নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পার্শ্ববর্তী একটা ভবনে আগুন লাগলো। বিরাট ভিড়। পুরো ভিড় রুদ্ধশ্বাসে দেখছে ২০ তলা ভবনের গা বেয়ে নেমে আসা একদল মরিয়া মানুষকে। অন্য অনেকের মত আমিও এই দৃশ্য ধারণ করা শুরু করলাম দুরালাপনী যন্ত্রের স্মৃতি-ভাণ্ডারে। কৃতকর্মের জন্য কিছুটা অনুশুচনাও হচ্ছিল। নিজেকে এই বলে প্রবোধ দিচ্ছিলাম যে, “আমার এখানে কিছুই করার নেই”। আমারি মত আরও শ-খানেক “লাজুক!” ধরনের মানুষদের ভিড়ে দাড়িয়ে ছিলাম নিজের লজ্জাটুকু আড়াল করে।
এসময় দেখলাম একজন মহিলা ৩ তলা থেকে বারান্দার লোহার শিক আঁকড়ে ধরে আছে আর চিৎকার করছে সাহায্যের জন্য। আমার লজ্জিত হৃদয় বেদনায় আদ্র হল। কিন্তু এসময় নিচ থেকে ৩/৪ জন যুবক দেয়াল বেয়ে উঠে গেল ওই মহিলার কাছে। গিয়ে তারা সম্মিলিত ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ল বারান্দার লোহার শিকের উপর। তাদের সম্মিলিত আক্রমনে বেশ মোটা একটা শিক আলগা হয়ে গেল তার সংযোগ থেকে। বিপদগ্রস্থ মহিলার চেহারার পরিবর্তন আমি নিচ থেকেও দেখতে পেলাম। অবশ্য এটা আমার চোখের ভুলও হতে পারে। যাইহোক, উদ্ধারকারী দলের একজন যুবক মহিলাকে একহাতে জড়িয়ে ধরে ধীরে ধীরে দেয়াল বেয়ে কিছুটা নামার পরই তাঁরা নিচ থেকে বাড়িয়ে দেয়া একটা মইয়ের নাগাল পেলেন। তারপর মই বেয়ে সহজেই নেমে এলেন মাটিতে।
যে কাজ নিজে করতে না পারায় মনের মাঝে তৈরি করছিলাম নানা অজুহাত, সে কাজটাই চোখের সামনে আরেকজনকে করতে দেখে বুকের ভেতর নিজের কাপুরুষত্বটা খুবই তীক্ষ্ণ হয়ে বাজল। নিজের উপর যতই বিরক্ত হই না কেন, অপরিচিত কয়েকজন যুবকের সাহসিকতায় মনে হল, আরেকবার সাহস করা যায় আরেকবার বাঁচার জন্য। হোক সে বাঁচার শুরু মৃত্যু দিয়ে। পরেরবার আমি নিজেকে আরেকটু সাহসী হিসেবে দেখতে চাই। যে নিচে বসে অজুহাত তৈরি না করে দেয়াল বেয়ে এগোবার চেষ্টা করবে উত্তপ্ত আগুনের লালায়িত শিখার দিকে।
বিঃদ্রঃ- ছবিটি google থেকে সংগৃহীত...।
©somewhere in net ltd.