নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সিনেমাপ্রেমী । ট্র্যাভেলার । বইপোকা । রন্ধনশিল্পী

আলভী রহমান শোভন

খাই, দাই, ব্লগ লিখি ।

আলভী রহমান শোভন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সহপাঠীর জবানবন্দী-২: ছেলেটি অন্যরকম

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪২


তখন আর কতই বয়স হবে আমার। এই পাঁচ কি ছয়। বিকেল হলেই বাড়িওয়ালার বাসায় যেতাম। বাড়িওয়ালার ছেলের সাথে খেলা করতে। বাড়িওয়ালার ছেলে তখন খুব সম্ভব ক্লাস সেভেন কিংবা এইটে পড়ে। একদিন বাসায় কেউ ছিলনা, শুধু বাড়িওয়ালার ছেলেই ছিল। আমিও যথারীতি অন্যান্য দিনের মত সেই বাসায় যাই খেলা করতে। আর সেইদিনই আমি বাড়িওয়ালার ছেলের দ্বারা প্রথম যৌন হয়রানির শিকার হই। তখন তো ছোট ছিলাম। তাই এত কিছু বুঝতাম না। এরপর বেশ কয়েকবার ছেলেটি আমাকে যৌন হয়রানি করে।
দ্বিতীয় বার আমি যৌন হয়রানির শিকার হই এক দূর সম্পর্কের কাজিনের কাছ থেকে। তখন ক্লাস টু-তে পড়ি। বার্ষিক পরীক্ষার পর পরিবারের সবাই মিলে দাদাবাড়িতে বেড়াতে যাই। আমার দূর সম্পর্কের এক কাজিন আমাকে গাছ থেকে বরই পেড়ে দেওয়ার নাম করে বাগানে নিয়ে যায়। আর সেখানে আমি আবার শিকার হই যৌন হয়রানির।
ছোটবেলার সেই টুকরো টুকরো সৃতিগুলো আমার মনে গেঁথে থাকে। কিভাবে যেন এইগুলোই আমি মধুর সৃতি হিসেবে লালন করতে থাকি। আমি যখন একাদশ শ্রেণীতে পড়ি তখন প্রথম বুঝতে পারি যে আমি নিজে একটা ছেলে হয়ে ছেলেদের পছন্দ করি। মেয়েদের প্রতি আমার কোন আগ্রহই নেই। হ্যা, আমি ছেলে হিসেবে অন্যরকম। কিন্তু এখানে আমার কি দোষ? সবই তো পরিস্থিতির শিকার।
আমার সহপাঠীরা বলতো আমার ব্যবহার নাকি অন্যরকম, ঠিক ছেলেদের মত নয়। আমি চেষ্টা করতাম পুরুষালী ব্যবহার করতে কিন্তু আমার ভেতর থেকে তা আসতো না। আমি চেষ্টা করতাম মেয়েদের প্রতি নিজের আগ্রহ বাড়াতে কিন্তু কিভাবে যেন সেই আগ্রহ ছেলেদের প্রতিই আসতো ঘুরে ফিরে। একটা সময় তাই হাল ছেড়ে দিলাম।
যখন ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম তখন ফেসবুকে পরিচয় হয় একজনের সাথে। সেও আমার মত। একটা সময় আমরা আমাদের বন্ধুত্তের সম্পর্ককে আরেকটু এগিয়ে নিলাম। হ্যা, বিষয়টা আপাত দৃষ্টিতে খুব কটু লাগলেও আমরা একজন আরেকজনকে ভালবেসেছিলাম। ভেবেছিলাম এভাবেই একজন আরেকজনকে ভালবেসে কাটিয়ে দিব সারাটা জীবন। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। একটা সময় বুঝতে পারলাম সে আসলে আমাকে ভালবাসেনা, ভালবাসে শুধু আমার শরীরকে। আমার প্রতি বিন্দুমাত্র দায়িত্তবোধ সে অনুভব করে না। চলে আসলাম তার কাছ থেকে। এখন আমি একা।
মাঝে মাঝে ভাবি মনস্তাত্তিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হব কিন্তু পরে ভাবি আমি কি পারবো এই সমস্যা থেকে উৎরে উঠতে? আমাদের ধর্ম দেশ এইগুলো প্রত্যাহার করে। সমাজ এটা নিয়ে হাসাহাসি করে। কিন্তু কেউ কি কখনও ঘেঁটে দেখেছে একজন সমকামীর সমকামী হয়ে ওঠার নেপত্থে কি রয়েছে?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৯

কাবিল বলেছেন: প্রত্যেকেরই কমন জেন্ডারের প্রতি সহানুভূতি থাকার প্রয়োজন।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: আপনি বোধহয় কমন জেন্ডার এবং সমকামীর ভেতর পার্থক্য মিলিয়ে ফেলেছেন।

২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

কাবিল বলেছেন: লেখক বলেছেন: আপনি বোধহয় কমন জেন্ডার এবং সমকামীর ভেতর পার্থক্য মিলিয়ে ফেলেছেন।




আপনার লেখায়-

আমার সহপাঠীরা বলতো আমার ব্যবহার নাকি অন্যরকম, ঠিক ছেলেদের মত নয়। আমি চেষ্টা করতাম পুরুষালী ব্যবহার করতে কিন্তু আমার ভেতর থেকে তা আসতো না। আমি চেষ্টা করতাম মেয়েদের প্রতি নিজের আগ্রহ বাড়াতে কিন্তু কিভাবে যেন সেই আগ্রহ ছেলেদের প্রতিই আসতো ঘুরে ফিরে। একটা সময় তাই হাল ছেড়ে দিলাম।

এ গুলো কমন জেন্ডারের আচরন বলে মনে হয়েছে।
একজন সমকামীর আচরন এমন হয় জানা ছিল না।
ধন্যবাদ আপনাকে।

২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩১

আলভী রহমান শোভন বলেছেন: আমার সেই সহপাঠী লিঙ্গের দিক থেকে একজন পরিপূর্ণ পুরুষ সেই দিক থেকে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তার আচার ব্যবহারে অনেকাংশে মেয়েলী ভাব প্রকাশ পেত। এরকম হয়তো হত না কিন্তু তার শৈশবের দুর্বিষহ সৃতি তাকে এই রকম আচরণ প্রভাবিত করতো। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.