নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চলো আমরা পাখিদের কাছ থেকে ইউক্লিডের নতুন পাঠ নেই জীবনানন্দের পাঠ নেই নিউটনের আপেল গাছটি থেকে।

জসীম অসীম

লেখা হলো কেতকীফুল। ভালোবাসি তাই।

জসীম অসীম › বিস্তারিত পোস্টঃ

“মুইজ্জার নির্বাচনী এলাকা চইদ্দগ্রাম-রাজনীতি করে কুমিল্লা শহরে” (রিপোর্টারের ডায়েরি)

০৭ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:৪৮





জসীম উদ্দিন অসীম:

২৭ জুন ২০১১। সোমবার । রাত। আমি কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছায় নেমে রিকশায় উঠি কান্দিরপাড়ে আসবো বলে। কান্দিরপাড় আসার আগেই , বাদুরতলা থাকতেই দেখলাম কান্দিরপাড় থেকে উল্টো দিকে দৌড়ে পালাচ্ছে সবাই। আমি যে রিকশার যাত্রী ছিলাম , সে রিকশার ড্রাইভারও ভাড়া নিয়ে দৌড়ে চলে গেল উল্টো পুলিশ লাইনের দিকে। আমি এগিয়ে এলাম টাউনহল সুপার মার্কেটের দিকে , যে মার্কেটকে এখন অধিকাংশ লোকই ‘বাহার মার্কেট’ বলে। একজনকে বললাম ঘটনা কী ? বললো , জানিনা। ততক্ষণে দোকানপাটও সব বন্ধ। একজনকে সরাসরি রিভলবার হাতেও দৌড়াতে দেখলাম আমি। ততক্ষণে একাধিক অটোরিকশার সামনের গ্লাসও ভাঙ্গা হয়েছে।

পরে জানলাম , কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণার পরই শহরের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কেননা ঘোষিত ১৫ সদস্যের কমিটিতে হুইপ মুজিব সমর্থিত সদস্যই ১১জন। আর বাকী ৪জন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য হাজী বাহার সমর্থিত।

একসময় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তখন আমি হাজী বাহার সমর্থিত ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ অবস্থানের খুব কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম । বাহার সমর্থিত একজন ছাত্রলীগ নেতা চিৎকার করে তার কর্মীদের বললেন , এখন আর একটি ককটেলও ফুটাবি না। ঐ দেখ কতো পুলিশ নামছে। পুলিশকে আমরার পাল্টা পক্ষ কইরা দাঁড় করানো হইছে । কমিটি গঠনে এমন বৈষম্য করা হইলো , অথচ এখন প্রতিশোধ নেওয়ারও ব্যবস্থা নাই। হুইপ মুজিব আয় , তালি বাজাইলে সামনাসামনি আয়। পুলিশের সঙ্গে তালি বাজাইতে চাই না। বাহার সমর্থিত আরেক ছাত্রলীগ নেতা বলেন , প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারী হুইপ মুইজ্জার লোক। সাংগঠনিক সম্পাদক শিপন বাহার ভাইয়ের কর্মী হইলেও আমি হুনছি হে নাকি আফতাবুল ইসলাম মঞ্জুরে দিয়া লবিং কইরা কমিটিতে আইছে। কারণ তারার উভয়ের বাড়ি ছোটরা এবং ...।

বাহার সমর্থিত ছাত্রলীগের আরেক নেতা বলেন , হুইপ মুইজ্জার নির্বাচনী এলাকা চইদ্দগ্রাম, লবিং করে ঢাকায় , রাজনীতি করে এই কুমিল্লা শহরে। এই মুইজ্জা নিজের হাতে লাঠি না তুইল্লাই লাঠালাঠি লাগাইয়া দেয়। আর শালার কুমিল্লার সাংবাদিকরা আফজল খান আর হাজী বাহারের বিরুদ্ধে জীবনে এত রিপোর্ট করলো , কিন্তু মুইজ্জার বিরুদ্ধে কোনো রিপোর্টই করলোও না , করেও করে না।

ঠিক এমন সময়েই আবার ফাঁকাগুলির শব্দ শোনা গেল। কিছু মহিলা রিকশা না পেয়ে উর্ধ্বশ্বাসে বাসার দিকে ছুটছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেলো। মানুষ আবারও দৌড়াতে লাগলো। আমি এগিয়ে এলাম পূবালী চত্বরের দিকে। পূবালী চত্বরের দখল নিয়েছে তখন পুলিশ। এগিয়ে গেলাম , দেখলাম নজরুল এভিনিউ রোডে নবনির্বাচিত কমিটি সমর্থিত ছাত্রলীগের অবস্থান। টাউনহল সুপার মার্কেটের সামনে তাদের যেতে বারণ করছে পুলিশ। অন্যদিকে বাহার সমর্থিত ছাত্রলীগ পারলে যেন মাঝখানের পুলিশকে ডিঙিয়েই হুইপ মুজিব সমর্থিত ছাত্রলীগের সঙ্গে লাগে। এমন সময় আবার হৈ চৈ শুরু হলো , চতুর্দিকে শুধই শোনা গেল ‘আইয়েরে... আইয়েরে... আইয়েরে...।’ তারপর আমি এগিয়ে গেলাম রামঘাট আওয়ামীলীগ অফিসের দিকে। ওখানে গিয়ে দেখলাম , ওখানের চেয়ে বরং নজরুল এভিনিউ রোডেই ছাত্রলীগ কর্মীদের উপস্থিতি বেশি। রামঘাটের আপ্যায়ন রেস্টুরেন্ট তখনও খোলা ছিল। চা খেতে আমি রেস্টুরেন্টের ভিতরে ঢুকে গেলাম। হুইপ মুজিব সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতাদের কথা আর শোনার সুযোগ হলো না আমার। তখন আর সে দিকে যাওয়ার কোনো পরিস্থিতিই ছিল না। কারণ চতুর্দিকে তখন শুধু একটিই ধ্বনি : ‘আইয়েরে...আইয়েরে... আইয়েরে... ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.