নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।

আমি সত্যে অবিচল।

আনোয়ার আলী

যত অপ্রিয়ই হোক, সত্য বলতে আমি দ্বিধা করি না। আমি সদাই সত্যে অবিচল। অন্যের কাছে থেকে কিছু জানা আমার শখ।

আনোয়ার আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোরআন মানুষের মুক্তচিন্তায় বাধা দেয়?

০৩ রা জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

নাস্তিকেরা প্রায়শই যুক্তি দেন, ধর্ম বিশ্বাসীরা কোনভাবেই মুক্তমনা হতে পারে না। কেননা তারা ধর্মকেই অকাট্য মেনে বসে আছে। তাদের মাথায় আর কিছু ঢুকবে না। এসব কথায় যুক্তি আছে-কোন সন্দেহ নেই। পৃথিবীর অন্যান্য ধর্ম বিশ্বাসীদের সম্পর্কে জানি না, তবে ইসলামের ক্ষেত্রে একথাটা পুরোপুরি প্রযোজ্য নয়। আল্লাহ মানুষকে জিজ্ঞাসা প্রবন হিসাবেই সৃষ্টি করেছেন। কোরআনে এই মহাবিশ্ব ও সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে এবং ভাবতে মানুষকে উদ্ভুদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহর কুদরত সম্পর্কে চিন্তা করতে বলা হয়েছে। যারা জ্ঞান অর্জন করে আর যারা করে না তারা কি সমান? কোরআনে বলা হয়েছে, ‘--- যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান হতে পারে? জ্ঞানবান লোকেরাই উপদেশ গ্রহন করতে পারে। [সুরা আঝ-ঝুমার, আয়াত: ৯] সুরা কামার-এ বলা হয়েছে, আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব কোন চিন্তাশীল আছে কি? [৫৪: ১৭] ‘এরা কি পৃথিবীতে ঘুরে ফিরে পর্যবেক্ষণ করেনি? [সুরা হজ্জ: আয়াত:৪৬]
আল্লাহ আসমান-জমিন, রাত-দিন এবং সকল সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা গবেষনা করতে বলে। সুরা আল বাকারার ১৬৪ নং আয়াতে বলা হয়েছে, নিঃসন্দেহে আসমান সমুহ ও যমীনের সৃষ্টির মাঝে, রাত দিনের এই আবর্তনের মাঝে, সাগরে ভাসমান জাহাজ সমুহে-যা মানুষের জন্যে কল্যাণকর দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, (এর সব কয়টিতে) আল্লাহতালার নিদর্শন মজুদ রয়েছে, (আরো রয়েছে) আল্লাহতালা আকাশ থেকে যা কিছু নাযিল করেন পানির মাঝে, ভূমির নির্জীব হওয়ার পর তিনি এ পানি দ্বারা তাতে নতুন জীবন দান করেন, অতপর এই ভূখন্ডে সব ধরনের প্রাণীর তিনি আবির্ভাব ঘটান, অবশ্যই বাতাসের প্রবাহ সৃষ্টি করার মাঝে এবং সে মেঘমালা -যা আসমান যমীনের বশীভূত করে রাখা হয়েছে, তার মাঝে সুস্থ বিবেকবান সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। [২: ১৬৪]
আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে বিবেকবান জ্ঞানীরা গবেষনা করবে। এই গবেষনাকে ইসলাম সব সময়ই অনুপ্রাণিত করেছে।

ইসলাম মুক্তচিন্তা, যুক্তিবাদ, সত্যানুসন্ধান ও গবেষনার পক্ষে। ইসলাম আন্দাজে বা বদ্ধ ধারনায় বা অনুমানে নির্ভর করতে বলে না। বরং এগুলোকে নিন্দা করা হয়েছে। ‘অথচ এ ব্যাপারে তাদের কোনো জ্ঞানই নেই; তারা তো কেবল আন্দাজ অনুমানের উপর চলে। সত্যের মোকাবেলায় আন্দাজ অনুমান তো কোন কাজেই আসে না। [সুরা আন নাজম: আয়াত ২৮]
প্রশ্ন করেই জানতে হয়, জানার শেষ নেই। কেয়ামত পর্যন্ত চলবে এই জানার প্রক্রিয়া। ইসলাম কখনোই জানার পথকে রুদ্ধ করেনি। ইসলাম তার অভ্যূদয়ের প্রারম্ভ থেকেই চিন্তা ও গবেষনাকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে। তবে এই ক্ষুদ্র গ্রহের মানুষ আসলেই সবকিছু জানতে পারবে না। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘---তার জানা বিষয় সমুহের কোনো কিছুই (তার সৃষ্টির) কারো জ্ঞানের সীমা পরিসীমার আয়ত্ত্বাধীন হতে পারে না। তবে কিছু জ্ঞান যদি তিনি কাউকে দান করেন (তবে তা ভিন্ন কথা)। [সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৫] মানুষ এই মহাবিশ্বের সব কিছু জানতে পারবে না। সৃষ্টির সমস্ত রহস্য ভেদ হবে কেয়ামতের দিবসে। [সুরা আল যিলযাল, আয়াত: ৪]
আজকের এই বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানীরাও বলছেন যে তারা আসলে অনেক কিছুই জানতে পারছেন না। জানার পরিমাণ মহাসাগরে মধ্যে এক বালতি পানির সমান মাত্র। তবে জানার জন্যে বিজ্ঞান কাজ করে চলেছে নিরলসভাবে। কোরআনে ৭৫০টির মত বৈজ্ঞানিক আয়াত রয়েছে, আজ পর্যন্ত তার কোনটিই মিথ্যা প্রমাণিত হয়নি।
কোরআন তথা ইসলাম মানুষের স্বাধীন চিন্তায় বাধা প্রদান করে না। মানুষকে প্রশ্ন করতেও নিরুৎসাহিত করে না। তবে সেটা একেবারে অবাধ নয়। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস থেকে সরে গেলে সে আর মুসলমান থাকে না। মুক্ত চিন্তার অর্থ এই নয় যে, ‘যেহেতু আমি আল্লাহকে দেখিনি তাই আল্লাহকে মানি না। পরকালকে দেখিনি, পরকাল মানি না।’ এরকম লাগামহীন মুক্তচিন্তার স্থান ইসলামে নেই। ইসলাম জ্ঞানকে উৎসাহিত করেছে তবে তা ইসলামের মুলনীতিকে ধসিয়ে দিয়ে নয়। রাস্তায় যেমন গাড়ী চালাবার স্বাধীনতা আপনার আছে ঠিকই, তবে ট্রাফিক আইন মান্য করেই। স্বাধীনতার নামে লাগামহীন চালানো নয়।
ইসলাম মানুষকে সত্য ও সুন্দর পথে আসার নসিহত করে, হিকমত তথা বুদ্ধিমত্তার সাথে বিতর্ক করতে বলে। [সুরা নাহল, আয়াত: ১২৫] কোরআনকে কেউ বিশ্বাস করবে কেউ করবে না [৩১: ৪০] আল্লাহ যদি চাইতেন তাহলে জেনেটিক কোড-এ একটু পরিবর্তন করে দিলেই পৃথিবীর সকল মানুষ বিশ্বাসী হয়ে যেতো। কিন্তু তিনি তা করেননি। [সুরা ইউনুস, আয়াত: ৯৯] ধর্মের ক্ষেত্রেও তিনি জবরদস্তি করতে নিষেধ করেছেন। [সুরা বাকারা, আয়াত: ২৫৬] ইসলাম-এ বিশ্বাসীরাই মুসলমান। এ বিশ্বাসকে ধারন করেই মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা ইসলামে আছে।
ইজমা এবং কিয়াস ইসলামের অন্যতম ভিত্তি। ইজমা এবং কিয়াস মুলতঃ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ইসলামী ব্যাখ্যা। এর দ্বারা ইসলামে মুক্ত চিন্তার রূপরেখাটি আমরা বুঝতে পারি। তবে এখানেও শর্ত একটা, তাহলো কোরআনের মুলনীতির বাইরে যাওয়া চলবে না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা জুন, ২০১৫ রাত ২:২৬

বোকার হদ্দ বলেছেন: তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি? অতঃপর তুমি বার বার তাকিয়ে দেখ-তোমার দৃষ্টি ব্যর্থ ও পরিশ্রান্ত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে। (মুলক: ২-৪)।

এখানে আল্লাহ তাঁর সৃষ্টিতে কোন খুত আছে কি না তা মানুষকে খুজে বের করতে বলেছেন। অর্থাৎ প্রশ্ন করাকে, জানতে চাওয়াকে তিনি উৎসাহিত করেছেন। কারণ, তিনি জানেন তাঁর সৃষ্টিতে কোন খুঁত নেই। তিনি জানেন মানুষ খুঁত খুঁজতে খুঁজতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে যাবে। কোনো খুঁত পাবে না।
কিন্তু আমাদের অতি ধার্মিকরা ধর্মের ব্যাপারে অন্ধের মত আনুগত্য করতে বলেন। প্রশ্ন করলে ক্ষেপে যান। কল্লা কাটতে উদ্যোগী হন। কিন্তু আল্লাহ তো তেমনটা করেন না! তাই আল্লাহই সবচেয়ে বড় মুক্তমনা। এ জন্য মুমিনদেরকেও হতে হবে মুক্তমনা। অবশ্য মুক্তমনা শব্দটিকে কতক কুলাংগার এখন গালিতে পরিণত করেছে। এরা সত্যিকার মুক্তমনা নয়।

০৩ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭

আনোয়ার আলী বলেছেন: ভাই, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আপনার মন্তব্য এই লেখাকে আরো সমৃদ্ধ করল। অনেক ধন্যবাদ।

২| ০৩ রা জুন, ২০১৫ রাত ২:৪৯

প্রামানিক বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৩৯

বিজন শররমা বলেছেন: "ধর্ম বিশ্বাসীরা কোনভাবেই মুক্তমনা হতে পারে না।" - এসব স্বীকৃত সত্য নিয়ে আবার প্রশ্ন তোলা কেন ?

৪| ০৩ রা জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৫০

জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেছেন: ইসলাম ধর্মে শিক্ষিত মুসলমানরা আসলে প্রকৃত মুক্তমনা কারণ অন্য ধর্মের প্রতি সহনশীলতা, যাকাত, দান, নামজ, পারষ্পারিক শ্রদ্ধাবোধ তাদের মুক্তমনা করছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.