নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ, মানুষের জন্যে।

[email protected],[email protected] স্কাইপঃAkramsBD

আকরাম

সাইকোথেরাপী অন লাইন *****www.psychobd.com

আকরাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন সিজোফ্রেনিয়া রোগী এবং আমাদের দায়িত্বহীনতা

১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৬



[

সিলেটে শিশুকন্যাকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা

এটা সমকালের খবর

Click This Link



সিলেটে মাজার জিয়ারতে গিয়ে মেয়েকে হত্যা করে বাবার আত্মহত্যা

এটা আমার দেশ এর খবর

Click This Link



খবরগুলি ভালভাবে পড়লেই বোঝা যায় যে, আলিম উল্লাহ সিজোফ্রনিয়া রোগে ভূগছিলেন। যে কারনে প্রায়ই তিনি অসংলগ্ন কথবার্তা বলতেন এবং চোখের সামনে সাপ সহ ভয়ংকর জীবজন্তু দেখতেন। এসবই সিজোফ্রনিয়া আচরনের মধ্যে পড়ে।

এখানে দেখুনঃ Click This Link

এর মধ্যে পুলিশের বক্তব্য আরো মজার "কোতোয়ালি থানার ওসি আহমেদ নাসির উদ্দিন মোহাম্মদ সমকালকে বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, মেয়েকে খুন করে আলিম আত্মহত্যা করেছেন। এর কারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাদক সেবন করার কারণে আলিম উল্লাহ মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারেন।" .................একজন মানসিক রোগীকে মাদকসেবী বানিয়ে ফেললেন। না জানা কোন অন্যায় না। কিন্তু সংবাদপত্র এবং পুলিশের মত দায়িত্বশীল সংস্হা সমাজে যদি ভূল তথ্য এবং সিগনাল দেয়, সে সমাজের ভবিষৎ কি হতে পারে?





পাষণ্ড পিতা

‘দুই বছরের মেয়ে সাদিয়া আফরিনের পায়ের লাথির আঘাতে ঘুম ভাঙে। দেখি মেয়ের গলা দিয়ে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে আমার চোখের সামনে মেয়ের শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। পাশেই রক্তাক্ত ব্লেড হাতে দাঁড়িয়ে আছে স্বামী আলীম উল্লাহ। বলে, ফাতেমা আমি পাপী। আমাকে মেরে ফেলো কিংবা পুলিশে দাও। আমি আর বাঁচতে চাই না।’ ফাতেমা জানান, ‘এ দৃশ্য দেখে আমি চিৎকার দিয়ে বাইরে চলে আসি। এগিয়ে আসে লোকজন। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে নিজেই মারা যায় স্বামী আলীম উল্লাহ।’ এসব কথা বলে বলে পাগলের মতো বিলাপ করছিলেন ফাতেমা বেগম। বলেন, ‘আমার কোলের ফুটফুটে ওই সন্তানটির দোষ কি ছিল? পশুর মতো হত্যা করলো। তার আগে আমার মৃত্যু হলো না কেন?’ গতকাল বুধবার সকালে সিলেট নগরীর দরগাহ গেইট এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। আড়াই বছরের মেয়েকে হত্যা করে নিজের গলা কেটে মারা গেছে পিতা আলীম উল্লাহ। বয়স ৩০ বছর। বাড়ি কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড়ের অসতকান্দি। তার পিতা মৃত শফিউল্লাহ। প্রায় ৬ বছর আগে জীবিকার তাগিদে বসবাস করছে গাজীপুরের ময়মনসিংহ রোডের মেম্বার বাড়ি এলাকায়। ওই এলাকার গার্মেন্ট এমসি কমপোজিটের শিফট ইনচার্জ তিনি। প্রায় ৫ বছর আগে বরিশালের রাজাপুর উপজেলার মন্দিরহালির গ্রামের শাহ আলম শিকদারের মেয়ে ফাতেমা বেগম (২৪)-কে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে সুখেই চলছিল তাদের সংসার। আলীম উল্লাহ গার্মেন্টে কাজ করে আর ফাতেমা বাসায়ই থাকেন। দুই বছর আগে তাদের ঘরে কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। মেয়ের নাম হয় সাদিয়া আফরিন। আলীম উল্লাহর স্ত্রী ফাতেমা জানান, প্রায় ৮ মাস আগে চাকরি ছেড়ে দেন আলীম উল্লাহ। তবে কি জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দেন সে ব্যাপারে ফাতেমা জানেন না। গত এক মাস আগে আলীম উল্লাহ আবার এমসি কমপোজিটে শিফট ইনচার্জের চাকরি পান। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা দায়িত্ব পালন করতেন আলীম উল্লাহ। প্রায় সপ্তাহখানেক আগে থেকে আলীম উল্লাহ কিছুটা ভারসাম্যহীনের মতো আচরণ শুরু করেন। কখন কি করেন কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান সাদিয়া আফরিনের সঙ্গে প্রায়ই রূঢ় আচরণ করতেন। ফাতেমা জানান, গার্মেন্টে কাজে যেতো। হঠাৎ বাসায় চলে আসতো। বলতো, তার কিছুই ভাল লাগে না। চোখের সামনে কি সব দেখে। চোখের সামনে সাপ সহ ভয়ংকর জীবজন্তু দেখে। তার এই অস্বাভাবিক আচরণের পর স্থানীয় এক হুজুরের কাছে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখান থেকে তাকে তাবিজ কবচ দেয়া হলো। কিন্তু তার অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ফাতেমা জানান, মঙ্গলবার সকালে আবার ডিউটিতে চলে যায় আলীম উল্লাহ। যাওয়ার সময় বললো সিলেটে যাবে। মাজার জিয়ারত করে আবার গাজীপুরে চলে আসবে। কথা অনুযায়ী সন্ধ্যায় বাসায় ফেরে আলীম উল্লাহ। কিন্তু সন্ধ্যায় বাসায় এসে আবোল-তাবোল শুরু করে। কিছুক্ষণ পর আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। রাতে আলীম উল্লাহ, তার স্ত্রী ফাতেমা ও সন্তান সাদিয়া আফরিনকে নিয়ে সিলেটের পথে রওনা হন। ভোররাতের দিকে তারা সিলেটের দরগাহ গেইট এলাকায় গাড়ি থেকে নামেন। সেখান থেকে দরগাহ এলাকার হোটেল আক আছওয়াতে যান। তেতলার ৩৫ নং রুম ভাড়া নেন তারা। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে তারা রুমে ওঠেন। এরপর দরজা বন্ধ করে সাফসুতরো হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ফাতেমা জানান, সারা রাত জেগে থাকার কারণে সকালে হোটেলে এসে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। তিনি খাটের এক পাশে ঘুমান। মাঝখানে ছিল মেয়ে সাদিয়া ও তার পাশেই ছিল স্বামী আলীম উল্লাহ। ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মেয়ের লাথির আঘাতে তিনি ঘুম থেকে ওঠেন। উঠে দেখেন, মেয়ের গলা কাটা। ফিনকি দিয়ে রক্ত ঝরছে। এ দৃশ্য দেখে তিনি চিৎকার শুরু করেন। এক পর্যায়ে মেয়ের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পাশেই রক্তাক্ত ব্লেড হাতে বসেছিল আলীম উল্লাহ। এ সময় আলীম উল্লাহ বলে ওঠে, ‘ফাতেমা আমি পাপি। আমাকে মেরে ফেলো কিংবা পুলিশে দাও। আমি আর বাঁচতে চাই না।’ এ দৃশ্য দেখে ফাতেমা চিৎকার করতে করতে হোটেল রুম থেকে বেরিয়ে ম্যানেজারের কাছে চলে যান। ম্যানেজারকে নিয়ে এসে দেখতে পান দরজা ভেতর থেকে লক করা। এ সময় ফাতেমা বাইরে থেকে স্বামীকে ডাক দেন। কিন্তু কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে পাশের কক্ষ খুলে পেছন দিকে গেলে দেখতে পান আলীম উল্লাহ পিছনের ব্যালকনির দিকে লাফ দেয়ার চেষ্টা করছে। এ সময় তারা চিৎকার শুরু করলে আলীম উল্লাহ আবার ঘরের ভেতরে চলে আসে। আর ওই সময় সে হাতে থাকা ব্লেড দিয়ে নিজের গলা কাটে। এ সময় হোটেলের তালাবদ্ধ কক্ষে তারা গোঙানির শব্দ শুনতে পান। কিছুক্ষণ পর সে শব্দ কমে আসে। ফাতেমা জানান, এরপর পুলিশ এসে দরজা খুললে দেখা যায় আলীম উল্লাহর লাশ পড়ে আছে রুমের মেঝেতে। তিনি জানান, ‘ঘুমানোর আগে হোটেল কক্ষে বেশ অস্বাভাবিক আচরণ করেছে আলীম উল্লাহ। এ সময় সে বেশ কয়েকবার বাইরে বের হয়। একবার বলেছিল তার নখ বেশ লম্বা হয়ে গেছে। কাটতে হবে। সে ব্লেড আনতে নিচে যাবে। গিয়েওছিল। কিন্তু মেয়েকে মেরে ফেলবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’ ওই হোটেলের ম্যানেজার হুমায়ূন কবির জানিয়েছেন, ফাতেমা বেগম তাকে প্রথমে ঘটনাটি বলার পরপরই তিনি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন এবং দ্রুত তার হোটেলে আসার জন্য অনুরোধ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সেখানে ছুটে আসেন হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহস্থ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আশরাফুজ্জামান। তিনি জানান, ঘটনার পরপরই সিআইডিকে কল করা হয়েছে। আপাতত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে আলীম উল্লাহ মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। মেয়েকে খুনের পর সে নিজে আত্মহত্যা করেছে। তবে আরও তদন্ত করলে অন্য কোন কারণ আছে কিনা জানা যাবে।

ঘটনাস্থলে নির্মমতার ছাপ: দরগাহ গেইটের মূল ফটক পাড়ি দিলেই হাতের বাম পাশে হোটেল আকআছওয়া। ৫ তলাবিশিষ্ট এ আবাসিক হোটেলের তৃতীয় তলায় ঘটেছে এ ঘটনাটি। গতকাল দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ৩৫ নম্বর কক্ষের বিছানার উপর পড়ে আছে শিশু সাদিয়ার নিথর দেহ। পুরো দেহটি রক্তমাখা। গলা, বুক রক্তমাখা। একটি তোয়ালে দিয়ে ঢাকা শিশুটির দেহ। আর খাটের নিচে মেঝেতে বেশ খানিক জায়গা জুড়ে রক্ত পড়ে আছে। এসব রক্তের মধ্যে দরজার দিকে মুখ দিয়ে পড়ে আছে আলীম উল্লাহর দেহ। এসময় হাতের কাছে সেই রক্তমাখা ব্লেডটিও পড়েছিল। এদিকে, দুপুর একটার দিকে সিআইডি’র ক্রাইম সিনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তারা হত্যাকাণ্ডের আলামত সংগ্রহ করেন এবং লাশ দু’টি পুনরায় পরীক্ষা করেন। শেষে মেয়ে ও পিতার লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে।

এটা মানবজমিনের খবর

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.