নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সূর্য থেকে অসম্ভব শক্তিশালী আলোকরশ্মি চাঁদের উপর পড়ে। সে চাঁদ কিছুদিন জোছনা বিলায় আমাদের মাঝে।অমাবস্যায় কেউ চাঁদকে ভুলে যায় না।অপেক্ষা করে জোছনা ফিরে আসার ।সূর্য না হই ,মাঝে মধ্যে জোছনা হতে চাই।অমাবস্যায় হাহাকার হতে চাই মানব মনে।

আলমগীর জনি

গল্প বলি

আলমগীর জনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ বোকা মেঘ

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:২৪



অভিকের ব্যাপারটা হলো সে ভালোবাসলো একজনকে আর বিয়ে করছে আরেকজনকে।তাহলে এটাকে কি ভালোবাসা বলা যেতে পারে? না, আমি এটাকে কিছুতেই ভালোবাসা বলতে পারব না।এটা সময়ের প্রয়োজনে গড়ে উঠা কিছু স্মৃতি তৈরির কারখানা।সময় ফুরিয়ে গেলে সেসব কারখানায় সিলগালা করে দেয়া হয়।এই কারখানা কখনো খোলে না।অবশ্য মাঝে মধ্যে খুলতে চায়, রাতের অন্ধকারে।মিথ্যা আবেগ দিয়ে গড়ে উঠা সে কারখানার প্রতিটি ইটের অভিশাপে অভিশপ্ত হতে থাকে মিথ্যাবাদী প্রেমিক কিংবা মিথ্যাবাদী প্রেমিকা।যে ভালোবাসা এক সাথে বাসা (পড়ুন "ঘর") বাঁধতে উৎসাহিত করে না তাকে আমি ভালোবাসা বলব কেন?

প্রিয়মের বয়ফ্রেন্ড ছিল যে, সে ছেলেটাই অভিক।অভিক বলেছিল সে কাউকে বিয়ে করলে সেই মেয়েটি হবে প্রিয়ম।কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।আজ অভিকের বিয়ে।অভিকের মায়ের ঠিক করে দেয়া মেয়েটির সাথেই অভিকের বিয়ে হচ্ছে।এই মানুষগুলোর ভালোবাসার সংজ্ঞাই আমি বুঝি না।

প্রিয়মের সাথে লেকে বসে আছি আমি প্রায় এক ঘন্টা।এই একঘন্টায় প্রিয়ম আমার সাথে একটি শব্দও বলে নি। আমি যে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করব তার কোন সুযোগ পাই নি।সুযোগ পাই নি বললে ভুল হবে, আমি সুযোগ নিতে চাই নি।আমার একটা স্বভাব আছে ।চুপচাপ মানুষকে আমি আরো চুপ হতে উৎসাহিত করি।এতে হয় কি সেই মানুষটার ভেতরকার চিৎকার চেঁচামেচিতে এক সময় আপনা আপনিই সে চুপ থাকা মানুষটার ধৈর্যচ্যুতি ঘটে। আমি ততক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করি।নিজের ভেতরের চিৎকারের প্রতিধ্বনি মানুষ বেশিক্ষণ সহ্য করতে পারে না।

সকালে প্রিয়ম আমাকে ফোন দিয়ে শুধু কান্নাকাটি করছিল।প্রিয়মের মায়ের কাছ থেকে আমি আগেই জানতাম সব। ।আমি শুধু বলেছি বিকাল ৫ টায় ধানমন্ডি লেকে থাকব আমি। আমি ঠিক ৫ টায় আসলাম লেকে। এসে বুঝলাম মেয়েটা অনেক আগেই এসেছে।এতক্ষণ চুপ থাকার পর প্রিয়ম কথা শুরু করল । কেমন আছেন ? আমি তার উত্তর না দিয়ে আমার মত করে শুরু করলাম ।

-প্রিয়ম।
-হুম, বলুন।
-আমার মনে হয় তোমার একটু নিজের খেয়াল রাখা উচিত।
-রাখছি তো।
-না, এভাবে না।দেখো যে মানুষটা চলে গেছে সে থাকার জন্য আসে নি।
-তাহলে আসল কেন?
-চলে যাওয়ার জন্য।
-আমি এত কিছু বুঝি না।সে আমার সাথে প্রতারণা করেছে।অন্যায় করেছে।তবু আমি অভিককেই ভালোবাসি।আমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারব না।আমি অভিককেই চাই। না হয় আমিই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাব।

আমি চুপ করে রইলাম।এই মুহূর্তে আসলে কি বলার আছে তা আমি জানি না ।তবে প্রিয়মকে যদি কালকে আমি না পাই তবে আমি কার সাথে আমার বিকালের অলস সময়টা পার করব?

প্রিয়মের বাসায় অভিকের ব্যাপারটা জানে।প্রিয়মের বাবা অনেক কষ্টে মত দিয়েছেন অভিকের সাথে বিয়ের। আর আজকে অভিক বিয়ে করছে কিন্তু সেটা অন্য একটি মেয়েকে। প্রিয়মের বাবা এটা শুনতেই তার মাকে ইচ্ছামত ঝাড়ল কিচ্ছুক্ষণ। আগেই বলেছিলাম মেয়েকে এত প্রশ্রয় দেয়ার দরকার নাই।এসব প্রেম ভালোবাসায় কি হয়? দেখলা তো এবার? আমি তোমাকে আগেই বলেছিলাম প্রিয়মের মা।কিন্তু তোমরা মা মেয়ে মিলে আমাকে রাজি করিয়েছ।এখন? এখন কি হল? আজকে যদি আমার মেয়ের কিছু হয় তোমার খবর আছে। এভাবে মেয়ের মাকে শাসালেন প্রিয়মের বাবা।

প্রিয়ম আজকে সুইসাইড করবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত আমি।এই মেয়েটা যা বলে তা সবসময় অক্ষরে অক্ষরে পালন করে।যে আধাঘণ্টা সে চুপচাপ বসেছিল সে আধাঘন্টায়ই সে এই ডিসিশন টা নিয়েছে।আ্মি যখন ওকে পড়াতে যেতাম সে যা বলত তাই করত।ওর এমন কিছু গল্প আমি জানি যা কল্পনাকেও হার মানায়।আমি জানি প্রিয়ম আমার এই কল্পনাটাকেও হার মানাবে।কিন্তু আমি চাই না আমার কল্পনাকে সে হারিয়ে দিক। প্রিয়মকে হারাতে দেয়া যাবে না।

আমি প্রিয়মের বাবাকে ফোন দিলাম।তাকে বললাম- আংকেল আমি নিয়ন।প্রিয়ম এখন আমার সাথে।প্রিয়ম আজকে রাতে সুইসাইড করবে।আপনি আপনার মেয়েকে চিনেন।সে আজকে রাতেই সুইসাইড করবে।ওপাশ থেকে আংকেলের কান্নার শব্দ শুনতে পেলাম।আমি বললাম , আংকেল কি করব এখন? তিনি কোন উত্তর দিলেন না।অনেকক্ষণ পর আমাকে বললেন -তুমি দেখো কিছু করতে পারো কি না।একথা বলে তিনি ফোন কেটে দিলেন। তিনি জানেন আমি কিছু করতে পারব ।

আমি এরপর আমার বাসায় ফোন দিলাম।বাবাকে বললাম- বাবা,আমি বিয়ে করতে চাই।বাবা বলল-মানে ? কাকে? আমি বললাম- আমার ছাত্রীকে।আমি বললাম- বাবা আমি যদি ওকে বিয়ে না করি মেয়েটা আজকে সুইসাইড করবে।বাবা বললেন- দেখো বাবা তুমি বড় হয়েছো ।তুমি তোমার ভালোটা বুঝো।তোমার ইচ্ছা হলে বিয়ে করো।তোমার কাছে বিয়ে করার টাকা আছে? আমি বললাম, অল্প।বাবা বললেন তোমার একাউন্ট এ ১০ হাজার টাকা দিচ্ছি আমি।আমি বাবাকে বললাম, দোয়া করো। বাবা হাসলেন।

আমি ওয়াশরুমে যাওয়া কথা বলে আমার বাবা আর প্রিয়মের বাবার সাথে কথা বলছিলাম।আমার চার পাঁচজন বন্ধুকে ফোন দিলাম লেকে আসতে।জরুরী বলাতে এরা একটু পরেই দৌড়ে আসবে।বন্ধুরা বন্ধুর ডাকে কখনো হেঁটে আসে না। হেঁটে আসলেও সেটা দৌড়ের মতই হবে ।অলস দেখালেও হাতিও নাকি মাঝেমধ্যে দৌড়ায়!

লেকে যে চেয়ারটা এতক্ষণ আমার দখলে ছিল সেটিতে এখন অন্য একজন বসে আছে।আমার সামনে যে মেয়েটি মানে প্রিয়ম বসে ছিল সেখানে প্রিয়মই বসে আছে । আমি লক্ষ্য করে দেখলাম আমার চেয়ারে বসা ছেলেটা বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে আসা কোন বর ! একদম বরের সাজে। বিয়ের আসর থেকে কনের পালিয়ে আসার ঘটনা আছে , বরের পালিয়ে আসার ঘটনা আছে ?

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:১৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সে জন্যেই আমি সবসময় বলি, কাহিনীর পিছনের কাহিনীটা না জেনেই শেষ কথা বলা ঠিক না। :)

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৪৫

আলমগীর জনি বলেছেন: জী

২| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৯:৩১

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সুন্দর গল্প।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:৪৫

আলমগীর জনি বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।

৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লাগলো।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:০২

আলমগীর জনি বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:২৩

খাঁজা বাবা বলেছেন: ঘুরাইয়া দিলেন ভাই?
আশা করছিলাম আপনার বিয়েটা দেখব :(

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:০৩

আলমগীর জনি বলেছেন: বিয়ে তাও আমার ! কি বলেন ভাই হা হা ।

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১০:২২

বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: মাস্টার মশাই তো বিশাল ফাউল, চান্স পে ড্যান্স এর ধান্দা করছিলো ;)

=p~ =p~ =p~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৩:০৩

আলমগীর জনি বলেছেন: হা হা ।হুম এমন তো আমরা অনেকেই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.