![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্পর্স করতে চাই তাকে কিন্তু কিছুতেই পারিনা,তবুও আসায় আছি তার পথ চেয়ে।
বিশ্ব ইজতিমা ও তাবলীগ জমাআত সম্পর্কে আমার কিছু কথা এবং তারা কি ভ্রান্ত দল ? (পর্ব ২)
( বি: দ্র: ঘাড় তেড়া আর বিচার মানি তাল গাছ আমার,এই লেখাটি এজাতীয় লোকদের জন্য নয় তারা না পড়লেই ভাল হয় )
এই পোস্ট পড়ার আগে পুর্বের পোস্টটি দেখে নেওয়া যাক
লেখাটির উদ্দেশ্যঃ ব্লগিং আর ফেসবুক,ইন্টারনেট এর সামান্য অভিজ্ঞতায় যা জানতে পেরেছি তা হলো, সত্য-মিথ্যাকে গুলিয়ে ফেলে কিংবা মিথ্যার আঘাতে সত্যকে নিষ্পেষিত করে ধোঁকাবাজি করাই অনেকের নিকট ব্লগিং-এর স্বার্থকতা। এমনই কিছু ‘ব্লগার-কলঙ্ক’(সোহান চৌধুরী সহ আর অনেকেই) বিশ্বজনীন “দাওয়াত ওয়া তাবলীগ জামাত”এর অবিতর্কিত মেহনতের সমালোচনায় পেশাদারী মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন, এবং মিমাংসিত কিছূ অবান্তর প্রশ্নের অবতারণা করে সরলমনা দাঈ ও মুবাল্লিগদের সাথে প্রতারণার পাঁয়তারা করছেন। এমতাবস্থায় আমার উপর ওয়াজিব হয়ে পড়েছে, আমার সাধ্যানুযায়ী এসব মিথ্যাচারের কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জবাব দিয়ে সর্বসাধারণের আকীদা সংশয়মুক্ত রাখা। তাই সিরিজ আকারে সেই সব বানোয়াটি আপত্তির যথাযথ জবাবের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এবং কয়েকটি পর্বে উপস্থাপন করব ইনশা আল্লাহ ! আল্লাহ তা’আলা আমাদের সব নেক আমলকে কবুল করুন। আমীন।
তাবলীগ জমাআত সম্পর্কে কিছু অবান্তর প্রশ্ন ও তার জবাব ।
দাওয়াতি কাজের গুরুত্ব ও ফযীলত এত অধিক, যা কোনো মানুষ বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনুধাবন করতে পারে না। পবিত্র কালামের অসংখ্য আয়াত যার উজ্জ্বল সাক্ষী। আল্লাহ তা’আলা বলেন “ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি আহবান করেছে, সৎ কাজ করেছে এবং বলেছে, আমি অনুগতদের একজন” (সূরা হামীম আসসাজদাহ : ৩৩)
আল্লামা শাববীর আহমদ উছমানী রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন, এই আয়াতে ঐ সকল বিশেষ প্রিয়ভাজন বান্দার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা একক আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপন করে নিজেদের স্থিরতা ও দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছে। এখানে তাদের অপর একটি উচ্চ মর্যাদার কথা আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ উত্তম ও উৎকৃষ্ট লোক সেই ব্যক্তি যে একমাত্র আল্লাহর জন্য নিজেকে নিবেদিত করে তাঁর আনুগত্য ও নির্দেশ পালনের ঘোষণা দেয়, তাঁর মনোনীত পথে চলে এবং দুনিয়াবাসীকে তাঁর দিকে আসার আহবান জানায়। তার কথা ও কাজ অন্যদেরকে আল্লাহর পথে আসার জন্য প্রভাবিত করে। লোকজনকে সে যে সকল ভালো কাজের দাওয়াত দেয় সে নিজেও সেগুলো আমল করে। আল্লাহর বন্দেগী ও আনুগত্যের ঘোষণা প্রদানে কোন সময়ে কোন স্থানে সামান্যতম সংকোচও বোধ করে না। তার জাতীয় পরিচিতি শুধু ইসলাম। সকল প্রকারের সংকীর্ণতা ও গোষ্ঠীপ্রীতি ত্যাগ করে নিজে খাঁটি মুসলমান হওয়ার ঘোষণা প্রদান করে এবং যার দাওয়াত দেওয়ার জন্য সাইয়েদুনা মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান হয়েছিলেন এবং যার জন্য সাহাবায়ে কিরাম রা. নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
সূরা নাহলের ১২৫নং আয়াতে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ডাকো স্বীয় প্রতিপালকের পথে পরিপক্ক কথা বুঝিয়ে এবং উত্তমরূপে উপদেশ শুনিয়ে। আর তাদেরকে বিতর্কে নিরুত্তর করো উত্তম পন্থায়।”
এই আয়াতে খোদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তা’লীম দেওয়া হচ্ছে মানুষকে কিভাবে পথে আনতে হবে। এর তিনটি পন্থা বলা হয়েছে।
১) الحكمة,
২) الموعظة الحسنة,
৩) الجدال بالتي هي أحسن
الحكمة অর্থাৎ মযবূত দলিল-প্রমাণের আলোকে হিকমত ও প্রজ্ঞাজনোচিত ভঙ্গিতে অত্যন্ত পরিপক্ক ও অকাট্য বিষয়বস্তু পেশ করতে হবে, যা শুনে সমঝদার ও জ্ঞানবান রুচিসম্পন্ন লোক মাথা ঝুঁকিয়ে দিতে বাধ্য হয়। দুনিয়ার কাল্পনিক দর্শনাদি তার সামনে ম্লান হয়ে যায়। কোনো রকম জ্ঞান-বিজ্ঞান ও চিন্তা-চেতনার বিকাশ যেন ওহী-বর্ণিত তত্ত্ব ও তথ্যকে পরিবর্তন করতে না পারে।
الموعظة الحسنة -এর দ্বারা মনোজ্ঞ ও হৃদয়গ্রাহী উপদেশকে বোঝানো হয়েছে, যা কোমল চরিত্র ও দরদী আত্মার রস ও আবেগে থাকবে পরিপূর্ণ। নিষ্ঠা, সহমর্মিতা, দরদ ও মধুর চরিত্র দিয়ে সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় যে নসীহত করা হয় তাতে অনেক সময় পাষাণ-হৃদয়ও মোম হয়ে যায়, মৃত দেহে প্রাণ সঞ্চার হয় এবং একটি হতাশ ও ক্ষয়ে যাওয়া জাতি গা ঝাড়া দিয়ে জেগে ওঠে। মানুষ ভয়-ভীতি ও আশাব্যঞ্জক বক্তব্য শুনে লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে চলে প্রবল বেগে, বিশেষত যারা অতটা সমঝদার, ধীমান ও উচ্চ মেধা-মস্তিষ্কের অধিকারী নয়, অথচ অন্তরে সত্য-সন্ধানের স্পৃহা প্রবল, তাদের হৃদয়ে মনোজ্ঞ ওয়ায-নসীহত দ্বারা এমন কর্ম-প্রেরণা সঞ্চার করা যায়, যা উঁচু জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দ্বারাও অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না।
হ্যাঁ, দুনিয়ায় সব সময় একটা দল এমনও থাকে, যাদের কাজই হচ্ছে প্রতিটি বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি করা এবং কথায় কথায় হুজ্জতবাঁজি করা ও কূটতর্কে লিপ্ত হওয়া। এরা না হিকমতপূর্ণ কথা কবুল করে, না ওয়ায-নসীহতে কান দেয়। তারা চায় প্রতিটি বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের ময়দান উত্তপ্ত থাকুক। অনেক সময় প্রকৃত বোদ্ধা, ন্যায়নিষ্ঠ ও সত্যানুসন্ধিৎসু স্তরের লোকদেরও সংশয়-সন্দেহ ঘিরে ধরে, আলোচনা-পর্যালোচনা ছাড়া তখন তাদেরও সন্তোষ লাভ হয় না। তাই الجدال بالتي هي أحسن এর বিধান রাখা হয়েছে-‘আর তাদেরকে বিতর্কে নিরুত্তর কর উত্তম পন্থায়।’
অর্থাৎ কখনো এমন অবস্থার সম্মুখীন হলে তখন উৎকৃষ্ট পন্থায় সৌজন্য ও শিষ্টাচার এবং সত্যানুরাগ ও ন্যায়-নিষ্ঠতার সাথে তর্ক-বিতর্ক করো। প্রতিপক্ষকে নিরুত্তর করতে চাইলে তা উত্তম পন্থায় করো। অহেতুক বেদনাদায়ক ও কলজে-জ্বালানো কথাবার্তা বলো না, যা দিয়ে সমস্যার কোনো সুরাহা হয় না; বরং তা আরও প্রলম্বিত হয়। উদ্দেশ্য হওয়া উচিত প্রতিপক্ষকে বুঝিয়ে সন্তুষ্ট করা ও সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। রুক্ষতা, দুর্ব্যবহার, বাক-চাতুর্য ও হঠকারিতা কখনো সুফল দেয় না। (তাফসীরে উছমানী ২/৬২৮-৬২৯)
অন্য জায়গায় আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন “মহাকালের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু তারা নহে, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও সংযমের উপদেশ দেয়।’ (সূরা আসর)
এক কথায়, অনিবার্য বিপদ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষের চারটি বৈশিষ্টার্জন অপরিহার্যঃ
১) আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং তাদের হিদায়াত ও প্রতিশ্রুতির প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা, চাই তা দুনিয়া সম্পর্কিত হোক, কিংবা আখিরাত সম্পর্কিত।
২) সেই ঈমান ও ইয়াকীনের প্রভাব কেবল মন-মানস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না রাখা; বরং সর্বাঙ্গে তা ফুটিয়ে তোলা এবং বাস্তব জীবনেও আন্তরিক বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটানো।
৩) কেবল নিজের ব্যক্তিগত সংস্কার ও কল্যাণ নিয়েই তুষ্ট না থাকা, বরং দেশ ও জাতির সামষ্টিক স্বার্থকেও সম্মুখে রাখা। দু’জন মুসলমান একত্র হলে নিজের কথা এবং কাজের দ্বারা একে অপরকে সত্য দ্বীন মেনে চলার এবং প্রতিটি কাজে সত্য ও সততা অবলম্বনের তাকীদ করা।
৪) প্রত্যেকে একে অপরকে এই নসীহত ও ওসীয়ত করা যে, সত্য ও ন্যায়ের ক্ষেত্রে এবং ব্যক্তিগত ও জাতীয় সংস্কার-সংশোধনের ক্ষেত্রে যত বাধা-বিপত্তি, যত অসুবিধা ও বিপদাপদ দেখা দিবে, এমনকি যদি মন-মানসের বিরোধী কাজও বরদাশত করতে হয় তাহলেও ধৈর্য্য ও সবরের সঙ্গে তা বরদাশত করতে হবে। পুণ্য ও কল্যাণের পথ থেকে পা যেন কখনো ফসকে না যায় এই ওসীয়ত করতে হবে। যে সৌভাগ্যবান ব্যক্তির মধ্যে এই চারটি গুণের সমাবেশ ঘটবে এবং যিনি নিজে পূর্ণাঙ্গ হয়ে অন্যদেরকে পূর্ণাঙ্গ করার চেষ্টা চালাবেন, কালের পৃষ্ঠায় তিনি অমর হয়ে থাকবেন। আর এমন ব্যক্তি যেসব নিদর্শন রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেবেন তা ‘বাকিয়াতে সালেহাত’ তথা অবশিষ্ট নেক কাজ হিসেবে সর্বদা তার নেকীর খাতায় সংযোজিত হবে। বস্তুতঃ এই ছোট সূরাটি সমস্ত দ্বীন ও হিকমতের সার-সংক্ষেপ। ইমাম শাফেয়ী রাহ. যথার্থ বলেছেন যে, কুরআন মজীদে কেবল যদি এই সূরাটিই নাযিল করা হতো, তাহলে (সমঝদার) বান্দাদের হিদায়াতের জন্য যথেষ্ট ছিল। পূর্ববর্তী মনীষীদের মধ্যে দু’জন একত্র হলে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় তারা একে অপরকে সূরাটি পাঠ করে শুনাতেন। (তাফসীরে উছমানী ৪/৭৪৫)
আল্লাহ তা’আলা সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেন “তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকতেই হবে, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দিবে ও অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখবে। আর তারাই সফলকাম। (সূরা আল ইমরান, আয়াতঃ ১০৪)
আল্লাহ তা’আলা আরো ইরশাদ করেন, “আর তুমি বুঝাতে থাক। কারণ বুঝানো ঈমানদারদের উপকারে আসে।” (সূরা যারিয়াতে, আয়াত : ৫৫)
এসব আয়াতের ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে এত বেশী নিমগ্ন ও ব্যস্ত হয়ে পড়েন, যেন তিনি জীবনের বিনিময়ে হলেও তাঁর উম্মতকে হিদায়াত করে ছাড়বেন। ফলে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, “যদি তারা (আপনার দাওয়াত) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে আমিতো আপনাকে (দাওয়াত গ্রহণ করিয়ে জাহান্নাম থেকে) হেফাযতকারী হিসেবে পাঠাইনি। আপনার জিম্মাদারী হলো, শুধু তাবলীগ করা। (সূরা শুরা, আয়াতঃ ৪৮) অর্থাৎ দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব আপনি পরিপূর্ণভাবে পালন করেছেন। এখন আপনার এত দুঃখিত ও অনুতপ্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সত্য না মানার যা দোষ তা সত্যদ্রোহীদের উপরই বর্তাবে। তবে বুঝোনো আপনার দায়িত্ব। তাই দাওয়াত ও তাবলীগের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখুন। যার ভাগ্যে ঈমান আছে আপনার উপদেশে সে উপকৃত হবে, ঈমান আনবে এবং যারা ইতোপূর্বে ঈমান এনেছে তারা আরও বর্ধিত হারে উপকৃত হবে। আর অস্বীকারকারীদের জন্য আল্লাহর প্রমাণ পূর্ণ হবে। (তাফসীরে উছমানী ৪/৩২১)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠুন, সতর্কবাণী প্রচার করুন এবং আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন।’ (সূরা মুদ্দাসসির : ১-৩)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় উম্মতের জন্য এত বেশী ফিকির করতেন এবং উদ্বিগ্ন থাকতেন যে, আল্লাহ তা’আলা তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “তারা যদি এ বিষয়ে বিশ্বাস না করে তবে তাদের পেছনে মনস্তাপ করতে করতে হয়ত আপনি প্রাণপাত করে ফেলবেন।” (সূরা কাহফ : ৬)
অর্থাৎ এই কাফিররা যদি কুরআনের কথা না মানে, তো আপনি তাদের দুঃখে মোটেই পেরেশান হবেন না। আপনি দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব আদায় করেছেন ও করে যাচ্ছেন, কেউ না মানলে আপনার অতটা মর্মাহত ও চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এই ভেবে অনুতাপ করাও সমীচীন নয় যে, আমি এমন মেহনত কেন করলাম যা সফল হল না? আপনি সর্বাবস্থায় সাফল্যমন্ডিত। দাওয়াত ও তাবলীগ এবং মানবতার প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতার যে কাজ আপনি করছেন তা আপনার মর্যাদা বৃদ্ধির সহায়ক। হতভাগার দল কবুল না করলে ক্ষতি তাদেরই। (তাফসীরে উছমানী ২/৭০১)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হওয়ার কারণে আমাদের উপরও দাওয়াতের কাজ জরুরি। যেমন সূরা ইউসুফে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “বলুন, এটিই আমার পথ। আল্লাহর দিকে আমি আহ্বান করি বুঝে-শুনে, আমি (করি) এবং যারা আমার সঙ্গে আছে (তারাও করে)। আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছি এবং আমি শরীক সাব্যস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই। (সূরা ইউসুফ, আয়াতঃ ১০৮)
অর্থাৎ এই খাঁটি তাওহীদের পথই আমার পথ। আমি বিশ্ব মানবতাকে আহবান করি যে, সমস্ত ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা ছেড়ে এক আল্লাহর অভিমুখী হও এবং তাঁর তাওহীদ, তাঁর গুণাবলি ও বিধি-বিধান ইত্যাদির বিশুদ্ধ জ্ঞান বিশুদ্ধ পন্থায় অর্জন কর। আমি ও আমার সঙ্গীগণ অকাট্য দলিল-প্রমাণ এবং বিশুদ্ধ উপলব্ধি ও ব্যুৎপত্তির আলোকে এই সত্য সরল পথে প্রতিষ্ঠিত আছি। আল্লাহ তা’আলা আমাকে এক আলো দান করেছেন, যাতে সব সাথীর দেল-দেমাগ সমুজ্জ্বল হয়ে গেছে। কারও অন্ধ অনুকরণ নয়, বিশুদ্ধ তাওহীদের পথচারী প্রতিটি কদমে তার মন-মানসে আল্লাহর মারিফত ও অর্ন্তদৃষ্টির বিশেষ জ্যোতি ও পরম দাসত্বের স্বাদ উপলব্ধি করে অবচেতন মনে বলে ওঠে-‘আল্লাহ পবিত্র। আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ (তাফসীরে উছমানী ২/৪৫৯)
বিচিত্রময় এ বিশ্ব চরাচরের সৃষ্টবস্তু যেমন বৈচিত্রপূর্ণ, সৃষ্টি কৌশলও তেমন বিচিত্র, বৈচিত্রমণ্ডিত তেমন সৃষ্টিত্বত্তও। অবাক বিষ্ময়ে তাই সব নয়নই যেন আশ্চর্য বিষ্মিত! মহান মালিক, তিনি শুধু সৃজনেই স্রষ্টা নন; বিজনেও। এ মহা বৈকুণ্ঠের সেরা বৈচিত্রের মাঝে তাই জেগে ওঠে বিচিত্রময় প্রশ্নচর। এ জাগরণ প্রতিকুলতার নয়; প্রতিভার উদগীরণ। এ জাগরণ প্রতিহিংসার নয়; বুদ্ধির বিকিরণ। এটি জ্ঞান সাগরের চরোদ্ভাবন। প্রাকৃতিক এটি, তাই স্বাভাবিক! এ জাগরণ স্বাভাবিক হলেও বোধন সঠিক হওয়া বিধেয় নয় কি? এ পোস্টখানা সেই সঠিক বোধন-এরই যৌগিক উপকরণ, তাত্বিক ও তাথ্যিক বিবরণ, হাদীস ও কুরআন কেন্দ্রিক সংকলন। এতে প্রধাণতঃ দুটো বিষয় পাওয়া যাবে।
পরের টুকু আগামি পর্বে ইনশা আল্লাহ ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১০
স্পর্শ বলেছেন: জি জনাব
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
কোটী কোটী দরিদ্র মানুষ জীবনে কিছুই পায়নি: শিক্ষা, একটা চাকুরী, চিকিৎসা কিছুই পায়নি; শুনে শুনে ধর্মটাকে জড়ায়ে ধরে আছে; এর থেকে বেশী কিছু নয়, দুস্টদের বন্চনার স্বাক্ষর।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১১
স্পর্শ বলেছেন: মোবারাকবাদ জনাব !
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫১
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রিয় ভাই,
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ।
পূর্ববর্তী পোস্টে মন্তব্য করেছিলাম। জবাব দেন নি। হয়তো ব্যস্ত ছিলেন। আবারতো দেখি কারও জবাব দিয়েছেন। এই পোস্টে যাতে আপনি জবাব দেয়াটা জরুরী মনে করেন তাই সালাম দিয়ে দিলাম।
লম্বা পোস্ট। সময় করে পড়ার চেষ্টা থাকবে।
এগিয়ে যান।
ভাল থাকবেন।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:১৫
স্পর্শ বলেছেন: ওয়ালাইকুমুস সালাম জনাব! ! জি আসলেই ব্যাস্ততা হোক আর খামখেয়ালি হোক আপনার জবাব না দেওয়ায় আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ইনশা আল্লাহ সম্পুর্ন পোস্ট পড়ুন অনেক জবাব পাবেন আসা করি ভাল থাকবেন! !
৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:২৭
মাকার মাহিতা বলেছেন: কুরআন ও হাদীস ভিত্তিক চমৎকার আলোচনা।
সত্যিকার অর্থে হক এর দাওয়াত দিলে এবং হক প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে বাতিলের সাথে সংঘর্ষ অবিশ্ব্যম্ভাবী।
কিন্ত, যদি হকের দাওয়াত দিতেই থাকেন,দিতেই থাকেন কিন্তু রাষ্ট্রীয় অথবা সামাজিক ভাবে তা প্রতিষ্ঠা করার কোন পদক্ষেপ না থাকে তবে বাতিলপন্থীরা আপনাকে ওয়েলকাম জানাবে।
এইখানেই বিধিবাম।
৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯
বক বলেছেন: তাবলীগ জামাত আলহামদুলিল্লাহ খুবি কার্যকরভাবে কাজ করে যাচ্ছে গাফেল ভাইদের কে দ্বীনের রাস্তায় তুলে দিতে। কিন্তু দ্বীনের রাস্তায় উঠার পর তাকে ধার দিতে (Sharpening) কি করা হচ্ছে?
উদাহরণস্বরুপ আত্মবিনাশকারি যে স্বভাব গুলো মানুষের মধ্যে থাকে (যেমন রিয়া, লোভ, বিভ্রান্তি ইত্যাদি) -সেগুলোর স্বরুপ জানা এবং তার থেকে নিজেকে রক্ষা করা ফরজে আইন ( কোনো কেফায়া নয় )। আমি যদি তাবলিগের উসুলের উপর আমার জীবন অতিবাহিত করি তাহলে কিভাবে এটা আমার অর্জন হবে?
এটা কিন্তু কিতাবি কোনো বিষয় না যে , আমি গাস্ত করে এসে বাসায় বসে পড়ে নিলাম আর আল্লাহর আইন আমি আমার নিজের রাজত্বের (নফস, রুহ, দেমাগ) উপর প্রতিষ্ঠিত করে ফেললাম।
এখন বলেন কিভাবে আমি তাবলীগের উসুলের উপর আমল করতে গিয়ে ( চিল্লায় বা ৩ দিনে গিয়ে) এই বিষয় টা অর্জন করব? বিকালে গাস্তের পর? নাকি রাতে মুজাকারা করার পর নাকি তালিমের সময়?
আর যদি বলেন তাবলিগের উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে দিলে তাগিদ তৈরি করে দেয়া। তাহলে ত এই তাগিদ কেউ পেয়ে গেলে, সে যদি সত্যিকারভাবে তা অর্জনের চেস্টা করে সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাকে উসুলের ব্যঘাত ঘটাতে হবে।
তখন ত তাকে অনান্য তাবলীগের ভাইয়েরা বিভ্রান্ত মনে করা শুরু করবে।
আমার কাছে তাবলিগের একটা আয়তন আছে। গাফেল মানুষদেরকে দ্বীনের রাস্তায় তুলে দেয়া অবশ্যই অনেক অনেক উচা কাজ। কিনতু চুড়ান্ত সফলতা নয়।
গাফেলদেরকে দ্বীনের রাস্তায় তুলে দিয়ে তাকে অবশ্যই অবশ্যই সাহেবিদের , পুর্ববর্তী বুজুর্গদের মতে ইমানের ধার দিতে হবে। নইলে এটা অনেকটা এরকম হবে---
কাগজের ছুরি নিয়ে ইটের দেয়াল (তাগুতি শক্তি) ভাংগার জন্য খুচিয়েই যাচ্ছি দেয়াল আর ভাংগেনা।
অথচ পুর্ববর্তী বুজুর্গগন কাগজের ছুরি নয় ইমানের বোলডোজার দিয়ে সংখায় অল্প হয়েও দেয়াল (তাগুতি শক্তি) গুড়িয়ে দিয়েছেন।
৬| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১১
বক বলেছেন: মওলানা ইলিয়াস (র: ) এজন্যই তাবলিগের কাজকে বলেছিলেন ইমানের আন্দোলন। কিন্তু দু:খজনক, এটা অনেকটা দাওয়াতি আন্দোলন হয়ে গেছে।
গাফেলকে দ্বীনের রাস্তায় তোলা এবং সাথে সাথে পরিপূর্নভাবে ইমানকে পরিচর্যা করা দুটিই বর্তমান তাবলীগে থাকলে কতই না ভাল হতে। শুধু ৩১৩ জন হলেই হতো কোটি কোটি লাগত না
ইনশাআল্লাহ, আল্লাহপাক আমাদেরকে অবশ্যই পথ দেখাবেন। হয়ত তাবলীগের ভিতর থেকেই, নয়ত নতুন কোন জামাত অসমাপ্ত এই লাখ কোটি ইমানের বীজ থেকে (যা বর্তমান তাবলিগ ভাইদের মেহনতের ফসল) পরিপুর্ন বৃক্ষ তৈরির জন্য পরিচর্যার কাজটি করবেন।
কিন্তু ফিকির থাকা চাই, যেটা ছিল মওলানা ইলিয়াস (র: )
৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৫৮
নতুন নকিব বলেছেন:
প্রিয় বক,
"মওলানা ইলিয়াস (র: ) এজন্যই তাবলিগের কাজকে বলেছিলেন ইমানের আন্দোলন। কিন্তু দু:খজনক, এটা অনেকটা দাওয়াতি আন্দোলন হয়ে গেছে।
গাফেলকে দ্বীনের রাস্তায় তোলা এবং সাথে সাথে পরিপূর্নভাবে ইমানকে পরিচর্যা করা দুটিই বর্তমান তাবলীগে থাকলে কতই না ভাল হতে। শুধু ৩১৩ জন হলেই হতো কোটি কোটি লাগত না।
ইনশাআল্লাহ, আল্লাহপাক আমাদেরকে অবশ্যই পথ দেখাবেন। হয়ত তাবলীগের ভিতর থেকেই, নয়ত নতুন কোন জামাত অসমাপ্ত এই লাখ কোটি ইমানের বীজ থেকে (যা বর্তমান তাবলিগ ভাইদের মেহনতের ফসল) পরিপুর্ন বৃক্ষ তৈরির জন্য পরিচর্যার কাজটি করবেন।
কিন্তু ফিকির থাকা চাই, যেটা ছিল মওলানা ইলিয়াস (র: )" -আপনার বক্তব্যে সহমত।
বেশি ভাল লাগল আপনার আন্তরিক আশাবাদ এবং সত্যকে স্বীকৃতিদানের অনবদ্য প্রচেষ্টা- "ইনশাআল্লাহ, আল্লাহপাক আমাদেরকে অবশ্যই পথ দেখাবেন। হয়ত তাবলীগের ভিতর থেকেই, নয়ত নতুন কোন জামাত অসমাপ্ত এই লাখ কোটি ইমানের বীজ থেকে (যা বর্তমান তাবলিগ ভাইদের মেহনতের ফসল) পরিপুর্ন বৃক্ষ তৈরির জন্য পরিচর্যার কাজটি করবেন।"
ভাল থাকবেন নিরন্তর।
৮| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:২৫
স্পর্শ বলেছেন: মন্তব্যকারীদের সবাইকে আন্তরিক মোবারাকবাদ !!
যারা তাবলিগের আংশিক বা পুর্ন বা পুর্ন বিরোধিতা করছেন তাদের উদ্দেস্য বলব জনাব সম্পুর্ন সব গুলি পর্ব পড়ুন জবাব পাবেন আপনার প্রশ্নের যদি না পান লাস্ট পর্বে করিয়েন! আর এখন জবাব দেওয়া হচ্ছে না কারন কিছু কিছু প্রশ্নের জবাব আমার পর্বগুলিতে আছে! !
আর হা আপনাদের বলছি হা
আপনি আমি তো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষেই দাওয়াতী কার্যক্রম চালিয়ে যেতে শিখেছি। উম্মতের এই করুণ ও নির্মম অবস্থায় যারা নিজের সময়, শ্রম, তথা টাকা-পয়সা খরচ করে পথ ভোলা মানুষদের সঠিক পথের সন্ধান দিচ্ছে, মসজিদ ভোলা মুসলমানদের মসজিদ পানে নিয়ে আসছে, কলিমা ও নামাজের সাথে শতভাগ অপরিচিত, বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধ, যাদের কোন শিক্ষালয়েই এডমিশন হবে না, তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে যারা দ্বীনের প্রাথমিক কথাগুলি শিক্ষা দিচ্ছে, সমাজের অবহেলিত ঐ মুসলমানদের হাতে-পায়ে ধরে যারা আল্লাহর ঘর মসজিদে প্রবেশ করাচ্ছে, সেই তাবলীগ জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য ও নেতীবাচক পোস্ট দেখে অবাক হওয়া ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না?
যারা তাবলীগ জামাতের সমালোচনায় পঞ্চমুখ, তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা! আজ পর্যন্ত কতজন আল্লাহ ভূলা মুসলমানকে মসজিদে নিয়ে আসতে পেরেছেন? এমন কতজন মুসলমানকে কলিমা শিখিয়েছেন, যারা কলিমা না জেনেই বয়সের ভারে পিঠ বাঁকা হয়ে গিয়েছে? এমন কতজন মুসলমানকে সূরা ফাতেহা শিখিয়েছেন, যাদের দাড়ী সাদা হয়ে গিয়েছে? এমন কতজন মুসলমানকে পবিত্রতা অর্জনের শিক্ষা দিয়েছেন, যারা পবিত্রতা আর অপবিত্রতার ফারাকই বোঝে না? এমন কতজনকে হালাল-হারামের শিক্ষা দিয়েছেন? বান্দার হক্ব আর আল্লাহর হক্বের পরিচয় শিখিয়েছেন?
অবশেষে বলতে চাই, প্রথমে কমপক্ষে নিঃস্বার্থ ভাবে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে নিজের সময়, শ্রম ও অর্থকড়ি খরচ করে দ্বীনের দাওয়াতী কাজ করে দেখান! অবহেলিত-উপেক্ষিত, কুশিক্ষা আর অশিক্ষায় জর্জরিত মুসলমানদের দ্বারে দ্বারে-ঘুরে ঘুরে, হাতে-পায়ে ধরে মসজিদে নামাজের কাতারে এনে দাড় করান। আলহামদু সূরাটি শিখান! এবং ঘোষণা করুন! ইন আজরিয়া ইল্লা আলাল্লাহ- কারো নিকট কোন প্রত্যাশা নয় বরং একমাত্র আল্লাহর কাছেই সকল প্রত্যাশা। অতঃপর তাবলীগ জামাতকে বলুন! আপনাদের মধ্যে অনেক ভূল রয়েছে, শুধরিয়ে নিন।
৯| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:১০
বক বলেছেন: "অবশেষে বলতে চাই, প্রথমে কমপক্ষে নিঃস্বার্থ ভাবে, একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে নিজের সময়, শ্রম ও অর্থকড়ি খরচ করে দ্বীনের দাওয়াতী কাজ করে দেখান!..........."
আপনার উত্তর দেখে হতাশ হলাম। মনে হচ্ছে আপনার সাথে তর্ক হবে তাহকিক হবে না।
কোন আমলের কত ওজন তা বুঝা আপনার আমার সাধ্যে নেই। উপরন্তু নির্দিষ্ট আমলের ডোমেইন বা সেট যাদের করা তাদের জন্য ত আরো কস্টকর। আপনি যদি ভাবেন দাওয়াতকে নির্দিষ্ট ছাচে ফেলে বাকি সব বাতিল বা ছোট আমল তা হলে বড়ই ঝুকির বিষয়।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০৫
শাহাদাৎ হোসাইন (সত্যের ছায়া) বলেছেন: চালিয়ে যান।