![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী । রাজাকারদের ফাসি দাও ।
এ প্রজম্মের হাটথুব ইভটেজার আক্কাশ, চিত হয়ে কাত হয়ে বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে বন্ধুকে দিয়ে নিজের ছবি তুলাচ্ছে। যেভাবেই হোক তাকে স্মার্ট হতেই হবে। এলাকায় নতুন আসা মেয়েটা মোরের দোকানের সামনে দিয়ে কোচিং-এ যাবার পথে আক্কাশের দিকে প্রায় আড় চোখে তাকায়। মেয়েটাকে ছবি গুলো আর সাথে একটা প্রেমের চিঠি দিয়ে একা থাকার বন্ধাত্বটা ঘুচাতে হবে। আক্কাশ এলাকার নাম করা তরুন ইভটেজার। প্রেম তাকে যেভাবেই হোক করতেই হবে। আক্কাশের বন্ধু বলল দোস্ত যেভাবে তোকে ছবি গুলো তুলে দিলাম তাতে দারুণ স্মার্ট লাগছে কোন রকম মেয়েটাকে ছবি গুলো দেখালেই হবে। দেখবি তোর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।বন্ধুকের গুলি মিস হবে তোর প্রেম মিস হবে না। এবার শুধু এলাকায় তোর ইভটেজার ইমেজটাকে বদলাতে হবে। দেখবি মেয়েটা চেলচেলাইয়া তোর প্রেমে পড়ে গেছে। আক্কাশ খুশি হয়ে সবগুলো দাত বের করে বলল দোস্ত তাড়াতারি বল কিভাবে ইমেজটা ভাল করা যায়?
-ইমেজ ভালো করা কোন ব্যাপার হল!সামনে ইলেকশন আসতেছে। তোকে শুধু বাবা পার্টিতে যোগ দিতে হবে। তারপর হরতাল মিটিং মিছিলে অসহায় জনগনের উপর বোমা মেরে তামা তামা করে দিবি। দেখবি অল্প দিনেই তুই ত্যাগি নেতা হিসেবে প্রতিষ্টা পাবি।
-আক্কাশ আনন্দে গদগদ হয়ে বলল দোস্ত ইমেজ ভাল করা এত সহজ আগে জানতাম না।
-এই দেশে সবই সম্ভব। আরেকটা কথা তোর সাধারন নলেজও বাড়াইতে হবে। বল দেখি আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় দেশ প্রেমিক কে?
-আমাকে তুই বোকা পেয়েছিস! এটাতো আন্ডা-বাচ্চা সবাই জানে। আবুল ভাই হল দেশের সবচেয়ে বড় দেশ প্রেমিক কিছুটা ভাব নিয়ে বলল আক্কাশ।
-তোরতো দেখি অনেক বুদ্ধি! শুধু এটা জানলেই হবে না আমাদের এত বড় দেশ প্রেমিককে নিজেদের আদর্শ হিসেবে নিতে হবে! বুঝলি?
-হুম জানি। এর জন্যইতো আমি এলাকায় যে নতুন কাঠের সাকু হবার কথা সেখানে দশ পারসেন্ট চাদা চাইব বলে ঠিক করেছি খুশি হয়ে বলল আক্কাশ।
-তাই নাকি!আমি তোকে নিয়ে গর্বিত আক্কাশ। দেখবি চাদার কেলেংকারী ফাশ হবার পরই নেতা কর্মিরা তোর সম্মন্ধে বিভিন্ন বির্বিতি দিবে । দৈনিক পত্রিকা গুলোতে হেড লাইন হবে “আক্কাশ বাংলাদেশের শেষ্ঠ দেশপ্রেমিক“!!
-দোস্ত বলিস কি! আমারতো খুশীতে মরে যেতে ইচ্ছা করছে!
আক্কাশ মোরের দোকানে বসে চা খাচ্ছে। মেয়েটা দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। আক্কাশ উঠে গিয়ে মেয়েটার পথ আগলে দারিয়ে বলল- হাই, আমি আক্কাশ খান।এলাকার সবাই আমাকে এক নামে চিনে। তোমার নাম কি? কি কর? মেয়েটা লাজুক সুরে বলল আমার নাম রিতা। আমি ইউনিভার্সিটির ভর্তি কোচিং করছি।
-ও আচ্ছা। তুমি এলাকায় নতুন আসছ কোন সমস্যা হলে আমাকে বলবে। ঠিক আছে?
-ঝি আচ্ছা আক্কাশ ভাইয়া লাজুক সুরে বলল মেয়েটা।
-আক্কাশের মনে কেমন যেন সুখের দোলা দিয়ে যাচ্ছে। সে মেয়েটার দিকে বিরহী ভাব নিয়ে তাকিয়ে বলল শুন এই যে দোকানটা দেখছ তোমার যখন যা দরকার হবে তা নিয়ে যাবে টাকা দিতে হবে না। শুধু আমার কথা বলবে।
দিন যায় মাস যায় আর দোকানের বিল দিতে দিতে সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আক্কাশের পকেট ও খালি হতে থাকে। মাঝে মাঝে মেয়েটা আক্কাশের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে লাজুক সুরে কথা বলে। আক্কাশ এখন পুরাই দেওয়ানা। চেহারায় কেমন যেন একটা কবি কবি ভাব চলে এসেছে। আক্কাশ বলতে চেয়ে ও মনের কথা বলতে পারে না। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে বুক ফুটে তো মুখ ফুটে না এইতো নারীর মন। আক্কাশের খানের হইছে এই দশা বুক ফুটেতো মুখ ফুটে না এইতো আক্কাশের মন।
আক্কাশ আজ সাহস নিয়ে বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে তোলা নিজের ছবি আর প্রেম পত্র নিয়ে মোরের দোকানের সামনে দারিয়ে আছে মেয়েটাকে দিবে বলে। মেয়েটাকে আসতে দেখে আক্কাশ এগিয়ে গিয়ে বলল তোমার সাথে কিছু কথা আছে। কি বলবেন আক্কাশ ভাইয়া তারাতারি বলেন আমার একটু তারা আছে। আক্কাশ সিনেমার স্টাইলে ছবি আর চিঠিটা দিয়ে বলল আর আক্কাশ ভাইয়া না শুধু আক্কাশ বলবে। তোমার আক্কাশ! বুঝেছ? মেয়েটা লাজুক সুরে বলল আক্কাশ ভাইয়া তুমি না ভারি দুষ্ট। লজ্জা শরম নাই বলেই চলে গেল! আক্কাশের মনে তখন বাংলা সিনেমার গান বেজে উঠল “এইতো প্রথম একটি মেয়ে আমার প্রেমে পড়েছে/ পাগল করেছে /আমায় যাদু করেছে ”।
পরদিন আক্কাশ সকাল থেকে মেয়েটার জন্য দোকানের সামনে অপেক্ষা করে না পেয়ে ওদের বাসায় যায়। গিয়ে দেখে বাসায় তালা। পরে খোজ নিয়ে জানতে পারে মেয়েটার কোন ইউনিভার্সিটিতে যেন চান্স পেয়েছে তাই গতকাল রাতে সরিবারে সেখানে চলে গেছে। তার পর থেকেই আক্কাশ এক গাল দাড়ি রেখে শাহ-জাহান সেজে বসে থাকে মোরের দোকানের সামনে। এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আজকাল তাকে আক্কাশ পাগলা বলে ক্ষ্যাপায়। (শেষ)
©somewhere in net ltd.