নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

সব ‘শালা’ই সাধু হতে চায়

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:২৭

জসীম অসীম



আমি দৃঢ় চিত্তে বলছি যে-আমি সাধু নই। অথচ আজকাল সব ‘শালা’ই নিজেকে সাধু প্রমাণ করতে চায়। অথচ সাধুর ত্যাগের সাধনা সবার থাকে না। হঠাৎ দেখায় যাকে সাধু মনে হয়-অনেকদিন ধরে তার সঙ্গে গভীরভাবে মিশলে দেখা যাবে-সে হয়তো আসলে একজন বড় মাপের ভন্ড লোক। এমন অনেকই হয়। অথচ ওসব ভন্ড লোক সর্বদাই সাধুর মুখোশ পরে নিজেকে সাধু প্রমাণ করতে ব্যস্ত থাকে। কারণটা কী! কারণ হলো-সাধুর শ্রদ্ধা লাভ করা। কিন্তু ত্যাগের বেলায় নেই-ভোগের সময় ওরা করবে সর্বোচ্চ ভোগ-আবার সমাজে পরিচয় দাঁড় করাবে মুনি-ঋষি-সাধুর অবিকল রূপে। এসব ভন্ড সাধুর ভীড়ে আজকাল প্রকৃত সাধুকেই খুঁজে পাওয়াই কঠিন। এ অল্প বয়সেই আমি এমন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যে যার দ্বারা প্রমাণ হয়-কী নারী-কী পুরুষ-কী ‘আমি কিংবা সে’ সর্বত্রই এই ভন্ডামী ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আমার এসব অভিজ্ঞতা এখন কোনো কাজে লাগে না। কারণ অভিজ্ঞতাগুলো কোনোভাবেই লেখা যায় না। অথচ আমার মূল উদ্দেশ্য ছিল ডকুমেন্টারী লেখালেখি। আমার বয়স খুব অল্প কিন্তু কৌতূহল খুব বেশি। এসব কৌতূহলের সমাধান করতে বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি-যার অনেকাংশই কোথাও প্রকাশ অসম্ভব। আর বাস্তব ঘটনাও মনে হবে অবিশ্বাস্য। অথচ প্রকাশ না করতে পারার যন্ত্রণাও আমাকে কুরে কুরে খায়। লেখার বিষয়ে আমি খুব বেশি সহিংস-কোথাও কোথাও নৃশংসও। অথচ লিখে ছাপানো যায় না। কুমিল্লা শহরের নামকরা একটি হোস্টেলে থাকতো এক মেয়ে-তাকে নিয়ে একবার আমি বগুড়ায় যাই একটি কাজে। মেয়েটি হোস্টেল থেকে ছুটি নিয়েছিল বাড়িতে যাবে বলে। হোস্টেল কর্তৃপক্ষ জানেনি কখনো সে আমার সঙ্গে যাবে। মেয়েটির সঙ্গে আমার গভীর বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু প্রেম ছিল না। সেই মেয়েটি একসময় আমাকে বিয়ে করতেও চাইলো। কেন-তার ব্যাখ্যা পাওয়া কঠিন। আমি রাজি হলাম না তখন আমার চালচুলো ছিল না বলে। অথচ একই সময়ে এই মেয়েটি আরেকটি প্রেমও করেছিল একটি খুব গরীব ছেলের সঙ্গে। এ বাণিজ্যিক সময়ে কেন সে প্রেম করার জন্য একটি গরীব ছেলে বেছে নেয়-তার ব্যাখ্যাও আমার জানা ছিল না। ছেলেটি একটি কোম্পানীতে সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের কাজ করতো। একটি ব্যাগ নিয়ে সারাদিন রোদবৃষ্টিতে হেঁটে বেড়াতো সে।

একদিন মেয়েটি সেই ছেলেটির সঙ্গে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। অথচ ছেলেটিকে আমি আগে থেকেই চিনতাম। ছেলেটি এত আন্তরিক ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটিকে ও আমাকে কুমিল্লা শহরের ... রেস্টোরেন্টে নিয়ে যায়। খাওয়ার বিল দেয় সেই ছেলেটিই। বিল আসে পাঁচশত টাকার উপর। আমার খুব কষ্ট হয় মেয়েটি তার জীবনের সব কথা ছেলেটিকে খুনে বলে না বলে। বলা হয়তো খুবই ঝুঁকির। কিন্তু না বলাটা কি অনৈতিক নয়? কিংবা সেই ছেলেটি কি কখনোই জানতে পারবে না মেয়েটি একদা অল্পজনগামী ছিল! মানুষ মানুষণকে এভাবে ঠাকাতে পারে? এসব কথা লেখা সরাসরি রিপোর্টিং নয়-তবে সমাজের চরিত্র-মানুষের চরিত্র গিয়ে কোথায় ঠেকেছে-তার কিছুটা অনুমান করা যায়। শুধু একটি মেয়েকে দিয়ে উদাহরণ দিলেও এমন চরিত্রের অসংখ্য নারী-পুরুষের বিষয়ে আমি লিখছি না-কিন্তু তারপরও কিভাবে যে লেখাটি ঐসব পাত্রপাত্রীদের কাছ পর্যন্ত চলে যায় এবং তারপরই শুরু হয় আমার উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড়। আমি লিখে কারো ব্যক্তিগত ক্ষতি বাড়াতে চাইনা। বুঝতে-বুঝাতে চাই শুধু আমেরিকা কিংবা বুশ-ওবামা-ক্লিনটন নয়-অনৈতিক কর্মকান্ডে আমাদের দেশ এবং আমরাও খুব কম পিছিয়ে নেই। অথচ নাম উল্লেখ করে বলার উপায় নেই। আমি যদি বলি যে আমার চরিত্র ভালো না-তাহলে আমার সংসারে আগুন জ্বলবে-যদি বলি আমি ঘুষখোর-আত্মীয় স্বজন সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না। যদি আমি বেনামাজী-তাহলে মরলে ঈমাম আমার জানাজা পড়াবেন না। অথচ সব অপকর্ম করলেও ক্ষতি নেই-যদি লুকিয়ে করি-অথবা স্বীকার না করি। চুরি করো ক্ষতি নেই-ধরা পড়লে কিংবা স্বীকার করলেই ক্ষতি-ভাবটা এখন এমন। এই অবস্থানটি কি সমাজের শেষ অবস্থান হতে পারে? এই প্রশ্নগুলোর অনেকাংশেরই এক ধরনের উত্তর চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় তার চলচ্চিত্র ‘শাখা প্রশাখা’য় দিয়ে গিয়েছেন। হারাধন ব্যানার্জি-অজিত ব্যানার্জি-মমতাশংকর-সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও রঞ্জিত মল্লিকের সুনিপুন অভিনয়ে উঠে আসে সমাজের অসংখ্য অসঙ্গতির চিত্র। কথা হলো সত্যজিৎ তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পেরেছেন শৈল্পিকভাবে-আর আমি আমার অভিজ্ঞতাকে শৈল্পিকভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। সত্যি আমার অভিজ্ঞতা কোনো কাজে লাগে না। কারণ আমি সাহস করে সব লিখতে পারি না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.