নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুমিল্লার সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহর একটি অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকার

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৪



জসীম অসীম

২০০০ সালে কুমিল্লার সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ উল্লাহর একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছিল ...। ... তখন আমার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। ‘সুকান্ত’ নামে তখন তার একটি সাহিত্যের কাগজ করার কথা ছিল। সেই কাগজের জন্য সে তখন অনেক লেখকের কাছ থেকেও কবিতা-গল্প সংগ্রহ করেছিল। কুমিল্লার আঞ্চলিক পত্রিকাগুলোতে একটু-আধটু লেখালেখিও করছিল। সেই পত্রিকার জন্যই সে মোহাম্মদ উল্লাহর এ সাক্ষাৎকারটি সংগ্রহ করেছিল। ২০০২ সালের ফেব্র“য়ারিতে মতান্তর-পথান্তরের কারণে ...র সঙ্গে আমার সংসার ভেঙে যায়। ...র মায়ের সঙ্গে রাগ করে সংসার ছেড়ে একদিন যে বের হয়ে আসি-তাদের সবার শত অনুরোধেও আর ফিরে যাইনি। বরাবরই চরমপন্থায় বিশ্বাসী ছিলাম। মধ্যপন্থা অবলম্বন করতে পারতাম না। একসময় ছেড়ে দিলাম সব রাজনীতিই। শ্রদ্ধাভাজন রাজনৈতিক গুরুরা আমার চোখে হয়ে উঠেন আপোষবাদী লম্পট। দুঃখে-ক্ষোভে-হতাশায় ক্রমাগতই সব বিশ্বাস ভেঙে গেল আমার, যেমন করে চোখের সামনেই ভেঙে গেল তারও আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন।

২০০২ সালের ১ অক্টোবর মোহাম্মদ উল্লাহ মারা যান। মৃত্যুর পূর্বে তিনি হয়ে উঠেছিলেন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত তখন তিনি আমার জন্য ভাত নিয়ে বসে থাকতেন। তার মৃত্যুর পরও ...র নেয়া এ সাক্ষাৎকারটি আমি কোথাও ছাপাতে দেইনি। এ সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ উল্লাহর জীবনের অনেক অজানা তথ্য উঠে এসেছে।



‘আমরা স্বার্থের রাজনীতি করিনি’ -মোহাম্মদ উল্লাহ

.... ঃ আপনি তো একজন পত্রিকার সম্পাদক। বয়সেও প্রবীণ। এখন থেকে অনেক বছর আগেও সমবায়ী আখতার হামিদ খানের সমবায়ীদের পত্রিকা ‘সমযাত্রা’র সম্পাদক ছিলেন। ঠিক কখন আপনি পত্রিকা পড়া শুরু করেন এবং সেটা কোন পত্রিকা?

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ ১৯৫১ সাল। সেকালে পূর্ববঙ্গের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক অন্ধকার যুগে একটি বাংলা শব্দ ‘সংবাদ’ নাম ধারণ করে বের হলো দৈনিক সংবাদ। আমার বয়স তখন ২১ বছর। মূলত সেই পত্রিকা দিয়েই আমার সিরিয়াসলি পত্রিকা পড়া শুরু।

... ঃ তখন তো আপনি ছাত্র। আমি শুনেছি তখন আপনি রাজনীতি করতেন।

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ হ্যাঁ। ছাত্র ছিলাম। রাজনীতিও করতাম। ছাত্র আন্দোলনে আমি একজন ক্ষুদ্র কর্মী ছিলাম। তখনও পর্যন্ত আমাদের কর্মের সীমানা ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের চার দেয়ালের সীমানায় সীমাবদ্ধ। আমার যাবতীয় অন্ধকার বিরোধী কাজকর্ম শুরু করেছিলাম। আমাদের ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফ্রন্ট (ডিএসএফ) এর ধারাবাহিকতায় ১৯৫১ সালের ২৭ মার্চ জন্ম নেয় পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ। তারপর ত্রিপুরা [বৃহত্তর কুমিল্লা] যুবলীগ শাখা গঠিত হল। আমার কোনো সংবাদ পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা কাগজে খুব কমই ছাপা হতো।

...: আপনার কথায় বারবার সংবাদ পত্রিকার কথা উঠে আসছে কেন?

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ ১৯৫১ সনের মে মাসে মুসলিমলীগ নেতৃত্বের উদ্যোগেই প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদ। যেহেতু আমরা পাকিস্তান রাষ্ট্রকে অন্ধ অনুসরণ করতাম না, সেহেতু প্রথম প্রথম আমরা সংবাদ সম্পর্কে তেমন উৎসাহী ছিলাম না। কিন্তু ১৯৫১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমাকে ত্রিপুরা জেলার যুবলীগ শাখার সম্পাদক নির্বাচিত করা হয় । এ সংবাদটি তখনকার সংবাদ এ ছাপা হয়েছিল। তাছাড়া জেলা যুবলীগের অনেক সংবাদ ছাপা হতো।

... ঃ কিভাবে সংবাদ পত্রিকার ভক্ত হয়ে গেলেন?

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ আমরা আসলে সংবাদ পাঠ করতাম কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজের পাঠকক্ষে বসে। একসময় লক্ষ্য করলাম যে মুসলিম লীগারদের এই দৈনিকটিতে ব্যতিক্রম অনেক বিষয় রয়েছে। আমাদের নীতি আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ লেখালেখি দেখেই সংবাদ বেশি পড়তাম এবং এক সময় সংবাদ পত্রিকাটি আমার প্রিয় হয়ে উঠে।

... ঃ আচ্ছা সংবাদ পত্রিকা ছাড়া অন্য কোনো পত্রিকার গল্প কি কিছু মনে পড়ে?

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ না। জেলা যুবলীগের সম্পাদক হিসেবে আমি দৈনিক সংবাদ এ আমার সংগঠনের খবর পাঠাতাম। তখন মূলত ভাষা আন্দোলনের লগ্ন। প্রায়ই সংবাদ অফিসে চলে যেতাম। কখনো কখনো অনেক রাত করে যেতাম। কতোবার যে রাতের বেলা মেঝেয় কাগজ বিছিয়ে থেকেছি। তখন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী দৈনিক সংবাদ-এ কাজ করতেন।

.... ঃ রাজনীতি তো করতেন। জেল খেটেছেন কখনো?

মোহাম্মদ উল্লাহ ঃ অবশ্যই। আমরা তো আর স্বার্থের রাজনীতি করিনি। তখন দেশের জন্য জেল খাটতে পারলে বীরের মর্যাদা পাওয়া যেত। জেল খেটেছিদেশের জন্য... কতোবার।

প্রথম প্রকাশ: সাপ্তাহিক নিরীক্ষণ, কুমিল্লা।

প্রকাশকাল: ১৭ ডিসেম্বর ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.