নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ একজন রিফাত সাহেবের কিছু কথা

১৪ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০০


রিফাত সাহেব সেই যে লেখা পড়া শেষ করে দেশে তেমন কোন কিছু করতে না পেরে নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করে দেশ ত্যাগ করলেন, আসবেন আসবেন বলেও আর দেশে আসা হয়নি । একবার বাবা মা দেশে রিফাত সাহেবের জন্য এক পাত্রী দেখে বিয়ে করতে আসতে বললেন হঠাৎ কর্ম স্থলে সমস্যায় পরে যাওয়ায় তখনও রিফাত সাহেব আর দেশে আসতে পারেননি । এর কিছু দিন পর মা বাবাকে না জানিয়ে হঠাৎ বিদেশী এক সাদা মেমকে বিয়ে করলেন আর তা রিফাত সাহেবের বাবা মা মেনে নিতে পারেননি, সে বিয়ে নিয়ে রিফাত সাহেবের মা বাবার সাথে অনেক বড় ধরনের একটি দন্দের সৃষ্টি হয় । একটি পর্যায় মা বাবা বলে দিলেন বিদেশী মেমকে বিয়ের কারনে তারা রিফাত সাহেবের মুখ দেখতে চান না । রিফাত সাহেবও সে রাগ অনুরাগ নিয়ে আর দেশে ফিরলেন না । আর রিফাত সাহেবের বাবা মা তারা দুজনেও কিছুদিন পরে ছেলের ওপরে অনেক দুঃখ কষ্ট অভিমান নিয়ে জীবনে মায়া ত্যাগ করেন ।
জীবন থেকে অনেকগুলো বছর পার হয়ে গেল এখন জীবনের শেষ দিকটায় এসে দাঁড়িয়েছেন রিফাত সাহেব ।
একদিন রাতের এক ঘটনা হঠাৎ রিফাত সাহেবকে অদৃর্শ্য এক ঘুম থেকে জাগিয়ে তুললো ।
বাহিরে ঝড় তুফান অনেক রাত হয় গেছে আজ এখনো ছেলে মেয়ে কেউ বাড়ি ফিরছে না কেন পথে কোন বিপদ হয়নিতো । থানা পুলিশ থেকে শুরু করে হাসপাতাল পযন্ত চারদিকে খোঁজ নেয়া হলো কোথাও তাদের কোন খোঁজ না পেয়ে রিফাত সাহেব বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লেন ।
রাত দুটোর দিকে হঠাৎ বাড়ির কলিং বেল বেঁজে ওঠলো । রিফাত সাহেব দড়জা খুলতেই দেখেন ছেলে মেয়েকে ।
রিফাত সাহেব ছেলে মেয়েকে বুকে জড়িয় ধরে সে কান্না মনে হয়েছিলো সেদিন ছেলে মেয়েকে হয়ত এজীবনে আর কখনো রিফাত সাহেব খুঁজে পাবেন না । তাই কিছু দিন ধরেই রিফাত সাহেব যখন নিজের ছেলে মেয়েকে নিয়ে সেই দিনের সে কথা ভাবেন তখনই মাঝে মাঝে তার সামনে ভেসে আসে সেই ফেলে আসা বাবা মায়ের আদর স্নেহের কথা । রিফাত সাহেব ভাবেন একদিন মাত্র কয়েক ঘন্টা আমার ছেলেমেয়েকে না দেখতে পেয়ে পাগলের মতো হয়ে যাই প্রায় মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গেছিলাম ।
তখন যেন মনে হয়েছিলো আমার দেহের কোন অংশটুকো যেন হারিয়ে ফেলেছি । ছেলে মেয়েকে না দেখার কত যে যন্ত্রনা সেদিন রিফাত সাহেব অনুভব করতে পারেন । রিফাত সাহেব তখন ফিরে যান তার পিঁছু জীবনে এই ভেবে আজ আমার ছেলে মেয়ে বড় হয়েছে আর তাদের জম্মের পর থেকে এ পযন্ত আদর ভালোবাসা যখন যা প্রয়োজন সবটুকয়ই দিয়েছি । সব সময় তাদের পাশেই রয়েছি । অথচ মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে আমাকে বেশ হাপিয়ে তুলেছে ছেলে মেয়েকে না দেখার যন্ত্রনায় । আজ বাবা মায়ের কথা বেশ মনে পড়ছে । তারাও তো আমাকে না দেখতে আমার মতই যন্ত্রনায় দিন কাটিয়েছে । তখন তাদের যন্ত্রনা গুলো না বুঝে ওঠা আমার জীবনের চরম ভুল যে ভুলের কোন ক্ষমা নেই । তাই বাবা মায়ের কবর জিয়ারতের ইচ্ছে নিয়ে দেশে আসলেন রিফাত সাহেব ।আর দেশের মাটিতে পা রেখেই রিফাত সাহেবের বুকে জম্মালো দেশের প্রতি নতুন এক মায়া । তাই সে দেশের সাথে নতুন কোন বন্ধনে জড়াতে চান ।কিন্ত কি ভাবে এ বন্ধনে জড়ানো যায় ? এখনতো সে বুড়ো হয়েগেছে,চুল কালো থেকে অধ্য সাদা হয়ে গেছে । হাজার চেষ্টা করলেও সেই ফেলে আসা দিনে ফিরে যেতে পারবেন না ।
মা বাবার সেই ইচ্ছেও আর পূরণ করতে পারবেন না ।আর মা বাবার অভিমানও ভাঙ্গানোর কোন পথ নেই । লোক মুখে শুনেছেন বাবা মা তার উপরে অনেক রাগ অভিমান নিয়ে পৃথিবী ছেড়েছেন ।রিফাত সাহেব জানেন তিনি তার বাবা মায়ের ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিদেশী মেম বিয়ে করে অনেক বড় অন্যায় করেছেন ।আর তারই শাস্তি হিসেবে বাবা মাকে শেষ দেখাতাও তার কপালে হয়নি । আর তাই ক্ষমা চাওয়ারও কোন সুযোগ পাননি । নানান ভাবনায় রিফাত সাহেবের মন ছটফট করছে । তার ভাবনা একটাই কি করলে এখন তার বাবা মায়ের আত্মা শান্তি পাবে ? তিনি এখন এরকম কিছু করতে চান যা করলে তার মা বাবার আত্মা শান্তি পাবে ।
এখন রিফাত সাহেবে এক মেয়ে এক ছেলে দুই সন্তানের বাবা । ছেলেটি বড় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছেন । মেয়েটি ছেলেটির চেয়ে দুই বছরের ছোট ।
মেয়েটিও লেখা পড়া করছে ।
মেয়েটির জম্মের এক বছর পর হঠাৎ একটি দূর্ঘটনায় দুই সন্তান ও রিফাত সাহেবকে এই পৃথিবীতে এঁকা রেখে রিফাতসাহেবের শ্ত্রী পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন ।
দেশের মাটিতে পা রেখে রিফাত সাহেব ভাবলে এদেশের মাটিতে আমি বিয়ে না করে যে ভুল করেছি তার প্রায়শ্চিত আমাকে করতেই হবে ।কিন্তু কিভাবে ? আচমকা কে যেন রিফাত সাহেবের সামনে এসে দাঁড়ালো কিরে রিফাত কি ভাবছিছ ? রিফাত সাহেব উত্তর দিলো ভাবছি পাপের প্রায়শ্চিত কি করে করা যায় ? ফের সামনে থাকা সেই লোকটি বললো তোর সব দুঃখ যন্ত্রনা বুঝতে পারছিরে রিফাত । তবে তোর এ দুঃখ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটি পথ খোলা আছে আর তা হলো যদি তোর ছেলে মেয়েকে এদেশে বিয়ে করিয়ে দিতে পারিছ তাহলে হয়ত তোর বুকে থাকা যন্ত্রনা গুলো হালকা হবে । রিফাত সাহেব লোকটিকে প্রশ্ন করলো কে তুমি ভাই আমার মনের যন্ত্র দূর করার মতো উপকারী বন্ধু ।লোকটি আচমকা উদাও রিফাত সাহেব বুঝতে পেরেছেন এই উপদেশ দেয়া লোকটি আর কেউ নয় এই লোকটা রিফাত সাহেবের ভিতরে লুকিয়ে থাকা তারই আত্মা ঘুমিয়ে থাকা থেকে জেগে ওঠা বিবেক ।

আর তাই সে বিবেকের উপদেশ হিসেবে ছেলে মেয়েকে তিনি এ দেশের মাটিতে বিয়ে দিতে চায়লেন ।কিন্ত ছেলে মেয়ে জম্মের পর থেকে বড় হওয়া লেখা পড়া সবই বিদেশের মাটিতে তারা কি এ দেশের মাটিতে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে । আর তারাই কি এই আধুনিক যুগের ছেলে মেয়ে হয়ে আমার কথা যে রাখবে তারই বা কি বিশ্বাস আছে ?
রিফাত সাহেব ভাবলেন ছেলে মেয়ে হয়ত তার মনের কষ্টগুলো বুঝবেন না,তবু তাকে যে ছেলে মেয়ের সাথে তার জীবনে ঘটে যাওয়া তার বাবা মায়ের অবাধ্য হয় বিদেশী মেম বিয়ে করা সব খুলে বলতে হবে ।
ছেলে মেয়েকে এক রাতে তার জীবনে ঘটে যাওয়া সকল দুঃখ কষ্ট আর বুকে থাকা যন্ত্রনার কথা খুলে বললেন । ছেলে মেয়ে তার যন্ত্রনাগুলো কিছুটা অনুভব করতে পারলেন তাই তারা তাদের বাবা রিফাত সাহেবের ইচ্ছে অনুযায়ী লেখা পড়া শেষ করে এ দেশের মাটিতেই বিয়ে করতে এবং এইদেশের মাটিতে থাকতে রাজি হলেন ।
রিফাত সাহেবের ইচ্ছে তিনি তার জীবনের এই শেষ দিনগুলো দেশের মাটিতেই মা বাবার কবরের পাশে থেকেই পার করবেন ।
রিফাত সাহেব ছেলে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মা বাবার কবরের পাশে গিয়ে মা বাবাকে বললেন মা বাবা আমি ভুল করেছিলাম আর
তার শাস্তি যন্ত্রনা আমার বুককে ক্ষতবিক্ষত করছে আমি বড় অনূতপ্ত। তোমরা আমাকে ক্ষমা করো । আর আমার ছেলে মেয়ে তোমাদের ভালোবেসে আমার উপদেশ অনুযায়ী তারা এদেশের মাটিতেই বিয়ে করবে তাদের জন্য দোয়া করো তারা যেন সুখী হতে পারে। ।রিফাত সাহেবের ছেলে মেয়ে বাবার ইচ্ছে অনুযায়ী দাদা দাদীর আত্মার শান্তির জন্য বিদেশের মাটিতে জম্মের পর থেকে বড় হওয়া লেখা পড়া করা সত্ত্বেও নিজ দেশের মাটিতেই এসে বিয়ে করলো ।

এটি সম্পূর্ণ একটি কাল্পনিক রচনা । যদি এর কোন বিষয় বস্তু কারো জীবনের সাথে মিলে যায় তাহলে এর জন্য লেখক কোন ভাবেই দায়ী না ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৫

মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: এটি কারও সাথে মিলবে বলে মনে হয় না।
গল্পটাই অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আছে। ধন্যবাদ মিন্টু ভাই।

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:০০

আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ মিজানুর রহমান মিরান ভাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.