত হয় ১৮৮০ সালে। তবে এর কবিতাগুলো ‘কবিকাহিনী’র আগেই ১৮৭৬ সালে রচিত হয়েছে এবং ‘জ্ঞানাঙ্কুর’ ও ‘প্রতিবিম্ব’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মলাটবদ্ধ না-হলে পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাকে কাব্য বলা চলে না।
রবীন্দ্রনাথ যে কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তার নাম ‘The Songs Offerings’। এটি ১০টি কাব্যগ্রন্থের কিছু নির্বাচিত কবিতার ইংরেজিতে অনূদিত সংকলন। অতএব, ‘গীতাঞ্জলি’ (১৯১০) ও ‘The Songs Offerings’ (১৯১২) সমার্থক নয়। ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের কবিতার সংখ্যা ১৫৭টি। আর ‘The Songs Offerings’ কাব্যে স্থান পেয়েছে ‘গীতাঞ্জলি’ হতে ৫৩টি, ‘গীতিমাল্য’ হতে ১৬টি, ‘নৈবেদ্য’ হতে ১৫টি, ‘খেয়া’ হতে ১১টি, ‘শিশু’ হতে ৩টি এবং ‘কল্পনা’, ‘চৈতালি’, ‘উৎসর্গ’, ‘স্মরণ’, ‘অচলায়তন’ হতে একটি করে মোট ১০৩টি কবিতা।
তিন:
নবম-দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে লেখা আছে, “কাজী নজরুল ইসলাম ১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ সনে (২৪শে মে ১৮৯৯) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।” একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্য বইয়ে লেখা আছে, “তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৫এ মে (১১ই জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬) জন্মগ্রহণ করেন।”
দুটি বই-ই এনসিটিবি’র। বাংলা একাডেমির ‘নজরুল-রচনাবলী’তেও জন্ম তারিখ ২৪শে মে ১৮৯৯ দেখানো হয়েছে। এ ধরনের অসঙ্গতি শিক্ষার্থীকে বিভ্রান্ত করে, আমরা শিক্ষকরাও বিব্রত হই। বিশ্বকবি ও জাতীয়কবিকে চর্চায় আমাদের অবহেলা-অসতর্কতার কথা বলেই ক্ষান্ত হলাম। দোষ খুঁজতে বসলে, এরূপ ভুরিভুরি দৃষ্টান্ত উদ্ধার করা যাবে।
আপনি বলেছেন, পাঠ্য বই বেশি সংক্ষিপ্ত হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, পড়ার বিষয়টা—বিশেষ করে বিজ্ঞান শাখার—বইয়ে বিস্তারিতভাবে লেখা থাকলেই ছাত্রছাত্রীদের বুঝতে সুবিধা হয়। স্বভাবতই, ছাত্রছাত্রীরা কঠিন বিষয় পড়তে চায় না। তাই, বইয়ের লেখা উদ্দীপনামূলক হওয়া চাই; তথ্য-উপাত্ত-বানান নির্ভুল হওয়া চাই; লেখার ভাষা সহজ হওয়া চাই; উপস্থাপনও নিটোল হওয়া চাই। যতদূর জানি, এসব-ই তো সম্পাদনার কাজ।
ছাত্রছাত্রীদের পাঠ্যবইমুখী করা খুব জরুরি। খাতায় বমি-করা মুখস্থ-বিদ্যার জোরে বেশি দূর এগোনো যায় না। লাইব্রেরি-ল্যাবরেটরি, দেয়ালিকা-ম্যাগাজিন, খেলাধূলা-শিক্ষাসফর, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক-কর্মকাণ্ড সচল করে পড়ালেখায় আনন্দ নিশ্চিত করা যায়। এর মধ্য দিয়ে ছাত্রছাত্রীর মানসিক জড়তা দূর হয়, মন উদার হয়, নেতৃত্ব তৈরি হয়।
চার:
আপনি পরীক্ষা-পদ্ধতির কথা বলেছেন। শোনেন, একটা ভালো নোট বা গাইড একজন ভালো শিক্ষকের বিকল্প হতে পারে না। গতানুগতিক প্রশ্ন হয় বলেই ছাত্রছাত্রীরা তা উপলব্ধি করতে পারে না। খোঁজ নিলে জানতে পারবেন, পরীক্ষার হলে প্রত্যবেক্ষকগণ গল্প করেন, মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন, ফেসবুক ব্যবহার করেন। আত্মীয়ের দেখভাল করতে ছাত্রনেতারাও পরীক্ষার হলে ঢুকে পড়েন। পরীক্ষকগণ খাতা মূল্যায়ণে অবহেলা করেন, যথাযথভাবে খাতা মূল্যায়ণের জন্য শিক্ষাবোর্ডও তাদের পর্যাপ্ত সময় দেয় না। রেজাল্ট থাকে ভুলেভরা। হয়ত, জনবল ও প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে তাদেরকে তড়িঘড়ি করে রেজাল্ট প্রস্তুত করতে হয় বলেই এমনটি ঘটে।
পাঁচ:
আপনি ভালো শিক্ষকের কথা বলেছেন। আমার প্রশ্ন, সাময়িকভাবে জনপ্রিয়-শ্রদ্ধেয় শিক্ষকগণই কি ভালো শিক্ষক?
পরীক্ষার আগে প্রশ্ন বলে দিয়ে, পরীক্ষার হলে উত্তর বলে দিয়ে, কিংবা দেখাদেখির সুযোগ করে দিয়েও জনপ্রিয় শিক্ষক হওয়া যায়। এর জন্য শিক্ষককে ক্লাসে ভালো পড়ানোর প্রয়োজন হয় না। বকাঝকা করে, মারধোর করে, কিংবা দেখে নেওয়ার ভীতি প্রদর্শন করেও শ্রদ্ধেয় শিক্ষক হওয়া যায়। এর জন্য শিক্ষকের অন্তরে আদর্শকে ধারণ করা বা পরিকল্পিত পাঠদান ও পরিপাটী জীবনযাপন করার প্রয়োজন হয় না।
একটা গল্প বলি, শোনেন, আমি তখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ি। গ্রামের স্কুলের থার্ড বয় আমি। ফাস্ট বয় জহির, সেকেন্ড গার্ল স্বপ্না। একদিন বাংলা পড়াতে ক্লাসে আসলেন ইংরেজির সাখাওয়াত স্যার। তিনি পড়ালেন ‘হিরোসিমা ও নাগাসাকি’ নামের নিবন্ধটি। শুধু কি পড়ালেন! প্রাসঙ্গিক রেফারেন্স দিয়ে জাপানের হিরোসিমা-নাগাসাকিকে চোখের সামনে এনে দিলেন। আমরা পড়া শুনলাম, দেখলাম। আমি তখন থেকেই জানি, শিক্ষকের পড়া শুনতে হয়, দেখতেও হয়। শিক্ষকেরও দেখানোর ক্ষমতা থাকতে হয়। না-দেখলে পড়াটা আনন্দের হয় না, ঠিক বোঝাও যায় না। পরে রবীন্দ্রনাথের গল্পে পড়েছি, “সেই সুধাকণ্ঠের সোনার কাঠিতে সকল কথা যে সোনা হইয়া ওঠে। মেয়েটির সমস্ত শরীর মন যে একেবারে প্রাণে ভরা, তার সমস্ত চলায় বলায় স্পর্শে প্রাণ ঠিকরিয়া ওঠে। তাই মেয়েরা যখন তার মুখে গল্প শোনে তখন গল্প নয়, তাহাকেই শোনে; তাহাদের হৃদয়ের উপর প্রাণের ঝর্না ঝরিয়া পড়ে।”
সাখাওয়াত স্যার সেদিন পড়া বোঝানোর পর ক্লাসেই পরীক্ষা নিলেন; ১০ থেকে সাত পেলাম। আমি তাঁকেই ভালো শিক্ষক বলি। কিন্তু, অচিরেই অন্য শিক্ষকেরা তাঁকে হিংসা করতে শুরু করলেন এবং বছর খানেকের মধ্যেই সামান্য এক ভুলের জন্য তিনি স্কুল থেকে বহিষ্কৃত হলেন। শুনেছি, পরে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হয়েছেন। ভালোরা কখনো তোষামুদে হয় না। আমাদের মধ্যে যারা ভালো, যারা সহকর্মী হলে আমাদের অযোগ্যতা প্রকটিত হয়, আমরা তাদের সহ্য করতে পারি না। আমরা দলবাজ-চাপাবাজ শিক্ষকদের পদলেহনের মাধ্যমে নিজের জীবনকে ধন্য করি, আর ভালোদের নামে অপবাদ দিই।
শ্রদ্ধেয় মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার, আমি সামান্য মানুষ। আমার গ্রামের মানুষেরাই আমাকে চিনেন না। কোনো ছাত্রছাত্রী গ্রামে ঘুরতে গিয়ে আমার নাম বলে পরিচিত হতে চাইলে তারা জিজ্ঞাসা করেন, কোন বেলায়েত? আমার কোনো কথায় ত্রূটি থাকলে ধরিয়ে দিবেন, আর কষ্ট পেলে সামান্যকে সামান্য বলেই এড়িয়ে যাবেন।
‘আশাই জীবন, জীবনের শ্রী’ বলে বলে আমরা আর নিজেকে প্রবোধ দিতে চাই না। জানি, আমাদের কথা-লেখা যথাস্থানে পৌঁছাবে না। তাই, বাংলাদেশের শিক্ষাসমস্যা নিয়ে আপনি বলুন-লিখুন। যারা ভয়ে অন্ধ-বোবা, আপনাকে দেখে তারাও চোখ খুলুক, কথা বলুক। শুধু শিক্ষা নয়, সুশিক্ষাও নিশ্চিত হোক। আমাদের কথা হোক—হক-কথা, সাফ-কথা। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি—“এদেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে।”
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
জাফর সাহেবের কাছে চিঠি লিখতেই থাকে সবাই, আমরা পড়ি, জাফর সাহেব উত্তর দেয় না কেন?