![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি তোমার ভিতরের শক্তি কে জাগতে এসেছি বন্ধু। একবার চোখ মেলে দেখো নতুন এক সূর্য উদয় হয়েছে বাংলার আকাশে। কোনো মৃত্যু, কোনো বাধা, কোনো প্রতিকুলতা এই হৃয়য়ের পরম শক্তি ও সত্য সুন্দরকে বিনষ্ট করতে পারবে না। আমি যুগে যুগে আসি আজও এসেছি শুধু তোমাদের ভিতরের শক্তিকে জাগাতে। আমার এই পথ চলা থামবে না। তোমাদের বাঁচার মাঝে আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো তা যদি কোনো করুন মৃত্যুর মধ্য দিয়েও হয়। আমার বাংলাদেশে নতুন এক গণতন্ত্র এসেছে। যা এই পরিবারতন্ত্রকে ভেঙে সত্যের ভিতরের সত্যকে তুলে এনেছে। আজ আমরা বিশ্বের বড় শক্তিতে রূপান্তরিত হচ্ছি। তোমাদের ভালোবাসাই আমাকে তোমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।
আপনাদের কাছে সহযবোধ্য করে উপস্থান করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের উপর দৃষ্টি রেখে আলোচনা করলাম। আসলে এই সমস্যাগুলো বিশ্বের অনেক দেশের গলায়ই কাঁটা হয়ে বিধে আছে। উন্নয়নশীল ও তৃতীয় বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর কথিত ফাস্টক্লাস ডেমোক্রোসির মধ্যে কমন কিছু প্রবলেম মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। লক্ষ্যনিয় হল যে, কিছু মন্দ টেকনিক কল্যানের অন্তরায় হয়েও কল্যানের মধ্যে মিশে যাবার জন্য হাজার চেষ্টা করলেও আমাদের কাঠ ও ঘুনপোকার কথাই মনে পড়ে যায়। যারা এই সব বিষয় নিয়ে ভাবেন তাঁদের কাছে আমার কথা মোটেও নতুন না বরং সেই সব চিন্তাশীল মানুষগণ আরো অনেক কিছু নিজ গুনেই বেড় করে রেখেছেন। এখন শুধু সমাধানের পালা।
১। আমলা ম্যানেজমেন্টঃ বাংলাদেশ ও ভারতের ক্ষেত্রে খুব বড় একটি সমস্যা হলো ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক আমলা ম্যানেজমেন্ট এর ব্যার্থতা। আমাদের এই সুন্দর দু’টি দেশে এই ব্যাপার নিয়ে গোচরে-অগচরে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয় কিন্তু সমাধান কোথায়? স্পষ্ট ভাবে সমস্যাকে নিরূপিত করা না গেলে সমাধান আসবে কি করে? আমরা খারাপ, মন্দ, বাজে, ঘুসখোর, চামচা, নেমকহারাম সহ আরো কতো বাহারি টাইপের গালির বুলি ছড়িয়ে আমলাদের ব্যাক্তিত্বকে মুখের ভাষায় প্রকাশ করতে মোটেও সংকোচবোধ করি না। আবার অনেকে বলেন কিছু কিছু আমলা খারাপ আর কিছু কিছু ভালো- এ কথা আমলা কেনো সব ক্ষেত্রেই সান্তনা সূচক কথা হতে পারে মাত্র কিন্তু তা মোটেও আমাদের সমাধানের দিকে নিয়ে যায় না। সবার আগে বুঝতে হবে আমলারা একেকজন মানুষ এবং তাদের আয় রোজগারের একমাত্র/প্রধান উপায় চাকুরী। আমরা যদি নিজেকে একজন আমলার জায়গায় নিয়ে গিয়ে বুঝতে শিখি তাহলে সব কিছু স্পষ্টভাবে বুঝতে সুবিধা হবে। আপনি আমাকে বলুন যে, একজন চাকুরিজীবিকে যদি পেটের দায়ে বা ধন-মান-মর্জাদা নিয়ে বাঁচার জন্য রং-পাল্টাতে হয় – সেই দোশ কার? বাংলাদেশ ও ভারতের আমলারা খারাপ না বরং আমলাদের ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম করাপটেড বলেই খারাপ রেজাল্ট আসছে। পরিবেশ মানুষের উপর প্রভাব ফেলবে এটাই স্বাভাবিক তাই বলে আমাদের চোখে যদি কোনো নষ্ট পরিবেশ ধরা পড়ে আমরা কি সেই নষ্ট পরিবেশকে ভালো করার যোগ্যতা রাখি না?
দলিয় লোক, দলিয় লোক বলে চ্যাচামেচি করে কিছু মানুষকে বড় বড় চেয়ারে বসানো হয় পরবর্তি নির্বাচনে জয়ী হওয়া ও নিজেদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। এখানেই আমরা মস্ত বড় ভুল করি। আমরা নিজ দলের বড় আপন পূজারী ভেবে একজনকে বসালাম, পরবর্তিতে দেখা গেলো ঐ পূজারী পূজরীই আছেন কিন্তু নিজ রাজনিতিক দলের মন্দিরে না গিয়ে অন্য রাজনিতিক দলের মন্দিরে পূজো দিচ্ছেন। কোন মানুষই তার নিজের ব্যাক্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করে খারাপ হয়ে বেঁচে থাকতে চায় না- যদি না সে বাধ্য হয়। আমাদের করাপটেড পরিবেশ আমলাদের করাপটেড হতে বাধ্য করে। যেখানে ঘুস ও দুর্ণীতির সুযোগ থাকে সেখানে ঘুস ও দূর্ণীতি কিভাবে কমাবেন বলেন? আগে সিস্টেম স্ট্রাকচারের দুর্বলতাগুলো নিরূপন করে ঠিকঠাক করে দিতে হবে তারপর আসবে সঠিক রেজাল্ট। আমি কোনো ভাবেই মানছি না যে একজন সৎ আমলা কখনও কোনো একটি রাজনৈতিক দলের জন্য শত্রু বা বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে। যিনি তার নিজের সততা সম্বন্ধে সর্বদা অবগত থেকে সততার চেরাগবাতি বুকে ধরে আগলে রাখতে জানেন, তিনি কোনোভাবেই অন্য দলের ক্ষতি করতে পারেন না কারণ কাজের ক্ষেত্রে তিনি নিরাপেক্ষ অবস্থানে অবস্থান করেন। এই সব সৎ মানুষ যদি কোনো দলও করে থাকেন তারপরও তাঁরা মানুষের মঙ্গল দলের অগ্রপথিক। হয়তো তিনি মুখে মুখে কোনো দলের নামজপ করছেন ঠিকই কিন্তু তিনি তো কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন না বা অন্যায় আচরন করছেন না তাহলে সুবিধা কার? ভালো মানুষগুলো যখন আমলাদের উপর লেভেলের ম্যানেজমেন্টের আমলা হয়ে আসে তখন তাদের কাজের যথেষ্ঠ-বেশি স্বাধীনতা দেয়া উচিত। এর ফল স্বরূপ ঐ সকল সৎ-নির্ভিক-যোগ্য আমলা ব্যাক্তিবর্গ স্বাধীন ও নিরাপক্ষ ভাবে যোগ্য মানুষকে যোগ্য আমলার অবস্থানে বসিয়ে রেখে যেতে পারবেন। এরকম হলে পজিশন-অপজিশন, জোট-মহাজোট, মোর্চা সহ সবারই সুবিধা হয়। সুবিধার মূল কারণ আমলাদের নিয়ে টেনশন না করে নিজ দল ও জনগনের দিকে আরো বেশি সময় দেয়া যায়। আরো বড় সুবিধা হলো দেশ ও জনকল্যানের কাজের জন্য রাজনিতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সুন্দর প্রতিযোগীতার রীতি অটোমেটিক চালু হয়ে যায়। রাজনীতিক দলের ইর্ন্টারনাল ট্রাকচারে স্ট্রং করার দিকেও দলের উপরের স্তরের মানুষগুলো সময় দিতে সুবিধা হবে। আমাদের এই দু’দেশের শাসনব্যবস্থার মধ্যে আমলা-রাজনীতিক দল-ব্যবসায়ী-সামারিক বাহিনির উপরস্থ ব্যক্তিবর্গ মিলেমিশে একটি তালঘোল পেকে গেছে। এই তালঘোলের জট আমাদেরই খুলতে হবে। আসলে সবার অবস্থান স্পষ্ট করা দরকার। আজকে হয়তো একজন আমলা ৬০বছর বয়সে রিটার্ড করছেন আবার একজন নবআমলা ২৫-২৬ বয়সে চাকুরিতে আজই যোগদান করেছেন। এই জয়েন্টকৃত ২৫-২৬ বছরের আমলা আরও ৩৪-৩৫ বছর চাকুরী করে তারপর অবসর গ্রহন করবেন। এখন আমরা যদি সমস্যা নিরূপনের সাথে সাথে সমস্যার সমাধান না করি তাহলে কখন করবো বলেন? আমলার প্রক্রিয়া তো সদা চলমান। যা করার আজই করা উচিৎ। আমাদের এই ইন্দ্র-বাংলার দু’বোনের সন্তানগন কেমন জানি একটু জটিলতা দেখলেই আতঁকে ওঠেন! আরে বন্ধু! জটিল কে সহয করে নেবার জন্যই তো আমরা এই সুন্দর পৃথিবীতে জন্মাই।
আমলাদের নিরাপক্ষতা চাই-নিরপক্ষতা চাই রবে চিৎকার করা চলবে না। প্রকৃত ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ কখনও ধর্মনিরাপক্ষতার মুখোশ পড়ে থাকতে পারে না। ধর্ম মর্ম যারা বোঝেন, তারা জানেন যে, প্রতিটি ধর্মই অন্য ধর্ম বিশ্বাসী মানুষকেও শ্রদ্ধার নয়নে দেখতে বলেন। এক মানুষের জন্য অন্য মানুষের এই যে শ্রদ্ধাবোধের চরম সত্য অনুভুতি তৈরী করা এটাই হলো ধর্মের সবচেয়ে বড়গুণ। এই হিসেব করলে প্রতিটা ধর্মই হল ধর্মনিরাপক্ষ তাই ধর্মনিরাপক্ষ কথাটাকে এতো জোড়ে ঠাকুর ঘরে কলা খাওয়া চোরের মতো করে জাহির না করাই ভালো। নিরাপক্ষ আমলা খুঁজতে গেলে আমরা যা পাবো তা হলো পক্ষপাতে বিশ্বাসী কিছু মানুষ। এই পক্ষপাতের কারনেই আজকে সমাজে এতোবেশি রক্তপাত হচ্ছে। আমরা যদি আমলার পুরো ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের দুর্বল ফুটোগুলো জেনে শুনে খুঁজে বেড় করে আটকে দিতে পারি তাহলে আমলারা ইচ্ছে করলেও অসৎ-দুর্ণীতিগ্রস্থ হতে পারবে না। আবার এই কঠিন পরিবেশের মধ্য থেকেও আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই আসল সৎ আমলাদের উপর লেভেলে বসাতে পারি তাহলে সেই সব আমলারা নির্দলীয় হয়েও সব দলের আদর্শের বন্ধু হয়ে উঠবে, যা চামচামির বিপরিত কথা।
বর্তমান সময়ে ভারতের নতুনধারার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাহেব বা তার দল যদি ভারতীয় আমলাদের মধ্যে শুধু কংগ্রেসের (উদাহরনের স্বার্থে কংগ্রেস নামটি ব্যবহার করেছি, এখানে বি.এন.পি, আওয়ামীলীগ, বিজেপি, তৃনমূল, কমিউনিস্ট পার্টি সহ যে কোনো কিছু ব্যবহার করা যাবে) অনুসারী বা কংগ্রেসের সাহায্যপুষ্ট আমলাদেরই খুজে বেড় করতে চেষ্টা করে তাহলে তাঁরা কিন্ত আগের ভুলই করে গেলো। নতুন কোনো দল ক্ষমতায় চলে এলে আসলে আমলা নামক কিছু মানুষের প্রতি জুলুম করে নতুন কিছু আমলা নামক মানুষকে চোর করে গড়ে তোলবার জামাই আদরে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। এই ধারার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে মানুষের মন পরিবর্তনশীল। কাল যিনি কংগ্রেস করতেন তার আজকের কংগ্রেসের নিয়ম-নিতি-আদর্শ ভালো নাও লাগতে পারে এবং দেখা গেলো উক্ত আমলাবর্গ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মহাদয়ের ব্যক্তিত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আছেন। এখন যদি মন না বুঝেই সেই পাল্টে যাওয়া সুন্দর মনের মানুষটির প্রতি অন্যায় আচরন করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে এই অন্যায়ের প্রতিফলন স্বরূপ অন্যায় স্কয়ার নামের রাক্ষস সামনে এসে দাঁড়াবে। সত্যিকার অর্থে উপলব্ধি করতে গেলে দেখবেন, আসলে কিন্তু হয়েছেও তাই!
আমরা অনেক সময় তর্কের খাতিরে বলি যে, আমলাদের রাজনীতি করা উচিত না। কথাটি শুনতে ভালোই লাগে কিন্তু এই কথার কোনো বাস্তব ভিত্ত্বি নাই। মানুষ এমন এক প্রজাতি যার মন থেকেই কোনো না কোনো বিষয়-দল-মত-ধর্মের প্রতি সাপোর্ট এ্যাপলিকেশন সফটওয়্যারের মতো চলে আসে। নাম ধাম উহ্য রেখে দু’টি ফুটবল দলকে কালা জার্সি আর সাদা জার্সি পরিয়ে দিয়ে ফুটবল মাঠে খেলতে নামিয়ে দিন। তারপর পৃথিবীর যে কোনো একজন মানুষকে ধরে এনে সেই খেলা দেখান। দেখবেন কিছুক্ষনের মধ্যেই ঐ মানুষটি কালো জার্সি অথবা সাদা জার্সির সাপোটার হয়ে গেছে। এজন্যই আমি বলি যে, রাজনীতিক দল বা যে কোনো দলাদলি করা মানুষের একটি অধীকারের পর্যায়ে পড়ে। এই অধীকার কেড়ে নিতে হয় না। আমাদের এই দু’টি দেশে বিশ্বকাপ ফুটবলের আনন্দের তিব্রতার মাত্রা প্রচন্ড রকমের। ভালোভাবে খেয়াল না করলেও বুঝতে পারবেন যে, ভারত ও বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্বকাপ ফুটবলে মানুষ আর্জিন্টিনা অথবা ব্রাজিলের সাপোর্ট করে। এটা একটা ঐতিহ্যর মতো হয়ে গেছে। এই অতিহ্য গুলো মানবসৃষ্ট ও মিডিয়া সৃষ্ট। আমাদের মনমানুষিকতা হওয়া উচিত ছিলো যে আমরা এই দুই দেশ মিলে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করে আমাদের ছেলেদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান বানাবো। তাতে যদি চিটারি লাগে করবো- অসুবিধা কি! এই সব খেলাধুলায় একটু আধটু চিটারি করে হলেও দেশের মানুষের মধ্যে নিজ দেশের প্রতি আকর্ষন নিয়ে আসা যায় তাতে কি এমন দোষ!
আমলারা জীবনের বড় একটি সময় চাকুরী করে বলে তাদের রাজনীতির আদর্শের চেতনা লুকিয়ে রাখতে হবে- এ কেমন কথা? একজন সরকারি ছোট চাকুরে অথবা যে কোনো শ্রেণীপেষার মানুষেরই দেশের প্রধান হবার যোগ্যতা থাকতে পারে। আমরা কোনো ভাবেই আমলাদের মনের স্বাধীনতা ও মনোবলে আঘাত করতে পারি না। একজন আমলা যখন চাকুরিতে আসেন তখন তিনি কাজ করতেই আসেন। এখন যদি আমরা তাকে কাজের বদলে কুকাজের পথ তৈরি করে দেই সেই দোষ একক ভাবে ঐ আমলাগণের কাঁধে পড়ে কি করে?
এই সব কিছু কিছু ছোটখাটো ভুলের জন্যই আজ এই টু-সুইট-সিস্টার বাংলাদেশ-ভারতের উপর দূর্নীতির কালো দানবসম রাক্ষস নেমে এসেছে। তারপরও এখনই এই টু-সুইট-সিস্টারকে এই বিষয়ে সর্বোচ্চ সুন্দর ম্যানেজমেন্টের পরিচয় দেবার পালা। মনে রাখবেন এই কাজের ফল দীর্ঘ মেয়াদি হলে হোক কিন্তু তা অবশ্যই বর্তমান সব দলের রাজনীতিকদের ইতিহাসের স্বাক্ষি হবার হাতছানি হয়ে কাছে ডেকে চলছে।
২। সামরিক বাহিনী ম্যানেজমেন্টঃ টু-সুইট-সিস্টার বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনীর দিকে তাকালে আমরা স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাই আমাদের সামরিক বাহিনী অনেক আগের দিনের মতো বোবট করে রাখা হয়েছে। আরেকভাবে বলতে গেলে ট্রেনিং ও অন্য কিছু অকাজের আড়ালে মূলত কিছু জলজ্যান্ত মানুষকে অলস করে রেখে দেয়া হয়েছে। আমার প্রশ্ন হলো একজন তরতাজা জলজ্যান্ত সরল স্বাভাবিক মানুষকে রোবট বানিয়ে রাখার মানে কি? টু-সুইট-সিস্টারের সামরিক বাহিনীকে শুধু দেশে কবে যুদ্ধ বাজবে সেই অপেক্ষায় সারাজীবনের সুন্দর মানবজীবন পাঠার বলী দিলে চলবে না বরং তাদের জনকল্যানে নির্বিচ্ছন্নসময়জ্ঞানে কাজে লাগাতে হবে। আপনার মনে কি কখনও প্রশ্ন আসেনি যে, সামরিক বাহিনীকে কেনো নিজ দেশের মানুষদের জন্য বন্ধু হতে দেয়ার সিস্টেম চালু হতে দেয়া হয় নি? সামরিক বাহিনীকে নিজ দেশের জনগনের বন্ধু হতে হবে। সামরিক বাহিনির মানুষ কেনো সারাজীবন ক্যান্টনমেন্ট এরিয়ার গাছের গোড়ায় জল ঢালবে? সামরিক বাহিনী মানুষ কেনো হঠাৎ কোনো বিশেষ ফোর্স এর সদস্য হয়ে, বিশেষ কোনো এলাকায় কাজ করে, অবৈধ্য কাজে ব্যবহার হয়ে কিছু টাকা-পয়সা কামানোর ধান্ধা করবে? সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই জনগনের খুব কাছে থাকতে জানতে হবে। তাদের সরাসরি বিভিন্ন জনকল্যানকর কাজে ব্যাস্ত রাখতে হবে। কৃষি, শিল্প, টেকনোলজি, যোগাযোগ সহ অনেক কাজে প্রবল প্রাণ শক্তিতে ভরপুর এই সব সামরিক বাহিনীর মানুষদের সংপৃক্ত করতে হবে।
সামরিক বাহিনীকে যত বেশি রোবট করে রাখার চেষ্টা করা হয় ততো বেশি সামরিক অভ্যুথানের সম্ভাবনা থাকে। পাকিস্তানের সিভিল কোর্ট ল এবং মিলেটেরি সিস্টেমের মধ্যে একটি সুক্ষ চাল দিয়ে বিবেধ বাধিয়ে রেখে কি এমন লাভ হয়েছে? যা লাভ হয়েছে তা হলো অনেক অনেক রক্তপাত ও নিজ দেশের চরম ক্ষতি।
টু-সুইট-সিস্টার কে আজ এই বলয় থেকে বেড়িয়ে পুরো বিশ্বকে শিক্ষা দিতে হবে যে, সামরিক বাহিনি কতবেশি মানব বান্ধব ও জনগনের সত্যিকার অর্থে বন্ধু। দেখুন আমরা যদি সামরিক বাহিনিকে এভাবে রোবট বানিয়ে রাখি তাহলে তাদের প্রতি একধরনের জুলুম করা হয়। সামরিক বাহিনির সাধারন সদস্যদেরও মানুষের কল্যানের জন্য অনেক কিছু দেয়ার আছে। সামরিক বাহিনি যে শুধু যুদ্ধই করবে এমন কোনো কথা নেই। সামরিক বাহিনির প্রধান কাজ রাষ্ট্রিয় নিরাপত্তা হতে পারে আর যুদ্ধকালিন সময়ে সাধারন মানুষ এমনিতেই জড়িয়ে যায় বিশেষ করে যে সব রাষ্ট্রের উপর অন্যায় ভাবে আক্রমন হয়। আমি মনে করি অন্য রাষ্ট্রের ভুখন্ডে প্রতিটা সামরিক আক্রমনই অবৈধ।
সামরিক বাহিনি মানুষদের রাজনিতির অধিকার আছে কিন্তু আগে নিজের কাজ যথাযথ ভাবে পালন করতে হবে। আমাদের এই টু-সুইট-সিস্টারের সামরিক বাহিনীকে চুপি চুপি রাজনীতি করতে হয়। এই কারণে দু’পক্ষই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং দুর্নীতি সহ বিভিন্ন অপকর্ম প্রশ্রয় পাচ্ছে। একজন সামরিক সদস্য তার ঠিক ভাবে ডিউটি পালনে গাফেলতির কৌফিয়ত অবশ্যই সরকারী দলের নাম করে চালিয়ে দিতে পারে না। এই একটি ব্যাপার নিশ্চিত করা গেলে সব চাকুরিজিবিদেরই পুরোপুরি রাজনীতি করার অধীকার প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। আমাদের এই টু-সুইট-সিস্টারের সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের রাজনীতিতে এতো বেশি অস্বচ্ছ অবস্থান থাকতো না যদি আমরা চাকুরীকালিন সময়ই স্বাধীন ভাবে রাজনীতিক দলের সাপোর্ট করার সুযোগ দিতে পারতাম। এখন এমন একটি অবস্থা হয়েছে যে, একজন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়া রিটায়ার্ড আর্মি পার্সনকে আমরা শুধু মাত্র আর্মি পারসল বলেই গন্য করে নেই। এর ফলে বড় বড় রাজনীতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে বিশাল বড় কোন্দ্রলের সৃষ্টি হয়ে চলছে। আমরা কোনো প্রকার কোন্দ্রল আশা করতে পারি না। আমাদের বুঝতে হবে একজন রিটায়ার্ড, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া অথবা চাকুরি থেকে অব্যহতি দেয়া আর্মি পারসন যখন সুষ্ঠ ও স্বাভাবিক নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয় তখন সর্বমহলে তাঁর প্রধান পরিচয় হওয়া উচিত একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবেই। কিন্তু আমাদের এই প্রচলিত বাজে দৃষ্টিভঙ্গির কারনে রাজনীতি তো বটেই সেই সাথে সব জায়গায়ই তালগোল পেকে, কেমন যেনো সব এলোমেলো হতে চলেছিলো। আমাদের এই টু-সুইট-সিস্টার বাংলাদেশ ও ভারতকে এই বলয় ভাংতে হবে। আমাদের রাজনিতি ও সামরিক বাহিনির উভয় মানুষদেরই স্বাধীন ভাবে চিন্তা করতে শিখে, একে অন্যকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে জানতে হবে। আমরা চেষ্টা করলে অবশ্যই বিশাল এক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারি- এই বিশ্বাস আমাদের সবার অন্তরে থাকতে হবে।
চলবে.........
©somewhere in net ltd.