![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।
।। জসীম অসীম ।।
১ বৈশাখ ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ। সকাল। ঢাকায় বাংলা একাডেমির বটতলার মঞ্চের খুব কাছে থেকে একাডেমির বিভিন্ন আয়োজন উপভোগ করছি। এমন সময় মঞ্চে উঠে এলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। বাংলাদেশের প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী।
আমি তখনও হারমোনিয়াম বাজানোর নিয়ম জানিনি। শুনে শুনে শিখেই বিভিন্ন জায়গায় খালি কণ্ঠে রবীন্দ্র সংগীত গাই এবং কনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় আর বন্যার গাওয়া রবীন্দ্র সংগীতের অডিও সংগ্রহ করি। শুনি তাদের সব গান মুগ্ধ হয়ে। শরীরে প্রচন্ড তারুণ্য-কিছু একটা করতে চাই। নববর্ষের অনুষ্ঠান শেষে সকল দর্শক-শ্রোতা যখন চলে যাচ্ছিল-আমি তখন তুমুল ভিড় ঠেলে বন্যার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম-আমি বাংলাভাষা ও সাহিত্যে অনার্স পড়ি। রবীন্দ্রনাথ আমার দারুনভাবে পাঠ্য। রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি-র প্রায় সব গান আমার মুখস্থ। অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থিয়েটারও করি। আপনার এক ভাইও আমার সঙ্গে থিয়েটার করেন। আমি আপনার সঙ্গে একটুখানি কথা বলতে চাই।
বন্যা বললেন-বলুন। কী জানতে চান? আমি বললাম-রবীন্দ্রসংগীত-আমার বিবেচনায় সকল সংগীতের সেরা সংগীত-কিন্তু আমাদের দেশে তা তত জনপ্রিয় নয় কেন? বিশেষ করে গ্রাম-বাংলার মানুষ কি সেরকমভাবে রবীন্দ্রসংগীত : শুনে? রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা বললেন-রবীন্দ্র সংগীত বাংলাদেশে ক্রমাগত জনপ্রিয় হচ্ছে। কারণ রবীন্দ্র সংগীত চর্চার ক্ষেত্রে এখন তো আর পাকিস্তান আমলের মতো বাধা নেই। সে সময় রবীন্দ্রনাথ এখানে একপ্রকার নিষিদ্ধই ছিল। একসময় বাংলাদেশ পাকিস্তান হয়ে থাকার কারণে এখানে রবীন্দ্র সংগীতের চর্চা অনেক পিছিয়ে ছিল। এখন সে অবস্থা না থাকলেও চর্চার শূন্যতা পূরণে আরও অনেক সময় লাগবে। তাছাড়া রবীন্দ্রসংগীত শোনা এবং গাওয়ার জন্য যতটা শিক্ষা এবং মার্জিত রুচি দরকার-তাও বিবেচনায় রাখার বিষয়। তবে বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানে ছিল-তখনই আমরা রবীন্দ্রসংগীতের চর্চায় সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে পড়ি। প্রচন্ড আবেগে আমি তখন রবীন্দ্র সংগীত বিষয়ে আরও দুটি প্রশ্ন করতে চাই রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে। কিন্তু তিনি আর তখন কথা বলতে সম্মত হননি। বললেন-বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রনাথ আপনার পাঠ্য জেনেই একটু দাঁড়ালাম-কথা বললাম-সত্যিই এখন- আমার তাড়া আছে।
©somewhere in net ltd.