নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"সত্তর হাজার বার 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' পাঠ করার পর তার সওয়াব মৃত ব্যক্তির নামে উৎসর্গ করলে মৃত ব্যক্তি জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত পায়।" এই কথাগুলো হাদিস নয়, বরং হাদীসের নামে মনগড়া বয়ান, বানানো কথা। ইমাম ইবনে তাইমিয়াকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, "এটা তো সহি হাদিস নয়ই, এমনকি জয়ীফ হাদিসও নয়। 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' একটি যিকর। এ যিকর নির্দিষ্ট সংখ্যায় পাঠ করা এবং এরূপ ফজিলত লাভ করার কথা হাদীসে নেই।"
উপরের কথাগুলো নেওয়া হয়েছে অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল আজিজ সংকলিত ও অনুবাদকৃত "যঈফ ও মওজু হাদিসের সংকলন" থেকে।
ইদানিং দেখা যাচ্ছে, যে কোন বিপদের কথা বলে বা মহামারীর কথা উল্লেখ করে অথবা সওয়াবের কথা উল্লেখ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ধরনের মিথ্যা হাদিসের রেফারেন্স দিয়ে, অথবা কোনরকম রেফারেন্স ছাড়াই কিছু মেসেজ ছড়ানো হয়। এতে সর্বমোট পঞ্চাশ হাজার বার বা দশ লক্ষ বার বিভিন্ন যিকর বা আল্লাহর নাম পড়ার কথা বলা হয়। আপনাকে করতে হবে মাত্র ৫ বার এবং মেসেজটা পাঠিয়ে দিতে হবে আরো ২০ জনের কাছে। কোন মেসেজে উল্লেখ থাকে, "আপনি আমল করার পর এই মেসেজটিকে অন্য ২০ জনের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। তাহলে তিন দিনের মধ্যেই আপনি একটি সুখবর অবশ্যই পাবেন। আর যদি না করেন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।"
#করোনাভাইরাস #মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর, সেদিন আমি একটা মেসেজ পেলাম, তাতে লেখা ছিলঃ "আগামীকাল সকাল দশটায় সারা দুনিয়ায় একসাথে সালাতুত তওবার নামাজ আদায় করা হবে। এই মেসেজটা পুরো দুনিয়ায় ভাইরাল করে দিন, যাতে সবাই একত্রে নামাজ পড়তে পারে।" এই ধরনের মেসেজ পাওয়ার পর আমাদের অনেক সরল প্রাণ মুসলমান এটাকে সওয়াবের কাজ মনে করে এতে অংশগ্রহণ করে থাকেন। অথচ এই ধরনের এবাদতের পদ্ধতির স্থান ইসলামে নেই। এটা সুস্পষ্টভাবে ‘এবাদতের নতুন আবিস্কৃত পদ্ধতি’ অর্থাৎ সুস্পষ্ট #বেদায়াত। ফলে, এতে সত্যিকার অর্থে কোন প্রকার সওয়াব হওয়া তো দূরের কথা বরং "বেদায়াত" কাজ করার কারণে সকল উদ্যোক্তা এবং অংশগ্রহণকারীকে গুনাহগার হতে হবে।
কোন বিশেষ মুসিবত থেকে পরিত্রাণের জন্য এবং বিপদ মুক্তির জন্য ব্যক্তিগতভাবে আল্লাহর কাছে আমরা মোনাজাত ও দোয়া করতে পারি। এটাই শুধু ইসলাম সম্মত। এর মাধ্যমে বরং আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্ক তৈরি হবে।
ভাবাবেগে আপ্লুত হয়ে এবং "এটা করলে অসুবিধা কি!" ধরনের কথা বলে আমরা নতুন কিছু আবিষ্কার করার প্রয়োজন নেই। ইবাদতের ক্ষেত্রে, নিজের ভাবাবেগ থেকে নিজের মর্জি মতো অথবা অন্য ধর্মের অনুসারীদের অবলম্বন করে নতুন কোন পদ্ধতি আবিষ্কার করা অত্যন্ত দোষণীয়। "পরিপূর্ণ ধর্ম ইসলামে" এবাদত করতে হবে যেভাবে আল্লাহর রসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং তাঁর সাহাবীগণ করেছেন কেবলমাত্র সেই নিয়মেই। কোন পীরে কামেল, মুরুব্বী, বুজুর্গ অথবা আউলিয়ার দেখানো পদ্ধতি ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। 'নতুন আবিষ্কার' মানেই 'বেদায়াত'। আর, বেদায়াত ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয় এবং এর শাস্তি হচ্ছে জাহান্নামের আগুন! আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আমাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করুন এবং সঠিক শুদ্ধ ইসলাম অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন।
আশরাফ আল দীন।। শিক্ষাবিদ, কবি, গবেষক ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা।
মিরপুর, ১২/০৪/২০২০
২| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:৪১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: Ameen
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৩:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: