নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ্

সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ

আমি তোমার ভিতরের শক্তি কে জাগতে এসেছি বন্ধু। একবার চোখ মেলে দেখো নতুন এক সূর্য উদয় হয়েছে বাংলার আকাশে। কোনো মৃত্যু, কোনো বাধা, কোনো প্রতিকুলতা এই হৃয়য়ের পরম শক্তি ও সত্য সুন্দরকে বিনষ্ট করতে পারবে না। আমি যুগে যুগে আসি আজও এসেছি শুধু তোমাদের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে। আমার এই পথ চলা থামবে না। তোমাদের বাঁচার মাঝে আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো তা যদি কোনো করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও হয়। আমার বাংলাদেশে নতুন এক গণতন্ত্র এসেছে। যা এই পরিবারতন্ত্রকে ভেঙে সত্যের ভিতরের সত্যকে তুলে এনেছে। আজ আমরা বিশ্বের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছি। তোমাদের ভালোবাসাই আমাকে তোমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার বাবা

২০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৩

আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন। আজও করছেন। আমি একমাত্র ছেলে। ছোটবেলা থেকে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে আমাকে ভালোবাসা দিয়ে যাচ্ছেন। আমার বাবার একটি খারাপ অভ্যেস হলো- তিনি প্রচন্ড রকম সহজ সরল। তাই এই সমাজে টাকা পয়সা কামাবার দৌড়ে আজীবন পিছনে পড়ে রয়েছেন।



বাবা মা সন্তানের সাফল্য দেখতে চায়। সন্তানের সাফল্যই মা-বাবার সাফল্য হয়ে মনের ভিতর অদ্ভুত সুন্দর অনুভুতি জাগায়। আমাকে নিয়ে হয়েছে ভিন্ন ব্যাপার। আজ পর্যন্ত আমার কোনো সাফল্য তাদের চোখে পড়ে নি। কেমন করে পড়বে? এ দোষ তো তাঁদের না। আমার চিন্তা চেতনা জীবনের চলার পথ আমি নিজে থেকে বেছে নিয়েছি। টাকা টাকা করে হা হুতাশ করি নি। সাফল্য সাফল্য নিয়েও হা হুতাশ করি নি। শুধু নিজেকে একজন ছাত্র জ্ঞান করে এই সমাজ, এই প্রকৃতি ও শিক্ষা মাধ্যম দ্বারা নিজেকে নিয়মিত ঝালাই করে নিচ্ছি। জানেন বন্ধু! আমার খুব ইচ্ছে হয়, আমি এমন কিছু হয়ে যাই যাতে আমার বাবা মা পরম তৃপ্তি নিয়ে এই সন্তানকে নিয়ে গর্ব করতে পারেন। আকাশ বাতাস সমাজ কাঁপিয়ে দাবরিয়ে যেনো বলতে পারে “আসিফ” আমার সন্তান। দেখ আমার “আসিফ” কতো সফল। কতো মানুষ ওকে ভালোবাসে! এই নির্ভেজাল আনন্দটুকু আর অর্থনৈতিক মুক্তি যদি আমি তাঁদের দিতে পারতাম তাহলে নিজের কাছে নিজেকে অপরাধী মনে হতো না। বাবা মা ভুল করতে পারে তাই বলে সন্তান যদি বাবা মায়ের সাথে বেয়াদবি করে তাহলে তা সত্যিই দুঃখজনক। এই দুঃখজনকই আমার সঙ্গি হয়ে গেছে –বিশেষ করে পরিবারে।



চুরি করে, বিটলামি করে, মোনাফেকি করে, বেআইনী কাজ করে, মিথ্যা বলে, অপরাধ করে টাকা পয়সা ইনকাম করে বাবা মা কে খুশি করা আমার নীতি বিরোধী। অনেক সময় আমার এই অভাগা বাবা মা এর চরম দুঃখ দেখেও আমার তেমন কোনো কষ্ট হয় না যখন দেখি বিশ্বের কতো কোটি কোটি মানুষ এর থেকে বহু কষ্ট দুঃখ সয়ে বেঁচে আছেন। এখানে আমি স্বার্থপর হতে পারলাম না। আমার বাবাকে যে আমি কতবেশি শ্রদ্ধা করি তা তাঁকে কোনোদিন বুঝতে দেই নি। যদি বুঝতে দিতাম তাহলে তিনি অনেক বেশি ভেঙ্গে পড়তেন। আসলে আমি আমার চারপাশের মানুষগুলোকে খুব ভালোকরেই বুঝতে পারি। এই বুঝতে পারাটা অনেক বেশি পারফেক্ট। হয়তোবা এটা আমার জন্মগুন। মা যখন বকেন, গালাগালি করেন তখন তার বকার ধারাবাহিকতা আমি বুঝে ফেলি। তার মানে তিনি কোন কথার পর কোন কথা দিয়ে আমাকে গালাগালি বা বকাঝকা করছেন তা আমি স্বাভাবিক ভাবেই টের পেয়ে যাই। আমি যে তাঁদের এতো বেশি ভালোবাসি তা কখনও বুঝতে দিতে চাই না। আমার দেবলোকে আমি থাকতে জানি, আমার ভাবনার অন্ত নাই, আমার চিন্তার অন্ত নাই; তাইতো এতো জ্বালা। এই সমাজের মানুষগুলো খুব অল্প কিছু অভ্যাসের মধ্যে সারাজীবন কাটিয়ে দেয়। আমি তো এরকম ভাবে নিজেকে এই সমাজের দাস বানাতে শিখি নি। আমি তো সমাজের মিথ্যা বেইজড প্রতিষ্ঠিত সত্যগুলোকে সোজা আঙ্গুল তুলে দেখিয়ে দেই এবং ঐ পথের ভয়াভহতা সম্পর্কে সবাইকে সর্বদা সচেতন হতে বলি। তৃতীয় বিশ্বের তৃতীয় শ্রেণীর থেকেও নিচু স্তরের (অর্থনিতিক দিক থেকে নির্দেশিত স্তর ব্যবস্থায়) বাসিন্দা হয়ে অন্য বাসিন্দাদের কিভাবে বুঝাবো যে আমার চিন্তার বর্ণালি রঙের খেলা।



২০০৪-২০০৫ সালের কথা আমার বাবা একবার ব্যাগ গুছিয়ে ঢাকা গেলেন। হাসি হাসি মুখে রওয়না হলেন। যাবার সময় আমাকে বলে গেলেন “বাবা আমি তিন-চার দিনের মধ্যে ফিরে আসবো, এসে তোকে টাকা দেবো”। আমি কিছু বলি নি। আব্বু পরের দিনই ঢাকা থেকে ফিরে এলেন। মুখ বেজার। তার বেশ কিছুদিন পরে জেনেছিলাম আব্বু তাঁর কিডনি বেঁচতে ঢাকা গিয়েছিলেন। পত্রিকায় একটি এ্যাড দেখে তিনি ঢাকা গিয়েছিলেন। রক্তের গ্রুপের সাথে মিলেনি বা অন্য কোনো জটিলতার কারণে বিক্রি করতে পারেন নি। যাবার আগে কাউকে বলেন নি যে কিডনি বিক্রি করে টাকার জন্য ঢাকা যাচ্ছেন। আর ঢাকা থেকে ফেরার সাথে সাথেও বলেন নি। এই কষ্টের সংসার আমি দেখেছি। আজও দেখছি। তারপরও একটু সাবলম্বিতা এনে দিতে ব্যার্থ হলাম।



জানেন বন্ধু! আমি আমার জীবনকে আপনাদের কাছে অস্বচ্ছ করে রেখে যেতে চাই না। প্রতিটি মানুষেরই উচিত তার জীবনের সত্য উপলব্ধিকে এবং জীবনের কষ্টগুলোকে শেয়ার করে নেয়া। এর বিনিময়ে সামাজিক সম্পৃতি বাড়ে।



আমি আমার বাবা মা প্রতিবেশিদের জীবন সংগ্রাম দেখেছি। বুঝেছি যে কতো কষ্ট করে এক একটি পরিবার দাঁড় হয়ে আছে। বাবাকে নিয়ে আমার গর্ব হয়। অনেক বেশি গর্ব হয়। তারপরও আমি আজও তাঁদের মুখে হাসি ফুটাতে পারছি না। শুধু তাঁদের কষ্টই দিয়ে গেলাম। আপনারা এই অসহায় মানুষগুলোর দিকে একটু খেয়াল রাখবেন -এ আমার অন্তরের দাবি।



০৮-০৫-২০১৪

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৬

মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেছেন: আপনি আপনার পরিবার এবং আপনার মা-বাবার গর্বের ধন হয়ে উঠুন এই দোয়া এবং শুভকামনা থাকলো।

আপনার বাবাকে আমার সালাম পৌঁছে দিবেন এবং আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো তাঁর কাছে।

ধন্যবাদ।

২০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ বলেছেন: সহমর্মিতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানবেন। আপনার নিমন্ত্রন রইলো।

২| ২০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৮

সাদামন০০৭ বলেছেন: আমিও আপনার মতো একজন অভাগা ছেলে যে তার মা বাবার মুখে হাসি ফুটাতে পারিনি। খুব ভালো লাগলো আপনার লেখা পরে।।

২০ শে মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫

মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ বলেছেন: সংসারে যখন অভাব থাকে তখন শুধু শুধু ঝগড়াঝাটির সৃষ্টি হয় এবং সবাইকে বিশাল বড় বড় টেনশন নিয়ে জীবন পাড় করে দিতে হয়।

আমি, আপনি, আমরা সবাই মিলে এই গোটা সমাজের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের সমস্যা বিমোচনের চেষ্টা করতে পারি। এখানে সমস্যা হলো আমাদের দেশের মানুষ সব কিছুকেই স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেয় এবং পুরো জীবন কিছু অভ্যাসের মধ্য দিয়ে জীবন পার করে। আমাদের বাঁচার মতো বাঁচতে শিখতে হবে। আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। আমাদের ইমান থাকতে হবে। এভাবেই একটি জাতি উন্নতির চরম শিখরে প্রবেশ করে।

৩| ২১ শে মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৪

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: শুভকামনা ভাই । পৃথিবীর সকল বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা ।

৪| ২১ শে মে, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭

is not available বলেছেন: চিন্তাভাবনাগুলো অনেক সুন্দর,আর অনেক ভালো কথাও বলেছেন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.