নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমাপ্রেমী । ট্র্যাভেলার । বইপোকা । রন্ধনশিল্পী

আলভী রহমান শোভন

খাই, দাই, ব্লগ লিখি ।

আলভী রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সহপাঠীর জবানবন্দী-১: ছেলেটি মেয়েটিকে ভালবেসেছিল

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৩৬


ভার্সিটিতে ১ম সেমিস্টারের প্রথম দিনের কথা। ক্লাসে ঢুকেই মেয়েটার দিকে চোখ পড়ল প্রথম। আজও মনে আছে আকাশি রঙের সেলোয়ার কামিজ পরে ছিল সে। উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণের শান্ত শিষ্ট মেয়েটির প্রেমে পড়ে যাই প্রথম দেখাতে।সে দেখতে খুব আহামরি না হলেও ওর মন অনেক ফ্রেশ ছিল, যেটা আমার সব চেয়ে ভাল লেগেছিল। কিভাবে কিভাবে যেন আমার এই ভাল লাগার কথা একটা সময় ক্লাসের সবাই জেনে যায়। মেয়েটির খুব কাছের বন্ধুরা আমাকে বলে প্রোপস করতে। শুভ কাজে নাকি দেরি করতে হয় না। আগে কখনও কোন মেয়েকে এতটা ভাল লাগেনি। প্রোপস করা তো দূরে থাক। আর তাই এটাও জানতাম না কিভাবে প্রোপস করতে হয়। বরাবরই একটু গাধাই ছিলাম কিনা। ক্লাসের সবার সাথে ভাল সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও মেয়েটির সাথে আমি কখনও ফ্রি হতে পারিনি। হয়ত দুর্বলতা ছিল তাই। যাই হোক, ওর কাছের বন্ধুদের কথা শুনে একদিন প্রোপস করে বসলাম। ফলাফল যা হবার তাই হল। রিজেকট করল আমাকে। প্রেম না করলেও প্রেমে পড়ে সেই প্রেম পূর্ণতা না পেলে কতটা যে কষ্ট হয় তা শুধু সেদিন বুঝেছিলাম। অনেক কেঁদেছিলাম ঐ সময়। কষ্টে ঘুমাতে পারিনি অনেক রাত।
২য় সেমিস্টার। কিভাবে যেন ওর সাথে একটা কোর্স মিলে যায়। আমার অন্য বন্ধুরাও ছিল ঐ ক্লাসে। ওদের সাথে মজা করে কিছু বললে অথবা হাসাহাসি করলে মেয়েটিও মুচকি করে হাসত। দেখতে ভাল লাগত। আমার সাথে কথা বলেনা তো কি হয়েছে? আমার কথা শুনে হাসে তো। যাই হোক, ওইবার কোরবানির ঈদের সময় ওকে ফেসবুকে উইশ করেছিলাম বলে আমাকে ব্লক মারে। বলা বাহুল্য যে প্রথম সেমিস্টারেই সে আমাকে ফেসবুক থেকে রিমুভ করেছিল। আর সেকেন্ড সেমিস্টারে যে ব্লক মেরেছে সেই ব্লক আর আনব্লক হয় নাই।
এরপর থেকে প্রতি সেমিস্টারেই ওর সাথে আমার ১টা/২টা কোর্স মিলে যেত। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, অন্য কোর্সগুলোতে A+ না পেলেও ওর সাথে আমার যে কোর্স গুলো মিলে যেত সেগুলোতে ঠিকই A+ পেতাম। হয়ত ঐ ক্লাসগুলোতে ওর উপস্থিতি আমাকে ভাল কিছু করতে উৎসাহিত করতো।
৫ম সেমিস্টারের কথা। ভার্সিটির একটা কনফেশন পেজ তখন প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ফেসবুকে। জনপ্রিয়তাও পায় অনেক। অনেকের কনফেশন দেখে আমিও আমার প্রিয় মানুষটিকে নাম উল্লেখ করে কনফেশন দেই। ওর চোখেও পড়ে সেটা। কিন্তু ভাবিনি আমার এই গাধামি ওকে এতটা অস্বস্তিতে ফেলে দিবে। যেদিন কনফেশন পোস্ট করা হয় ঠিক তার পরদিনই সবাই ওকে জিজ্ঞেশ করে, তুমি কি সেই মেয়ে? আমার উপর অনেক রাগ করেছিল সে। আমারও অনেক খারাপ লেগেছিল ওর জন্য। কতটা ঝামেলাই না পোহাতে হয়েছে ওকে।
ওর যে সাবজেক্টে মেজর নেওয়ার কথা ছিল সেটার সাথে আমার মেজরের মিল ছিল না । কিন্তু কেন যেন ও ওর মেজর চেঞ্জ করে। আর ভাগ্যক্রমে আমার মেজরের সাথে মিলে যায় । সেই সুবাদে ওর সাথে মেজরের কোর্স গুলোও করা হয়। ওর খুব কাছের এক বন্ধু আমাকে দেখতে পারতো না । কিন্তু কিভাবে যেন সে আমার ভাল বন্ধু হয়ে গেল। আমার সাথে গ্রুপ করে Presentation এর জন্য । ফলে যা হয়েছে তা হল, আমি আমার প্রিয় মানুষটার সাথেও গ্রুপ করতে পারলাম। যদিও ক্লাসে কোন গ্রুপ টাস্ক দেয় আমরা তা করি কিন্তু কেউ কারো সাথে কথা বলতাম না । তাতে কি? ওর সান্নিধ্য আমার ভাল লাগে।
দেখতে দেখতে ভার্সিটি লাইফ শেষ করে ফেললাম। কিন্তু আজও পেলাম না তাকে। জানি, ভালবাসা জোর করে হয় না। আসলে দোষটা ওর না। কোন ভাবে আমি জানতে পেরেছিলাম ওর কোন এক কাজিন এক ছেলেকে ভালবেসেছিল। কিন্তু ওর কাজিনের পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে নেয় নি। তাই ওর কাজিন ঘর ছেড়ে পালায়। ভালবাসার মানুষটির জন্য ঘর ছেড়েও শান্তি পায়নি ওর কাজিন। প্রেমিকের দেওয়া শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ওর কাজিনকে কুড়ে কুড়ে খায়। এরপর থেকে আমার প্রিয় মানুষটি সিদ্ধান্ত নেয় কোন দিন কোন সম্পর্কে জড়াবে না সে। বাবা-মা যা ভাল মনে করে তাকে পাত্রস্থ করবে সে সেখানেই বিয়ে করবে।
আর কি? আর কিছুই বলার নেই। শুধু সে ভাল থাকুক, সেই কামনাই করি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:১৪

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: দুঃখের কিছু নেই ভাই... ভার্সিটি লাইফে অনেকেরই এমন হয়... কেউ খুশি হয় আবার কেউ বেজার...

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:১৩

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: গল্পটা আমার জীবনের নয়, আমার এক সহপাঠীর জীবনের।

২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৯

পাখি মন বলেছেন: োনেক সুনডোর লাগলো।

২৮ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১১:৪৯

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.