![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকের প্রবাদ বাক্যটি হল “ত্রিশঙ্কু”
ব্যাবহারিক অর্থ ঃ অনিশ্চিত অবস্থায় পতিত বেক্তি ।
উৎপত্তি স্থল ঃ পুরাণবর্ণীত এক রাজা ত্রিশঙ্কুর কাহিনী থেকে প্রবাদটির উৎপত্তি হয়েছে ।
পুরাণ বর্ণীত রাজবংশ ঃ ত্রিশঙ্কু সূর্য বংশজাত ( এর আগে আর এক সূর্য
বংশীয় রাজা মান্ধাতার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে )
এবার আসা যাক সেই মজাদার গল্পে, যেখান থেকে এই প্রবাদবাক্যটি বাংলা ভাষাতে প্রবাদ হিসাবে ব্যাবহার হয়ে আসছে , আসা করি গল্পটির মাধ্যমে আপনারা প্রকৃত মর্মটি উপলব্ধি করতে পারবেন।
সূর্যবংশের রাজা ত্রিশঙ্কুর একবার ইচ্ছা হল মৃত্যুর আগে একবার সশরীরে স্বর্গে যাবেন । কেন এই অদ্ভুত আকাঙ্খা তার মনে উদয় হল সে সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানবেন আর কি ! তা যেমনই উদ্ভট শখই হোক না কেন তার তো একটা বিহিত করতেই হয় , এই রূপ ভেবে রাজা ত্রিশঙ্কু অনেক ভেবেচিন্তে তার গুরুবেদ বশিষ্ঠ মুনির শরণাপন্ন হলেন। কিন্তু বিধি বাঁধ সাধল , তার গুরুদেব বশিষ্ঠ মুনি বললেন , ‘তা হয় নয়া, এ অসম্ভব’ । অগত্যা সেই স্থানে জোরাজুরি করে লাভ নেই দেখে , সেই সময়ের মত ত্রিশঙ্কু নিরস্ত হলেও , তার মনের তীব্র বাসনা কিন্তু থেকেই গেল ।
কিছুকাল পরে রাজা ত্রিশঙ্কু তার গুরুদেব এর পুত্রদের কাছে গেলেন উপায় বার করতে এবং চরম ভুল করলেন , গুরুর পুত্রেরা বললেন, তাঁদের পিতার পক্ষে যা সম্ভব নয়, তা তাঁদের পক্ষে কি রুপে সম্ভবপর হয় ? শুধু তাই ই নয় তাঁরা তার ( রাজা ত্রিশঙ্কুর) পূর্বের কথা শ্রবণ করে প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হলেন এবং রাজাকে উপায় তো বললেনই না বরঞ্চ শাপ দিলেন এবং উপদেশ দিলেন বামুন হয়ে যেন চাঁদ না ছুতে যায় , এই রূপ আর কি ! এই শাপ এর ফলে রাজা চণ্ডালে পরিণত হলেন ।
চণ্ডাল হয়ে ত্রিশঙ্কু দেশ- বিদেশ ঘুরে বেড়াতে লাগলেন মনের দুঃখে । তার রাজপাট তো এক অভিশাপেই গেল কিন্তু তবুও তার মনের সেই সুপ্ত বাসনা গেল না । এই রূপ বহুকাল ঘুরে বেড়ানোর পর এক সময়ে তিনি বিশ্বামিত্র মুনির সাক্ষাৎ পেলেন। তার কাছে সকল ঘটনা খুলে বললে , তিনি বললেন উপায় আছে , এবং তোমার ইচ্ছা পুরন হবে ।
এইরুপ তিনি এক যজ্ঞের আয়োজন করলেন এবং নিজে হলেন সেই যজ্ঞের পুরোহিত । অনেক ঋষি রা সেই আয়োজনে যোগদান করলেও বশিষ্ঠের পুত্ররা ও আরও কয়েকজন ঋষিরা আমন্ত্রন গ্রহণ না করাতে বিশ্বামিত্র মুনি এতই রেগে গেলেন যে নিজের তেজ দিয়ে চণ্ডাল ত্রিশঙ্কুকে স্বর্গে পাঠাতে লাগলেন । এদিকে স্বর্গের দেবতারা বশিষ্ঠ মুনির পুত্রদের শাপে শাপিত রাজা ত্রিশঙ্কুকে স্বর্গে আরোহণ করতে দিলেন না ।
গুরুশাপে অভিযুক্ত বলে , দেবতারা তাঁকে মাথা নিচু করে মর্তে নেমে যেতে বললেন । ত্রিশঙ্কু যেই মর্তে অধোমুখে নেমে যেতে থাকলেন অমনি , বিশ্বামিত্র মুনি বলে উঠলেন “ তিষ্ঠ তিষ্ঠ অর্থাৎ দাঁরাও দাঁরাও বলে বেচারা ত্রিশঙ্কু কে থামিয়ে রাখলেন । এই রূপ দড়ি টানাটানিতে তার স্বর্গেও যাওয়া হল না আর মর্তেও ফেরা হল না । তিনি অনন্ত কাল শূন্যে ঝুলে থাকতে লাগলেন ।
( কথিত আছে বিশ্বামিত্র ত্রিশঙ্কুর জন্য শেষপর্যন্ত এক নক্ষত্র লোক সৃষ্টি করলেন এবং গুরু শাপে শাপিত ত্রিশঙ্কু সেই লোকে নিন্মশির হয়ে থাকতে লাগলেন )
আগের পর্বগুলির লিঙ্ক শেয়ার করা হল ঃ
বাংলা প্রবাদের আড়ালে রূপকথা ।
বাংলা প্রবাদের আড়ালে রূপকথা । পর্ব ২
বাংলা প্রবাদের আড়ালে রূপকথা। পর্ব ৩
বাংলা প্রবাদের আড়ালে রূপকথা ।পর্ব ৪
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪০
সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: ধন্যবাদ । ভাল থাকুন ।
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩০
শোয়াইব আহামাদ বলেছেন: ভাল লাগার মত পোস্ট।আশা করি পরে আরও কিছু জানাবেন।
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭
সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: চেষ্টা করব । ধন্যবাদ
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫২
ড. জেকিল বলেছেন: সংক্ষিপ্ত রুপে ইন্টারমিডিয়েটের বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম, বিস্তারিত জানলাম। ধন্যবাদ।
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৪
আমিজমিদার বলেছেন: ভালো জিনিস জানলাম
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২৪
শাফা সিদ্দিকী বলেছেন: নতুন কিছু জানলাম , ধন্যবাদ ।
৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৩
সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: সকল পাঠকদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা । ভাল থাকুন । ধন্যবাদ সকলকে ।
৭| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৩
অদৃশ্য বলেছেন:
মজার ... পড়ে গেলাম... আর অন্যগুলোও পড়বার ইচ্ছা রাখলাম...
শুভকামনা...
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬
সিস্টেম অ্যাডমিন বলেছেন: ধন্যবাদ, পাশে থাকার জন্য । ভাল থাকবেন আর সময় পেলেই একবার ঢুঁ মেরে যাবেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল।