নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শখের গল্প লেখক

মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ

শখের বশে গল্প লিখি

মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্বীন তত্ত্ব

২৯ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৪৪


ভার্সিটিতে ভর্তির পর অরিয়েন্টেশন ক্লাসে যে ছেলেটার সাথে আমার প্রথম আলাপ হয় তার নাম মুনিম। প্রথম দিনে কাউকে না চেনা কিছুটা ইন্ট্রোভার্ট টাইপের আমি চুপচাপ বসে ছিলাম পিছনের দিকে দ্বিতীয় সারির বেঞ্চে। এক এক করে অনেকেই ক্লাসে ঢুকতে ঢুকতে এক সময় দরজা দিয়ে ক্লাসে ঢুকে টাখনুর উপরে ভাঁজ করে প্যান্ট পরা দাঁড়ি ওয়ালা এক ছেলে। বুঝলাম ছেলেটা সবার থেকে একটু আলাদা ইসলামিক টাইপের। সামনের দিকে সিট খালি না থাকায় ছেলেটা এসে আমার পাশের খালি সিটে বসে পড়লো। আমি একটু ভদ্রতাসূচক হাসি দিয়ে একটু সরে তাকে বসার জায়গা করে দিলাম। সেই থেকে ছেলেটার সাথে টুকটাক কথা হতে হতে পরিচয়। তারপর বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব পুরো ক্লাসে সবার সাথেই হয়, কিন্তু কিছু কিছু মানুষের সাথে যেমন আলাদা বন্ধুত্ব হয়, মুনিমের সাথে আমার বন্ধুত্বটাও তেমন। ক্লাসে একসাথে বসা, ব্রেক টাইমে বেশিরভাগ সময় একসাথে ক্যাফেটেরিয়াতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করা, বাইরে আড্ডা দেয়া সবকিছুতেই মোটামুটি একসাথে সময় কাটে আমাদের। এক সময় আমাদের বাড়িতেও সে যাওয়া আসা করতে থাকে। আমার বাড়ির সবাই ওকে খুব পছন্দ করে ইসলামিক মাইন্ডের হওয়াতে। আমি নামাজ রোজা কোনো রকম করলেও মুনিমের মতো প্রাক্টিসিং মুসলিম না। তাই মাঝে মাঝেই আম্মা আমাকে একটু রাগ দেখিয়ে বলে যে আমি মুনিমের মতো হতে পারিনা কেন। মুনিমকেও আম্মা বলে দেয় সে যেন চেষ্টা করে আমাকে তার সাথে সাথে মসজিদে নিয়ে যেতে, যতোটুকু পারে যেন আমাকে আরেকটু ভাল করার চেষ্টা করে।

মুনিম এমনটা হওয়ার পিছনে আরেকটা বড় কারণ আছে। সেটা হলো যে সে এতিমখানায় বড় হয়েছে। এই পৃথিবীতে ওর কেউ নেই বলেই সে জানে। অনেক ছোট থাকতে সে যখন রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতো তখন আমাদের শহরের একটা এতিমখানার হুজুরের ওকে দেখে অনেক মায়া লাগে। মায়া লাগারই কথা। মুনিমের চোখে মুখে তেমনি একটা ভাব আছে। তারপর হুজুর মুনিমকে নিয়ে যান তিনি যে এতিমখানা মাদ্রাসায় চাকরি করতেন সেখানে। সেখানেই মুনিম হুজুরের আদর যত্নে বড় হয় এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে পাবলিক ভার্সিটিতে ভর্তি হয়। মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী সেখানে সে ছাত্রদের সাথে না থাকতে পারলেও মাদ্রাসায় একদম ছোট ছোট বাচ্চাদের গণিতের ক্লাস নেয়, সে কারণে মাদ্রাসার কাছেই একটা ছোট্ট ঘরে ভাড়া থাকে। মুনিমের কথা আমার কাছে শুনে শুনে আমার আম্মারও মায়া বাড়ে তার জন্যে। এজন্যে আম্মা মাঝে মধ্যেই মুনিমকে বলে বাসায় এসে যেন খেয়ে যায় আর আমাদেরকে যেন নিজের মা ভাইয়ের মতো দেখে। মুনিমও সানন্দে তা মেনে নেয়।

অনেক সময় মুনিম আমাদের বাসায় এসে আমার সাথে আড্ডা দিতে দিতে রাতে আমার সাথেই থেকে যায়। তখন আমরা ছাদে উঠে গল্প করি। জীবনের নানান ব্যাপার নিয়ে আমাদের গল্প হয়। অতীতে কে কি করেছি, আমার কতোগুলো ক্রাশ ছিল কলেজে থাকতে, বাপ মার হাতে কতো কিছু নিয়ে প্যাঁদানি খেয়েছি আমি সেসব গল্প বলতাম আর মুনিম খুব উৎসুক হয়ে সেসব শুনতো। মাঝেমাঝে আমি ভাবতাম এসব শুনে সে কষ্ট পেত কিনা, কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে তার দিকে তাকালে দেখতাম সে জ্বলজ্বল চোখে আমার দিকে উৎসুক হয়ে সেসব গল্প শুনছে। ভবিষ্যৎ নিয়েও আমরা গল্প করতাম। কার কি করার ইচ্ছা ভবিষ্যতে সেসব আলাপ করতাম। কোনটা করলে ভাল হবে কোনটা করলে খারাপ হবে। তবে এসব গল্প করতে করতে এক সময় আমরা ছাদের উপর শুয়ে শুয়ে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে রাতের আকাশের নানান রহস্যের ব্যাপারে আলোচনা করতাম। মুনিম আমাকে অনেক ইসলামিক বিষয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর কথাও বলতো। আমি সেসব খুব আগ্রহ নিয়ে শুনতাম।

এমনি কোনো এক বৃহস্পতিবার ভার্সিটি ছুটির পর মুনিম আর আমি সন্ধ্যা পর্যন্ত বাইরে ঘুরতে ঘুরতে এশার নামাজের পর বাড়ি ফিরি। বৃহস্পতিবার এলেই আমার আর মুনিমের এইটা সাপ্তাহিক রুটিন। পরদিন শুক্রবার ছুটির দিন হওয়াতে আমরা এশার আগ পর্যন্ত বাইরে ঘুরাঘুরি করে এশার নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরি। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর আমরা চলে যাই ছাদে। সেরাতে ছাদে গিয়ে একদম চিলেকোঠার উপরে উঠে আমরা রাতের অন্ধকার আকাশের দিকে মুখ করে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ মুনিম আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকেই আমাকে বলে, “তুই জ্বীনে বিশ্বাস করিস?”

আমি বললাম, “কেন করবো না? মুসলিম হিসেবে অবশ্যই করি। যেখানে কুর’আনেই জ্বীনের কথা বলা আছে সেখানে বিশ্বাস না করলে হয়!”

“মাশা আল্লাহ্‌!” মুনিমের কন্ঠে একটা তৃপ্তির স্বর শোনা গেল। তারপর একটু রহস্যের হাসি হেসে বললো, “তোকে যদি বলি এই মুহূর্তে আমাদের সাথে এই ছাদে জ্বীন থাকতে পারে তাহলে কি ভয় পাবি?”

আমি একটু হেসে ফেললাম। বললাম, “নাহ আমি জ্বীনে ভয় পাইনা। আমি জানি জ্বীন জাতি আমাদের সাথেই বাস করে। আমাদের আশেপাশেই তাদের বিচরণ। এমনকি আমার ঘরেও যদি আমি ঘুমানোর পরে জ্বীনেরা যাওয়া আসা করে সেটা অস্বাভাবিক কিছুনা। সুতরাং ক্ষতি না করা পর্যন্ত আমি কাউকে ভয় পাইনা।”

“মাশা আল্লাহ্! মাশা আল্লাহ্‌!” মুনিম আমার কাঁধে হাত রেখে বললো। “হ্যাঁ তুই ঠিক বলেছিস। জ্বীন জাতি আমাদের মতোই আল্লাহ্‌র সৃষ্টি করা এক জাতি। তাদের মধ্যে ভাল আছে খারাপও আছে। তুই যদি প্রশ্রয় না দিস, ভয় না পাস, তাহলে কেউ তোর কোনো ক্ষতিও করতে পারবে না।”

“ইনশা আল্লাহ্‌। তবে তুই কি জানিস যে জ্বীন নিয়ে কিন্তু বিজ্ঞানেরও কিছু থিওরি আছে?” আমি বললাম।

“তাই নাকি? কেমন বলতো?” মুনিমের কন্ঠে কিছুটা কৌতুহল দেখা গেল।

“দেখ ছোটবেলা থেকে তো শুনে এসেছি মানুষ নানান সময়ে নানান ভাবে হঠাৎ হঠাৎ করে জ্বীনদের দেখতে পায়। সাধারণতঃ আবছা অন্ধকারেই তাদের বেশি দেখা যায়।” আমি আগ্রহ নিয়ে বলা শুরু করলাম। “সাধারণ ভাবে গ্রামে গঞ্জে, এমনকি আমাদের শহরের বাড়ি ঘরেও কিন্তু কারেন্ট চলে গেলে অনেকে ছায়ার মতো কিছু দেখে। আবার অনেকে সাদা পোশাক পড়া অনেক লম্বা কিছুও দেখে। আমার আসল আগ্রহ কেমন আকৃতিতে থাকে সেইটা নিয়ে না। কারণ জ্বীন জাতি যে মানুষ সহ অনেক কিছুর আকৃতি নিয়েই থাকতে পারে সেইটা আমরা সবাই জানি। হাদিস দ্বারা এগুলো প্রমাণিত। আমার আগ্রহ হলো তারা কেন এমন হঠাৎ হঠাৎ দেখা দেয় আবার হঠাৎ করেই বা অদৃশ্য হয়ে যায়? আমি বড় হওয়ার পর থেকে বিজ্ঞানের নানান বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করেছি। অনেক সাইন্স ফিকশন মুভি সিরিজও দেখেছি। একটা বিষয় নিয়ে কিন্তু বিজ্ঞানীরা মোটামুটি নিশ্চিত যে আমাদের জগতটা কিন্তু চতুরমাত্রিক জগত। আমরা ত্রিমাত্রিক জীব, সেইসাথে মহাবিশ্বে সময়ের মাত্রাটা আমরা শুধু অনুভব করতে পারি কিন্তু স্পর্শ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলে এই চারটা মাত্রার বাইরেও আরো অনেক মাত্রা থাকতে পারে। সেই মাত্রা গুলো নিয়ে আমাদের ধারণা কম তাই আমরা শুধু এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে পারি কিন্তু বাস্তবে এগুলো আমদের চোখে পড়া অসম্ভব বলতে গেলে। কিন্তু কিছু কিছু বিজ্ঞানীরা কিন্তু জ্বীনের অস্তিত্বও এখন বিশ্বাস করা শুরু করেছে। তাদের মতে জ্বীনেরা এমন একটা জগতে থাকে যে জগতটা আমাদের পরিচিত মাত্রাগুলোর বাইরে অন্য মাত্রার মধ্যে অবস্থান করছে। এই মাত্রাগুলো আমাদের ধরা ছোয়া দেখার বাইরে হলেও এইগুলা আমাদের আশে পাশেই আছে। যাকে পকেট ডাইমেনশন বলে।”

“কিন্তু এইযে জ্বীনদেরকে যে আমাদের সামনে মাঝে মাঝে দেখতে পাই ছায়ার মতো করে, এর কি ব্যাখ্যা?” মুনিমের প্রবল আগ্রহ নিয়ে জিজ্ঞাসা।

“দেখ আমরা ত্রিমাত্রিক জীব হলেও আমরা নিজেদের যে ছায়া দেখি আলোর বিপরীতে কোনো বস্তুর উপর, সেগুলো কত মাত্রার? দুই মাত্রার, রাইট?” মুনিম মাথা নাড়লো। “আমি আবার বলা শুরু করলাম। আমাদের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা থাকা স্বত্বেও আমাদের ছায়া হয় দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দুই মাত্রার। তাহলে জ্বীন জাতি যদি তিন মাত্রার বেশি বহুমাত্রিক কোনো কিছু হয়ে থাকে, তাহলে তাদের ছায়া কি ত্রিমাত্রিক হতে পারেনা? জ্বীনদেরকে যে আল্লাহ্‌ তায়ালা বেশ কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন সেইটা তো আমরা জানি। সুতরাং তাদের পক্ষে সম্ভব এই মাত্রাগুলোর মধ্যে দিয়ে যাওয়া আসা করা। এবং আমরা মানুষেরা যেহেতু তিন মাত্রার বেশি দেখতে পারিনা, তাই জ্বীনদের তিনটা মাত্রায় আমরা যা দেখতে পাই কয়েক মুহূর্তের জন্যে তার জন্যে জ্বীনদের ছায়ার মতোই লাগে আমাদের কাছে। যারা এতোকিছু বুঝেনা তারা এটা দেখে ভয় পায়। যারা ভয় পায় তাদেরকেই দুষ্ট জ্বীনেরা ভয় দেখায় আরো বেশি করে। ক্ষতিও করে।”

“বাহ!! বেশ ভাল ভাল থিওরি বের করেছিস তো! জ্বীনকে যারা বিশ্বাস করে তারা এই থিওরি একেবারে উড়িয়ে দিবেনা যদি বুঝতে পারে।” আস্তে আস্তে হাতে তালি দিয়ে বললো মুনিম। “তবে তোর কথার মধ্যে কিছুটা ফাঁক ফোকর আছে।”

“তা থাকতেই পারে। এইগুলো সবই থিওরি। আমার কাছে তো অকাট প্রমাণ নেই।” আমার অকপটে স্বীকারোক্তি।

“আমার কাছে আছে।” কথাটা কেমন বজ্রপাতের মতো বললো মুনিম।

“মানে?!” আমার বিস্ময়। মুনিমের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।

হঠাৎ করে দেখি মুনিম আমার সামনে থেকে দপ করে হাওয়া হয়ে গেল। ঠিক সাথে সাথে আমার পিছন থেকে বলে উঠলো, “জ্বীন যেমন অনেক সময় এই জগতের মধ্যে দিয়ে যাওয়া আসা করে, ঠিক তেমনি তারা জীবনের কিছুটা সময় মানুষের রূপ ধারণ করে মানুষের মতো একটা জীবন পার করে দিতে পারে।”

প্রচণ্ড বিস্ময়ে পিছনে ফিরে দেখি মুনিম আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। সে হঠাৎ করে আমার সামনে থেকে পিছনে কিভাবে চলে গেল আমার বোধগম্য হলো না। আমার মাথা কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গেল। “যেসব জ্বীন মানুষদের ক্ষতি করেনা তারা অনেকেই মানুষের সাথে বন্ধুর মতো থাকতে পছন্দ করে। মানুষের সাথে থেকে তাদের থেকে জ্ঞান আরোহণ করে।” মুনিম বলতে থাকলো। “আমিও তাদের মতোই একজন। অন্যান্য জ্বীনদের মতোই আমার আয়ুও অনেক বেশি। এতো লম্বা একটা সময়ের মধ্যে কিছুটা সময় অনায়াসে মানুষদের সাথে থেকে একটা মানুষের জীবন পার করে দেয়া যায়। আমি নিজেকে এতিমের মতো প্রকাশ করে মাদ্রাসায় এতিমদের সাথে থেকেছি। তাদেরকে বন্ধু ভেবেছি। তুইও একটা ভাল ছেলে। তাই তোর সাথে বন্ধুত্ব করেছি। আমি জানি তুই জ্বীনদের নিয়ে অনেক কিছু ভাবিস। অনেক গবেষণাও করিস। বেশিরভাগই ভুল। হা হা হা!! কিন্তু তুই যেহেতু জ্বীনদের ভয় পাস না, তাই তোকে আমার সব বলতেও দ্বিধা নাই। আশা করি তুই আমাকে বন্ধুর মতোই ভাববি সারা জীবন। ভাল কথা, কাল জুমাবার। আমি এদিন আমার জগতে আমার পরিবারের কাছে থাকি। আগামীকাল তুই আমাকে খুঁজলে হয়তো পাবিনা। আজ আসি। কাল সন্ধ্যার পর আবার দেখা হবে ইনশা আল্লাহ্‌।” এই বলে সুন্দর একটা হাসি দিল সে। আমি চোখের একটা পলক ফেলে তাকিয়ে দেখি আমার সামনে মুনিম নেই। নেই মানে কোথাও নেই। ছাদের চারিদিকে খুঁজেও আমি তাকে পেলাম না। আমি ভয় পাইনি, কিন্তু সবকিছু বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছে। একটা জ্বীন সত্যি সত্যি আমার সাথে বন্ধুত্ব করেছে এটাকে একটা স্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে। আমি কেমন একটা ঘোরের মধ্যে টলতে টলতে ছাদ থেকে নিচে নেমে আমার ঘরে বিছানায় শুতেই ঘুমিয়ে গেলাম।

পরদিন বেশ বেলা করে ঘুম ভাঙলো। ঘুম ভাঙলে সাথে সাথেই সব মনে পড়ে গেল আমার। সাথে সাথে শরীরে কেমন কাঁটা দিয়ে উঠলো। মনে হচ্ছে সারা রাত আমি স্বপ্ন দেখেছি এসব। মনে পড়ে গেল মুনিম বলছিল সে আজ থাকবেনা এই জগতে। ব্যাপারটা চিন্তা করে মোবাইলটা নিয়ে ওকে কল করলাম। কিন্তু ফোন অফ পেলাম। সারাদিন ধরে যতই কল করতে থাকলাম মোবাইল অফ পেলাম। মনে পড়ে গেল সে বলেছিল শুক্রবার সন্ধ্যার পর হয়তো আবার দেখা হতে পারে। আমি তাই সন্ধ্যার পরেই আজ ছাদে চলে গেলাম। বেশ বড় একটা গোল চাঁদ উঠেছে আজ। হয়তো পূর্ণিমা আজ। বেশ কিছুক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকার পরও যখন কিছু হলো না, মুনিমের সবকিছুকে একটা স্বপ্নই ছিল মনে করে আমি নিচে নামার জন্যে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম। ঠিক তখনি পিছনে ছাদের রেলিঙের দিক থেকে কেউ একজন বলে উঠলো, “কিরে? আমার জন্যে অপেক্ষা করছিলি? দেখা না করে চলে যাচ্ছিস?” আঁতকে উঠে পিছনে তাকিয়ে দেখি রেলিঙের সাথে হেলান দিয়ে বুকের উপর হাত ভাঁজ করে মুনিম দাঁড়িয়ে। মুখে সেই সহজ সরল সুন্দর হাসি।

সমাপ্ত।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.